কনের বয়স ১১ বছর, বরের ৪১
মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী, বয়স ১৮ হলেই বিয়ে দেওয়া যাবে। তবে ইসলামি শরিয়া আদালত চাইলে ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রেও বিয়ে অনুমোদন দিতে পারেন।
ছবি: সংগৃহীত
বিয়েতে পাত্রীর বয়স ১১ এবং পাত্রের ৪১ বছর। ওই ব্যক্তির আছে আরও দুজন স্ত্রী। ছয় সন্তানের ওই জনকের বিয়ে নিয়ে চলছে সমালোচনা। এই অসম বয়সের বিয়ে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে মাহাথির মোহাম্মদের মালয়েশিয়ায়। সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে বিয়ের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ করার দাবি উঠেছে।
বিবিসি ও ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মালয়েশিয়ার আবদুল করিম আবদুল হামিদ লুকিয়ে থাইল্যান্ডের ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে বিয়ে করছেন। আবদুল করিমের একজন স্ত্রী পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। থাইল্যান্ডে ওই শিশুটির মা-বাবা জানিয়েছেন, একটি শর্তে তাঁরা মালয়েশিয়ার ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের সন্তানের বিয়ে দিয়েছেন। তৃতীয় স্ত্রী হওয়ার অনুমতির সেই শর্ত হলো ওই শিশুর ১৬ বছর পর্যন্ত মা-বাবার কাছেই থাকবে। মালয়েশিয়ার সরকার বলছে, তাদের এখানে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়নি। এটি থাইল্যান্ডে ঘটেছে এবং তারা ঘটনাটির তদন্ত করছে। ওই ব্যক্তি একজন সমৃদ্ধিশালী ব্যবসায়ী। শিশুটির পরিবার দরিদ্র। অসম এ বিয়ে নিয়ে সমালোচনা চলছে মালয়েশিয়াজুড়ে।
শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, এ বিয়ে ‘জঘন্য ও অগ্রহণযোগ্য’। ইউনিসেফের মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি মারিয়ান ক্লার্ক হাটিং বলেছেন, এতে কোনোভাবেই শিশুটির ভালো হতে পারে না।
বিয়ের আংটি বদলের এ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: টুইটার
মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ইসমাইল বিবিসিকে বলেছেন, এ বিয়ে অবৈধ। কারণ শরিয়া আদালতে এ বিয়ে অনুমোদন পায়নি।
আবদুল করিম মালয়েশিয়ার বারনামা পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমি জানি আমার তৃতীয় স্ত্রীর বয়স ১১ বছর। তার বয়স ১৬ না হওয়া পর্যন্ত আমার স্ত্রী তার মা-বাবার সঙ্গেই থাকবে।’
বিয়ের পর একটি ছবিতে দেখা যায়, ৪১ বছর বয়সী আবদুল করিম শিশুটির হাত ধরে রেখেছে। কিন্তু ওই ব্যক্তির ইতিমধ্যে দুজন স্ত্রী রয়েছেন এবং তাঁর ছয় সন্তানও রয়েছে। ওই শিশুদের বয়স ৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।
মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী, কারও বয়স ১৮ হলেই তাঁর বিয়ে দেওয়া যাবে। যদিও ইসলামি শরিয়া আদালত চাইলেই ১৬ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রেও বিয়ে অনুমোদন দিতে পারেন। তবে মালয়েশিয়ার সরকার বলছে, স্থানীয় কোনো ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ওই বিয়ের কোনো রেকর্ড নেই।
মালয়েশিয়ার অধিকারকর্মীরা বলছেন, ১১ বছরের শিশুকে বিয়ে শিশুর ওপর যৌন নিপীড়নকারীর মতো আচরণ।
গত বছর মালয়েশিয়া যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে একটি আইন পাস করে। তবে সেখানে বাল্যবিবাহকে কোনো অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।