অবশেষে তুমি আমার

অবশেষে তুমি আমার !! Part- 20

-তাই বুঝি! আমি প্রেগন্যান্ট বললেই ভাবছিস ছাড় পেয়ে যাবি? দরকার পড়লে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবে। শোন সময় এক ঘন্টা, এর মাঝে এসব পড়ে যদি রেডি না হস তাহলে পরশু রাতে তোর সাথে যা যা হয়েছে তা দেশবাসী দেখবে। আমি জানতাম তুই রাজি হবি না। তাই শাওয়ার নেওয়া থেকে শুরু করে বেডরুম পর্যন্ত সব ভিডিও করে রাখা আছে। এখন বুঝ কি করবি তুই?
এখান থেকে পালাতেও পারবি না।
– রাজ প্লিজ তোমার পায়ে পড়ি তোমার। তুমি এমন করো না। আমি না তোমার স্ত্রী! তুমি যা ইচ্ছা করো
পরপরুষের সামনে এমন ড্রেসে আমাকে নিয়ো না। আমাকে এছাড়া যা করতে বলবে তাই করবো। সারাজীবন তোমার পায়ের কাছে পড়ে থাকবো। আমার সতিত্ব তোমার কাছে ভিক্ষা চাচ্ছি! তুমি আমাকে মানুষের ভোগ্যপণ্য বানিয়ো না।

– হাহা! তোর এই ড্রামা দেখে মনে করিস আমি আমার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা ডুবাবো? ক্লাইন্টরা তোকে সিলেক্ট করেছে। তাই যত বাহানা করিস তোকে পার্টিতে এ পোশাকেই যেতে হবে। এবং তাদেরকে খুশি করতে হবে।
– অধরা রাজের গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিয়ে বলে,’ লজ্জা করে না তোমার। নিজের স্ত্রীকে পরের বিছানায় পাঠাতে। তুমি মানুষ নাকি পশু? তোমাকে পশু বলতেও আমার ঘৃনা হচ্ছে। একটা মানুষ এতোটা খারাপ কিভাবে হতে পারে? যে নিজের সার্থের জন্য নিজের স্ত্রীকে অন্যের সামনে অর্ধউলঙ্গ করে দাঁড় করাতে চায়।
– রাজ নিজের গালে হাত ভুলাতে ভুলাতে বললো, ‘ একটা কেন আরেকটা দাও। তবে মনে রেখো তোমার কিন্তু এ ড্রেস পরে পার্টিতে এন্টেড করতেি হবে।
-রাজের কথা শুনে অধরার নিজের শরীরের প্রতি ঘৃণা হচ্ছে। যে রাজকে এতোটা ভালোবাসে সে রাজ আজ তাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। তাও এই অবস্থায়। অধরা চোখের পানি রাজের কাছে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনে হচ্ছে।
– এই কান্না করবি না এসব পড়ে রেডি হবি?
শোন সময় দু’ঘন্টা এর মাঝে তোকে যেন রেডি হতে দেখি। রেডি না হলে তোর গোসল করার ভিডিও। সাথে রাতের কথা সেটা আর বলতে? বুঝতেই পারছিস তুই রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে যাবি।
– রাজ কেন এমন করছো? এমন তো কোন কথা ছিল না। আমি তোমার টাকা পয়সা কিছুই চায় না। আমাকে প্লিজ মুক্তি দাও। ভিডিওটা ডিলিট করে দাও। তুমি যা ইচ্ছা করো। বাঁধা দিবো না। সে ছোটকাল থেকেই তোমাকে স্বামী হিসেবে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে আসছি। তুমি আমার হৃদয়ের সবটা জুড়ে আছো। প্লিজ সেই হৃদয়ে অন্য কাউকে কলঙ্কের ছুরি বসাতে দিয়ো না। তাহলে যে আমি বাঁচবনা। জানি আমার প্রতি তোমার অনেক ঘৃনা! তুমি যে শাস্তি দাও মাথা পেত নিবো।কিন্তু আমার সতিত্বে আঘাত লাগে এমন কোন কিছু করতে দিয়ো না।

-ওয়েট ওয়েট! কি বললি? আমাকে তুই মনে-প্রাণে স্বামী মানিস? তাই না। তাই যদি মানতে ছোটবেলা আমার মা -বাবাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিতি না আরে একটা পতিতারেও স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবো তবু তোকে না। কারণ পতিতারা পেটের দায়ে খারাপ কাজ করে। যেটুকু সময় তারা পেটের দায়ে বিক্রি করে সে টুকু সময় কারো সাথে প্রতারণা করে না।আর তোরা ভালোবাসার নামে খেলা করিস।
– চুপ করো রাজ। প্লিজ আর কিছু বলো না। আমি এসব নিতে পারছি না।
– কেন নিতে পারছিস না? সত্যি বললে গায়ে লাগে তাই না?
– রাজ সত্যিটা উপরে একজন আছেন তিনি জানেন। তোমাকে সত্যিটা বললেও বিলিভ করবে না।
– রাখ তোর সত্যি। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। আর শুন ছয়লাখ টাকা দিয়ে তিনমাসের জন্য ডজন খানেক পতিতা পাওয়া যেত। কিন্তু তোকে দয়া করে তিনমাসের কন্টাক্ট করেছি। তাই দেরি না করে রেডি হয়ে নে। দেরি হলে আমার কোটি টাকা লোকসান হয়ে যাবে।
– সুইর্টহার্ট চলো তো উনাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে ।
– অানিশা রাজকে নিয়ে চলে গেল। অধরা রুমে বসে কাঁদতে লাগলো। সে কি করবে বুঝতে পারছ না। এখান থেকে পালানোর কোন রাস্তাও নেই। রুমের দরজা বাহির থেকে নক করে দিয়েছ।
অধরা মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছে। এ পরিস্থিতিতে আল্লাহ যদি তার সতিত্ব হেফাযত করেন।
– অধরা দরজা খোলার ট্রায় করছে। কিন্তু পারছে না।, অধরা বুঝতে পারলো দরজাটা বাহির থেকে লক করা। মাথায় কিছু আসছে না। রাজের কথাগুলো বারবার কানে বারি খাচ্ছে। যে রাজ ছোটবেলা অন্য কোন ছেলের সাথে কথা বলা সহ্য করতে পারতো না। সিয়ামের সাথে বউ জামাই খেলার জন্য যে ছেলে রাগে অভিমান তিনদিন কথা বলেনি। শুধু বাসায় বসে কাঁদতো সে ছেলে আজ আমাকে সবার কাছে ভোগপণ্য হিসেবে তুলে দিচ্ছে। অধরার বুক ফেঁটে কান্না আসছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক রুপ তার কাছে মনে হচ্ছে প্রিয় মানুষটা হঠাৎ পরিবর্তন!
অধরার খুব খারাপ লাগছে রাজকে চড় দেওয়াতে। কিন্তু রাজ যা বলেছে তা শুনে কোন মেয়ে সহ্য করতে পারতো না। রাজ কেন বুঝে না তাকে।এত অপমান করে সে কেন পড়ে আছে।এটা কি একটি বারো ফিল করে না সে। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চমকে যায় অধরা। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে হোটেলের কর্মচারী। কিন্তু সে কিভাবে দরজা খুললো। চাবি তো রাজের কাছ।।
– বোন ভয় পাবেন না আমি আপনার কোন ক্ষতি করবো না। আমি রুমের বাহির থেকে সব শুনেছি। আপনার মতো আমারো একটা বোন আছে। বারবার তার কথা মনে পড়ছে আজ। বেশ কয়েকবছর আগে গাড়ি চাপায় মারা যায়। আর আজ আপনার মাঝে তাকে দেখতর পাচ্ছি। আপনি পালিয়ে যান।
– ভাইয়া কিন্তু কিভাবে যাবো? আমার কাছে কোন টাকা নেই। এছাড়া যদি তারা দেখে ফেলে তাহলে আপনারো চাকরি চলে যাবে।
-বোন চাকরির চিন্তা আমি করি না। আমি আমার বোনকে বাঁচাতে পারলেই খুশি।
– ভাইয়া আমি কিভাবে যাবো এখান থেকে আমার কাছে কোন টাকা নেই।
– আরে পাগলী তোর ভাইয়ের কাছে আছে না। এই বলে ছেলেটা অধরার হাতে হাজার তিনেক টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললো,’ বোন আমার কথা ভুলে যাসনি। একদিন তোকে মায়ের কাছে নিয়ে যাবো।”
– ভাইয়া তোমার নামটা কী?

– আদিল!
– অধরা ফোনে আদিলের নাম্বারটা সেভ করে নিলো। আর পায়ে সালাম করে বললো,’ ভাইয়া বেঁচে থাকলে তোমার সাথে আবার দেখা হবে। এবার আমি আসি।
– হুম বোন সাবধানে যাবি। আর এই প্যাকেটটা রাখ। রাস্তায় কোথাও নামিস না। এখানে খাবার আছে খেয়ে নেস।
– অধরা ছেলেটির দিকে তাকিয়ে ভাইয়া বলে হুহু করে কেঁদে দিল।
– কি হলো বোন ভাইয়ার সামনে কোন বোন কি কাঁদে?ভাইয়ার কষ্ট হয় না? আর প্লিজ আমি আমার বোনের চোখে পানি দেখতে চাই না। আর হ্যাঁ তুই চলে যা বোন। ওরা যে কোন সময় এসে পড়তে পারে।
– অধরা বোরকা পরে তাড়াহুড়া করে হোটেল থেকে বেরিয়ে সোজা বাস্টটপ থেকে টিকেট কেটে নেয়।
– এদিকে ঘন্টা দুয়েক পর রাজ হোটেলে এসে রুমের দরজা খুলে দেখে অধরা নেই! রাজের বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে! চোখের কার্ণিশ বেয়ে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।
– আনিশা রাজের কাঁধে হাত দিয়ে বললো,’ আর কতো কাঁদবে? কাল সারা রাত তো কেঁদেছ! ভালোবাসই যেহেতু তাহলে অধরা আপুকে কেন কষ্ট দিচ্ছো? তোমাদের দু’জনের কষ্ট যে আমার সহ্য হয় না রাজ।
– এমন সময় আদিল আসলো। আদিলকে দেখেই রাজ বললো,’ ভাইয়া যেভাবে আপনাকে বলেছি ওভাবেই অধরাকে বলেছেন তো? আর এই নেন আপনার টাকা।
চলবে”””””’