ও আমায় ভালোবাসেনি

ও আমায় ভালোবাসেনি- সিজন ২ – Part- 06

আজ মিথির বিয়ে । সকাল থেকে ভীষণ ব্যস্ত সে ।
বন্ধু বান্ধব সহ বাড়ি ডেকোরেট করা , রাফনিদের ভালোমন্দ খেয়াল রাখা সব কিছুর দায়িত্ব সে পালন করছে । মিতা রান্নাবান্না’র দিক টা দেখছেন রাফনিদের মা সহ । মেয়ের কাজকারবার দেখে তার মেজাজ প্রচন্ড গরম হয়ে আছে । আজ তার বিয়ে অথচ তার এ নিয়ে কোনো এক্সাইটমেন্ট নেই । অন্য কণেরা যেখানে লজ্জায় ভয়ে সংকুচিত হয়ে থাকে সেখানে সে কাজ করে বেড়াচ্ছে ।
— মা মিশমি দের কিছু খেতে দাও তো ওরা সকাল থেকে না খেয়ে আছে ।
রান্নাঘরে তাড়াহুড়ো করে এসে বললো মিথিলা ।
— এ্যাই তুই দাঁড়া আগে , এদিকে আয়?
— উফফ মা কাজ আছে ওদিকে জলদি বলো তো?
— বলবি তো তুই । বিয়েটা কার রে?
— ও মা কেনো আমার । এভাবে তাকানোর কি আছে মা? বাড়ির বড় মেয়ে আমি । কাজকর্ম তো আমাকেই করতে হবে আর যে মেয়ের বাবা নেই তাকে নিজেই নিজের ঢাল হতে হয় মা ।

এই যে আমি নিজে সব দায়িত্ব পালন করছি না? আমার ভেতর থেকে অদ্ভুত একটা শক্তি , মনোবল আসছে । কে যেন আমাকে শক্তি যোগাচ্ছে মা ।
— তুই বড় হয়ে গেলি রে মিথি ।
— হবো না? আজ আমার বিয়ে ভাবতে পারছো?
— সেটাই ।
— আচ্ছা মা এখন আমি যাই আবার তৈরিও তো হতে হবে তাইনা?
— একটু কিছু মুখে দে । খাটছিস সকাল থেকে ।
— তৈরি হই তুমি খাবার নিয়ে এসো তখন ।
— আচ্ছা ঠিকাছে ।
মায়ের গালে একটা চুমু খেয়ে চলে গেলো মিথি ।
মিতা শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছে বললো, “দেখলি রাফিয়া আমার মেয়ে কত দায়িত্বশীল হয়ে গেছে”
— হ্যাঁ আপা সত্যিই বাচ্চাটা আমাদের বড় হয়ে গেলো ।
–আজ তোমার ভাইজান থাকলে কত খুশি হতেন ।
— থাক আপা শুভ দিনে এমন কাঁদতে নেই । দেখি চোখ মুছুন তো । বাকি রান্নাটা সেরে নিই আবার মেয়েকে তৈরি করতে হবে তো?
— হ্যাঁ হ্যাঁ তুমি ফিরনি টা দেখো আমি একটু ওর গয়নাগুলো বের করি ।

রাফনিদ মিথিলার ঘরে শুয়ে শুয়ে মোবাইলে কথা বলছে তানভীরের সাথে ।
লাস্ট মুহুর্তে মিথিলার কাপড়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেটা নিয়ে গেছে টেইলরের কাছে ।
বসে বসে বোরিং সময় পার করার চাইতে রাফনিদের সাথে কথা বলাটাই শ্রেয় মনে হচ্ছে তার ।
ইতোমধ্যে মিথি গোসল সেরে বেরিয়েছে , তানভীর আসলে কাপড়টা পরে নিবে ।
রাফনিদ কে কথা বলতে দেখে চুল শুকোতে শুকোতে প্রশ্ন করলো_
— তোর জামাই কে জিজ্ঞেস কর তো নিদ ও কখন আসবে?
তোর জামাই কথাটা শুনে ভারী মজা পেলো রাফনিদ ।
আহ্লাদী হয়ে প্রশ্ন করলো_
— ওগো তুমি আসবে কখন?
— আর আধঘণ্টা লাগবে মামা বলছে ।
— আপু আর আধঘণ্টা লাগবে ।
— জলদি আসতে বল বেক্কল টাকে ।
— ওগো বেক্কল জলদি এসো ।
বলে হাহা করে হেসে উঠলো রাফনিদ । তানভীর ভ্রু কুঁচকে বললো_
— তুমিও আপুর মত শুরু করলে?
— ননদ যেখানে ভাবীও তো সেখানেই থাকবে তাই না?
— আসছি আমি তারপর হচ্ছে তোমার ।
— আগে এসো তারপর দেখা যাবে । বাই আমার বেক্কল টাহ৷
দুষ্টু হেসে ফোন কেটে দিলো রাফনিদ ।
মিথি ওদের খুনসুঁটি দেখে হেসে ফেললো ।
কিছু বলতে যাবে তার পূর্বে দরজায় নক হলো ।
ফয়সাল দাঁড়িয়ে আছে হাসিমুখে ।

কিঞ্চিৎ অবাক হয়ে মিথি প্রশ্ন করলো_
— আপনি?
— হ্যাঁ বিয়ের কণেকে দেখতে এলাম ।
— ভেতরে আসুন?
— নাহ্ মেয়েদের রুমে যখন তখন যেতে নেই । তুমি কষ্ট করে একটু বাইরে আসবে? একজনের সাথে দেখা করাবো ।
— বিয়ে করে নিয়েছেন আপনারা?
— তুমি বুঝে গেছো?
মিথি একটা ব্যাথাতুর হাসি ফেরত দিলো ।
ড্রয়িংরুমে বসে আছে চারুলতা । সারা বাড়ি ফুলের গন্ধে ম’ম করছে , নিশ্চয়ই বাড়িটাও সুন্দর সাজানো হয়েছে?
ওর বিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে হয়নি স্রেফ রেজিস্ট্রি বিয়ে । ফয়সাল বলেছে চাকরি’র দু তিন বছর যাক , চারুলতার ট্রিটমেন্ট করাবে তারপর ওকে স্বপ্নের মত বৌ সাজাবে । তারই অপেক্ষায় আছে চারুলতা । মনে কিঞ্চিৎ আশা জেগেছে আলোমাখা পৃথিবীটাকে দেখার , ফয়সালের সাথে নতুন করে বাঁচার ।
— চারু দেখো কাকে নিয়ে এসেছি ।
ফয়সালের গলার আওয়াজ পেয়ে ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তবে পা রাখলো চারুলতা ।
মিথি ওর পাশে বসে বললো_
— ভালো আছো আপু?
— হ্যাঁ । তুমি ভালো আছো? অনেক শুভকামনা তোমার নতুন জীবনের জন্য ।
— থ্যাংক ইউ আপু । তুমি এসেছো আমি খুব খুশি হয়েছি ।
— আমারও তোমার জীবনের এমন শুভ দিনে এসে ভালো লাগছে । তোমাকে দেখতে পারছি না কিন্তু তোমার কথা ভারী মিষ্টি গো ।
— আমাকে ছুঁয়ে দেখে বলো তো আমি কেমন দেখতে?
চারু মিথির পুরো মুখে হাত বুলিয়ে দেখলো ।
অজান্তেই ওর চোখে পানি এসে গেলো । চোখভর্তি পানি নিয়ে মিষ্টি হেসে বললো_
— তুমি খুব সুন্দর আপু । তোমার গাল দুটো ভারী মিষ্টি , তুলতুলে ।
মিথি হেসে ফেললো ।
— আমি কিন্তু তোমার চাইতে কম সুন্দর । ফয়সাল ভাই লাকি তোমাকে পেয়ে ।
— কি যে বলো! লাকি তো আমি সে আমাকে তার সাথে জুড়ে নিয়েছে ।
— তোমরা দু’জনে লাকি তোমাদের দু’জন কে পেয়ে আর আমি লাকি তোমাদের সাথে পরিচিত হয়ে ।
তিন জনেই হেসে উঠলো এবার।
__
অন্তর বেশ আগ্রহ নিয়ে শব্দ’র তৈরি হওয়া দেখছে ।
শব্দ বেশ কয়েকটা শেরওয়ানি কিনেছিলো এখন সবগুলো ট্রায়াল দিয়ে দিয়ে দেখছে । তার বদ্ধমূল ধারণা তাকে একটাতেও মানাচ্ছে না । গত দেড় ঘন্টা যাবৎ সে প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে কাপড় পাল্টাচ্ছে আর অন্তর কে এসে জিজ্ঞেস করছে কোনটা মানাবে ।
অন্তর বলে স্যার আপনাকে তো সবগুলিতেই মানায় ।
এটা শুনে শব্দ আরো বিরক্ত হয় ।
এবারে কালো শেরওয়ানি টা পরে আয়নায় নিজেকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে শব্দ এমন সময় কলিংবেল বেঁজে উঠল ।
— অন্তর দেখো তো কে এলো?
— জ্বী স্যার জ্বী স্যার ।
বলে অন্তর বেরিয়ে গেলো ।
পাঁচ মিনিট পর ফেরত আসলো একটা শপিং ব্যাগ হাতে । শব্দ আয়নার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো_
— কে?
অন্তর বিশ্ব জয়ী হাসি দিয়ে বললো_
— স্যার আর টেনশন নেই এবার আপনাকে পারফেক্ট গ্রুম লাগবে ।
— মানে?
— এই দেখুন স্যার আমার হাতে কি?
— কি?
— স্যার ম্যাম আপনার জন্য নিজ হাতে ডিজাইন করা শেরওয়ানি পাঠিয়েছেন । দেখুন?
— কই দেখি দেখি?
শব্দ এক প্রকার লাফিয়ে এসে ব্যাগটা নিলো ।
ব্যাগ থেকে বের করতেই দেখা গেলো টিল ব্লু কালারের কারচুপির কাজ করা চমৎকার একটা শেরওয়ানি । তার সাথে একটা লেটারও আছে ।
লেটার টাতে তিন লাইনে লেখা_
— এহসান সাহেব আপনার স্বপ্নে আমি রাঙালাম নিজেকে । আপনিও এবার আমার শখের রঙে নিজেকে রাঙান?
আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো । আচ্ছা বলুন তো শেরওয়ানি টা কেমন হলো?
শব্দের ঠোঁটের কোণে হাসির আভাস । ও মনে মনে বললো,”এর উত্তর আমি সামনা সামনিই দিবো”

সন্ধ্যার একটু পর বের হলো শব্দ তার চাচাতো ভাই বোন , অন্তর আর ঐশী । বরযাত্রী বলতে আপাতত এই কয়জনই। শব্দের চাচা বেশ অসুস্থ থাকায় আসতে পারেন নি তবে তিনি দুআ করে দিয়েছেন ।
শব্দ কে গাড়িতে বেশ ক্ষেপাচ্ছে ওরা সবাই । শব্দ মাঝেমধ্যে চোখ গরম করে তাকাচ্ছে মাঝেমধ্যে লজ্জা পাচ্ছে ।
রাইদের সাথে কথা হয়েছে রাইদ সোজা মিথির বাসায় পৌঁছে যাবে বলেছে । এ নিয়ে একটু মন খারাপ শব্দের । বিশেষ দিনেও তার কাজ!
এদিকে মিথিদের বাসায় পৌঁছুতে একটা ব্রিজ ওভারটেক করতে হয় । ওখানেই এক সাইডে গাড়ি দাঁড় করিয়ে গাড়িতে হেলান দিয়ে বসে সিগারেট টানছে । রফিক বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে ওর কাজকারবার দেখে ।
প্রায় দেড় ঘন্টা হলো তারা এভাবেই বসে আছে ।
রফিকের ইচ্ছে করছে কিছু কথা শুনিয়ে দিতে কিন্তু বস বলে বলতে পারছে না ।
রাইদ অবশ্য নিজে থেকেই বললো_
— রফিক তুমি কি বিরক্ত হচ্ছ?
— স্যার আমি কিছুই বুঝতে পারছি না আমরা এখানে কেনো আমরা তো এসেছিলাম বিয়ে উপলক্ষে ।
— হ্যাঁ হ্যাঁ তার জন্যই তো এখানে আছি । গ্রুমের অপেক্ষা করছি ।
— গ্রুমের অপেক্ষা? স্যার তা’হলে তো আমরা শব্দ স্যারের বাসাতেই যেতে পারতাম ।
উত্তরে হাসলো রাইদ ।
— ঘড়িতে দেখো তো ক’টা বাজে?
— স্যার আটটা ।
— ওহ্ হো । দেখি আমার ফোনটা দাও?
রফিক গাড়ি থেকে ফোনটা এনে দিলো রাইদের হাতে ।
রাইদ কাকে যেন ফোন করে বললো__
— পজিশন নে আর পাঁচ মিনিট ।

— …
— জাস্ট ফাঁকা বুলেট ছুঁড়বি । দু একটা টায়ারে । গাড়ি থেকে মানুষ বের হওয়ার পর ভয় দেখানোর জন্য ছুঁড়বি কয়েকটা আর টিয়ার শেল ছুঁড়বি ।
–…
— আরে বাবা বাকি কাজ আমার ।
— ..
— ভেরি গুড । রাখছি তাহলে । পজিশন নে ।
ফোন রেখে সিগারেটে শেষ টান দিয়ে নেমে পড়লো রাইদ ।
রফিক বোকার মত প্রশ্ন করলো_
— স্যার কি করবেন আপনি? কিছুই তো বুঝতে পারছি না ।
— বুঝবা বুঝবা এখনই বুঝবা ।
রফিক এই মুহুর্তে গাড়ি নিয়ে ইউ টার্ন দিয়ে দশ মিনিট দূরের কোনো জায়গায় চলে যাবা তুমি ।
— কিন্তু কেনো স্যার?
— আতশবাজি হবে এখন বিয়ের আতশবাজি ।
— স্যার?
— কথা বন্ধ রফিক । গো
গাড়ি থেকে একটা প্যাকেট বের করলো রাইদ তার ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো চকচকে এম ১৯১১ ।
রফিক বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে ।
তুতলিয়ে প্রশ্ন করলো_
— স্যার পিস্তল?
— রফিক, গো ।
শীতল গলায় কথাটা বলে সামনে হেঁটে গেলো রাইদ৷
রফিক পেছন থেকে অস্থির হয়ে বললো_
— স্যার আল্লাহর দোহাই লাগে কোনো ক্রাইম করবেন না স্যার । কি চলছে আপনার মাথায়? স্যার…
রাইদ সকল ডাক উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে থাকলো ।
আস্তে আস্তে ল্যাম্পপোস্টগুলোও বন্ধ হতে থাকলো ।
পুরো ব্রিজজুড়ে পিনপতন নীরবতা । গুমোট অন্ধকারে গা ছমছমে ভাব ।
রফিক গাড়ির কাছেই দাঁড়িয়ে আছে এখনো সে বোঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে ।
বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না তাকে ।
ওপাশ থেকে একটা কার আসতে দেখা গেলো ।

তাদের গাড়ি ক্রস করে যখন কার টা কিছুদূর সামনে গেলো ঠিক তখনই আচমকা গোলাবর্ষণ শুরু হলো ।
গাড়িটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আঁকাবাঁকা চলে থামলো ।
কয়েকজন ছেলেমেয়ের ভীতু গলায় চিৎকার শোনা গেলো ।
গাড়ি থেকে নামছে এটাও বোঝা গেলো । তারপর আবার গোলাগুলি ।
গুমোট অন্ধকারে আবার ছোঁড়া হলো টিয়ার শেল ।
মানুষ গুলো ফোনের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়েছিলো প্রথমে, কিন্তু টিয়ার শেল ছোঁড়ার পর বিচ্ছুরিত কিছু আলো দেখা গেলো এক মিনিটের জন্য । তারপর অবয়ব গুলোও মুছে গেলো ।
প্রায় সাথে সাথে এক যোগে ছয়বার গুলি ছোঁড়ার শব্দ হলো ।
এরপর আবার নীরবতা ।
রফিক চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ওদিকেই ।
বেশ কিছুক্ষণ পর অন্ধকারের ভেতর থেকে আরেকটি অবয়ব হেঁটে আসছে ।
একসময় রফিক বুঝতে পারলো এ আর কেউ নয় তারই বস রাইদ ।
গাড়ির কাছাকাছি এসে গম্ভীর কণ্ঠে রাইদ বললো_
— রফিক তুমি এখনো যাওনি? ওঠো গাড়িতে জলদি ।
বিনা বাক্য ব্যায়ে রফিক গাড়িতে উঠে গেলো ।
ইউ টার্ন নেবার সময় জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখলো অদূরে একটা একটা করে ল্যাম্পপোস্ট জ্বলে উঠছে । একজন করুণ সুরে উচ্চারণ করছে_
— স্যার? শব্দ স্যার আপনি ঠিক আছেন? স্যার চোখ খুলুন?
বিস্ময়ে হতবাক রফিক এবার রাইদের দিকে তাকালো ।
পুরো শার্টে আর মুখে রক্তের ছিঁটেফোঁটা । গম্ভীরমুখী রাইদ কে এই মুহুর্তে অসুর মনে হচ্ছে রফিকের কাছে ।
রফিকের গলা কেউ চেপে ধরেছে এমন অনুভূতি হচ্ছে ।
তবুও সে কোনোরকমে উচ্চারণ করলো_
— স্যার আপনি অসুর হয়ে গেছেন । আপনি নিজের বন্ধুকে মেরে দিলেন?
— হ্যাঁ দিলাম ।
— কি করে পারলেন স্যার?

–…
— স্যার উনি আপনার বন্ধু ছিলো । কিসের জন্য আপনার মাথায় খুন চাপলো স্যার? আপনি এমন নির্দয় হলেন কেনো?
চেঁচিয়ে বললো রফিক ।
রাইদ দ্বিগুণ চেঁচিয়ে উত্তর করলো_
— যা করেছি ঠিক করেছি আমি । প্রতিশোধ নিয়েছি । একদিন বলেছিলাম না রাইদের কোনো বন্ধু নেই তো নেই । প্রতিশোধ নেয়ার জন্য করেছি আমি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ।
— প্রতিশোধ! স্যার কিসের এমন প্রতিশোধ যে আপনি নতুন একটা সংসার গড়ে ওঠার আগে ভেঙে দিলেন?
— সংসার ভাঙার জন্যই আমি এসেছি এখানে । এরা সবাই অপরাধী এদের কোনো অধিকার নেই সংসার গড়ার । এরা সংসার গড়বে কেনো? এরা তো সংসার ভাঙতে জানে । দশ বছর আগে এভাবেই এক জনের সুখের সংসার ভেঙেছিলো । মেহেদী রাঙা হাত আর দু চোখ ভর্তি রঙিন স্বপ্ন নিয়ে একজন বধূ বেসে অপেক্ষা করছিল তার স্বপ্ন পুরুষের । কই তাকে তো স্বপ্ন পূরণের সুযোগ দেয়া হয়নি তবে এদের স্বপ্ন পূরণ হবে কেনো?
ধ্বংসের শুরুটা এরা করেছিল শেষ আমি করবো । এই রাইদ করবে এর শেষ , প্রতিজ্ঞা রাইদের ।
— স্যার আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না । প্রতিশোধ , অতীত । কার অতীত স্যার?
— জানতে পারবে রফিক সব জানতে পারবে । খেলার দ্বিতীয় গুটি টা জিতে নিই আগে ।
— মানে?
— মানে? এই পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর ব্রাইড টার গায়ে আজ থেকে রাইদ নামক কলঙ্ক লেগে যাবে ।
কথাটা বলে উচ্চস্বরে হেসে উঠল রাইদ ।
রাতের নির্জনতা ছাপিয়ে কানে তীক্ষ্ণ ভাবে বাজছে হাসির শব্দ ।
রফিকের মনে হচ্ছে যেই মানুষ টাকে এতদিন হিরো ভেবে এসেছে সে আসলে হিরো নয় । সে সবচাইতে বড় ভিলেইন । তবে তার ভিলেইন হওয়ার পেছনের গল্পটা কি??
চলবে,