বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 26

আস্তে করে আবিরের চোখে হালকা হালকা ফুঁ দিচ্ছে,,আবিরের পুরো মুখ লাল হয়ে আছে এখনও তিথি আবিরকে এতো টা কাছ থেকে দেখবে নিজের ইচ্ছেতে ভাবে নাই,,,
আবির এক চোখ একটু খুলে তিথির দিকে তাকায় তিথি অনেক টা ভয়ে আছে দেখেই বুজা যাচ্ছে,,,,,,মাথা নিচু করে বলে
তিথিঃ সরি আমি সত্যি জানতাম না যে এইভাবে আপনার চোখে গিয়ে পড়বে,,ভেবেছি আপনি সরে দাঁড়াবেন কিন্তু আমার ভুলের কারনে আপনাকে কষ্ট পেতে হয়,,,,সরি
তিথির চোখে আসা জমে থাকা পানি গুলো টপ করে নিচে পড়ে যায়,,,,অনেক টা গিলটি ফিল হচ্ছে তার এমন করায়,,,,,
তিথিঃ আমার কারনে আপনি আজ এতো টা কষ্ট পেলেন,,,,,,,
আবির চোখ খুলে যদিও জ্বলছে অনেক কিন্তু তিথির চোখের পানি গুলো যেন আজ আবিরকে খুব কষ্ট দিচ্ছে,,,আবির নিজে ও জানে না কেন তিথির চোখের পানি তার কাছে এতো টা খারাপ লাগছে,,,
তিথির চোখের পানি গুলো হাত দিয়ে মুছে দেয়,,,একটু উঠে তিথির সামনে এসে বসে,,,চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে গালে হাত দিয়ে নিজের কাছে আনে,,,
আবিরঃ তুমি কিছু করো নাই পাগলি,,,ভুলটা আমার ছিলো এইভাবে ডিস্টার্ব করা উচিত হয় নাই,,,আর তুমি তো আমার উপর রেগে আছো,,জিদে রাগে এমন করলে ইচ্ছে করে তো আর নয়,,,,
তিথিঃ হু,,,

তিথির গাল গুলো লাল হয়ে যায়,,,,চোখ থেকে অনবরত পানি পড়েই যাচ্ছে,,,আবির মুছে দিয়ে তিথিকে নিজের কাছে টেনে নেয় আরো,,,,তিথির চোখে যেন তাকে টানছে,,,আলতো করে চুমু দেয় চোখে বসিয়ে দেয়,,,,,,,,তিথি পুরো শকড আবিরের এমন কান্ডতে,,,,আবির তিথির মুখটা আরো কাছে আনে,,,,কপালে আলতো করে চুনু বসিয়ে দেয়,,,
তিথি চুপ করে আছে,,চোখ দুটি বন্ধ করে আছে,,,আবরের গেঞ্চি শক্ত করে ধরে আছে,,আবির তিথির চুল গুলো সরিয়ে ঘাড়ে কিস করে,,,,আবির তিথি যেন নিজের মধ্যেই নাই,,একটু তিথির দিকে তাকায় বন্ধ করে আছে চোখ দুটো,,,,কপালটা কেমন যেন বাজ করে রাখে,,,,মুখে এক রাশ হাসি এসে যায় তিথিকে এমন দেখেই,,,,
আবির ভাবতে থাকে,,,,
তিথির মায়ায় কি সে পড়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে,,, কেন তার কাছে এখন ইচ্ছে করে তিথির কাছেই থাকতে,,,,শুধু ইচ্ছে করে তিথির হাতটি শক্ত করে ধরে নিজের বুকে আগলে রাখতে এ কি আসলেই ভালোবাসা যা আবির তিথি কেউ বুজতে পারছে না,,,,আবিরকে কষ্ট দেখতে তিথির কষ্ট হচ্ছে আর তিথির চোখের পানি দেখে আবিরের,,,,,,
আবির তিথির গালে চুমু দেয়,,,,কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে বলে
আবিরঃ প্লিজ আমার সামনে কান্না করিও না,,জানি না কেন তোমার চোখের পানি আমাকে আঘাত করে,,,,খুব কষ্ট হয় এখন তোমার চোখে পানি দেখলে,,,
তিথি বিছানার চাদুর শক্ত করে চেপে ধরে আছে,,,আবির তিথিকে হুট করে জড়িয়ে ধরে,,,,, তিথি পুরো শকড যে আবির তাকে এইভাবে জড়িয়ে ধরেছে, ছুটার চেস্টা করছে অনেক কিন্তু পারছে না,,
তিথিঃ ছা,,ড়ুন,,
আবির চুপ করে আছে চোখ বন্ধ করে,,,,,কেন জানি বুকের মধ্যে একটা শান্তি লাগছে মনে হচ্ছে সে আজ পূর্ণ,,,,কিন্তু কারনটা অজানা,,,,,
কিছু ক্ষন ধরে তারা এইভাবে আছে,,,তিথির কাছে ও অনেক ভালো লাগছে,,,,,সে ও চুপ করে আছে,,,ভালো লাগা যে এখন দুইজনের মনে কাজ করছে,,,,
হুট করে ফোনের রিং বেজে উঠে,,,অনেক বার কল বাজে তিথি আবিরকে একটু সরিয়ে বলে
তিথিঃ আপনার ফোন?
আবিরঃ কল আসার আর টাইম পাইলো না দূর,,,
তিথিঃ কি???
আবিরঃ কিছু না দাও তো ফোন
তিথি উঠে টেবিল থেকে ফোন টা নেয়,,,,ফোনের স্কিনে একটা নাম দেখে তিথি বেশ অবাক হয়ে যায়,,,মায়রা নাম কিন্তু কে এই মায়রা সে জানে না,,,
আবিরঃ কি হলো কে কল দিয়েছে?
তিথিঃ মায়রা,,,,
নামটা শুনেই যেন আবিরের চেহারায় চিন্তার চাপ এসে যায়,,,,,উঠে দাঁড়িয়ে যায়,,,তিথির হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নেয়,,,কল কেটে দেয়
তিথিঃ কে এই মায়রা???
আবিরঃ তুমি জেনে কি করবে?একটা কফি নিয়ে আসো,,,,
তিথিঃ এই ঠিক দুপুরে কফি খাবেন?
আবিরঃতোমাকে যা বলেছি তা করবে প্লিজ
তিথি চুপ করে রুম থেকে বের হয়ে যায়,,সিড়ি দিয়ে নামছে আর ভাবছে কে এই মায়রা যার জন্য আবিরের চেহারার মুহূর্তে চিন্তার ভাব আসে,,আর তার ব্যবহার ও মুহূর্তে পাল্টে যায়,,, চুপচাপ কিচেনে গিয়ে কফি বানাতে থাকে,,,
এইদিকে আবির মায়রার কল পেয়েই যেন মনে পড়ে যায় সব,,,কি বলবে সে এখন মায়রাকে,,,কিভাবে বলবে যে সে বিয়ে করে ফেলেছে যদি মায়রা আবার আত্নহত্যা করার চেস্টা করে,,,আবিরের কখনো জিএফ ছিলো না শুধু মাত্র মায়রার জন্য,, যখনই কোনো মেয়ে আবিরের কাছে আসতো কথা বলতো মায়রা অই মেয়েদের অবস্থা খারাপ করে দিতো,,,চুপ করে ফোন টা নিয়ে বসে আছে,,,কি করবে বুজতে পারছে না,,,
ফোনের রিং আবার বেজে উঠে,,,
ফোন টা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়,,,কল রিসিভ করার সাথে সাথে মায়রা অনেক গরম,,,
মায়রাঃ কয়বার কল দিয়েছি আমি হ্যাঁ?? কল কেন রিসিভ করো নাই???
আবিরঃ মিটিং ছিলো তাই,,,আর অফিস টাইম এখন ভুলে যাইও না,,,
মায়িরাঃ অহ সরি সরি,,,এতো দিন কই ছিলে হুম,,,একটা কল দাও নাই আমি দিলে ও ধরতে না,,কত টেনশনে ছিলাম জানো,,,
আবিরঃ কাজ ছিলো কিছু তাই,,,কিছু বলনে কি??
মায়রাঃ অনেক মিস করছি তোমায় জানো,,,
আবিরঃ মায়রা আমার কাজ আছে কিছু বললে তাড়াতাড়ি বলবে,,,
মায়রাঃ প্রত্যেক বার এতো এড়িয়ে যাও কেন আমাকে?
আবিরঃ অফিস টাইম তাই,,,,
মায়রাঃ আচ্ছা,,,মিস করছিলে আমাকে?
