আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 23
রাজ বলবে এমন সময় আরিয়ানের মা বাড়ির সবার উদ্দেশ্যে বলে,”আমি আরিয়ানের বিয়ের জন্য মেয়ে পছন্দ করেছি।”
আরিয়ান কফি খাচ্ছিল মায়ের মুখে নিজের বিয়ের কথা শুনে সে বিষম খেয়ে সবটা মুখ থেকে ফেলে দেয়।
রাজ বলে,”দোস্ত এতো শুরু আগে আগে দেখো তোমার জন্য আরো কতো সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।”
আরিয়ার উঠে বলে,”বিয়ে নিয়ে ফাইজলামি পেয়েছো না কি? আমি বলছি না বিয়ে করবো না জীবনেও।”
আয়েশা বেগম বলে,”কেনো তোর কোথায় কি সমস্যা যে তুই বিয়ে করবি না।
আমার এক ছেলে বিয়ে করে সংসার করবে এটা আমি মানতে পারবো না।
বিয়ে তো দুই ছেলের এক সাথেই দিবো।”
আরিয়ান বলে,”চেনা নেই যানা নেই বললেই হলো বিয়ে কর।আর আমি গিয়ে সোজা বিয়ে করে নিলাম। ”
আয়েশা বেগম বলে,”কেনো বিয়ে করবি না?
তুই কোনো মেয়েকে পছন্দ করিস নাকি।
না সেকা খেয়েছিস জীবনে।
তা না হলে দেবদাস হয়ে থাকতে চাওয়ার মানে না।”
রাজ বলে,”দেখ আরিয়ান যদি তোর কোনো মেডিকেল সমস্যা থাকে।
তাহলে তুই সে কথা আয়াত ভাইয়ের কাছে বলতে পারিস।
সে তোর পুরো ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করে দিবে।”
আরিয়ান গিয়ে রাজের পিঠের উপর ধরাম করে একটা কিল বসিয়ে দেয়।
আয়াত বলে,”রাজ কে মেরে ওর মুখ বন্ধ করলে তো আর সমস্যার সমাধান হবে না।
সত্যি যদি তোর কোনো সমস্যা থাকে বলতে পারিস।অবশ্যই তোকে বেস্ট চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবো।”
আরিয়ান বলে,”just shut up guy’s!.
তোরা সব পাগল হয়ে গেছিস।
যে রোগ বালাই নাই তা মিথ্যা আমার ঘাড়ে চাপাতে আসছিস তোরা।”
আয়াত বলে,”তোর কোথাও কোনো পছন্দ আছে? ”
আরিয়ান বলে,”না নেই! ”
আয়াত বলে,”তাহলে তোর বিয়েতে এলার্জি কিসের? ”
রাজ বলে,”বলো সোনা ভাই বন্ধু এলার্জি কোথায়? ”
আরিয়ান বলে,”আমার মাথায়।”
সাথে সাথে রাজ আর আয়াত আরিয়াতের মাথা চেক করতে শুরু করে দেয়।
আরিয়ান তা দেখে বলে,”আজব আমাকে কি গরু ছাগল মনে করিস তোরা? ”
আয়েশা বেগম বলে,”তাহলে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে দাও।”
আরিয়ান বলে,”চেনা নেই জানা নেই কোন না কোন মেয়েকে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে দিবো আজব কাহিনী দেখছি তো।”
রাজ ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে একটা আপেল নিয়ে তাতে কামড় দিয়ে খেতে খেতে বলে,”আরে তোর পিএর চাচাতো বোন কে দেখে মামী পছন্দ করে আসছে।”
আরিয়ান বলে,”মানে কি?”
রাজ বলে,”অারিয়াত ইসলাম অনুর চাচাতো বোনের কথা বলছে মামী।”
আয়েশা বেগম বলে,”যে মেয়ে তোর নাকের এই অবস্থা করেছে সে আমাদের অফিসে জব করে?”
