একঝাঁক জোনাকির আলো

একঝাঁক জোনাকির আলো !! Part 15

১৫.
—-যেহেতু একই ভার্সিটিতে যাবো তবে তুমিও আমার সাথে চলো সাফা।তোমার কি কোনো প্রবলেম আছে???
.
অভ্র সাফার দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে।নিভ্রের যেনো সারা শরীর জ্বালা করে কথাটা শুনে।বুকের ভেতর ধুক করে জ্বলে উঠে।নিভ্র তাকিয়ে থাকে সাফার মুখের দিকে।সাফার উত্তর জানা তার জন্য খুবই প্রয়োজন।অভ্র সাফার চাইতেও নিভ্রকে বেশি দেখছে।মনে মনে সে শুঁকনো হাসি হাসে।সাফার মাঝে ডুবে তার ভাই যে এমন আবুল হয়ে যাবে এটা সে ভাবতেও পারছে না।অভ্র আড়চোখে নিভ্রকে দেখছে।মুখটা ফেকাশে হয়ে আছে তার।সাফা একবার নিভ্র আর একবার অভ্রর দিকে তাকিয়ে চোখ বাঁকিয়ে বলে……..
—–“আরে ডাক্তার সাহেব না মানে নিভ্র ভাইয়া আপনি এখানে কি করছেন??”
.
নিভ্রের সাথে সাথেই রাগ উঠে।নাক লাল হয়ে যায়।মনে মনে দাঁতে দাঁত চেপে বলে……
—–“ভাইয়া!!!এতদিনে কি দেখে আমাকে ওর ভাইয়া মনে হয়েছে??অদ্ভুত??
.
অভ্র নিভ্রর দিকে ঘুরে তাকায়।নিভ্রর রাগ সাফা না বুঝলেও অভ্র বুঝতে পেড়েছে। নিভ্রর এমন কারন বিহিন রাগ দেখে অভ্র চশমাটা ঠিক করে।তারপর সাফার সাথে তাল মিলিয়ে বলে……
——“কিরে তুই এখানে??”
নিভ্র ভণিতা ছাড়াই বলে…..
—–“সাফার সাথে কাজ আছে আমার”
অভ্র অবাক হয়ে বলে……
—–“সাফার সাথে তোর কি কাজ??”
নিভ্র বিরক্তি নিয়ে তাকায়।অভ্র বুঝতে পারে।নিভ্রের রাগ ধীরে ধীরে মাথায় চড়ছে।তাই সে বলে……
—–“সাফা তুমি বরং নিভ্রের সাথে কথা বলে নেও।আসলে তুমি তো অসুস্থ আর নিভ্রতো ডাক্তার তাই না।ডাক্তার আর রোগীর অনেক কথাই থাকতে পারে তাই কথা বলে নেও।আমি ওয়েট করি।তারপরে একসাথে ভার্সিটি যাবো।”
নিভ্র পকেটে হাত ডুকিয়ে বলে….
—-“সাফাকে আমি দিয়ে আসবো।তুই বরং চলে যা।”
.
এক হাতে জড়িয়ে অভ্রর সাথে হাক করে নিভ্র।মুচকি হেঁসে বিদায় দেয়।অভ্র গাড়িতে বসে একটা দীর্ঘশ্বাস নেয়।একবার জানালার গ্লাস দিয়ে বাহিরে তাকায়।সাফা মুচকি হাসে।অভ্র গাড়ি স্টার্ট দেয়।বুকটা কেমন ভার ভার হয়ে আসছে।চোখ জ্বালা করছে।অভ্র চশমাটা বাম হাতে খুলে শার্টের হাতায় চোখ মুছে।কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার চশমাটা পরে নেয়।প্রথম সব কিছুতেই এক অদ্ভুত অনুভুতি লুকোনো থাকে।অভ্রর বেলাও তাই হচ্ছে। প্রথম ভালোবাসায় পরেছে তাই প্রথম কষ্টটা আঁকড়ে নিয়েছে তাকে।এ যেনো দম বন্ধ ভালোবাসায় আঁটকে আছে সে।
.
.
সাফা একচোখ ছোট করে ডান হাত কোমড়ে দিয়ে নিভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে।নিভ্র অভ্রর গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে।চোখ সরিয়ে সামনে তাকিয়েই দেখে সাফা কেমন সন্দেহ চোখে দেখছে তাকে।নিভ্র নিজেকে ঠিক করে বলে……
—-“এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??
—-“ভাবছি”
—–“কি ভাবছ(আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করে নিভ্র)
—-“আপনার কি কিছু হয়েছে??না মানে কেমন আজিব বিহেভ করছেন।আপনার সাথে আমার কি কথা থাকতে পারে??”
.
নিভ্র এবার নিভল।সে ভাবতে থাকে কেনো সাফাকে দাড় করিয়ে রেখেছে।এটা তো সে নিজেই জানে না।তার মনে হচ্ছে সে আন্ডার দ্যা কন্ট্রোলে নেই।নিভ্র ভাবে সাফাকে কি বলবে এখন।কি কথা বলবে বলে রেখেছে??এটা তো তার নিজেরই অজানা।এখন কি হবে??নিভ্র কিছুক্ষণ ভাবে তারপর বোকার মত হেঁসে বলে…..
—-“আসলে তোমার হাতের অবস্থা যানার ছিলো।”
.
সাফা যেনো আকাশ থেকে পরেছে।মুখটা হা করে ফেলে বলে…….
—-“এটা তো আপনি স্যারের সামনেও বলতে পারতেন??আসল কথা এটা না।আমি সব বুঝে গেছি আপনার কাহিনী। আসলে আপনি প্রতিশোধ নিতে চান। তাই না??
—–“হোয়াট?? “
—–“হোয়াট ফোয়াট বাদ দিন।আপনি আসলে আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে চান।ওই দিন আপনাকে রিক্সা থেকে নামাতে চেয়েছিলাম তাই।তাই আপনি নিজের গাড়ি থেকে মাঝ রাস্তায় নামিয়ে দিতে চান তাই না??
.
নিভ্র বেকুবের মত তাকিয়ে আছে।সে ভাবতেও পাড়ছে না সাফা এমন কিছু ভাবতে পারে।কোথাকার কথা কোথায় নিয়ে যায় এই মেয়ে।স্টুপিড একটা।নিভ্র চোখ রাঙিয়ে তাকায়।উঁচু শব্দে বলে……..
—-“শেট আপ সাফা।গাড়িতে বসো।”
.
সাফা ঝাঁড়ি খেয়ে গাড়ির দিকে যায়।সে জানে এই লোক তাকে নামিয়ে দিবে।তবুও নিভ্রের পাশে বসে যেতে ইচ্ছে করছে।সাফা সামনে বসতে চেয়েও বসে না। ভাবে নিভ্র যদি রাগ করে।তাই পিছনের দরজা খুলতে যায়।নিভ্র এগিয়ে এসে বলে……..
—–“তোমার কি আমাকে ড্রাইভার মনে হয়??”
—“হুম”(দরজা খুলতে খুলতে বলে)
—-“হোয়াট?? “
—“কথায় কথায় এখন তো আপনি চেঁচান। আজিব লোক।যে গাড়ি চালায় সেইতো ড্রাইভার। যেহেতু আপনি এখন গাড়ি চালাবেন তাই আপনি ড্রাইভার হবেন না তো আমি হবো বলেন??”
নিভ্র তাকালো।চোখ ছোট করে বলে…..
—-“আমার পাশে বসো।তা না হলে লোকেও আমাকে ড্রাইভার ভাববে।আমজনতার কাছে তো মাশহুর সাফার এত যুক্তি পূর্ণ কথা নেই।তাই তারা এটা বুঝতে পারবে না।”
.
সাফা চোখেমুখে রাগ দেখালো।কিন্তু মনে মনে খুশি হলো।খুশি মনে সে গাড়ির সামনের সিটে বসে পরে।নিভ্রও বসে।নিভ্র সাফার দিকে এক ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।সাফা চোখ ছোট করে কপাল কুঁচকায়। হাত নাড়িয়ে বলে…….
—-“কি?? এভাবে তাকিয়ে আছেন কা??”
.
নিভ্র জবাব দিলো না।সাফার দিকে তাকিয়ে থেকেই তার দিকে এগিয়ে আসে।সাফা নিভ্রকে এভাবে তার দিকে ঝুঁকতে দেখে সাথে সাথে চোখবুজে পিছনে হেলে পরে।চোখমুখ খিঁচে আছে সাফা।হাত দিয়ে সামনের উড়না খামঁছে ধরে সে।গালের সেই ভয়ঙ্কর টোল দৃশ্যমান হয়।নিভ্র তাকায় সাফার দিকে।কয়েক ইঞ্চি দূরত্ব। নিভ্রর মন বলছে এই দূরত্ব মিলিয়ে দিতে।আর মস্তিষ্ক বলছে ভুলেও না নিভ্র।কিন্তু নিভ্রর খুব ইচ্ছে হচ্ছে এই ভয়ঙ্কর টোলে নিজের শুষ্ক লাল ঠোঁটজোড়া ডুবিয়ে দিতে।সাফার বুকের বা পাশের সেই অস্থির হৃদপিন্ডটা ধুকপুক ধুকপুক শব্দ করছে।নিভ্র থমকে থাকে কিছুসময়। কান খাড়া করে শুনে শেই শব্দ।শব্দ শুনেই মনে হয় নিজের শব্দটাও দ্বিগুণ তালে বাড়ছে।নিভ্র আবার সাফার টোলটাতে তাকায়।সাফাকে চোখমুখ খিঁচে থাকতে দেখে নিভ্র মুচকি হাসে।নিজেকে সমলায় সে।ডান হাত দিয়ে সাফার সিট বেল্টা টেনে লাগিয়ে দেয়।সাফার দিকে একবার চোখবুলিয়ে নেয়।সাফার ডান চোখের পাশ ঘেঁষে আসা চুলগুলো ফু দিয়ে সরিয়ে দেয়।সাফা মুহূর্তেই চোখ খুলে তাকায়।নিভ্র একটা বাঁকা হাসি দেয়।সাফা অবাক সে হাসি দেখে।ভয়ে কিছুক্ষণ আগেও তার অবস্থা খারাপ ছিল।সে তো যানে এই সব মডেল ফডেলের কেরেক্টার সার্টিফিকেট খুবই ভয়াবহ।নাঙ্গুপাঙ্গু ড্রেসস পড়া মেয়েদের সাথে এরা ইটিসপিটিস করে ছবি তুলে ছি ছি..ভাবতেই তার ঘিন্না করে।নিভ্রকে তার তেমন মনে না হলেও ভয় পেয়েছিলো।সাথে এক ভায়াবহ অনুভুতির শিকার হয়েছে।সাফা জানালার দিকে তাকিয়ে শ্বাস নেয়।নিভ্র গাড়ি স্টার্ট দেয়।মনে মনে হাসি পাচ্ছে তার।সাফার ভয়াত্নক মুখ দেখে এক প্রকার মজাই পেয়েছে সে।দুজনের মাঝে আর কথা হলো না।নিভ্র সাফাকে তার ভার্সিটির সামনে নামিয়ে দেয়।সাফা নেমে পরে।সোজা হেঁটে কিছু দূর চলে যায়।নিভ্র তাকিয়ে থাকে।সাফা একবার পিছনে ফিরে তাকায়।আর একটা মুচকি হাসি দেয়।নিভ্র তাকিয়ে থাকে সেই হাসির দিকে।সাফা অনেক আগেই তার চোখের সামনে থেকে মিলিয়ে গেছে।কিন্তু সে এখনো তাকিয়ে আছে।তার চোখের সামনে এখনো সেই হাসি মাখা মুখ ভাসছে।
.
.
সাফা মুখ ফুলিয়ে বসে আছে।আর তার এক পাশে ঝুমা।সাথে অভি ভাইয়া।সাফা ভাবতেও পারছে না তার প্রিয় থেকে প্রিয়লতা কিভাবে চুটিয়ে ৫বছর প্রেম করেছে আর সে টেরও পায়নি।কিভাবে এত নিষ্ঠুর হয় এরা এটাই ভেবে পাচ্ছে না সাফা।সাফা কপাট রাগ নিয়ে এবার গিজগিজ করে উঠে।ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে……
—–“বন্ধু মানে হারামি আই নো। ইউ নো। এন্ড উই অল নো।কিন্তু ভাইয়া মানে তো একগুচ্ছ ভালোবাসা। তাহলে এই একগুচ্ছ ভালোবাসা হয়ে আপনি কিভাবে পারলেন আমাকে ধোঁকা দিতে??কিভাবে ভাইয়া??
.
সাফার এমন কাঁদোকাঁদো কথা শুনে সাব্বির বলে……
—-“এমন একটা ভাব নিচ্ছিস মনে হচ্ছে অভি ভাইয়া ঝুমার সাথে ৫বছর আর তোর সাথে ১০বছরের রিলেশনশিপে ছিলো। এখন তোকে ছ্যাঁকা দিয়ে বেকা করে দিয়েছে।”
.
কথাটা বলেই সাব্বির হু হা করে হেসেঁ উঠে।সাফা রাগে ফঁসফঁস করে।অভি চোখ রাঙিয়ে চুপ করতে বলে সাব্বিরকে।সাব্বির ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করে বসে।সাফা ক্যান্টিন থেকে বেড়িয়ে যেতে নেয়।অভি কান ধরে ঝুমাকেও ইশারা করে।ঝুমাও কান ধরে।দুজনেই এক সাথে বলে……
—-“স্যরি….
.
সাফা দাড়িয়ে মুখ ভেঙচি কাঁটে।অভি আর ঝুমা কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে……
—-“স্যরি বনু আর এমন হবে না।আসলে আমাদের মাঝে রিলেশনশিপ ছিলো না এত দিন।আজই হলো।এই পাঁচ বছর আমরা একে অপরকে পছন্দ করতাম।তাই তোমাকেও বলি নি।তাই স্যরি।”
—-“যাও এবারের মত মাফ করলাম।তবে শর্ত আছে।”
—“যা বলবে তাই করবো।
—–“আইসক্রিম খাওয়াতে হবে।রাজি বলো??”
অভি চেঁচিয়ে বলে……
—-“অবশ্যই “
.
.
নিভ্রের কাজে মন বসছে না।হসপিটাল থেকে মডেলিং এর কাজে এসেছে একটা জায়গায়।কিন্তু শুটিং এ মন দিতে পারছে না।কেমন যেনো হাঁসফাঁস অবস্থা তার।নিভ্রের মুখে বিরক্তি দেখে আরিফ এগিয়ে এসে বলে……
—–“স্যার অসুস্থ নাকি??”
—“না তেমন কিছু না।তবে কিছুদিন ভালো ঘুম হচ্ছে না।এর কারন বলতে পারবে???”
আরিফ যেনো ভূত দেখেছে।চোখ বড় বড় করে বলে….
—“স্যার ডাক্তার তো আপনি।আমি না।তাহলে আমি কিভাবে যানবো??”
নিভ্র বিরক্ত মুখে আরিফের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে শুটিং বন্ধ করতে বলে।ভালো লাগছে না তার এখন।
.
.
সাফা আইসক্রিম হাতে হেঁটে হেঁটে আসছে।আইসক্রিম খাওয়ায় তার ১০০%মনযোগ। গেটের বাইরে এসে একবার রিক্স খুঁজে কিন্তু পাচ্ছে না।তাই আবার আইসক্রিম খাওয়ায় মনযোগ দেয়।খেতে খেতেই সামনে এগিয়ে যায়।রাস্তা ক্রস করতে চায় সে।কিন্তু তার আগেই একটা গাড়ি সামনে থেকে এগিয়ে আসে।গাড়ির হর্ন বাজাতেই সাফা সামনে তাকায়।ভয়ে চোখ বুজে নেয়।হঠাৎ কেউ ঠাসস করে হাতে টান দেয়।টান খেয়ে সাফা শক্ত কিছুতে পরে।সাফা চোখ খুলে দেখে নিভ্রের বুকে সে লেপটে আছে।নিভ্র রেগে সাফাকে ঝাঁকিয়ে বলে……
—-“চোখ কি আকাশে রেখে হাঁটো নাকি??আমি ঠিক সময়ে না আসলে কি হতো যানো??
.
সাফা হা করে নিভ্রের রাগি মুখ দেখছে।ভালো লাগছে তার এটা।রাগলেও কিউট লাগে লোকটাকে।নাকটা কেমন লাল হয়ে যায়।একদম অগীর নাকের মত।এখন সাফার নিভ্রের লাল নাকটা টেনে দিতে ইচ্ছে করছে।সাফা নিভ্রের নাকের দিকে তাকিয়ে হেঁসে দেয়।নিজের এমন আজে বাজে চিন্তায় তার নিজেরই হাসি পাচ্ছে।সাফার হাসি দেখে নিভ্র আরো রেগে যায়।রেগে কঠোর গলায় বলে…..
—-“পাগল হয়ে গেলে নাকি??আমি তোমাকে সিরিয়েস কথা বলছি সাফা??কাকে কি বলছি??একটা ডাফার মেয়ে।”
নিভ্র রেগে সাফার হাত ছেড়ে দেয়।সাফা বিরক্ত হয়।সাফে তার রাগও লাগে।কি সুন্দর রেগেও আলতো হাতে ধরে রেখেছিলো তাকে।সে তো যানে নায়করা রেগে গেলে ভয়ঙ্কর প্রানীর মত বিহেভ করে।কিন্তু নিভ্র কত সুন্দর করে নিজের কোমল হাতে ধরেছে তাকে।ইশশশ্।এত নরম হাত হয় না কি কারো??সাফার মুখের উপড় নিভ্র তুরি বাজালো।সাফার হুশ ফিরে।দাঁত কেলিয়ে সাফা বলে……
—-“আইসক্রিম খাবেন??”
সাফার আকর্ষীক এমন প্রশ্নে নিভ্র হতবাক।একবার আইসক্রিমের দিকে একবার সাফার দিকে তাকায় সে।সাফা ইশারা করে আইসক্রিম দেখায়।নিভ্র এক চোখ ছোট করে।তারপর নিজেকে সামলে বলে…..
—-“তোমার মুখের আইসক্রিম আমি খাবো??আর ইউ ম্যাড??”
সাফা কপাল কুঁচকালো।নাক ফুলিয়ে বললো….
—-“আমি কি আমারটা খেতে বলেছি নাকি??আপনাকে কিনে খেতে বলেছি।এমনেও আমি আইসক্রিমের সাথে কখনো কম্প্রোমাইজ করি না।আপনাকে দেওয়া তো দূরের কথা।বুঝলেন???”(মুখ বাঁকিয়ে বলে)
নিভ্রর সাফার কথা শুনে রাগ উঠে।মেয়েটা তাকে এভাবে বলতে পাড়লো।নিভ্র সাফাকে বললো…
—-“এই আইসক্রিমের জন্যই তুমি আজকে গাড়ির নিচে পরতে ইডিয়ট একটা”
—“পড়লে পড়তাম।তবুও আইসক্রিম শহীদ বলা হতো বুঝলেন??”
নিভ্র অবাক হয়ে ভাবে এই মেয়ে কি কি বলে আল্লাহ মালুম।তবুও আইসক্রিমটা দেখেই নিভ্রর রাগ উঠে তাই সাফার হাত থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়।সাফা মাত্র আইসক্রিমটা আবার মুখে দিতে নিয়েছে। মুখে যাওয়ার আগেই এই অবস্থা। সাফার তো কান্না কান্না ভাব।আইসক্রিমটা কিভাবে শহীদ হয়ে পিছঢালা রাস্তায় শুয়ে আছে।সাফা রেগে নিভ্রর দিকে তাকায়।চেঁচিয়ে বলে……
—–“আপনি এতটা নিষ্ঠুর কি করে হতে পারেন??কি করে??দেখেনিয়েন আপনার প্রিয় জিনিসও এভাবে শহীদ হয়ে শুয়ে থাকবে কোনো একদিন।তখন বুঝবেন।শয়তান লোক একটা।”
.
নিভ্রর মাথায় হাত।তাকে শয়তান বলেও কেউ আক্ষা দিতে পারে এটা সে স্বপ্নেও ভাবেনি।জীবনটাই তার কাছে এখন তেজপাতা মনে হচ্ছে। যে তেজপাতা সাফা ছিড়ে ছিড়ে নিজের রান্নায় ব্যবহার করছে😒।হুট করেই মনে পরে তার মুখে মাক্স নেই।নিভ্র দ্রুত চারদিকে তাকায়।এখনো কেউ দেখছে না তাদের তবে সাফা আইসক্রিম শহীদ জননীর দুঃখে যে কোনো সময় দেখার সম্ভাবনা আছে।নিভ্র একটু গাড়ির দিকে ঝুঁকে দাড়ায়।আরিফ আহাম্মকের মত সব দেখছে আর ভূত দেখার মত চমকাচ্ছে।সাথে ড্যাব ড্যাব করে সাফাকে দেখছে।মেয়েটার দুঃখে তারও দুঃখ লাগছে।আহারে…বেচারির আইসক্রিম.. 🥺😔
সাফা মুখ ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকায়।রাগে দুঃখে তার কান্না আসছে।আইসক্রিমের শোকে তার চোখ দিয়ে যে কোনো সময় কান্নারা হানা দিয়ে আসতে পারে।আইসক্রিম শহীদ হয়েছে তাই বুঝি একটুও কাঁদবে না??অবশ্যই কান্না করার প্রয়োজন আছে।শহীদ তো শহীদই হয়।তাই সাফারও উচিত হাউমাউ করে কেঁদেকেটে রাস্তার আমজনতাকে একসাথে করে নিভ্রের মাথা ইট দিয়ে ফাটিয়ে দেওয়া।……..🙄
.
.
#চলবে………..🍁

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *