আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 45

আরিয়ান বাড়ির বাহিরে বর সেজে দাঁড়িয়ে আছে। অবাক চোখে আরিয়ানের দিকে দেখছে অনু।
হঠাৎ এমন বর বেসে সেজে অাছে কেনো?
তাহলে কি রিমি আপুর বলা কথায় সত্যি হলো?
অনু সাত-পাঁচ চিন্তা করে অারিয়ান কে হারানোর ভয়ে দু নয়নে পানি ছলছল করতে শুরু করে দেয়।
অনুর অশ্রুভারাক্রান্ত চেহারা দেখে আরিয়ান দৌড়ে গিয়ে অনুকে জড়িয়ে ধরে।
আরিয়ান অনুকে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে অনু আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে খুব জোড়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দেয়।
আরিয়ান খুব শক্ত করে নিজের বুকের মাঝে অনুকে জড়িয়ে ধরে রাখে।
তার বুকে এভাবে আছড়ে পড়ে অনুর কান্না সে মেনে নিতে পারছিল না।
তাড়াতাড়ি করে নিজের বুকের কাছে থেকে অনুকে সরিয়ে সোজা করে দাঁড় করিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে, “এই পাগলি বউ আমার এভাবে কান্না করছো কেনো তুমি?”

অনু কান্না করতে করতে বলে,”তুমি কি আমাকে রেখে আবার অন্য কাউকে বিয়ে করতে যাচ্ছো নাকি? ”
আরিয়ান একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে,”তুমি এই ভয়ে কান্না করছো? কিন্তু আফসোস তুমি আসতে দেড়ি করে দিলে।
তোমার এই ভয়টা যে এবার সত্যি হয়ে গেছে!”
অনু আরিয়ানের পায়ের কাছে বসে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে শুরু করে দেয়।
অনুর এমন কান্না করা দেখে আরিয়ান চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলো।
এমন সময় আরিয়ানের পেছন থেকে ওর দাদী মা এসে কান ধরে বলে,”এই ফাজিল এই সব কি করছিস তুই আমার নাতবউ এর সাথে।”
আরিয়ান বলে,”আহ দাদী মা ব্যাথা লাগছে ছাড়ো প্লিজ। ”
অনুর তো এই দিকে কোনো খেয়াল নেই সে তো মনের সুখে কান্না করতে ব্যস্ত।
এদিকে অনুর পাশে বসে কাধে হাত রেখে রাহেলা চৌধুরী বলে,”এই বোকা মেয়ে এইভাবে কান্না করলে হবে? নিজের ভালবাসার উপর এই তোমার বিশ্বাস? এই বোকা মেয়েকে ভালোবাসে আমার নাতি এই পাঁচ বছর একা বিরহে পার করেছে ভাবা যায়।”
অনু রাহেলা চৌধুরীর মুখের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের পানি মুছে নেয়।
তাকে দেখতে থাকে অনেক সুন্দর একজন বয়স্ক মহিলা তার সামনে বসে আছে।
অনু আরিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে আরিয়ান দুষ্টুমি ভরা হাসি দিচ্ছে।
তা দেখে অনু তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আরিয়ানের বুকের উপর এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিয়ো বলতে থাকে,”বেয়াদব, ফাজিল, শিয়াল পণ্ডিতের বংশের শয়তান, বান্দরের নানা আমাকে এই ভাবে কাঁদানোর মানে কি? ”

অারিয়ান অনুর হাত ধরে বলে,”কেনো তোমার কোনো বিশ্বাস নেই নিজের ভালবাসার উপর? ”
অনু বলে,”আমি নিজের থেকে বেশী বিশ্বাস তোমাকে করি।কিন্তু তোমার সাথে এতোদিন বিয়ে হয়েছে আমাদের মধ্যে কোনো স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হয়নি। হয়তো সেই কারণে তুমি আবারো বিয়ে করতে চাও।”
এই কথাটা বলার সাথে সাথে আরিয়ান অনুর গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে,”এই তোমার ভালবাসা?তুমি এতোদিনে এই চিনেছো আমাকে?
আমি কি তোমাকে শুধু ভোগের বস্তুু মনে করি? তোমার চিন্তা এতো খারাপ হলো কি করে অনু?”
অনু নিজের কান ধরে মাথা নিচু করে আরিয়ান কে ‘সরি’ বলে।
আরিয়ান অনুর দিকে না তাকিয়ে বলে,”তোমাকে ভোগের বস্তুু মনে করি না।যদি তাই মনে করতাম তাহলে কখনো তোমার জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করাতাম না।
নিজের চাহিদা পূরণের জন্য অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতাম বুঝেছ?”
অনু আশেপাশে না তাকিয়ে সোজা আরিয়ানের গালে চুমা দিয়ে বলে,”আমার ভুল হয়েছে তার জন্য কি এখন আবারো সেই অতীতের জন্য মশার মতো গান শোনাতে হবে তোমার? ”

আরিয়ান বলে,”ওহ তুমি বললে সেগুলো কথা আর আমি বললে সব কিছু মশার গান বাহ দারুণ তো।”
রাহেলা চৌধুরী বলে ওঠে,”ওরে দুষ্টু আর মিষ্টি তোরা এবার থাম রে।নিজেরা ঘরে গিয়ে না হয় রোমান্টিক ঝগড়া করবি।সবার সামনে এতো ঝগড়া করে কি আছে? ”
অনু আরিয়ানের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,”এই সুন্দরি মহিলা কে? ”
আরিয়ান তার দাদী মা’র কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে
ধরে বলে,”আমার জানেমন,আমার কলিজা, আমার একমাত্র দাদী মা রাহেলা চৌধুরী। ”
অনু বলে,”ওহ আচ্ছা তাহলে উনি আমার সতীন? ”
রাহেলা চৌধুরী অনুর কাছে এসে ওর কান ধরে বলে,”ওরে দুষ্টু মেয়ে আমাকে সতীন বলা হচ্ছে তাই না? ”
অনু দাদী মা কে জড়িয়ে ধরে বলে,”আমার বরের এতো প্রিয় যে জন তাকে তো আমি সব থেকে বেশি আপন জন মনে করবো।”
রাহেলা চৌধুরী বলে,”অনেক কথা হয়েছে এবার দরজার সামনে চলো অনেক কাজ আছে।”
অনু বলে,”কি কাজ আছে দাদী মা? ”
রাহেলা চৌধুরী অনু আর আরিয়ানের হাত ধরে ওদের সদর দরজার সামনে দাঁড় করিয়ে সে ভেতরে গিয়ে বরণ ডালা নিয়ে এসে ওদেন দুজন কে বরণ করতে আসে।
তা দেখে অনু দাদী মা কে বলে,”দাদী মা এতো বরণ করার কি দরকার ছিল বলো।”
রাহেলা চৌধুরী বলে,”তুমি যেদিন এই বাড়িতে এসেছিলে সেদিন তোমাকে কেউ বরণ করে নাই।আজ আমি তোমাকে এই চৌধুরী বাড়ির বউয়ের মর্যাদা দিয়ে বরণ করে নিবো।

যেমন করে তোমার শাশুড়ি মা কে বহু বছর আগে নববধূ বেশে বরণ করে নিয়েছিলাম ঠিক সেই ভাবে।”
আয়েশা বেগম চুপচাপ শাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
অনু আরিয়ান কে বরণ করে ঘরে নিয়ে চলে আসে।

এরপর অনু আরিয়ান কে সাথে করে দাদী মা ওদের রুমের ভেতরে রেখে যায়।
অনু তো রুমের ভেতরে প্রবেশ করে একদম অবাক হয়ে যায়।কারণ ওদের রুমটা বাসর ঘরের মতো করে সাজিয়ে রাখা।
অনু আরিয়ান কে বলে,”তুমি করেছো এই সব কিছু?”
আরিয়ান বলে,”আমি এই সব কিছু সম্পর্ক কিছু জানতাম না।যা কিছু করেছে সবটা দাদী মা করেছে।আমিও তো একটু আগে জানতে পেরেছি সবটা।তবে বেশ ভালোই হলো সেদিন বাসরঘর করতে পারি নাই।আজ না হয় সেই স্বাদ মিটিয়ে নিবো কি বলো মিষ্টি বউ? ”
অনু বলে,”যাহ দুষ্টু বর কোথাকার। ”
আরিয়ান অনুকে নিজের বউকে মাঝে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।
(সরি পারিবারিক ব্যস্ততার জন্য গল্প দিতে সমস্যা হচ্ছে।আর পর্ব বড় করে দিতে পারছি না।)



চলবে….