রাজ বলে,”শুধু জব করে না মামী তোমার ছেলের পারসোনাল সেক্রেটারি সেই মেয়ে।”
আরিয়ান বলে,”হুম আমার বোঝা উচিৎ ছিলো রাজের নাকে কে হাত দিতে পারে।তোর নাকের এই সুন্দর চিএ অনু করেছে মা শা আল্লাহ। ”
রাজের মা বলে,”ঐ মেয়েকে অফিস থেকে বাহির করে দিবি।মেয়েটা প্রচুর বেয়াদব।”
আরিয়ান বলে,”তার সাথে আমার পারসোনাল সমস্যা জন্য তো আর তাকে অফিস থেকে বাহির করে দিতে পারি না।”
আয়েশা বেগম বলে,”তাহলে কি করবি রাজের এই হাল করার পর ও সে অফিসে থাকবে?”
আয়াত বলে,”মা বাহিরে কোথায় কি হয়েছে তার জন্য মেয়েটার কাজে সমস্যা করার কোনো মানে হয় না।”
আয়েশা বেগম বলে,”অনু মেয়েটা কতো বেয়াদব আর ওর বোনটা কতো ভদ্র সবার সাথে কতো ভালো ভাবে কথা বলেছে।”
আরিয়ান বলে,”আচ্ছা আমি অনুর বোন কে বিয়ে করতে রাজি আছি।”
আরিয়ানের মুখে রাজি আছি শুনে সবাই এক সাথে আলহামদুলিল্লাহ্ বলে।
রাজ বলে,”মানুষ বিয়ের দিন ও এতো খুশি হয় না।”
এবার আয়েশা বেগম বলে,”যাক বাবা আমার ছেলে রাজি এবার গিয়ে মেয়ের বাড়ির সবার সাথে বিয়ের বেপারে আলোচনা করবো।”
আয়াত বলে,”what! ”
আরিয়ান বলে,”গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল।
এমন কাহিনী হলো আমাদের বাড়িতে।
মেয়ের বাড়ির খবর নেই ছেলের বাড়ির মানুষের চোখে ঘুম নেই।”
আয়েশা বেগম বলে,”আগে তোকে রাজি করিয়ে নিলাম যাতে পরে না করতে পারিশ।
এখন মেয়ের বাড়ির মানুষের সাথে কথা বলবো।তারা রাজি হলেই পরের সপ্তাহে তোদের বিয়ে দিয়ে দিবো।”
আরিয়ান বলে,”তোমাদের যা ইচ্ছা তাই করো।”
রাজ বলে,”ভাই তুই হঠাৎ করে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলি মানে কি রে? ”
আরিয়ান বলে,”তুই অসময় আম খাবি খা না। কোথায় থেকে এসেছে এতো খবর দিয়ে তোর কাজ নেই।”
রাজ বলে,”এখানে আম কোথায় থেকে আসলো।”
আরিয়ান বলে,”তুই ভাবী পাবি।বিয়েতে মজা করবি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে তোর ওতো মাথা ব্যাথা করতে হবে না।
রাজ বুঝেছে আরিয়ানের মাথায় তো কোনো প্যাচ আছেই কে জানে সে কি প্যাচ।
এদিকে অনু বাড়িতে এসে মুখ গোমড়া করে বসে আছে।
রিমি একে একে সবাই কে তাদের গিফট দিচ্ছে যা শপিং মল থেকে কিনে আনছে।
রিমি মিষ্টির জন্য বড় একটা টেডিবিয়ার এনে দেয়।
মিষ্টি তো সেই টেডিবিয়ার পেয়ে খুব খুশি হয়।
রিমা বলে,”আপু এতো বড় পুতুলের কোনো দরকার ছিলো না।”
