উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত পর্ব- ০৩


নিশি আপিইইইইইই? ????
নিশি- কি হয়েছে আপু মনি। আমাকে কফি
দিয়ে যাও।
আমার মাথা ব্যথা করছে।

নিশি- আচ্ছা এখনি আনছি।

রাত্রি- ওই শয়তান টাকে এখন ভাগাই
কিভাবে ??/ কিছু বললে ত আবার কাকুকে
ফোন দিবে

নিশি- আপু মনি নেও তোমার কফি।
কি রান্না করব তোমার জন্য।

রাত্রি- কিছু রান্না করতে হবেনা।
আমি বাইরে যাচ্ছি।
নিমি দের বাসায়।
রাতে আসব কিনা জানিনা।
তুমি যা পারো রান্না করে বাসায় চলে যাও।

নিশি- আচ্ছা।

প্রহর – বাইরে থেকে ওদের কথা শুনলাম।
আমি রুমে ঢুকতেই নিশি বের হয়ে গেলো।

রাত্রি – এই তোমার সাহস ত কম না।
আমার পারমিশন ছাড়া আমার রুমে ঢুকেছ? ?
কোন সাহসে হ্যা।
কোনো মেনার নাই হ্যা? ?
মেদের রুমে নক করে ঢুকতে হয় জানো না? ?

প্রহর – সরি।

রাত্রি- সরি মাই ফুট।
বলে কফির মগ টা ওর দিকে ছুড়ে মারলাম।

প্রহর – কফির মগ টা ধরে ফেললাম।
রাত্রি- এক ফোটা কফি ও নিচে পরল না।
এত স্প্রিড? ?? কিভাবে? ??

আমি অবাক হয়ে গেলাম।

প্রহর – মগ টা পাশের টেবিল এ রাখলাম।
।কোথায় যাচ্ছ? ?

রাত্রি- সেটা তোমাকে বলার প্রয়োজন মনে
করছিনা।

বলে পাশ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম।

প্রহর- ওর হাত টা ধরলাম।
তুমি ভুলে যাচ্ছ আমি তোমার বডি গার্ড।
তুমি যেখানে যাবা আমিও যাব।
এটাই আমার কাজ।

রাত্রি- হাত ছাড়িয়ে নিলাম।
তোমাকে আমার সাথে যেতে হবেনা।
বুঝলে।
ছাড়ো।(
চিতকার করে)

প্রহর- ওর হাত ধরে ওকে সামনে নিয়ে
আসলাম।
ওর এক হাত ওর পিঠে ঠেকালাম।

রাত্রি- উফফ কি করছ ব্যথা পাচ্ছি।
ছাড়ো আমাকে।

প্রহর- আমি বলেছিনা আমি তোমার সাথে
যাব.

রাত্রি- ছাড়ো বলছি।
আমি কাকু কে ফোন করে বলে দিব।
তুমি আমার উপর জোর খাটাচ্ছ।

প্রহর- ওকে ছেড়ে দিলাম।
আমি আসলে সরি সরি।
আমি ওমন করতে চাইনি।
সরি।
তুমি কোথায় যাবে বল।
আমি দিয়ে আসছি।

রাত্রি- আমি কোথাও যাব না।
তুমি যাও।

প্রহর- কিছু বলতে নিয়েও বললাম না।
বের হয়ে গেলাম।
আউট হাউজে গেলাম।
দেওয়ালে ইচ্ছামত হাত বারি দিচ্ছিলাম।
আমার কাজ ওকে রক্ষা করা।
ওকে কস্ট দেওয়া না।
তারপর ও কেন নিজের রাগের উপর কন্ট্রোল
করতে পারিনা আমি।
গলা শুকিয়ে আসছে।মাথা প্রচন্ড ব্যথা
করছে।
এখনি টেবলেট খেতে হবে।

রাত্রি- আমার সাথে কেউ কখনও এমন ব্যবহার
করেনি।
আর ও আজ এসেই আমার উপর অধিকার
দেখাচ্ছে??
দাড়াও এখনি কাকু কে ফোন দিচ্ছি।
উফফ এখন ই ব্যস্ত দেখাতে হচ্ছে।
যত্তসব।

নিশি- আপুনি গেলেনা???

রাত্রি- না যাবো না।

নিশি- তাহলে খেয়ে নেও।

রাত্রি- খাবো না।
যাও ত।
আমার ভাল লাগছেনা।

নিশি- না খেলে আরও খারাপ লাগবে।
দাড়াও আমি খাবার আনছি।
রাত্রি- নিশি আপি খাবার আনল।
আমি ট্রে টা নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলাম।
যাওওওওওও।
আমি অন্য মনষ্ক হয়ে দরজা লাগাতে গিয়ে
আমার পায়ের নিচে কেটে গেলো।

আয়ায়ায়ায়া।

প্রহর- রাত্রির চিতকার মনে হচ্ছে? ?
আমি দ্রুত উপরে গেলাম।
রাত্রির রুমে ঢুকেই দেখি রাত্রির পা দিয়ে
অনেক রক্ত পরছে।
রক্ত দেখেই আমার অস্থির লাগতে শুরু করল।
রাত্রি ব্যথায় ছটফট করছে।
আর আমি অস্থিরতা তে।

নিশি- আরে আপুনি তোমার ত পা অনেক
কেটে গেছে।
আর আপনি দারিয়ে দেখছেন।
কই মেয়েটাকে হেল্প করবেন।
তা না।
প্রহর- আমার গলা আবার শুকিয়ে যাচ্ছে।
আমার পিপাসা বেড়ে যাচ্ছে।
আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারছিনা।
আমি বের হয়ে গেলাম রুম থেকে।

নিশি- কি লোক রে বাবা।
এ নাকি বডি গার্ড।
নিকুচি করেছে এমন বডি গার্ড এর।

প্রহর- আমি ঝরনা ছেড়ে তার নিচে দাড়িয়ে
গেলাম।ওইখানে থাকলে আর
নিজেকে কোন্ট্রল করতে পারতামনা।
আয়নার দিকে তাকালাম গলার চিহ্ন টা জ্বল
জ্বল করছে।
লাল হয়ে গেছে।
আমার রক্তের পিপাসা বেড়েই চলেছে।
আমি রুমে যেয়ে টেবলেট খুঁজতে লাগলাম।
টেবলেট খেয়ে এখন একটু ভাল লাগছে।
আমাকে দুর্বল হলে চলবেনা।
তাহলে রাত্রিকে রক্ষা করব কি করে? ওর
কিছু হতে দেওয়া যাবেনা।

রাত্রি- পায়ের ব্যথায় অবস্থা খারাপ।

পা নাড়াতেও পারছিনা।
এনা- কেমন আছ রাত??

রাত্রি- আরে এনা আনটি তুমি? ?( এনা আনটি
আমাদের ফেমিলি ডাক্তার। আর সে আমাকে
রাত বলেই ডাকে)

এনা- হুম তোমার নাকি পা কেটেছে।
তাই ইনফেকশন যাতে না হয় তাই ইঞ্জেকশন
দিতে হবে।
নিশি ফোন দিয়েছিল।

রাত্রি- মাথা খারাপ নাকি?? আমি দিব না।

প্রহর- ইঞ্জেকশন ত দিতেই হবে।
ডাক্তার দিয়ে দিন।

রাত্রি- তুমি আবার এসেছ।
যাও যাও।

প্রহর- ইঞ্জেকশন দিয়ে দিলেই আমি চলে
যাব।

এনা- তুমি কে?

প্রহর- পরে বলছি।
আপনি আপনার কাজ করুন।

এনা- ওকে শক্ত করে ধরো।

প্রহর- রাত্রি হাত ধরতেই দিচ্ছেনা।
খুব কস্টে শক্ত করে ধরলাম।

এনা- বাস হয়ে গেছে।

এখন রেস্ট নেও আমি আসি।
বললেনা তুমি কে?

প্রহর- বডি গার্ড ওর।
মারুক স্যার এপোয়েন্ট করেছে।

এনা- ওহ আচ্ছা।
আচ্ছা ওর খেয়াল রাখো।
আমি আসছি।
দরকার হলে আমাকে ফোন দিও।

আর হ্যা ওর পায়ে আবার নতুন করে ড্রেসিং
করে দিও।

প্রহর-নিশি কে খুজলাম।
কিন্ত পেলাম না।
মনে হয় চলে গেছে।
কিন্তু ওর ড্রেসিং চেঞ্জ করতে হবে।
আমি কি পারব? ? না আনাকে পারতেই হবে।
উপরে গেলাম।
রাত্রি শুয়ে আছে।
লাইট অফ করা।
বাইরের হালকা আলো ওর মুখে এসে পরছে।
আমি ওর মুখের সামনে যেয়ে খাটের পাশে
নিচে বসলাম।
ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
ওকে দেখলে আমি আমার পিপাসা ভুলে যাই।
অন্য পিপাসা মনে জাগে।
ওকে ভালিবাসার পিপাসা।
কিন্তু সেটা কখনই সম্ভব না মনে হয়।
রাত্রি একটু নড়ে উঠল।
আমি আমার মুখ টা ওর মুখের আরও কাছে
নিলাম।
ওকে ভাল মত দেখতে লাগলাম।
আজ নতুন না।
আমি ত ওকে প্রতি দিন ই দেখি।অনেক
আগের থেকেই।
ও জানেনা।
জানবেনা।
ওর হাত টা নিয়ে হালকা করে চুমু দিলাম।

চলবে
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!