আবিরঃ মায়রা প্লিজ বুজার ট্রাই করো কাজ আছে,,,
মায়রাঃ ওকে ওকে বেবী এতো রাগার কিছু নাই,,,আচ্ছা শুনো
আবিরঃ কি?
মায়রাঃ একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য বেবী,,,,,
আবিরঃ কি সারপ্রাইজ?
মায়রাঃ অইটা সারপ্রাইজ থাকুক,,,,সময় হলে দেখবা,,,
আবিরঃ আচ্ছা অফিসের কাজ আছে পরে কথা বলবো,,,,,
মায়রাঃ আচ্ছা শুনো,,,
আবিরঃ কি?
মায়রাঃ আই লাভ ইউ,,,
আবিরের কাছে এই সময় খুবই বিরক্তি লাগে,,,আবির চুপ করে আছে আসলে কি বলবে বুজতে পারছে না,,৷
মায়রাঃ কি হলো বলো,,খুব শুনতে ইচ্ছে করছে প্লিজ বলো বেবী,,,
তিথি কফি নিয়ে এসে দেখে আবির রুমে নাই,,,বারান্দায় এসে দেখে আবির ফোনে কথা বলছে,,, মুখে বিরক্তির চাপ,,,তিথিকে দেখেই আবির বলে উঠে
আবুরঃ আচ্ছা বাই,,,পরে কল দিবো সময় করে,,,
কলটা কেটে দিয়ে মুচকি হাসি দেয়,,,তিথি আবিরকে কফি দিয়ে চলে যেতে লাগে আবার আবিরের কাছে এসে বলে
তিথিঃ ঠিক আছেন আপনি?
কগি কাফে চুমুক দিতে না দিতেই তিথির এমন প্রশ্ন করাতে তিথির দিকে তাকিয়ে আছে ভাবছে কি বলবে,,
ভাবে তিথিকে সব সত্যি বলে দিবে,,,আজ সত্যি বলে দিবে যা হবে দেখা যাবে,,আবির ভাবে সে তো আর প্রেম করে নাই তাহলে এতো ভয়ের কিসের,,মায়রা একটা সাইকো ওর পাগলামি গুলোর জন্য আবিরকে অনেক টা কষ্ট পেতে হয়েছে আগে গিয়ে যেন তিথিকে না পেতে হয় তাই সিদ্ধান্ত নেয় আজ সত্তিটা বলেই দিবে তিথিকে,,
আবিরঃ কিছু জানা উচিত তোমার,,,একটা কথা আছে যা জানা খুব দরকার তোমার,,,
তিথিঃ কি?
আবির তিথির হাত ধরে বলে,,,

আবিরঃ আমি লন্ডনে পড়াশুনা করেছি,,অইখানে ভার্সিটিতে আমার অনেক ফ্রেন্ড আছে,,,,তাদের মধ্যে এমন একজন আছে যে আমার জন্য খুবই বিরক্তিকর,,,পুরো হেল বানিয়ে দিচ্ছে ধরতে গেলে আমার লাইফ,,,,,,
তিথি আবিরের কথা শুনছে না তেমন তার মন অন্য দিকে,,,আবির তিথির চেহারার দিকে তাকিয়ে আবার
নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে একটা ছাগলের বাচ্চা বাগানের ফুল গুলো খাচ্ছে,,আবিরের খুব রাগ লাগে যে তিথি তার কথা না শুনেই অইদিকে মন দিয়ে দেখছে সে ইম্পর্টেন্ট কথা বলে আর তিথি কি না,,,,,
তিথি আবিরের হাত থেকে হাত ছুটিয়ে ছাগলকে চিল্লিয়ে বলে
তিথিঃ অই ছাগল এর বাচ্চা তোর মা কই রে হ্যাঁ?? তোকে এইভাবে ছেড়ে দিচ্ছে আর আমার মাসুম ফুল গুলো এইভাবে খাচ্ছিস আজ তোর একদিন আমার কয়েদিন,,,
আবিরের খুব রাগ লাগে,,,
আবিরঃ তিথি আমি কি বলতেছি তা কি শুনবে প্লিজ,,,
তিথিঃ আপনার কথা যখন তখন শুনা যাবে কিন্তু আমার ফুল গুলো সব খেয়ে ফেলবে ছাগলের বাচ্চা গুলো,,,,,
আবিরঃহোয়াট?????
তিথি তাড়াতাড়ি দৌড়ে চলে যাত,,,,,আবির বাগানের দিকে তাকিয়ে আছে,,,খুবই বিরক্তি লাগছে আবিরের এই ভেবে যে তিথিকে সত্যি বলতে চাইচ্ছে আর তিথি কিনা না শুনেই দৌড়াইছে,,,
তিথি নিচে গিয়েই বাগানের মধ্যে যায়,,,,ছাগলের বাচ্চা টাকে সরিয়ে দেয়,,হাতে একটা লাঠি নিয়ে,,,
তিথিঃ হুস হুস যা এখান থেকে,,,
ছাগল টা তিথির আঁচল ধরে টানা শুরু করছে,,,এই দেখে আবিরের খুব হাসি পায়,,,আর তিথি আঁচল ধরে টানছে,,,আঁচল সরিয়ে একটা পাতা নিয়ে ছাগলের সামনে ধরে ছাগল তা খেয়ে ফেলে,,
তিথি ছাগল টাকে ধরে বসে,,,মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
তিথিঃ ক্ষিধে পাইছে আমাকে বললে তো হয়,,এতো সুন্দর ফুল গুলো খাওয়ার কি আছে হুম,,,আর আমার শাড়ির আঁচল খেলে কি পেট ভরবে বেকুব,,,,ক্ষিধে পেলে বলতে হয় এইটা ও জান্সি না বেকুব ছাগল,,,
তিথির কান্ড দেখে আবিরের প্রচুর হাসি আসে,,হাসি যেন থামছেই না,ভাবতে থাকে মেয়েটা আসলে কি ,,,,বড় তো হয়েছে কিন্তু বাচ্চামি গুলো যে তার যায় নাই,,,আবির দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তিথির কান্ড গুলো,,,,আর হাসছে,,,
দুপুর গনিয়ে আসে,,,,সবাই খেতে আসে এক সাথে আবির আসে না নিচে,,মা তিথিকে বলে
মাঃ তিথি তোমার আর আবিরের খাবার আমি উপরে পাঠিয়ে দিতেছি,,,দুইজন খেয়ে নাও আর হ্যাঁ নিজে খেয়ে তারপর আবিরকে খাইয়ে তারপর ওষুধ খাইয়ে দিয়ে আসবে,,,
তিথি ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে ভাবছে,,
তিথিঃ(হেএএ উনি কি ছোট বাচ্চা যে উনাকে খাইয়ে দিতে হবে?আবার ওষুধ ও কেন উনার কি হাত নাই?শাশুড়ি মা আমাকে কেন ফাঁসায় সব সময়)
মাঃ কি হলো ভাবছো কি এতো?
তিথিঃ কিছু না তো,,,,
গভীর চিন্তায় পড়ে আছে তিথি,,,খুবই রাগ লাগছে ভাবছে কি করবে,,,খাদিজা খাবার গুলো নিয়ে উপরে যাচ্ছে তিথি পিছনে পিছনে যায়,,,ভাবতে থাকে আবিরকে সে খাইয়ে দিবে কিভাবে আর আবির কি ভাববে এইসব,,,
খাবার গুলো রুমে দিয়ে খাদিজা চলে যায়,,,তিথি বসে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ আপনার খাবার,,,,মা বলেছে খাইয়ে দিতে??
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে আছে
তিথিঃ আমার দিকে কেন তাকিয়ে আছেন হু,,,মা বলেছে আপনাকে খাইয়ে দিতে,,
আবির বেশ খুশি কথাটা শুনে,,
আবিরঃ তো খাইয়ে দাও,,,
তিথিঃ আপনি কি বাচ্চা যে খাইয়ে দিবো?নিজে খেয়ে নেন,,,
আবিরঃ মা যেহেতু বলেছে খাইয়ে দিতে তাহলে দাও তো কথা না বলে এতো,,,,,
তিথিঃ আর আপনি??
আবিরঃ আমি কি ফেসবুক ঘুরবো,,,,
তিথির রাগ লাগে,,,আবির ফোন টা নিয়ে সুন্দর করে বসে,,
তিথি হাত ধুয়ে ভাত মাখতে থাকে আর আবিরের দিকে তাকাচ্ছে আবির ফোনে মন দিয়ে কি যেন দেখছে,,এতো টা কেয়ার না করে ভাত মেখে আবিরের মুখের সামনে ধরে,,,
তিথিঃ হা করুন,,,
আবির হা করে তিথি খাইয়ে দেয়,,,তিথি আবিরকে খাইয়ে দিচ্ছে ভাত শেষের দিকে দেখে আবির,,,মাথায় যেন একটা দুষ্ট বুদ্ধি আসে,,,তিথি যখন আবিরকে আবার খাইয়ে দেয় হুট করে আবির ইচ্ছে করে তিথির হাতে কামড় দেয়,,,
তিথিঃ আউচ
আবিরঃ কি হলো?
তিথিঃ উফফ রাক্ষস নাকি আপনি?? ভাত খাবেন আমার হাত কেন খাচ্ছেন?এমন করলে খাইয়ে দিবো মা,,
আবিরঃ অহ সরি,,,,খেয়াল করি নাই,,
তিথিঃ হু,,,,
আবিরঃ বাই দ্যা ওয়ে হাতটা টেস্টি ছিলো কিন্তু ,,
তিথি এইবার রেগে যায়,,,
তিথিঃ দূর আপনি খান তো আমি খাওয়াতে পারবো না,,,
আবিরঃ ওকে ওকে সরি,,,আর হবে না সত্যি,,,,
তিথি রাগী লুক নিয়ে আবিরকে খাইয়ে দিতে থাকে আবার ,,,,খাওয়ানো শেষ আবিরের দিকে পানির গ্লাস দেয়,,,,আবির তিথির দিকে তাকিয়ে আছে শুধু,,,,পানির গ্লাস নিয়ে বলে
আবিরঃ তিথি,
তিথিঃ জ্বি বলুন,,,,,

আবিরঃ প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও,,,,আমার ভুলের কারনে আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে হারিয়েছি,,,,,তোমার সাথে যা অন্যায় করেছি এইজন্য নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না,, খুব কষ্ট হচ্ছে এই বোজা বুকে নিয়ে থাকতে,,,, প্লিজ তুমি যদি ক্ষমা করে দাও তাহলে হয়তো বোজাটা কমবে,,
তিথি চুপ করে আছে,,,,,আবিরের দিকে একটু ও তাকাচ্ছে না,,,
আবিরঃ কিছু তো বলো প্লিজ,,,,
তিথিঃ আপনার ওষুধ এর সময় হয়ে এসেছে,,,,
তিথি উঠে হাত ধুয়ে আবিরকে ওষুধ দেয়,,,
আবিরঃ তিথি প্লিজ
তিথি উঠে হাত ধুয়ে নেয়,,,আবিরকে ওষুধ দেয়
তিথিঃ খেয়ে নেন ওষুধ,,,
তিথি না খেয়েই সব খাবার নিয়ে চলে যায়,,,আবিরের একটা কথা ও শুনে নাই,,,,আবির খুব মন খারাপ হয়ে যায়,,,তার ভুলের শাস্তি এইভাবে পাবে সে কখনো ভাবে নাই,,,কিভাবে তিথিকে বুজাবে সে তার ভুলটা অনেক বড় হয়ে গেছে সে জেনে করে নাই কিছু
এইদিকে,,,,,
আমান তিশার ছবি নিয়ে রুমের এক কোণায় বসে আছে,,,,খুব কষ্ট হচ্ছে তার,,,বুকের মধ্যে অজানা ভিয় কাজ করছে এই ভেবে যে তিশা ঠিক আছে তো,,,
আমানঃ কোথায় তুমি তিশা?ফিরে আসো প্লিজ আর যে পারছি না আমি,,,আমার কথা কি মনে পড়ছে না কই গেলে তুমি তোমার আমানকে ছেড়ে???
আমানের চোখে জমে থাকা পানি গুলো টপ টপ করে পড়ছে,,,,খুব যে কষ্ট হচ্ছে তার,,,তিশার ছবির দিকে তাকাচ্ছে আর চোখের পানি ফেলছে,,,
এইদিকে,,,,
অন্ধকার একটা রুম,,আশেপাশে অনেক আওয়াজ কান্নার,,,,খুব ভয় লাগছে তিশার,,,অন্ধকার রুমে তিশাকে আটকিয়ে রাখা হয়,,,কোথায় আছে সে জানে না শুধু জানে তাকে তুলে আনা হয় এখানে,,,
ছোট একটা রুমের মধ্যে সে বন্দী আছে,,,কান্না করে করে চোখ মুখ সব ফুলিয়ে ফেলে,,,তবুও মনে একটা আশা আছে তার যে তার আমান তাকে ঠিক এই জায়গা থেকে মুক্তি করবে,,,

একটা ছেলে এসে একটা প্লেট তিশার দিকে ছুড়ে দেয়,,,
ছেলেটিঃ খেয়ে নে তাড়াতাড়ি,,,,আজ ন্যাকামি করলে দেখবি কি করি তোর,,বড্ড বেশি ন্যাকামি তোর,,,,
ছেলেটি চলে যায়,,,,তিশা প্লেটের দিকে তাকিয়ে দেখে পোড়া ২টা রুটি অল্প একটু ভাত আর সবজি,,,এইসব কখনো তিশা খায় নাই,,,কিন্তু পেটে জ্বালা যে বড্ড জ্বালা,,,,,কিছু না ভেবেই খেতে লাগে,,রুটি গুলো অনেক শক্ত ছিড়া ও কষ্ট তবুও খেতে থাকে তিশা,,,
খাওয়া শেষ করে প্লেটটা পাশেই রাখে,,,,হাঁটু বাজ করে বসে আছে আর ভাবছে
তিশাঃআমান আমাকে নিয়ে যাও এখান থেকে,,,জানি না কেমন আছো তুমি,,,চাচা চাচি আহাদ ওরা কেমন আছে কিছু জানি না,,,আমার জন্য তারা বড্ড টেনশন করছে জানি,,আর আমানের কি অবস্থা আল্লাহ জানে,,,হে আল্লাহ আমাকে এখান থেকে বাঁচান প্লিজ আমার আমানকে পাঠিয়ে দেন,,,
তিশা কাঁদছে আর ভাবতেছে সবার কথা,,,
কিছু ক্ষন পর ছেলে গুলো আর দুইটা মেয়েকে আনে,,,তিশার দিকে ছুড়ে মারে,,একটা মেয়েকে দেখে বুজা যাচ্ছে তাকে অনেক মেরেছে,,চেহারার এমন অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায় তিশা,,,
তিশাঃ কি হয়েছে এইভাবে কে মেরেছে তোমায়?
আসমাঃ ওরা মেরেছে আপ্পা,,ওরা ভালো লোক না,,,অনেক খারাপ অনেক
তিশাঃ হ্যাঁ ওরা অনেক খারাপ,,,, আচ্ছা আমাদের এখানে কেন ধরে এনে আটকিয়ে রেখেছে জানো কি?
নরিনঃ আপনি জানেন না?
তিশাঃ না তো?
আসমাঃ ওরা নারী পাচার করে,,অল্প বয়সের মেয়ে ধরে এনে অন্য দেশে পাচার করে দেয়,,,,
কথাটা শুনেই তিশা ভয় পেয়ে যায়,,,ভয়ে বুকটা ধুপধাপ শুরু হয়ে যায়,,কান্নায় বুকটা ফেটে যাচ্ছে এই ভেবে যে তাকে ও পাচার করে দিবে অন্য দেশে,,,
নরিনঃ কাঁদিয়েন না আপ্পা,,আল্লাহ জানে আমাদের কি হবে?
তিশাঃ তোমরা কিভাবে জানলে?
আসমাঃ আমাদের অন্য জায়গায় রাখছে,,,ওদের সব কথা আমরা শুনি তারপর পালানোর চেস্টা করি অনেক মারে আমাদের তারপর এখানে আনে,,,আপনি এখানে কত দিন?
তিশাঃ অনেক দিন,,,কিন্তু আমি জানি না আমাকে কেন আনা হলো,,,,ভার্সিটি যাচ্ছিলাম এক লোক খুবই অসুস্থ হয়ে যায়,,উনি বলে উনাকে তার বাসায় পৌছায় দিতাম তা করলাম কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর আমার মুখে কি যেন দেয় আমি হুঁশ হারিয়ে ফেলি,,,যখন হুঁশ আসে নিজেকে এই অন্ধকার রুমে পাই,,,,
নরিনঃ শুধু আপনি আমি আসমা না এখানে অনেক মেয়ে আছে,,,ওরা আরো কয়েকটা মেয়ে আনলে সবাই কে পাচার করে দিবে,,,,
তিশা ভেঙ্গে পড়ে কথাটা শুনেই,,,
তিশাঃ(আমান প্লিজ আমাকে রক্ষা করো প্লিজ আমান আমাকে নিয়ে যাও এখান থেকে আমি যে অনেক বড় বিপদে পড়েছি,,,,)
চলবে,,,,,,,,,