অন্তরালে তুমি আমি

অন্তরালে তুমি আমি !! Part- 18

“অহনাকে কোলে করে হসপিটালে নিয়ে এসে আবির পাগলের মতোন ডাক্তারকে ডাকে।ডাক্তার, নার্স সবাই ছুটে ছুটে আসে।অহনাকে খাটলিতে শুইয়ে দেওয়া হয়।ডাক্তার অহনাকে দেখে বলে এক্ষুনি ও.টি তে নিতে হবে।খাটলি ঠেলে দ্রুত ও.টির দিকে নেওয়া হয়।আবির এখনও অহনার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে।”

“ও.টির কাছে আসলে ডাক্তার আবিরকে বাঁধা দেয় আর অহনার থেকে আবিরের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে ও.টির ভেতর চলে যায়।”

“ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ আর বাইরে থেকে আবির খুব টেনশনে আছে।জলির বাবা আবিরকে শান্তণা দিচ্ছে।আর আবির কাঁদছে।জলির বাবা বলছে,”
—“কিচ্ছু হবে না আমাদের অহনার ওই স্রষ্টার উপর ভরসা রাখো আবির।”

“কিন্তু আবিরের মন যে মানছে না।অহনা কিংবা তাদের সন্তানের কিছু হলে তখন যে তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে যাবে।”

“বিয়ের তিন বছর পর আজ অহনা মা হতে চলেছে।কত স্বপ্ন বুনেছে দুজনে এই দিনটার জন্য! জলিকে দেখে রোজ মাঝ রাতে অহনা কেঁদে উঠতো আর আবিরের কাছে একটা সন্তান আবদার করতো।বলতো জলির মতোন সেও মা হতে চাই।সন্তানের জন্য তারা অনেক ডাক্তার দেখিয়েছিলো।অনেক ওষুধ খেয়েছিলো।আর আজ যখন তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে তখন এমনটা কেন হলো?”

“ওদিকে, জলির মায়েরও মনটা ছটফট করছে অহনার জন্য।আদি ব্যাপারটা লক্ষ্য করে জলির মাকে হসপিটালে যেতে বলে অহনার কাছে।জলি আর তার সন্তানদের সে দেখবে।জলির মা আর দেরি করে না।আদির কাছে জলিকে রেখে নিশ্চিন্তে হসপিটালে চলে যায়।”

“এখন বাড়িতে শুধু জলি, আদি আর তাদের সন্তান আছে।ছেলেমেয়ে গুলো দোলনায় হাত পা ছুঁড়ে ছুঁড়ে খেলছে।বিছানায় পা এলিয়ে দিয়ে বসে জলি আদির কান্ড দেখছে।একবার একজনকে কোলে নিয়ে তাকে রেখে আরেকজনকে কোলে নিচ্ছে আদি।”
—“আদি কি হচ্ছে কি? ছেলে মেয়ে দেরকে ঘুমোতে দেনা।”

“আদি মেয়েকে কোলে করে নিয়ে এসে জলির কোলে তুলে দেয় আর দুই হাতে দুই ছেলেকে নেয়।তারপর জলির সামনে বসে বলে,”
—“তিন তিনটা বেবি আমাদের।কাকে ছেড়ে কাকে কোলে নিবো বুঝে উঠতে পারছি না।যদি কারও আদর কম হয়ে যায় তখন তো বড় হয়ে চুল ছিঁড়া ছিঁড়ি করবে তিনজনে।আর বলবে আমরা ওদের মধ্যে ভেদাভেদ করি।এক জনকে কম ভালোবাসি আরেক জনকে বেশি।”

“আদি কথা বলছে আর জলি আদির মুখের দিকে চেয়ে আছে। বাবার মাইরের দাগগুলো আদির মুখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। জলি বিছানার উপরে মেয়েটাকে শুইয়ে দিয়ে। তারপর আদির কোল থেকেও ছেলে দুটোকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। তারপর আদির মুখের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ওঠে।জলির কান্না দেখে আদি জলিকে ঝাঁকিয়ে বলে,”
—“এই কাঁদছিস কেন? ওহহ আমাদের বিয়ে হয় নি এইজন্য কাঁদছিস তাই না? ঠিক আছে তোর বাবা-মা বাড়িতে আসুক আমি তাদের অনুমতি নিয়ে যতো তারাতারি সম্ভব তোকে বিয়ে করবো। প্লিজ কাঁদিস না।”

“জলি ঝাপিয়ে আদির বুকে পরে কাঁদতে থাকে।আর কাঁদতে কাঁদতে বলে,”
—“আমাকে ক্ষমা করে দে আদি।আমার জন্য আজ বাবা তোকে এভাবে মারলো।কিন্তু বিশ্বাস করে আমার বাবা খারাপ না।আমাকে খুব ভালোবাসে তাই তোকে মেরেছে।”

“আদিও জলিকে জড়িয়ে ধরে। জলির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,”
—“আমি বুঝতে পেরেছি জলি।”

“হসপিটালে, ডাক্তার ও.টি থেকে বেড়িয়ে আসে।আর আবির ডাক্তারকে দেখে বসা ছেড়ে উঠে দাড়ায়।জলির বাবা এগিয়ে ডাক্তারের কাছে আসে।আর জলির মাও মাত্র হসপিটালে এসেছে।ডাক্তার বলে,”
—“ছরি এভাবে সিঁড়ি থেকে পরে যাওয়াতে প্রেসেন্ট পেটে খুব জোড়ে আঘাত পেয়েছে যার কারণে প্রেশেন্টকে বাঁচাতে পারলেও আমরা বেবিটাকে বাঁচাতে পারি নি।

চলবে,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *