অন্তরালে তুমি আমি

অন্তরালে তুমি আমি !! Part- 07

“কলিং বেলের শব্দ শুনেই অহনা ছুটে আসে।দরজা খুলতে গিয়ে ভাবে আবার যদি আদি হয়? নাহ নাহ দরজা খোলা যাবে না।আবির হলে তো নাম ধরে ঠিকই ডাকতো।”
“অহনা দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে থাকে।আর বাইরে থেকে বারবার কলিং বেল বেজে চলেছে।অনেকক্ষণ পর অহনা বাইরে থেকে কারও কথা শুনতে পাই।”
—দেখেছিস আবির দরজা খুলছে না? হয়তো বেড রুমে কোন পুরোনো প্রেমিকের সাথে শুয়ে আছে।
—যদি তাই হয় তাহলে আজ এর শেষ আমি দেখে ছাড়বো।
“আবিরের কন্ঠটা শুনে অহনা নিশ্চিত হয়।হ্যাঁ আবির এসেছে।”
“অহনা সঙ্গে সঙ্গে দরজাটা খুলে দেয়। আর তাকিয়ে দেখে জলির সাথে গা ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে আবির।একদম নিজের বুকের সাথে জলিকে মিশিয়ে রেখেছে।”
“আবিরের এক হাতে মদের বোতল তার থেকে এক ডোগ গিলে তাকায় অহনার দিকে।”
“অহনা আবিরকে এমন অবস্থায় দেখে বড়সড় একটা ধাক্কা খায়।”
—আবির, জলি তোমরা এভাবে?
“অহনাকে কিছু না বলে, পাশ কেটে আবির জলিকে নিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়।অহনা আবিরের পিছনে পিছনে আসে। দেখে আবির সারা বাড়িতে কিছু একটা খুঁজছে।”
—কি খুঁজছো আবির?
“আবিরের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে জানতে চায় অহনা।আর তখন আবির অহনার গালে ঠাসসসস! করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। আর বলে,”
—দরজা খুলতে এতো দেরি হলো কেন? বাড়িতে আর কে আছে বল?
“কথাটা বলে অহনার চুলের মুষ্টি টেনে ধরে।”
—আবির লাগছে ছাড়ও আমায়!
“আবির অহনাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।”
অহনা উঠে দাড়িয়ে আবিরের মুখটা ধরে বলে,
—কি হয়েছে তোমার আবির? আজ আবার কেন এমন করছো? তুমি না বলেছিলে আর কখনো আমাকে কস্ট দেবে না? ভালোবাসো না আমাকে? তাহলে এমন পাগলামি কেন করছো? আর এতো রাত্রে জলিকে কেন সাথে করে এনেছো?
“অহনা কথাটা বলতেই জলি এসে ধাক্কা দিয়ে অহনাকে আবিরের থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দেয়। তারপর অহনার সামনে হাত উঁচিয়ে একটা সয়তানি হাসি দিয়ে বলে,”
—আবির আর তোর নেয় অহনা।
আবিরের বুকে হাত বুলিয়ে বলে, এখন থেকে আবির শুধু আমার। তাই না আবির?
আবির মদের বোতলে ডোগ গিলে বলে,
—হুমমমম!
“জলি আবিরের বোতাম খোলা শার্টটা দুই হাত দিয়ে দুই পাশে সরিয়ে দিয়ে, আবিরের নগ্ন বুকে নিজের নাকটা ঘেঁষে আবিরকে জড়িয়ে ধরে বলে, ”
—আমার আবির।
“এসব দেখে অহনা একেবারে ভেঙে পরে।ভাবে আবির এমনটা কিভাবে করতে পারে?”

“আর জলি আবিরকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় মুখটা অহনার দিকে ঘুরিয়ে বলে,”
—দেখেছো অহনা তোমাকে আমি আগেই বলেছিলাম আবিরের চরিত্র কেমন কিন্তু তুমি বিশ্বাস করলে না? যাই হোক, আবির আজ আমার।
“কথাটা বলে আবিরকে নিয়ে জলি বেড রুমের দিকে যায়।অহনাও আবির আর জলির পিছনে পিছনে যায়।কিন্তু অহনা রুমে ঢুকার আগে জলি ঠাসসস! করে দরজাটা অহনার মুখের সামনে ভেতর থেকে লক করে দেয়।”
“অহনা বাইরে থেকে দরজাটা টাকিয়ে চিৎকার করতে থাকে।”
—একি? দরজা দিয়েছো কেন জলি? দরজা খোলো।আমার কথা শুনতে পাচ্ছো দরজা খোলো।

ভেতর থেকে জলি বলে,
—চেঁচাও অহনা চেঁচাও যতো পারো চেঁচাও।কিন্তু এই দরজা আর খুলছে না।যতোক্ষণ না আবির পুরোপুরি ভাবে আমার হচ্ছে।
—মানে? কি করবে তুমি ওর সাথে? দরজা খোলো জলি। মদ খেলে ওর হুঁশ থাকে না। তোমার দোহাই লাগে ওর সাথে কিছু করবে না।দরজা খোলো প্লিজ জলি।

“বাইরে থেকে অহনা চিৎকার করতে থাকে জলিকে বারবার ডাকে আর বোঝায়।জলি অহনার কোনো কথা শোনে না।আবিরকে নিয়ে বিছানার কাছে গিয়ে ধাক্কা দিতেই আবির বিছানায় ঢুলে পরে।আর জলি সেই সুযোগে আবিরের কাছে যায়। আবিরের শার্টটা খুলে ফেলে তারপর আবিরের বুকে আর গালে কিস করে।তারপর আবিরের ঠোঁটে কিস করতে যাবে এমন সময় জলির ফোনটা বেজে ওঠে।জলি উঠে বসে দেখে আদির কল।জলি কলটা কেটে দেয়।তারপর নিজের কাপড়টা খুলে আবার আবিরের দিকে এগিয়ে আসে।আবিরকে ছুঁতে যাবে তখন আবার আদির কল আসে।”
“এবার রাগ করে জলি আদির ফোনটা রিসিভ করে,”
—সমস্যাটা কি তোর? এভাবে বারবার ফোন করে বিরক্ত কেন করছিস?
—কি করছিস জলি?
—আমি যা করি তাতে তোর কি? হারামজাদা যা চেয়েছিলি তাতো পেয়ে গেছিস এখন আবার কেন কল করেছিস? আমি বিজি আছি এখন রাখ।
“জলি ফোনটা কাটার আগেই আদি বলে ওঠে,”
—আরে আরে রাগ করছিস কেন? তোকে একটা ভিডিও পাঠিয়েছি দেখ।
—কিসের ভিডিও?
—দেখ তারপর বুঝবি।
“জলি কলটা কেটে দিয়ে ভিডিওটা দেখে।আজ সকালে গাড়িতে আদি আর জলি যা করেছে তার ভিডিও ওটা।”

“ভিডিওটা দেখে জলি মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে। আর চিন্তা করে এটা আদি কি করলো?”

“আদি আবার ফোন করে।আর জলিকে বলে,”
—এই মুহূর্তে যদি তুই আমার কাছে না আসিস তাহলে ভিডিওটা আমি ভাইরাল করে দেবো।
—নাহ আদি এমনটা করবি না প্লিজ।ভিডিও তে তো তুইও আছিস!
—হ্যাঁ আছি তো? একটা কথা শুনে রাখ ১০ মিনিটের মধ্যে তুই আমার কাছে আসবি।নাহলে আগে তোর পরিবার বাবা-মা সবার ফোনে ভিডিওটা চলে যাবে।
—তোর লজ্জা করবে না? আমার সাথে তোর নিজেও কতো অসম্মান হবে জানিস?
—নাহ আমার লজ্জা করবে না।আমার বাবা-মা পরিবার নেয়।তাই মান সম্মানেরও ভয় নেয়।তোকে যেটা বললাম সেটা কর।
“বলে কলটা কেটে দেয় আদি।আর জলি হ্যালো হ্যালো করে দেখে কলটা কেটে গেছে।”

“জলি আবিরের দিকে আর তাকায় না।অন্য মনুষ্ক হয়ে নিজের কাপড়টা পরে রুমের থেকে বেড়িয়ে যায়। দরজা খোলার শব্দে অহনা তাকিয়ে দেখে জলি উল্টো কাপড় পড়েছে।অহনা ভাবে, যখন আবিরকে নিয়ে ভেতরে গিয়েছিলো জলির কাপড়টা তো উল্টো পরা ছিলো না।তাহলে কি? অহনা ভাবতে ভাবতে ছুটে রুমে যায়। দেখে আবিরের গালে আর বুকে জলির ঠোঁটের লিপস্টিকের দাগ। অহনা এটা দেখে বড় একটা ধাক্কা খায়।দরজার সাথে মাথাটা ঘেঁষে আস্তে করে নিচে বসে পরে অহনা।আর এক দৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকিয়ে থাকে।আর বলে,”
—এটা কি করলে তুমি আবির?

চলবে,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *