ঘর জামাই——-পর্ব-০৭
এই আমি কি করলাম, যদি জুই গিয়ে আব্বাজানকে সব
কিছু বলে দেই, তাহলে তো সত্যি আজকে আমার
ঘর জামাই গিড়ি শেষ হয়ে যাবে। যাই তারা তারি করে
গিয়ে জুইকে আটকাই, বলে তারা তারি করে রুম
থেকে বেড়িয়ে জুইয়ের পিছু পিছু আয়ছি, আর
বলছি,,
আমি:- বউ আমার, তুমি এমনটা করোনা, তুমি যা বলবে
তাই হবে, আমি তোমার সব কথা শোনবো। তখনি,,
জুই:- ঠিক আছে বলবোনা তবে একটা শর্ত আছে
আমার।
আমি:-হ্যা বলো কি শর্ত তোমার? (এখন তুমি যা
বলবে তাই শোনবো, তারপর দেখোনা কি করি?
মনে মনে ভাবছি কথা গুলো।)
জুই:- ঠিক আছে সময় হলে বলবো, তবে এখন
এইটুকু জেনে রাখো যদি আমার কথা মত না চলো
তাহলে আব্বুকে এই রেকটিং শোনায় দেব।
আমি:- তোমার সব কথা শোনবো, তুমি রেকটিংটা
ডিলেট করে নাও, প্লিজ জান আমার সোনা বউ।
জুই:- আমাকে যদি আরেক বার সোনা বউ আর
জানটান ডাকোনা তাহলে এখনি আব্বুকে দেখিয়ে
দেব।
আমি:- ঠিক আছে আর ডাকবোনা, এখন ডিলেট
করে দাও প্লিজ।
জুই:- আমার কি মাথা খারাপ নাকি, যে আমি এমন একটা
রেকটিং ডিলেট করে দেব? এইটা দিয়ে
তোমাকে সায়েস্তা করতে হবে ভালো করে।
আমার এখন ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।
আমি:- তুমি আজ এত তারা তারি ঘুমাবে?
জুই:- হ্যা তারা তারি ঘুমাবো।
আমি:- ঠিক আছে যাও, জুই একটা মুচকি হাসি দিয়ে
চলে গেলো। দুর এইটা আমি কি করলাম? না যাই
আমিও ঘুমায়, তারপর রুমে এসে সোজা বারান্দায়
চলে গেলাম। গিয়ে সোজা চাদরটা বিছায়ে শুয়ে
পরলাম, আর কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই।
সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেসহয়ে নিছে
আসলাম, দেখি জুই সহ সবাই খাবার টেবিলে বসে
আছে, আমি কাছে যেতেই
শ্বাশুড়ি:- বাবা সৌরভ এসো নাস্তা করে নাও?
জুই:- আম্মু ডাকতে হবেনা দেখোনা সোজা এই
দিকে আসতেছে।
শ্বাশুড়ি:- জুই তুই সব সময় সৌরভের সাথে এমন করিস
কেন?
আমি:- থাক আম্মাজান জুইকে কিছু বলিয়েন না, বলে
আমি গিয়ে নাস্তার টেবিলে বসলাম।
শ্বশুড়:- দেখছিস মা, সৌরভ কত ভালো?
জুই:- কেমন ভালো সেইটা আমি জানি। তোমরা খাও
আমি গেলাম, বলে জুই নাস্তার টেবিল থেকে
চলে গেলো।
আমি:- আব্বাজান একটা কথা বলতে চাই ছিলাম যদি অনুমতি
দেন তাহলে বলবো।
শ্বশুড়:- বল কি বলবে?
আমি:- আপনাকে আগেও বলছিলাম যে আম্মু তার
ছেলের বউকে দেখতে চাইছে।
শ্বশুড়:- হ্যা বলছিলে। তো এখন আবার বলছো
কেন?
আমি:- গত কাল রাতে আম্মু আবার ফোন করে
বলছে আজকের মধ্যে জুইকে নিয়ে জেন
বাড়ীতে যায়। দাদির শরিল অনেক খারাপ সে মৃত্যুর
আগে তার নাত বউ দেখতে চাই।
শ্বশুড়:- কিন্তু আমি এখন যাবো কি করে? আমার
অফিসে কত কাজ তুমি তো বাবা ভালো করে
জানো? আর জুই কি একা যাবে?
আমি:- এত কিছু বুজিনা যদি দাদি তার নাত বউ না দেখতে
পারে তাহলে সবাই আমাকে অনেক খারাপ বলবে
প্লিজ আব্বাজান একটা কিছু করেন।
শ্বশুড়:- ঠিক আছে আমি জুইকে রাজি করাবো,
তবে তুমি আর জুই তোমাদের বাড়িতে যেও। আমি
আর তোমার শ্বাশুড়ি যেতে পারবোনা।
আমি:- আব্বাজান আপনি এইটা কি বললেন? যদি আপনি না
যান তাহলে আমি জুইকে কি করে সামলাবো?
শ্বশুড়:- আমি জুইকে সব কিছু বুঝিয়ে বলে দেব,
তাহলে তো আর তোমার কোন সমস্যা থাকার কথা
নয়?
আমি:- তাহলে ঠিক আছে (আমি তো চাইছি জুই একা
যাক তারপর মজা বুঝাবো, মনে মনে কথা গুলো
ভাবছি।) আচ্ছা তাহলে সব গুজ গাজ করে নেই আমি।
শ্বশুড়:- তবে জুই মনে হয় আজকে যাবেনা, এক
কাজ করো তোমরা আগামি কাল যাও?
আমি:- ঠিক আছে তাহলে আগামিকাল যাবো। আচ্ছা
আমি একটু বাহিরে যাবো, বলে বাসা থেকে
বেড়িয়ে সোজা টেইলার্সের দোকানে চলে
আসছি। আমার পান্জাবিটা ঠিক হয়ছে?
হ্যা দুলাভাই ঠিক হয়ছে এই নেন পান্জাবি।
আমি:- কত দিতে হবে?
দেন আপনার থেকে আর কি চেয়ে নেব।
আমি:- তাহলে টাকা না দিলে চলবো।
আরে এইটা কি বলেন দুলাভাই, এত কষ্ট করে
জোড়া তালি দিলাম আর আপনি টাকা না দিয়ে চলে
যাবেন।
আমি:- ঠিক আছে নেন এই বিশ টাকা রাখেন, টাকাটা
দিয়ে পান্জাবিটা নিয়ে সোজা জুয়েলকে একটা
ফোন করলাম। রিং হতেই রিসিব করেছে।
জুয়েল:- দোস্ত আমার পান্জাবিটা কেমন আছে
বল?
আমি:- শালা তোর পান্জাবিটা আমার থেকে বড় হয়ে
গেলো?
জুয়েল:- আব্বার শেষ স্মতি।
আমি:- তুই কোথায় আছিস রে?
জুয়েল:- এইতো রুমে।
আমি:- তাহলে মফিজের দোকানে সামনে এসে
তোর পান্জাবিটা নিয়ে যা, বলে ফোনটা কেটে
দিলাম। আমি বসে আছি ৫ মিনিট পরে জুয়েল
এসেছে। এই নে জুয়েল তোর পান্জাবি।
জুয়েল:- দাড়া আগে খুলে দেখি।
আমি:- স্তারী করে আনছি মাত্র এখন খুলিসনা। বাসায়
নিয়ে খাতির জমিয়ে দেখিস এই নে তোর টাকা।
জুয়েল:- কত দিলি?
আমি:- তুই আমাকে অবিশ্বাষ করিস? যা তোর সাথে
আর কোন কথা নেই।
জুয়েল:- আরে দোস্ত রাগ করিস কেন?
আমি:- ঠিক আছে যাই, আমি বাড়িতে যাবো আগামি কাল,
তাহলে ভালো থাকিস, বলে তারা তারি করে এখান
থেকে চলে আসলাম। সোজা বাসায় চলে আসলাম,
এসে দেখি জুই নিছে বসে আছে, আমি কোন
কথা না বলে সোজা রুমে দিকে চলে আসতেছি
তখনি।
জুই:- এই ঘর জামাইয়ের বাচ্ছা তোর দাদি কবে
অসুস্থ হলোরে?
আমি:- দাদি তো অনেক ধরে অসুস্থ হয়ে আছে
মৃত্যুর সাথে লরতেছে।
জুই:- তাহলে তুই যা আমাকে যেতে বলছিস কেন?
আমি:- দাদি তার নাত বউ দেখতে চাই, এতে আমার কি
দুষ?
জুই:- আমি যাবোনা বলে দিলাম।
আমি:- আব্বাজান যা বলবে তাই হবে। তখনি শ্বশুড়
মসাই মানে আব্বাজান এসেছে।
শ্বশুড়:- মা জুই আমি তুকে কত বুঝালাম, তুই আমার
একটা কথা রাখবিনা?
জুই:- যাবো তবে আমি একদিনও থাকবোনা, যেদিন
যাবো সেইদিন চলে আসবো।
আমি:- আব্বাজান একদিনে তো যেতে যেতে
চলে যাবে তিনদিন থাকবো আমরা।
শ্বশুড়:- ঠিক আছে মা জুই দেখতে দেখতে
চলে যাবে তিন দিন।
জুই:- ঠিক আছে, শুধু আপনি বলছেন বলে
যেতেছি, তবে ঐখানে যদি আমার সাথে ওল্টা পাল্টা
কিছু করে তাহলে আমি কিন্তু খুন করে চলে
আসবো।
আমি:- ঠিক আছে কোন ওল্টা পাল্টা কিছু করবোনা,
আচ্ছা এখন তাহলে আমি একটু মার্কেট থেকে
গুড়ে আসি। তারপর আমি মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনা
কাটা করে নিলাম। তারপর বাসায় এসে ব্যাগ গুচিয়ে
নিলাম, রুমে বসে আছি দেকি জুই এসেছে।
জুই:- আম্মু তোমাকে খেতে ডাকছে?
আমি:- হ্যা আসতেছি, তুমি যাও? তারপর জুই চলে
গেলো, আমি কিছুক্ষন পর নিছে নেমে খাবার
শেষ করে রুমে চলে আসলাম। এসে সোজা
বারান্দায় চলে গেলাম, গিয়ে এক ঘুম সকালে ঘুম
থেকে ওঠে ফ্রেসহয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য
রেডি হলাম। তবে জুইকে দেখছিনা, কিছুক্ষন পর
জুই এসেছে দেখে মনে হয় পার্লারে
গেছিলো। তবে আজকে জুইকে অন্য রকম
লাগছে, আমি জুইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি তখনি জুই
আমাকে এক চোখ টিপ দিয়ে রুমে চলে
গেলো। আরে এইটা কি হলো চোখ টিপ দিলো
কেন? যা খুশি তা করুক তাতে আমার কি, বলে আমি
নিছে বসে আছি কিছুক্ষন পর জুই নেমে
আসছে।
জুই:- আমি রেডি চলো যাওয়া যাক।
আমি:- হ্যা চলো যায়।
শ্বশুড়:- সৌরভ বাবা তুমি জুইকে দেখে রেখ? আর
নাও এখানে তোমার মা বাবার জন্য কিছু জিনিস পত্র
আছে।
আমি:- এসবের কি দরকার ছিলো আব্বাজান?
শ্বশুড়:- কি যে বলোনা বাবা, আর তোমার আব্বু
আম্মুকে আমার সালাম জানিও।
আমি:- ঠিক আছে।
জুই:- আব্বু আমরা গাড়িটা নিয়ে যাই?
শ্বশুড়:- হ্যা নিয়ে যা।
আমি:- গাড়ি করে যাওয়া যাবেনা, আমাদের এলাকার রাম্তা
তেমন বড় নয়।
জুই:- তাহলে যাবো কি করে?
আমি:- এখান থেকে বাসে করে, এর পর রিক্সা
করে।
শ্বশুড়:- কি করবি মা, একটু কষ্ট করে যা।
জুই:- শুধু তোমার জন্য যাচ্ছি।
আমি:- তাহলে চলো, তারপর জুইকে সাতে নিয়ে
বাস স্ট্যান্ড আসলাম। দুজনে পাশা পাশি বসেছি জুই
জানালা সাইটে বসেছে, একটু পর বাস ছেরে
দিয়েছে, জুই আমার সাথে কোন কখা বলেনি চুপ
চাপ বসে আছে। আমি আম্মুকে ফোন করে
বলে দিয়েছি আজকে আসতেছি, আম্মু অনেক
খুশি হয়ছে। আমি মোবাইলটা পকেটে রেখে
একটু ঘুমাবার চেষ্টা করলাম, আর তখনি,,
জুই:- আর কতক্ষণ সময় লাগবে?
আমি:- বেশিক্ষন লাগবেনা, বলে ঘুমাই গেলাম,হঠাত
করে ঘুম ভেঙে গেলো। চেয়ে দেখি জুই
আমার কাদের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
তখনি বাসটা থামিয়ে দিয়েছে, মানে আমাদের
গ্রামের বাড়ীর কাছে চলে আসছি, জুইকে
ডেকে তুললাম।
জুই:- এসে গেছি?
আমি:- হ্যা এসে গেছি, তারপর জুইয়ের হাত ধরে
জুইকে বাস থেকে নামিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে
দুজনে রিক্সা বসেছি।
জুই:- তোমাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর।
আমি:- ধন্যবাদ। তবে তোমাকে আজ অনেক
বেশি সুন্দর লাগছে।
জুই:- খবরদার ওল্টা পাল্টা মতলব করলে খুনন করে
ফেলবো।
আমি:- আরেনা, নামো আমরা চলে এসেছি। তারপর
জুইকে সাথে নিয়ে বাড়ীর ভিতরে ডোকছি
জুইকে আম্মু দেখে অনেক খুশি হয়ছে। তারপর
আমাকে আর জুইকে রুমে নিয়ে গেলো, আমার
রুমটা গুচিয়ে রাখছে আম্মু।
জুই:- আন্টি আপনি কেমন আছেন?
আম্মু:- আন্টি বলোনা মা বলবে? আর আমি তো
তোমার মায়ের মত।
জুই:- ঠিক আছে, তখনি আপু এসেছে।
আপু:- সৌরভ তুই কেমন আছিস?
আমি:- ভালো, আপনি কেমন আছেন?
আপু:- হ্যা ভালো, আর জুই তুমি কেমন আছো?
জুই:- জি আপু আমি ভালো আছি। আচ্ছা আপু
আপনাদের দাদি নাকি অসুস্থ?
আপু:- দাদি অসুস্থ মানে? তোমাকে কে বলছে?
জুই:- সৌরভ বলছে, আর ওনি নাকি আমাকে দেখতে
চাইছে?
আপু:- দাদি তো অনেক আগে মারা গেছে,
তাহলে ওনি তোমাকে দেখতে চাইবে কেন?
আর তখনি আমি রুম থেকে এক দৌর দিয়ে বেরিয়ে
যেতেছি আর তখনি,,
চলবে,,,