অদ্ভুত তিনি

অদ্ভুত তিনি !! Part- 16

-তোমাকে ঠিক কতটা ভালেবাসি তা তুমি জীবনে কল্পনা করতে পারবে না৷ সেই দিন আমাকে তুমি প্রশ্ন করেছিলে, আমাকে কি আর আগের মতো ভালেবাসো না। তাহলে শুন কতটা ভালোবাসি তোমাকে,
তখনি আমার চোখ খুলে যায়৷
–আমা………ন……..
–কিরে মা কি হইছে চিল্লাছিস কেন। সোনা মা ঠিক আছিস৷ (মেঘের আম্মু)
আমি দেখি আমি আমার রুমে আছি৷ পাশে মা বাবা, ফুপি,ফুপা।
মা আমাকে জরিয়ে ধরেছেন।
–মা আমান কই৷ ও এখানে ছিলো এই খানে মা আমার পাশে কই গেল উনি৷ মা বলো না।
আমি পাগলের মতো করে মাকে প্রশ্ন করছি কিন্তু মা আমার শুধু কাঁদছে কোন কথার উত্তর দেন না৷
–মা বলো না আমার আমান কই৷ আব্বু তুমি বলো প্লিজ আব্বু।
–শান্ত হও মা কিছু হয় নি। আমার সোনা মেয়ে আমান আসবে এই একটু বাইরে গেছে এখনি ফিরে আসবে। এতো উত্তেজিত হস না। (মেঘের আব্বু)
–না আমাকে এখনি এনে দেও ওনাকে৷ এাখনি। এখনি। এখনি। আব্বু আমাকে,
আর কিছু বলতে পারলাম না মনে হচ্ছে কেউ আমাকে ইনজেকশন পুশ করছে ধিরে ধিরে আমি অবশ হয়ে ঘুমের দেশে চলে গেলাম।
–মেঘের আব্বু আমার মেয়েটা মরে যাবে কিছু করো ওকে এভাবে দেখতে পারছি না আর।
–আন্টি চিন্তা করবেন না আমি ওর পুরোপুরি খেয়াল রাখবো। (আকাশ)
–তোমাকে দিয়ে তো ভরসা পায় রে বাবা৷ আমার বাচ্চা মেয়েটার জীবনে কি থেকে কি ঘটে গেল৷ আমান কি করে এভাবে হটাৎ মারা যেতে পারে আমার বোঝার ক্ষমতার বাইরে। তার উপর মেয়েটা আমার এখন দুটো জীবন বহন করে।
–এতো ভেঙে পরবেন না ওকে অবশ্যই সুস্থ করে তুলবো। বিশ্বাস রাখুন আমার উপর। (আমিও দেখবো এই বাচ্চা কি করে ভুমিস্ট হয় , মনে মনে,)
এখন আপনারা চলুন আমিও যায় এখন ওকে ঘুমতে দিলে ভালো হয়৷
–না বাবা আমি ওর কাছে থাকবো। চাদনি(মেঘের ফুপি) মেঘের জন্য একটু খাবার রান্না করে আনো। ও উঠলে খাইয়ে দিবো। আকাশ তুমিও কিছু খাও নি সবাই খেয়ে নেও। ওদের নিয়ে যাও চাঁদনি।

–জী ভাবি আমি যাচ্ছি৷
চাঁদনি সবাইকে নিয়ে বাইরে চলে যায়। ।
বাইরে এসে,
-বাবা আকাশ তুমি আমার মেয়ে টাকে এখানে এনে খুব বড়ো কাজ করেছো কি করে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না৷ এক জন কে তো হারিয়েছি অন্য জনকেও হারাতাম তুমি না থাকলে।
তুমি অনেক ক্লান্ত গেস্ট রুমে গিয়ে রেস্ট নেও। চাঁদনি চটজলদি যা পারো তাই রান্না করো. । (মেঘের ফুপা)
(আসলে আকাশ মেঘকে নিয়ে এ বাড়ি এসে সবাইকে এটা বুঝিয়েছে আমানের উপর অন্য একটা বংশের জ্বিন অক্রমন করে ফলে মেঘের এই অবস্থা আর আমান মারা গেছে। মেঘের মা, বাবা, ফুপা, ফুপি মেঘের এই অবস্থা দেখে আর কিছু প্রশ্ন করার মতো অবস্থায় ছিলেন না৷ সবার মাথায় একটাই চিন্তা মেঘকে সুস্থ করাটা। কারন মেঘের মাথা ফেটে রক্ত বার হচ্ছিল। তার উপর চকাপ করে জানতে পারেন মেঘ প্রগনেন্ট।)
–আচ্ছা আঙ্কেল। (আকাশ চলে যায়)
রাত ৭ টা,
মেঘের চোখ খুলছে একটু একটু করে,
পাশে বসে থাকা মেঘের আম্মু দৌরে মেয়ের কাছে চলে যান।
–মা কি হচ্ছে কষ্ট হচ্ছে কোথাও৷
–মা আমাকে একটু ধরে উঠাও।
মা আমাকে ধরে বিছনায় আদ শোয়া করে শুইয়ে দিলেন।
–মা আব্বু বলেছিলেন আমান বাইরে গেছে আসবে এখনি কই উনি এখনো কেন আসে নি মা।
–চলে আসবে সোনা এখনি তুমি আগে খেয়ে নেও। (এই অবস্থায় মেয়েকে সত্যি বলার সাহস নাই মেঘের পরিবারের কারোর)
–না আমি ওনার কাছে খাবো তুমি আমানকে ডাকো না মা৷ একটু আগে তিনি এখানে ছিলেন আমার খুব কাছে। মা ডাকো না ওনাকে ( কান্না করতে করতে)
–মা সোনা তুমি কি জানো এখন তুমি আর একা নও তোমার সাথে তোমার মধ্যে বেড়ে উঠছে একটা ছোট্ট জীবন। তুমি মা হবে সোনা মা। এমন বাচ্চামি করো না খেয়ে নেও৷ আমান চলে আসবে এখনি৷ (কি করে বলবো তুমি যা দেখেছো তা ছিলো তোমার স্বপ্ন। মনে মনে)
আম্মুর কথাটা শুনে আমি নিজের পেটে হাত দিলাম৷
-সত্যি মা৷
-হ্যা মা খেয়ে নেও৷

-মা ওনাকে ডাকো না৷ উনি শুনলে অনেক খুশি হবে দেখো৷ কতো স্বপ্ন ছিলো যানো এই দিনটা নিয়ে। ওনি আমাকে বলেছিলেন
তো। কেন ডাকছো না ওনাকে।
মা আমাকে তার বুকে টেনে নিলেন৷ আমি তার বুকে শুয়ে অনেক কান্না করতে লাগি চিৎকার দিয়ে দিয়ে। বার বার একটাই কথা বলছি৷ আমানকে এনে দেও। আমানকে এনে দেও৷ কেউ আমাকে বুঝতেই চাচ্ছে না৷ এতো কষ্ট হচ্ছে আমার বলে বুঝতে পারছি না কাউ কে।
অনেকটা সময় পর।,
–মা তুমি নিজের জন্য না বাচ্চাটার জন্য খেয়ে নেও একটু৷ ।
-না আগে আমান আসবে তার পর খাবো।
আম্মু যোর করে আমাকে একটু খাইয়ে দিলো৷ আমার পেটে ২ লোকমা ভাত যেতে আমি আর খেতে পারি নি৷ কেমন অস্থির লাগছে আমার৷
–আচ্ছা আর খাওয়া লাগবে না৷ তুমি এসো আমার কোলে এসো।
আম্মু আমাকে কোল পেতে সুইয়ে দিলেন৷ আমার মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছেন৷
আর সেই পুরেনো একটা গান করছেন৷ বুঝতে পারছি গানটা করার সময় আম্মুর গলটা বার বার আটকে আসছে।
–আম্মু।
-জী মা।
–সত্যি বলো না আমার আমান কোথায়৷
–চলে আসবে মা এখনি এই যে একটু বাইরে গেছে। আমান তোমাকে ঘুমতে বলেছে। কিন্তু তুমি ঘুমচ্ছ না। আমি কিন্তু না ঘুমলে আমি নালিস করে দিবো।
–ঘুম থেকে উঠে ওনাকে পাবো।
–হুম পাবে।
— সত্যি।
-হুম সত্যি ।
আম্মু কথা শুনে একটু একটু করে ঘুমিয়ে গেলাম।
মেঘের আম্মু মেয়ের এই অবস্থা দেখে আর সইতে পারছেন না। কতটা কষ্ট হচ্ছে তার মেয়ের তিনি ঠিক বুঝতে পারছেন৷
মেঘ ঘুমিয়ে গেছে। মাথাটা কোল থেকে নামিয়ে আলতো করে চুমু দিলেন কপালে।
–সোনা কি করে বুঝাবো তোকে আমান যে আর নাই। মেনে কি নিতে পারবি তুই৷
কিছু সময় মেয়ের কাছে থেকে লাইট অফ করে দিয়ে চলে যান মেঘের আম্মু।

রনি রনি রনি। মেঘ কি করে প্রেগনেন্ট হতে পারে কি করে৷ আমানের কোন ছায়া আমি ওর উপর পরতে দিবো না৷ সেখানে আমান মরে যাওয়ার পর ওর অংশ কি করে মেঘের শরীরে থেকে যায়৷
–স্যার আপনি কি ম্যাম এর সামনে যাবেন৷
–ডাফার আমি ওর সামনে গেলে সবটা বুঝতে পদরবে না৷ ও এখন না৷ এমন একটা ঔষধ আছে যেটা খেলে মেঘ ভুলে যাবে মনে করতে পারবে না কিছু৷ এতে অবশ্য ওর ক্ষতি হবে। ওর বাচ্চাও পরে যেতে পারে। কিন্তু তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আর এই ওছিলায় বাচ্চাটা পরে গেলে ভালো। অনেক জল ঘোলা করছি ওকে পাওয়ার জন্য৷ আমি কষ্ট করেছি ওকেও কষ্ট করতে হবে।
রনির মনে মনে মেঘের জন্য খারাপ লাগা কাজ করছে কিন্তু ও জানে এটা প্রকাশ করলে ওর জীবন এখানেই শেষ৷ তাই নিজেকে সমলে বললো।
–স্যার আপনি ঘুমন অনেক ধকল গেল৷ ।
–হুম।
আকাশ রনি ঘুমিয়ে পড়ে৷
সকালে,
চলবে,
🌼
(গল্পে রেসপন্স একদমি হারিয়ে যাচ্ছে 🥺)