অদ্ভুত ভালোবাসা

অদ্ভুত ভালোবাসা ! পর্ব- ১৩


গল্প বিলাসী (Nishe)

দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা।

সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো তারপরও নিশি আসলোনা

কি ব্যাপার নীল? কোথায় তোমার নিশি?
দেখলেতো সবাই ই! টাকাকে ভালোবাসে তোমাকে না

নিশি এই ছিলো তোমার মনে? আমার বিশ্বাস টা এইভাবে শেষ হয়ে
গেলো? আমি ভাবতেও পারিনি নিশি তুমিও ঠিক তেমন যেমন অদিতি ছিলো

শেষ হয়ে গেলো তোমার ভালোবাসারর নাটক

কি নীল?
এবারতো কিছু বলো?

অদিতি আমাকে কিছুদিন সময় দাও আমি পরে তোমার সাথে দেখা করবো

ওকে। তবে বেশি সময় না

বলেই নীল চলে আসলো।

নিশি গিয়ে দেখলো মাকে হসপিটালে নেয়া হয়েছে ট্রিটমেন্ট
চলছে আর আন্টি বাহিরে দাড়িয়ে কাঁদছে

আন্টি কিভাবে হলো এইসব?

নিশাদ ( নিশির ভাই) ফোন করেছিলো আমার কাছে কি যেনো বলতে
চাইছিলো কিন্তু গাড়ির ভিতরে নেটওয়ার্ক এর প্রব্লেম হচ্ছিলো তাই
আমি ড্রাইভার কে বলে গাড়ি সাইড করি। গাড়ি থেকে নেমে কথা বলছিলাম
এর মধ্যে একটা গাড়ি এসে আমাদের গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়

আমি বাইরে ছিলাম আপা ভিতরে ছিলো তাই আপার এই অবস্থা বলেই আন্টি
কাঁদতে লাগলো

ডাক্তার বেরিয়ে আসছে

ডক্তরকে দেখে কেনো জানি খুব ভয় লাগছিলো তারপর যা শুনলাম তা
আমার বিশ্বাস ই হচ্ছেনা

আমার মা আর নেই আমাকে ছেড়ে চলে গেছে কথা বলার শক্তি ও
যেনো আজ হারিয়ে গেছে আমি চিৎকার করতে পারছিনা

দৌড়ে মার কাছে গেলাম মাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেঁদে
উঠলাম

মা তুমি আমাকে ছেড়ে কিভাবে চলে গেলে আমি কজ নিয়ে থাকবো
মা আমার কি হবে
মা একবারো ভাবলেনা

মা আমি যে আজ চিরো এতিম হয়ে গেলাম মা আমাকেও নিয়ে যাওনা
তোমার সাথে মা মাগো

আমি কি নিয়ে থাকবো সবাই আমাকে এইভাবে ছেড়ে চলে যাচ্ছো মা
আমার কি দোষ মা আমি কিভাবে বেচে থাকবো

আরো নানান কথা বলেই কাঁদতে লাগলো
তারপর মাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে লাশ দাফনকাজ শেষ করলো সবাই
মিলে।

আমার কথা যেনো বন্ধ হয়ে গেছে সবাই আমার দিকে তাকিয়ে
তাকিয়ে কি যেনো বলছে

কিছুদিন গ্রামে কাটিয়ে আবার ফিরে এলো নিশি

পুরো অন্যরকম হয়ে গেছে মেয়েটা।

মা খাবারটা খেয়ে নে না আর কতো কাঁদবি তোকেযে আমি এইভাবে
দেখতে আর পারছিনা বলেই আন্টি কাঁদতে লাগলো

আমিও কাঁদছি।

কিছুদিন পর

রাতে শুয়ে আছি ভাবছি এতো কিছু হয়ে গেলো অথচ নীল আমার
কোনো খবর ই নিলোনা।

নীলের তো কি যেনো সমস্যা হয়েছিলো আমিতো আর
যেতে পারিনি দেখি কল করে

কল দিলাম ফোন অফ। অনেক বার ট্রাই করলাম কোনো কাজ হলোনা

পরেরদিন

নীলের তো কোনো খোজ পাচ্ছিনা বাসায় গিয়ে দেখে
আসবো একটু?

