ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা ! সিজন 2 ! Part- 15

তারার খুশি দেখে কে মা হওয়ার অনুভূতি যে বলে বোঝানোর মতো না। সারাদিন নিজের পেটে হাত বুলিয়ে মুচকি মুচকি হেসেই দিন কাটাচ্ছে। এদিকে তৃধা তো রেগে আগুন। রুমের যা কিছু আছে সব ভেঙ্গে ফেলছে। প্রভাত তৃধাকে থামানোর অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই পারছেনা। শেষে তৃধাকে কষে এক থাপ্পর দিল। তৃধার চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। অসম্ভব লাল হয়ে আছে তার দু চোখ প্রভাতের কলার চেপে ধরলো। তারপর চিৎকার করে বলল

–ধোকাবাজ! তুমি বলেছিলে তুমি ওর সাথে কোনো রকম ফিজিক্যাল রিলেশনে জড়াওনি। তাহল এখন এসব কি হচ্ছে? তোমাকে ভালোবাসি তাই তোমার অপমান সহ্য করতে পারিনি। তারা তোমার ইগো হার্ট করেছে যার জন্য তুমি এই গেমটা খেলেছো। তোমার কথায় আমি রাজি ছিলাম না তুমি আমায় বলেছিলে আমি যদি সত্যি তোমায় ভালোবেসে থাকি তাহলে তোমায় বিশ্বাস করবো। আমি তো তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি তাই না চাওয়া সত্যেও রাজি হয়েছি আর তাছাড়া তোমার অপমান হোক আমি তা কখনো চাইনি। কারণ আমি তোমার প্রেমে পাগল।

—(চুপ করে আছে)

—-তুমি আমায় কথা দিয়েছিলে ওর সাথে কোনোদিন ঘনিষ্ট হবেনা। আর এখন এসব আমি কি শুনছি! তারা মা হচ্ছে আর সেই বাচ্চার বাবা তুমি!

—-তৃধা কাম ডাউন বেবি আমি তোমাকে সব খুলে বলছি। কি খুলে বলবে যে তুমি ওর সাথে রাজলীলা করেছো সেটা!

এবার তৃধার গালে আরেকটা চড় ভারে প্রভাত অকথ্য ভাষা তার পছন্দ নয়। তৃধার ফর্সা গালটা লাল হয়ে গেছে। চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। তাও প্রভাতকে জড়িয়ে ধরে বলে

—-আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি বাঁচবোনা তোমাকে ছাড়া প্রভাত। আই লাভ ইউ।

—আই লাভ ইউ টু বেবি। কিন্তু এখন তোমার পরিস্থিতিটা বোঝা উচিত।

—-হুম। মানলাম পরিস্থিতির সব দোষ। এখন তা সুধরানোর দায়িত্ব তোমার।

—-কিভাবে?

তৃধা নিচের দিকে তাঁকিয়ে শান্ত গলায় বলল

—মেরে ফেল তারাকে আর ওর বাচ্চাকে।

—-আর ইউ মেড তৃধা! তোমার মাথা ঠিক আছে আমি এভাবে

—-হ্যাঁ ঠিক আছে।

প্রভাতের দুগালে হাত রেখে আদুরে গলায় বলল

—আমাকে ভালোবাসোনা!

—বাসি তো।

—-তাহলে আমার জন্য এটা তোমায় করতে হবেই।(শক্ত গলায়)

—তৃধা!

—এই তোমার ভালোবাসা! আমি তোমার জন্য সব করতে পারলে তুমি পারবেনা কেন? বলো কেন পারবেনা? কেন?

—-পারবো।(মুখ খিঁচে)

—-আমি জানতাম তুমি আমাকে ঠকাতে পারোনা।

—-আমাকে এখন যেতে হবে। তুমি রেস্ট নাও।

—-পালিয়ে যাচ্ছো?

—-তুমি যা চাও তাই হবে। ভয় পেও না জান।

প্রভাত চলে গেলে তৃধা সোফায় বসে পড়ে। আর বলতে থাকে

—-ভয় পাবো না! তুমি যদি আমাকে ঠকাও তার ফল ভালো হবেনা। You Know that I Hate Cheaters😡

প্রভাত আসার সময় অনেক ফল নিয়ে আসে। সাথে করে বেবিদের জামা খেলনা এসব আনার মতলব হলো তারার সামনে ভালো সাজা। তারা তো এসব দেখে খুব খুশি। সে নিজেকেই দায়ী করছে প্রভাতের মতো ভালো একটা মানুষকে ভুল বোঝার কারণে। তারা জানবে কি করে যে এই প্রভাত এখন ওর বাচ্চা আর ওর জন্য কতোটা ভয়ানক। প্রভাত তারার কাছে এসে বলে

—তারা তুমি আমাকে আজ যেই উপহারটা দিলে তা আমার জীবনের বেস্ট উপহার। তাই আমিও তোমাকে এমন কিছু দিতে চাই যা তোমার জীবনে সবচেয়ে বেস্ট উপহার হবে।

—সেটা কি?

—সেটা কি তা বলা যাচ্ছেনা। তবে সেটা জানার জন্য দেখার জন্য তোমাকে যে আমার সাথে যেতে হবে।

—-কোথায়?

—-বান্দরবান। আর আজকেই কিছুক্ষণ পরে রওনা হবো।

—-আজকেই!

—হুম।

—-কিন্তু

—-কোনো কিন্তু নয় বিশ্বাস করো তো আমাকে?

—-হুম চোখ বন্ধ করে।

—-তাহলেই হবে। রেডি হয়ে থেকো একটু পর এসে তোমাকে নিয়ে যাবো।(বাহ বাহ এতো বিশ্বাস আমার প্রতি!)

তারা আপনমনে রেডি হয়। দু ঘন্টা পর প্রভাত এসে তারাকে নিয়ে যায়। ওখানে যেতে অনেক রাত হয়ে যায়। হোটেলে গিয়ে তারা ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এই অবস্থায় এতো জার্নি ভালো না তাই প্রভাত ওকে রেস্ট নিতে বলে কোথাও যেন যায়।

সকালে তারা ঘুম থেকে উঠে প্রভাতকে আশেপাশে না দেখে একটু অবাক হয়। ডাকতে যাবে তখনিই দেখে ব্রেকফাস্ট নিয়ে প্রভাত রুমে ঢুকছে। তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। প্রভাত তারাকে ফ্রেশ হতে বলে ও ফ্রেশ হয়ে আসলে প্রভাত নিজের হাতে ওকে খাইয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর প্রভাতের ফোনে একটা কল আসতেই তাড়াতাড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

হোটেলের বাহিরেই দাঁড়িয়ে আছে প্রভাত আর তৃধা। দুজনেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছে। নিরবতা ভেঙ্গে তৃধা বলল

—-আজকেই তাহলে আমার পথের কাটা সরিয়ে ফেলবে।

—হুম। আজকে সব কিছু শেষ করে দিব সব কিছুই নষ্ট করে দিব। এখন আমি আসি এখানে থেকে আর কোনো কথা বলা যাবেনা।

—-হুম। All the best জান।

হোটেলে ফিরে প্রভাত তারাকে বলে পাহাড় ঘুরতে যাবে। তারার পাহাড় খুব ভালো লাগে তাই খুশি মনে রেডি হয়ে বসে থাকে। প্রভাত রেডি হলে একসাথে পাহাড়ে যায়। প্রভাত তারাকে নিয়ে অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরি করে তারপর পাহাড়ের এক কোণায় ওকে দাঁড়াতে বলে কোথাও চলে যায়।



—–তোমার মাথা ঠিক আছে কি বলছো তুমি এসব!

—-ঠিক বলছি আমি পারবোনা। আমার পক্ষে সম্ভব না।

—-প্রভাত ভুল করছো কিন্তু।

—–হুম নিজের স্ত্রী সন্তানের সাথে অন্যায় করছি। আমি আসি তুমি আমাকে ভুলে যাও।

—-মানে কি বললেই ভুলে যাবো। i want you

—–তৃধা প্লিজ চলে যাও।

প্রভাত চলে আসে সেখান থেকে। এসে তারাকে কোথাও খুঁজে পায় না এদিক ওদিক খুঁজতে লাগে তারাকে। তারা পাহাড় দেখতে দেখতে কখন যে অনেক উঁচুতে চলে যায় খেয়ালই নেই। নিচের দিকে তাঁকিয়ে ভয় পেয়ে যায় এতো উপর থেকে দেখে ও রীতিমত কাপতে থাকে তখনিই পেছন থেকে কেউ একজন এসে ওকে ধাক্কা মারে।

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *