আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 22

অনুর চোখ হঠাৎ করে একটা রয়েল ব্লু কালারে শাড়ীর উপর পরে।শাড়ীটা দেখতে এতো সুন্দর যে কেউ একবার দেখলে মুগ্ধ হয়ে যাবে।
অনু এক ভাবে অনেক সময় ধরে শাড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে।
রিমির চোখ অনুর দিকে পরতেই সে তার সব ড্রেস নিয়ে কাউন্টারের কাছে চলে যায়।
এরপর সে সব কিছুর বিল পরিশোধের জন্য হিসার করাতে থাকে।

অনু তাড়াতাড়ি শাড়িটা কাছে গিয়ে হাতে নিয়ে দেখে।এরপর দোকানদার কে বলে শাড়িটা প্যাকেট করে দিন।
এমন সময় পেছন থেকে একজন এসে অনুর হাত থেকে শাড়িটা কেড়ে নিয়ে বলে,”এই শাড়িটা আমি আগে দেখেছি তাই এই শাড়ি আমি নিবো।”
এরপর অনু পেছনে ঘুরে সে মহিলার হাত থেকে শাড়িটা নিয়ে বলে,”এটা কি মগেরমুল্লুক পেয়েছেন?যে আমার জিনিষের উপর ভাগ বসাবেন আর আমি তা দিয়ে দিবো? ”
আয়েশা বেগম বলে,”মুখের ভাষা শুনে তো মনে হয় না কোনো ভদ্রতা জানো।
বড় মানুষ যখন কোনো কিছু পছন্দ করে তখন তাকে না করতে নেই।
তার উপর কারো হাতে থেকে কোনো কিছু কেড়ে নেওয়াটা কেমন দেখায়?”
অনু বলে,”ঠিক কথা এবার আন্টি লাইনে আসছেন। আপনি কোন সাহসে আমার শাড়ি আমার হাত থেকে কেড়ে নিলেন?
আপনার করা কাজটা যদি ভদ্রতা হয় তাহলে আমার কাজ টা কেনো অভদ্রতা হবে? ”
আয়েশা বেগম বলে,”বেয়াদব মেয়ে বড় দের মুখে মুখে তর্ক করো।তোমার মতো বেয়াদব মেয়েদের জন্য বাড়ির বাহিরে আশা সমস্যা হয়ে গেছে।”
অনু বলে,”দেখেন আন্টি আমার সম্পর্কে না জেনে শুনে বাজে মন্তব্য করবেন না।”
এমন সময় রাজের মা এসে বলে,”ভাবী কি হয়েছে?”
আয়েশা বেগম বলে,”আরে দেখো শাড়িটা আমি পছন্দ করে রেখেছি মেয়েটা আমার হাত থেকে শাড়িটা কেড়ে নিয়েছে।”
রাজের মা বলে,”কতো বড় বেয়াদব মেয়ে ভাবা যায়।দেখে তো মনে হচ্ছে থার্ড ক্লাস মেয়ে একটা।”
অনু বলে,”বাব্বহ কি ভালো আপনি! ঝগড়া করার জন্য সাথে করে পিএ নিয়ে থাকেন আগে জানা ছিলোনা। তবে কে থার্ড ক্লাস তা আপনাদের মতো বড় লোকদের দেখে বোঝা যায়।”

তখন রাজ এসে বলে,”এখানে কি হয়েছে?বলে পাশে তাকিয়ে দেখে অনু।”
অনু বলে,”ওহ আচ্ছা এটা আপনার পরিবার? যেমন ছেরেরা ঠিক তেমন তার পরিবারের মানুষ গুলো।”
রাজ বলে,”অনু এভাবে আমার পরিবার কে অপমান করার কোনো মানে হয় না।”
অনু বলে “কখন থেকে আপনার বাড়ির মানুষ আমাকে অযথা অপমান করছে তার কিছু না তাই না? ”
রাজ বলে,”আমার বাড়ির মানুষেরা তোমার মতো ফালতু না,যেমন তুমি তেমন তোমার বোনটাও ফালতু বেহায়া ছিলো!”
অনু রাজের মুখের একদম কাছে এসে সোজা ওর নাকের উপর ঘুশি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দেয়।
রাজ অনুর এমন ব্যবহারে একদম অবাক হয়ে নাকে হাত দিয়ে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করতে থাকে।
রাজের মা আর আয়েশা বেগম বলে,”কি গুণ্ডি মেয়ে আমাদের সোনার টুকরো ছেলের নাক ফাঁটিয়ে দিয়েছে গো!”
অনু বলে,”সোনার টুকরো না ছাই! শয়তানের ভাই।”
এমন সময় রিমি এসে রাজের দিকে তাকিয়ে তার এমন অবস্থা দেখে বলে,”অনু মনু তুই এই কাজ করেছিস? ”
অনু বলে,”হুম? ”

রিমি বলে,”কেনো এমনটা করেছিস তুই? ”
রাজের মা বলে,”ঐ বেহায়া মেয়ে এই শাড়ির জন্য আমার ছেলের নাক ফাঁটিয়ে দিয়েছে। এই শাড়িটা আমার ভাবি পছন্দ করেছে তার হাত থেকে তোমার বোন শাড়িটা কেড়ে নিয়ে আবার বেশি বাহাদুরি করছে।”
রিমি বলে,”নাহ অনু এমন করতে পারে না।
অনু কি হয়েছে আমাকে বলতো সবটা ক্লিয়ার করে? ”
এরপর অনু সবটা খুলে রিমিকে বলে।
রিমি সবটা শুনে বলে,”আজব কাহিনী একটা শাড়ি নিয়ে এতো কাহিনী? কিন্তু শাড়ি তো আপনারা কেউ পাবেন না।কারণ শাড়িটার বিল অনেক আগে আমি পরিশোধ করে দিয়েছি।
তাই এখন শাড়ির মালিক আমি।
না অনু শাড়ির মালিক না ঐ আন্টির শাড়ি।”
অনু বলে,”এই জন্য বলে চাচাতো বোন কখনো আপন হয় না। চাচাতো থাকে,আমার পছন্দটা তুমি নিজের করে নিলে আপু?একবার ও আমার কথা মনে হলো না তোমার? ”
রিমি কোনো কথা অনুর সাথে না বাড়িয়ে রাজের সামনে গিয়ে বলে,”আহারে ভাইয়া অযথা আমার শাড়িটার জন্য আপনার নাক টা আহত হয়েছে।”
রাজ বলে,”না এটা কোনো বেপার না।
এর থেকে কতো বেশি আহত হয়েছি আমি।”
রিমি বলে,”মানে? ”
রাজ বলে, “কিছু না।”

রিমি বলে,”চলেন আপনাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।”
রাজের মা বলে,”না থাক আমাদের এক ছেলে ডাক্তার। বাড়ি যাবার পথে তাকে দেখিয়ে নিবো।”
রিমি বলে,”না আন্টি আমার বোন আপনার ছেলের নাকের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে তার জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি।প্লিজ আমার বোনকে মাফ করে দিবেন। ”
আয়েশা বেগম বলে,”দেখেছো রাজের মা ঐ বেয়াদব মেয়ের বোনটা কতো ভালো।আমি তো ভাবছি আরিয়ানের জন্য এই মেয়ের বাড়িতে কথা বলবো।”
রিমি বলে,”কিছু বলছেন আন্টি? ”
রাজের মা বলে,”কিছু না চলো মা।
আমরা ডাক্তার দেখাতে যায়।”
এরপর অনু মুখ গোমরা করে তাদের সাথে হাসপাতালে যায়।
রিমি নিজের হাতে রাজের নাকের ড্রেসিং করে দেয়।
রাজের মা বলে,”তুমি কি ডাক্তার? ”
রিমি বলে,”জ্বি আন্টি,কিছুদিন আগে বাহিরে থেকে ডাক্তারি কমপ্লিট করে দেশে এসেছি।”
রাজের মা গিয়ে আরিয়ানের মাকে বলে,”ভাবি মেয়েটা ডাক্তার। ”
আয়েশা বেগম বলে,”আমি এই মেয়ের সাথে আরিয়ানের বিয়ে দিবো।তোমার রাজের জন্য পরে মেয়ে খুঁজবো।”
রাজের মা বলে,”আচ্ছা আমার সমস্যা নেই।আয়াত আর আরিয়ানের আগে বিয়ে দিয়ে দাও।নয়তো এতো ভালো মেয়ে পরে যদি আর খুঁজে না পাই।”
আরিয়ানের মা বলে,”হ্যাঁ ঠিক বলেছো নয়তো অনুর মতো ফাজিল মেয়ে কপালে জুটলে কলা গাছের সাথে গলায়দড়ি দিতে হবে।আমি তো অনুর মতো মেয়েকে জীবনেও আমার ছেলের বউ করবো না।”

রাজের মা বলে,”আমি তো দরকার হয় জীবনে ছেলের বিয়ে দিবো না। তাও রাজের জন্য এমন বিছুটি পাতা ঘরের বউ করে আনবো না।নয়তো এ মেয়ে যেদিক দিয়ে যাবে সেদিকে চুলকাইতে থাকবে। ”
অনু বাহিরে দূরে দাঁড়িয়ে থেকে সবটা বুঝতে চেষ্টা করছে যে ঐ দুই দজ্জাল মহিলা কি কানাকানি করছে!!
অনু মনে মনে বলে,”আল্লাহ জানে এই মহিলাদের বাড়ির বউ যে মেয়েরা হবে তাদের কপালে কি যে আছে।শয়তান দজ্জাল মহিলা এগুলো আল্লাহ বাঁচাও এদের বাড়ির বউ গুলো কে।ছেলে দুইটা যেমন পাজি আর ফাজিল তাদের কপালে দজ্জাল ডাকাতি মাইয়া দিও।ভাল বউ একটাও দিবা না।”
এমন সময় রিমি অনুর কানের কাছে এসে বলে,”শকুনের দোয়াতে গরু মরে না।
তা কি জানিস তুই? ”
অনু বলে,”মানে কি? ”
রিমি বলে,”মানে এই যে, তুই আমাকে এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বদদোয়া করছিস সে কথা বলছি।”
অনু বলে,”রিমি আপু নিজেকে এতো সেলেব্রিটি ভেবেনা।আমি অন্য কাউকে গালি দিচ্ছিলাম তোমাকে গালি দেওয়ার সময় নেই আমার।”
রিমি বলে,”এতো ভাব তোর? ”
এরপর রাজের মা রিমির থেকে ওর ঠিকানা নিয়ে রাখে।
তারপর সবাই যে যার বাড়িতে চলে যায়।

এদিকে আয়েশা বেগম বাড়িতে এসে বলে, “আজকের দিনটা খুব খারাপ গেছে। ”
আরিয়ান এসে বলে,”আরে দোস্ত তোর নাকের তেরোটা কে বাজিয়ে দিলো রে?
আস্তে করে বলে,”এমন ধোলাই তো পাঁচ বছর আগে তোকে অনু দিতো তাই না রে?”
রাজ কিছু বলার আগে রাজের মা বলে,”আজ এক বেয়াদব মেয়ের সাথে দেখা হয়েছিল।
সে মেয়ে রাজের এই বেহাল অবস্থা করেছে।”
আয়াত এসে বলে,”তোমাদের সাথে কোনো মেয়ে যুদ্ধ করে কোনোদিন জিততে পারছে যে আজ পারবে? ”
রাজ বলে,”হুম আজ তাদের দেখা একটা বাঘিনীর সাথে হয়েছিল।সে মেয়ে মা,মামী কে
না কানি চুবানি দিয়েছে সেই আকারে। ”
আরিয়ান এসে রাজ কে বলে,”এই মেয়েটা কে রে? ”
রাজ বলবে এমন সময়..
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং গঠনমূলক মন্তব্য সবার কাছ থেকে আশা করব)



চলবে….