হ্যা তাই ভালো হবে আমি বরং বাসায় যাই

চলে গেলাম বাসায়।

বাসায় গিয়ে নীলের রুমে গেলাম গিয়ে দরজা খুলে যা দেখলাম
তারজন্য আমি মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না

হ্যা অদিতি আর নীল একি সাথে। সেই অদিতি যাকে নাকি নীল সবচেয়ে
বেশি ঘৃনা করতো আর আজ

অদিতি এমন একটা ভাব নিলো যেনো ওরা খুব অন্তরজ্ঞ সময়
কাটাচ্ছিলো

ছিঃ নীল এই ছিলো তোমার মনে?
একটা বার আমার কথা তোমার মনে হলোনা? একবার ভাবলেনা আমার কি
হবে?

তোর জন্য আমি কি ভাববো?
আর আমার ভালোবাসা নিয়ে কথা বলছিস?

আমি সেদিন নিঃশ্ব বলেছিলাম তাই আমাকে ছেড়ে চলে গেলি তখন
কোথায় ছিলো তোর ভালোবাসা?

কি ভেবেছিলি আসলেই আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছিলো? না আমার
শেষ হয়ে যায়নি তোর ভালোবাসা নিয়ে আমার বিশ্বাস ছিলো তাই অদিতির
কাছে প্রমান করতে গিয়েছিলাম তোর আর আমার ভালোবাসা

কিন্তু তার বিনিময়ে আমি পেয়েছি বিশ্বাস ঘাতকতা
বেরিয়ে যা আমার সামনে থেকে

নীল আমার,,,,

নতুন নাটক সাজিয়ে নিয়ে এসেছিস আমার মন গলানোর জন্য?
বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে?

নীল আমার কথাটা একবার শুনো প্লীজ?

তোর মুখে ভালোবাসা নামক শব্দটা মানায় না বলেই নিশির চুলে ধরে
ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিলো

সেখান থেকে কান্না করে বলছিলাম একটু বিশ্বাস ছিলোনা আমার উপর?
কেনো এমন করেছি?
আমার কথা গুলোও শুনলেনা
খুব কাঁদবে সেদিন যেদিন বুঝবে তুমি কি ভুলটা করেছো আজ? কিন্তু
সেদিন তুমি আমাকে খুজেও পাবেনা বলেই চলে এলাম

বাসায় এসে খুব কাঁদলাম সবাই আমাকে একা করে চলে যায় আমার কি
অপরাধ? কি করেছি আমি?

কি পরিক্ষা নিচ্ছো খোদা আমাকে একা করে দিয়ে
খুব কাঁদলাম

রাতে

কিরে খাবিনা?

আন্টি খেতে ইচ্ছে করছেনা। আন্টি চলনা অন্য কোথাও যাই এইখানে
আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে বলেই কাঁদতে লাগলাম

(মায়ের স্মৃতি নীলের স্মৃতি আমাকে পাগল করে দিচ্ছে আমি আর
পারছিনা নীলও আমাকে বুঝলোনা আমার সাথেই কেনো এমন হয় )

আমি জানিরে। চল রাজশাহী থেকে কিছুদিনের জন্য ঘুরে আসি আমার
গ্রামের বাড়ি থেকে

তারপর দিন চলে গেলাম রাজশাহী

আমার সিমকার্ডটা খুলে মায়ের সিমকার্ডটা লাগালাম

এইভাবে কেটে গেলো একসপ্তাহ

সকালবেলা

আরেহ ভাইয়া। কেমন আছেন? ।
আরে নীলা তুমি? আমি ভালো আছি তুমি কেমন আছো?

হ্যা এইতো ভালো।
নীলাকে অনেক সময় দিতে হচ্ছে আপনার তাইনা?

কি করবেন বলেন কোনোদিন ও ভাবিনি আন্টি এতো তারাতাড়ি মারা যাবে
খুব একা হয়ে গেছে মেয়েটা

হয়তো আপনি ছাড়া আর কেউ নেই এখন নিশির?

মানে নি নিলা? নিশির মা কবে মারা গেলো আর নিশির সাথে আমার
কোনো যোগাযোগ নেই

কি বলছেন আপনি?

তারপর নিলাকে সব খুলে বললাম

কিন্তু ভাইয়া ০৮ তারিখেই তো নিশির মা এক্সিডেন্ট করে

তুমি সিউর ০৮ তারিখেই এক্সিডেন্ট করেছে?

হ্যা আমি সিউর।কারন সেদিন আমাকে দেখতে এসেছিলো তাই আমি নিশির
কাছে যেতে পারিনি আর ঐদিন বিয়ে হয়ে যায় যার জন্য এতোদিন খুব
বিজি ছিলাম তাই যোগাযোগ করতে পারিনি

করতে পারিনি বললে ভূল হবে আমি চেষ্টা করেছি নিশির নাম্বার বন্ধ

ওমাই গড
এই আমি কি করলাম




continue……
.বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *