আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 18
পরেরদিন সকালে অনু আরিয়ানের আগে অফিসে গিয়ে নিজের সব কাজ কমপ্লিট করে বসে থাকে।
এদিকে আরিয়ান অফিসে এসে সোজা নিজের কেবিনে ঢুকে দেখে সব কিছু একদম পারফেক্ট ভাবে গুছিয়ে রাখা।
সবকিছু ঠিকঠাক দেখে নিজের জায়গাতে বসে কাজ করতে শুরু করে এমন সময় অনু আরিয়ানের জন্য কফি নিয়ে এসে সোজা টেবিলের উপর রেখে চলে যেতে লাগে।
আরিয়ান বলে,”এই যে মিস পিএ আপনাকে কি আমি চলে যেতে বলছি? ”
অনু বলে,”আমার তো আপাতত কোনো কাজ নেই।যে অযথা বসে বসে আপনার এই কুচ্ছিত চেহারা দেখবো? ”
অারিয়ান বলে,”ঐ শুটকি! কোনদিক দিয়ে আমি দেখতে কুচ্ছিত? এখনো হাজার হাজার মেয়ে আমার পেছনে লাইন মারে সে খবর রাখো?”
অনু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলে, “তার নমুনা তো দেখছি আশেপাশে মেয়ে তো দূরের কথা একটা মাছিও নাই! ”
আরিয়ান বলে,”আমি কি অফিসে প্রেম করতে আসি? যে আমার পেছনে মেয়ে অথবা মাছি ঘুরবে? ”
অনু বলে,”একটা কাজের কথা বলি আপনি কুচ্ছিত না হলে আমিও শুটকি না কথাটা মাথায় ভাল করে গেঁথে রাখবেন। ”
আরিয়ান বলে,”ওরে আমার বিশ্ব সুন্দরি মিস অনু। ”
অনু বলে,”আচ্ছা আজারে সাত সুমুদ্দুর তেরো নদী না ঘুরিয়ে কাজের কথাটা এবার বলেন তো। ”
আরিয়ান বলে,”আমি আজারে কথা বলি তাই না? টেবিলের এখানে আসো বলছি! ”
অনু টেবিলের পাশে দাড়িয়ে বলে,”বলেন কি করতে হবে? ”
আরিয়ান বলে,”অবশ্যই আমাকে আদর করতে বলবো না।”
অনু বলে,”বলে দেখেন না কেমন আদর করি।”
আরিয়ান বলে,”চুপচাপ কফির মগে চুমুক লাগাও একটা।”
অনু বলে,”মাথা খারাপ না কি আপনার?
আপনার কফির মগে আমি চুমুক দিতে যাবো কেনো? ”
অারিয়ান বলে,”যা করতে বলছি তাড়াতাড়ি করো।এভাবে সময় নষ্ট করলে কফি ঠাণ্ডা হয়ে যাবে তখন তোমাকে আবার কফি বানিয়ে আনতে হবে।”
অনু বলে,'”আর তো কাজ পেলাম না আমি।”
আরিয়ান বলে,”কাজ নেই বলে তো কাজ দিলাম।”
অনু কফির মগটা হাতে নিয়ে এক চুমুক খাবার পরে আরিয়ান বলে,”মগটা রেখে এবার যেতে পারো।”
অনু বলে,”মানে কি? ”
আরিয়ান অনুর হাত থেকে কফির মগটা হাতে নিয়ে খেতে শুরু করে।তারপর বলে,”বাহ অাজকের কফিটা তো দারুণ হয়েছে।
যাক এতে কোন বিষ মেশানো নেই।”
অনু বলে,”আমি কি এতো খারাপ যে বিষ মেশাতে যাবো? ”
আরিয়ান বলে,”বলা তো যায় না।মেয়ে মানুষ মানে বিপদজনক। তা থেকে সব সময় সাবধান থাকা উওম।”
অনু রেগে আরিয়ানের চুল গুলো চেপে মুঠোভরতি করে ধরে বলে,”বজ্জাত বস আমাকে যা মনে হচ্ছে তাই বলছেন এতো সাহস কে দিয়েছে। আমাকে দেখে আসামী মনে হয়? আর তো কাজ পেলাম না তোমাকে বিষ খাওয়াই মারবো না কি?”
এমন সময় রাজ এসে অনুর চুল ধরে মারামারি করা দেখে তাড়াতাড়ি গিয়ে অনুর হাত থেকে আরিয়ান কে ছাড়িয়ে নেয়।
অনু রাজ কে বলে,”আপনার ভাইকে ভদ্রভাবে আমার সাথে কথা বলতে বলবেন বলে চলে যায়।”
অনুর যাবার পর রাজ আরিয়ান কে বলে,”দোস্ত অনু আগের থেকে বেশি সুন্দরি হয়ে গেছে তাই না রে? ”
আরিয়ান বলে,”আগে তো তাও একটু ছিলো,এখন তো শুটকি হয়ে গেছে।”
রাজ আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,”তোর চোখে সমস্যা আছে যা ডাক্তার দেখা।”
আরিয়ান বলে,”আমাকে কি পাগলা কুত্তা কামড় দিছে যে ডাক্তার দেখাবো? ”
রাজ বলে,”ইশ অনু যে কেনো তোর চুল ধরেছিল কামড় না দিয়ে। ”
অারিয়ান রাজ কে বলে,”যা ফাজিল আমার কেবিন থেকে যা দূর হয়ে যায়।”
রাজ তাড়াতাড়ি আরিয়ানের কেবিন থেকে চলে যায়।
আরিয়ান বলে,”ঐ শুটকির এতো সাহস আমার এতো সাধের চুলে হাত দিয়েছে আমিও এর শোধ ঠিকি তুলবো। ”
এর একটু পর অনু আরিয়ানের জন্য আবার একমগ কফি নিয়ে চলে আসে।
আরিয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে এক চুমুক কফি খেয়ে মগটা এগিয়ে দিয়ে বলে,”স্যার এটাতে বিষ মেশানো নাই আপনি খেতে পারেন।
আর তখন আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করার জন্য আমি দুঃখিত স্যার।
আমি ভুলে গেছিলাম যে আমি সাধারণ কর্মচারী মাএ আপনার। ”
আরিয়ান কিছু না বলে কফির মগটা নিয়ে খেতে শুরু করে।
অনুকে বলে,” যাও নিজের ডেস্কে গিয়ে কাজ করো।কাল একটা বড় কোম্পানির সাথে মিটিং আছে।তার জন্য প্রেজেন্টেশন রেডি করো বলে একটা ফাইল এগিয়ে দেয়। ”
অনু ফাইলটা নিয়ে কাজ করতে থাকে ফাইল কমপ্লিট করে সে আরিয়ানের কাছে জমা দিয়ে চলে যায়।
এদিকে রাজ আরিয়ানের বাড়িতে ওদের বিয়ের ব্যাপারে মেয়ে দেখার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।
আরিয়ানের সাথে সবাই কথা বলেছে।
এখন সে বিয়ে করতে চায় না।
তাই আয়াত আর রাজের জন্য মেয়ে দেখছে বাড়ির মানুষ ।
আয়েশা বেগম বলেন,” আমিতো আমার ছেলেদের জন্য রাজকুমারী বউ আনবো। ছেলেদের সাথে দেখলে সবাই বলবে যে ওদের জন্যই আল্লাহ নিজের তৈরি করেছে।”
রাজের মা বলে,” হ্যাঁ ভাবি একদম সুন্দর সুশীল ভদ্র উচ্চ শিক্ষিত মার্জিত সহজ সরল মনের বউ নিয়ে আসবো।যার সাদা মনে কেনো কাদা থাকবে না।আমরা যা বলবো তারা তাই শুনবেন। যেখানে
বলবো সেখানে বসে থাকবে।”
আয়েশা বেগম বলে,”একদম আমার মনের কথা গুলো বলেছো।”
এমন সময় মৌ বলে,”মা আর মামী তোমরা যেমন মেয়ে খুঁজছো তার জন্য দেখো হাতে হারিকেন না নিতে হয়।এমন মেয়ে দেশে আছে না কি তাই কে জানে।”
রাজের মা বলে,”এই মেয়ে বড়দের কথার মাঝে তোকে কথা বলতে কে বলেছে? ”
আয়েশা বেগম বলে,”দেখো মৌ বিয়ের মতো শুভ কাজের কথার মধ্যে অশুভ কথা বার্তা একদম বলবে না।হোস্টেল থেকে এসেছো সোজা নিজের ঘরে যাও বলছি।”
মৌ মন খারাপ করে নিজের ঘরে চলে যায়।
সে জানে মা আর মামীর কথা মাঝে কথা বলার মানে হয় না।তারা অন্যের কথার কেনো মূল্য দেয় না।
আয়াত এসে মৌ কে বলে, “অযথা তাদের কথার মাঝে কথা বলে নিজের অপমান করাতে গেছিস?”
মৌ আয়াত কে জড়িয়ে ধরে বলে,”এরা তো তোমাদের জন্য গরু ছাগল ধরে আনবে মনে হয়।”
আয়াত বলে,”যে ভাগ্যে আছে সেই তো আসবে।তাই আমাদের নিয়ে চিন্তা না করে নিজেকে নিয়ে চিন্তা কর।যা ফ্রেশ হয় আয়।
একটু পর রাজ আর আরিয়ান ও চলে আসবে।”
মৌ ফ্রেশ হতে চলে যায়।
এদিকে অফিস শেষ করে আরিয়ান নিজের বাড়ির দিকে চলে যায়।
অনু আরিয়ানের চলে যাওয়া দেখতে থাকে যতো দূর আরিয়ানের গাড়ি দেখা যায় ততোদূর পর্যন্ত চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকে।
এরপর অনু নিজের বাড়িতে এসে সোজা নিজের রুমে না গিয়ে ছাদে চলে যায় আজ কেনো জানিনা মনের আকাশে মেঘ জমেছে।
(একটু জ্বর মাথা ব্যাথা তারপর ও গল্প লেখার নেশা ছাড়তে পারি না।পর্বটা ছোট হবার জন্য আমি দুঃখিত 😒)
‘
‘
‘
চলবে…..