আলোছায়া !! Part- 27
আকাশ বেয়ে পড়ছে ঝিরিঝিরি পানি। মুষলধারের সেই বৃষ্টি এখন আর নেই। চারপাশটায় গভীর নীরবতা বিরাজ করলেও খানিকক্ষণ পরপর দমকা হাওয়া এসে জানিয়ে দিচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব। এর মাঝেই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো মুবিন। আজ সে চৈতালির সাথে কাটিয়েছে বেশ কিছু সময়। দুজনের মাঝের সেই প্রাণ জুড়োনো ভালোবাসা খুঁজতে বারেবারে উঁকি দিয়েছে অতীতের মিষ্টি কিছু স্মৃতির পাতায়। তবে কোথাও কি পেয়েছে তার সন্ধান?
বাসার সামনে এসে সিএনজি থামতেই ভাড়া মিটিয়ে তা বিদায় করে দিল মুবিন। ধীর পায়ে গেইটের দিকে এগিয়ে দারোয়ানকে কয়েকবার ডেকে উঠায় ভেতর থেকে গেইট খুলে তিনি হাই উঠিয়ে বললেন,
“স্যার ওই আপা আসছিলো। মেলাকক্ষন আপনার জন্য দাঁড়াইয়া ছিল।”
এই ভয়টাই পাচ্ছিলো সে। অস্থির মন বারেবারে বলছিলো পুষ্প আসবে তার খোঁজে.. অবশ্যই আসবে। বুকের ভেতরটা ধুকপুক করে উঠতেই ভেতরের দিকে এগুলো মুবিন। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে দরজা খুলে ঘরের ভেতরে ঢুকতেই পায়ে বাজলো কিছু। কপাল কুঁচকে কয়েক কদম এগিয়ে এল সে। ঘরের আলো জ্বেলে পাশ ফিরে চাইতেই দেখতে পেল একটি প্যাড।
প্যাডটি উঠিয়ে সময় নিয়েই চরণ তিনটি কয়েকবার আওড়ালো মুবিন। তারপর তা টেবিলে রেখে পরনের ভেজা শার্ট খুলতে খুলতে এগুলো ওয়াশরুমের দিকে। পুষ্প.. যার উপস্থিতি তাকে আনন্দ দেয়। যার গলার স্বর তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সুখের এক জগতে৷ যার একটা ফোন কলে সে শান্তি পায়। যার পাশে চলতে গিয়ে তুচ্ছ মনে হয় পুরো পৃথিবীকে। কেনো এমন হয় তার সাথে? সে নতুন করে পুষ্পকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল বলে? তবে কি মেজভাই ঠিক বলেছিল?চৈতালির প্রতি তার যা রয়েছে তা শুধুমাত্রই অপরাধবোধ? দায়িত্ববোধ?
গোসল সেরে টাউয়েল বেলকনিতে মেলে দিয়ে একটি সিগারেট ধরালো মুবিন৷ অপরাধবোধ, দায়িত্ববোধ থেকে চৈতালিকে আপন করে নেয়াটা কি আসলেই তাকে ঠকানো হবে? নাকি চৈতালির প্রতি তার ভালোবাসায় ধুলো পড়েছে? যা সময়ের সাথেসাথে একসময় ঠিকঠাক হয়ে যাবে? সিগারেটের লাল আগুনের দিকে তাকিয়ে ছোট একটা শ্বাস ছাড়লো সে। চৈতালি এখন একজনের মা। আর দশটা মায়েদের মতো তার চিন্তাভাবনায় এখন সর্বপ্রথম আসে চমক। তবে কি এখানে সে স্বার্থপরতার পরিচয় দিচ্ছে? শুধু তার ছেলের কষ্ট নিয়ে ভেবেই তার কাছে ফিরে এসেছে চৈতালি? একটাবারও কি ভাবছে না মুবিনের ভেতরে কী চলছে? সে কেমন আছে বা সে কী চায়? শুধু বারবার কেনো বলছে সে নিজে ভালো নেই? কেনো তাকে বারবার বিব্রত করতে পুষ্পর কথা তুলছে? কেনো তাকে বারবার অপরাধী প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে? তবে কি সে শুধু নিজের জন্য অবলম্বন খুঁজছে? নিজের ছেলের একটি সুস্থ স্বাভাবিক ভবিষ্যতের জন্য আঁকড়ে ধরতে চাইছে তাকে? মনে চলা প্রশ্নগুলোর নেতিবাচক জবাব আসায় লম্বা আরেকটি দম ছাড়লো মুবিন। চৈতালির এমন ভাবনা রাখাটা কি ভুল? চৈতালি তাকে ভালোবাসে.. মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। তবে কেনো সে তাকে নিয়ে ভাবতে পারেনা সুন্দর গোছানো একটি জীবনের স্বপ্ন? এখন তো তার নেই বিবাহ বন্ধনে জড়ানো সেই পিছুটানও! কিন্তু পুষ্প? তার দোষ কোথায়?
সে আবারও জীবনের কাছে পরাজিত। আবারও সে আরেকটি মেয়ের জীবন লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে। আবারও একটি মেয়েকে এক আকাশ স্বপ্ন দেখিয়ে মাঝপথে ছেড়ে দিচ্ছে হাত। কাকে ভালোবাসে সে? আর কার প্রতি দায়বদ্ধ? চৈতালি? যাকে ঘিরে একসময়কার ভালোবাসার ঘরে কিছুটা ময়লা জমেছে। সময় নিয়ে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করলে হয়তো একসময় ঠিক হয়ে যাবে। নাকি পুষ্প? যাকে ছাড়া পুরোটা জীবন কাটাতে হবে ভাবতেই দম বন্ধ হয়ে আসে তার। এ কেমন অসহনীয় এক অবস্থায় পড়লো সে? কেনো নিজের মনকে কোনোভাবেই বোঝাতে পারছেনা পুষ্প তার জীবনের একখানা কলি মাত্র? যে অল্প কিছুদিনের জন্য তার জীবনে এলেও তার অবস্থান অস্থায়ী.. হাতে থাকা সিগারেটটি ফেলে অস্থির চিত্তে ঘরে এল মুবিন। খুলে রাখা প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে অন করে ছাড়লো একটি দীর্ঘশ্বাস। পুষ্পকে তিলেতিলে কষ্ট দিয়ে তার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করার সে কেউ নয়। পুষ্প তার সম্পর্কে সবকিছু জানার অধিকার রাখে.. রাখে একটি সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক জীবন কাটানোর অধিকার।
শুয়েশুয়ে নানান ভাবনায় মত্ত ছিল পুষ্প। মুবিনকে নিয়ে তার মাথায় খেলছিল নানান বাজে চিন্তা। হতেও তো পারে মুবিন বড় কোনো বিপদে পড়েছে কিংবা সে অসুস্থ? হতে পারেনা কি? পারে.. কোথাও বড় কোনো ঝামেলা হয়েছে সে বুঝতে পারছে। তবে তার ভেতরে প্রবেশ করে খোলাসা করতে তার প্রয়োজন মুবিনের হাত। কিন্তু মুবিন তা ছেড়ে দিয়ে কোথায় হারিয়ে গেল? চোখের কোণায় কয়েক ফোঁটা জল এসে বাঁধা বাঁধতেই পাশ ফিরলো পুষ্প। নাকের ডগা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ায় তা মুছে চোখজোড়া বুজতেই বেজে উঠলো তার ফোনের রিংটোন। মুবিন? মুবিন কল করেছে কি? ধক করে উঠলো তার বুকের ভেতরটা। ঢোক চেপে জোরে কিছু নিঃশ্বাস ফেলে চোখজোড়া মেলে ফোন হাতে নিতেই বুকের ভেতরের জমানো সকল কষ্টগুলো তার বেরিয়ে আসতে শুরু হলো চোখবেয়ে।
“আপনি ফোন কেনো বন্ধ করে রেখেছিলেন? আর আপনি ছিলেন কোথায়? নিজের দুটো কথা শুনিয়েই ফোন বন্ধ করে রাখলেন? একবার চিন্তা করলেন না অপর পাশের মানুষটির উপর কী যাচ্ছে না যাচ্ছে! আপনি এতটা নিষ্ঠুর কেনো? আপনার কি আমাকে মানুষ বলে মনে হয়না? নাকি আমায় এভাবে মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে মজা পান আপনি?”
ওপাশ থেকে অস্পষ্ট সুরে মুবিন বললো,
“মজা পাই না…”
“তবে কেনো করেন আপনি আমার সাথে এমনটা? এর চেয়ে বরং আমাকে একবারে মেরেই ফেলুন।”
“বাজে বকো না..”
“বাজে বকবোটা কীভাবে? বকার জন্য কোনো রাস্তা রেখেছিলেন? মেসবাহ ভাইয়াও বললো আমায় জানাবে অথচ তিনিও জানালেন না। একা আমি কতটা সামলে চলবো?”
“আর আমাকে নিয়ে তোমার ঝামেলা পোহাতে হবে না। কিছু কথা বলার ছিল..”
“বলুন.. কিছু কেনো অনেক বলুন। তবে আর অন্তত এমন কাজ করবেন না। আমি.. আমি নিতে পারিনা মানসিক চাপ। একদম পারিনা।”
কাঁপা স্বরে পুষ্পর আওয়াজ ধ্বনিত হতেই অশান্ত সুরে মুবিন বললো,
“পুষ্প.. পুষ্প.. পুষ্প! আমি এতটা ডিজার্ভ করিনা।”
“কী ডিজার্ভ করেন না? কী হয়েছে?”
অবাক হলো পুষ্প।
মুবিন একরাশ অপরাধবোধ নিয়ে ক্ষীণ স্বরে বললো,
“তোমাকে আমি মিথ্যা বলেছিলাম।”
“মিথ্যা?”
বুকের ভেতরটা হুহু করে উঠলো পুষ্পর। মিথ্যা কী বলেছিল মুবিন?
“চৈতালি.. অনার বন্ধু। খুব কাছের বন্ধু৷ আমরা ছিলাম একই গ্রামের। কয়টা হবে? তাও দশবারোটা বাড়ির দুরত্ব ছিল.. আমি যখন মাসের পর রাজশাহীতে থাকতাম তখন আমাদের মাঝেমধ্যে টেলিফোনে কথা হলেও তার স্থায়িত্বকাল খুব বেশি দীর্ঘ ছিল না। তবে তাতেও কোনো ক্ষোভ ছিল না চৈতালির। ও বলতো, ভালোবাসায় দূরত্ব থাকা উচিৎ। দূরত্ব কখনোই ভালোবাসা কমাতে পারেনা, সম্পর্ক নষ্ট করতে পারেনা। এতে শুধুই ভালোবাসা বাড়ে। যে ভালোবাসাতে থাকে না কোনো সীমাপরিসীমা। আমি ওর কথাগুলো মন দিয়ে শুনতাম। ওর ধৈর্য দেখে মাঝামাঝে বেশ অবাকও হতাম। তবে চৈতালির ধৈর্যর পরীক্ষা নিতেই হয়তো একদিন আমাদের ছেড়ে বিদায় নিল অনা..”
চৈতালি? নামটা এর আগেও বলেছিল মুবিন? ভ্রু কোঁচকালো পুষ্প। বুকের ভেতরের ধুকধুকানি নিয়ে মুবিনের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনতে শুরু করলেও শেষটায় একগাদা উদ্বেগ নিয়ে সে বললো,
“বিয়ে হয়ে গেল? আপনি কিছুই করলেন না? একটাবার মেয়েটিকে বিশ্বাস করলেন না? ওভাবে ফিরে যেতে দিলেন?”
ফোনের ওপাশ থেকে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো মুবিন।
“হার হাসবেন্ড ডায়েড রিসেন্টলি। এন্ড সি ইজ ব্যাক ইন মাই লাইফ এগেইন…”
মুবিনের মুখ থেকে ধ্বনিত হওয়া শব্দগুলো কানে পৌছাতেই দম বন্ধ হবার জোগাড় হলো পুষ্পর। চোখভর্তি জল নিয়ে ঝাপসা দৃষ্টিতে মেঝের দিকে চেয়ে সে শুনতে লাগলো মুবিনের কথাগুলো।
“আজ এই পরিস্থিতিতে এসে নিজেকে দোষী মনে হয়.. মনে হয় আমি সেদিন ওর উপর বিশ্বাস রাখলে হয়তো ওর জীবনে এতটা দুঃখকষ্ট আসতো না। ওর ফ্যামিলি, ওর শ্বশুরবাড়ির ফ্যামিলি কারোর কাছেই ওকে নত হতে হতো না। পড়তে হতো না নিজের চেয়েও ছোট এক ছেলের কাছ থেকে এমন হয়রানির…”
মুবিনকে কথার মাঝপথেই থামিয়ে দিল পুষ্প। নিজের গলায় স্বর স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় দাঁতে দাঁত চেপে বিছানার চাদর আঁকড়ে ধরে লম্বা একটি দম ছেড়ে বললো,
“আপনি আমাকে সবকিছু বলতে পারতেন। মেয়েটি আসার আগে নয় তো পরে বলতে পারতেন! আপনার কী মনে হয়? আমি বুঝতাম না? আপনাদের দুজনের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়াতাম?”
“না..”
“তবে? আপনার উনার পাশে দাঁড়ানো উচিৎ। আপনাদের দুজনের মাঝে একটি গভীর সম্পর্ক ছিল। যার দশ পার্সেন্টও আমার সাথে এখনো গড়ে উঠেনি। আমি আসলে তেমন কেউ আপনার জীবনে হয়েও উঠতে পারিনি। কিন্তু দেখুন ভাগ্যে কী খেলা! সময় থাকতেই মেয়েটিকে তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন.. মেয়েটি একা। উনার পাশে দাঁড়ানোর মতো আপনি ছাড়া কেউ নেই। আপনাকে বিশ্বাস করে উনি এখানে এসেছেন। উনি বলতেন না দুরত্ব কখনোই ভালোবাসা কমাতে পারেনা? দেখলেন আজ উনি তা প্রমাণ করে দিলেন। হয়তো আপনাদের ভালোবাসাটা খাঁটি ছিল.. তাই দেখুন এতগুলো বছর পর উনি আপনার জীবনে ফিরে এসেছে। ক’জন পায় এই সুযোগ? ক’জনের ভালোবাসা এতটা নিখুঁত হয়? আসলে উনার মতো করে কখনোই আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারতামই না। তাছাড়া আমি মুভ অন করে নিতে পারবো। আমার খারাপ লাগবে না। আমি বাবাকেও বুঝিয়ে বলবো। আমার দিক থেকে আপনার কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের মাঝে কী ছিল বলুন? দুইদিনের পরিচয় আর কিছু মলিন স্মৃতির পাতা। যাতে নেই কোনো ভালোবাসার ছোঁয়া। এসব ভোলা কোনো কঠিন ব্যাপার নয়।”
“সত্যিই কি কঠিন নয়?”
মুবিনের করা প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পুষ্প ম্লান হাসার মতো করে বললো,
“উনার ছেলের এখন কী অবস্থা বললেন না তো!”
“এখন ভালো..”
“যাক! দ্রুত সুস্থ হয়ে যাক। সবকিছুর মাঝে নিষ্পাপ এই প্রাণটির তো কোনো দোষ নেই। তবে কেনো শুধুশুধু কষ্ট পাবে ও?”
“আর তুমি? এসবে তোমার দোষ কোথায় পুষ্প?”
“আমি তো কষ্ট পাচ্ছি না.. আমি এখন রাখছি কেমন?”
“রাখবে?”
“হ্যাঁ.. ভালো থাকবেন।”
ফোনের লাইন কেটে তা ছুড়ে বিছানায় ফেললো পুষ্প। গাল বেয়ে একাধারে গড়িয়ে পড়া চোখের জলে হাত ছোঁয়াতে দু’হাত মুখের কাছে এনেই সে চেপে ধরলো নিঃশব্দের অশ্রুগুলোকে। এ কষ্ট তার একার.. একার.. শুধুই একার।
পুরো রাত নির্ঘুমে কাটালো মুবিন। বারেবারে চোখ খুলে সে দৃষ্টি গোচর করলো তার ফোনটিকে। তবে তাতে পুষ্পর না কোনো কল, না কোনো ম্যাসেজ পেয়ে অস্থিরতা নিয়ে রাতটি পাড় করলেও সকাল সকাল সে বেরিয়ে পড়লো বাসা ছেড়ে। একা বাসায় পুষ্পর কথাগুলো তার বুকে গুতো দিয়ে উঠছিল, চোখজোড়া হয়ে উঠছিল ঝাপসা। হাজারো বুঝিয়ে সে দাবিয়ে রাখতে পারছিল না নিজের অনূভুতিগুলোকে।
“আজ আসার দরকার ছিল না।”
হাসপাতালের কেবিনে ঢোকামাত্র চৈতালির কথা শুনে ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ছাড়লো মুবিন। একটি চেয়ারে বসে গম্ভীরমুখে বললো,
“দরকার ছিল কি না তা আমি বুঝবো।”
ছেলের মাথার বালিশটি ঠিকঠাক করে দিল চৈতালি। তারপর ওয়াশরুমের আলো নিভিয়ে এসে চমকের পাশে বসে বললো,
“তুমি আমার হয়ে একটা কেইস করতে পারবে? যাতে চমক ওর বাবার সম্পত্তি ঠিকঠাক ভাবে বুঝেশুনে নিতে পারে?”
ভ্রু কোঁচকালো মুবি।
“দরকার কী? আমার যা আছে তা দিয়ে ওর কখনো কমতি হবে না।”
“আর তোমার নিজের ছেলেমেয়ে হলে? তখনও কি ওর জন্য একই অনুভূতি থাকবে তোমার?”
উদাসীন গলায় প্রশ্নটি করেই কথার মোড় ঘোরালো চৈতালি।
“আমি চাই ওর বাবার রাখা জিনিসগুলো ও নিজের করে পাক.. সবুজ তো সব ওর জন্যই করেছে তাই না? তাহলে আজ ও দাবী তুললে সমস্যা কোথায়?”
“ঠিকাছে। আমি কালই কোনো লইয়ারের সাথে কথা বলবো।”
ম্লাম হাসলো চৈতালি। ছেলের পায়ের নিচের কাথা তুলে তাকে ঢেকে দিতে দিতে বললো,
“কী দেখছো বারবার ফোনে? পুষ্প কল করেছে কিনা?”
হন্তদন্ত হয়ে ফোন পকেটে পুড়ে রাখলো মুবিন। ঘাড় নেড়ে ক্ষীণ স্বরে বললো,
“না.. জরুরী একটা এসএমএস আসার কথা।”
“কী বিচিত্র পুরুষের প্রেম!”
খলখল করে চৈতালি হেসে উঠতেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো মুবিন। অদ্ভুত ভাবে হাসছে সে.. সাথে কাঁদছে তার দু’টি চোখ।
(চলবে)