রিমি বলে,”আজব তো আমি আমার মিষ্টি মামুনি কে কি দিবো না দিবো তা নিয়ে তোকে মাথা ঘামাতে হবে না।”
মিষ্টি বলে,”আমাকে কেউ কিছু গিফট করলেই মাম্মা এমন করে।”
রিমি বলে,”এমন করে কেনো সোনা? ”
মিষ্টি বলে,”সবাই আমাকে ভালবাসে গিফট দেয়।মাম্মা কে তো কেউ এমন চকলেট, আইসক্রিম, টেডিবিয়ার গিফট করে না তাই সে আমাকে খুব হিংসা করে।”
রিমা বলে,”কতো বড় ফাজিল মেয়ে ভাবা যায়।”
রিমি মিষ্টি কে কোলে নিয়ে বলে,”তোমার মাম্মাকে সবাই ভালোবাসে।
আর তোমার মাম্মার এসব কিছু লাগে না।
তুমি তোমার মাম্মার জীবনের সব থেকে বড় গিফট। ”
এরপর রিমি আপু রিমার হাতে কিছু ড্রেসের প্যাকেট ধরিয়ে দেয়।
রিমা তো খুব খুশি হয় বোনের দেওয়া উপহার গুলো পেয়ে।
অনুর মা হঠাৎ করে রিমি কে বলে,”এই রিমি অনুর কি হয়েছে রে? মেয়েটা তো হাসিখুশি মুখ নিয়ে বাড়ি থেকে গেছে তাহলে এখন বাড়িতে ফিরে গোমড়া মুখ করে বসে আছে কেনো? ”
রিমি বলে,”আর বলবেন না চাচীমা আমাদের অনু এখনো পিচ্চি আছে একদম মিষ্টির মতো! ”
মিষ্টি বলে,”কই ফুপি তো লম্বায় আমার থেকে অনেক বড়।”
রিমি বলে,”তোমার ফুপি শুধু লম্বায় বড় হয়েছে।কিন্তু রাগ জেদ সব ছোট বাচ্চাদের মতো।
ছোট বাচ্চারা যেমন নিজের পছন্দের কোনো কিছু না পেলে মুখ গোমড়া করে থাকে তেমন মুখ গোমড়া করে আছে।”
অনুর মা বলে,”আমি এসব কিছু জানি না বউমা দেখো তোমার বোন তোমার ননদের সাথে কি করেছে।আমি বোনদের মাঝে নেই তোমরা সবাই নিজেদের ঝামেলা নিজেরা ঠিক করো।”
এমন সময় রিমি গিয়ে অনুর সামনে বসে বলে,”আহারে আমার বুড়িটা রাগ করেছে।”
অনু মুখ ঘুড়িয়ে অন্যদিকে বসে।
রিমি এবার ব্যাগ থেকে সেই শাড়িটা বাহির করে পেছন থেকে ঘোমটা পড়িয়ে দেয়।
এদিকে অনু তাকিয়ে দেখে এটা সেই শাড়ি অনু খুশি হয়ে পেছনের দিকে তাকাই।
এদিকে রিমা ক্যামেরা নিয়ে দুই বোনের এই সুন্দর মোমেন্টটা ক্যামেরা বন্দী করে রাখে।
অনু খুশি হয়ে রিমি আপুকে জড়িয়ে ধরে বলে,”এটা তুমি আমার জন্য কিনেছিলে আপু।”
রিমি বলে,”না তোর শাশুড়ির জন্য কিনেছিলাম।”
অনু বলে,”সরি আপুনি।”
এমন সময় রিদি ওদের ভিডিও কল দেয়।
রিমা বলে দেখো ওদের দুই বোনের কি ভালবাসা।
রিদি বলে,”বাব্বাহ আমাকে তো কখনো এভাবে জড়িয়ে ধরিস না ফাজিল আমিও তো তোকে কতো গিফট দেই।”
অনু বলে,”আরে নতুন বউ দেখো ফোন দিয়ে ঝগড়া করছে।”
রিমি বলে,”আরে রিদি তোমার বিয়ে শুনেছি, অভিনন্দন তোমাকে। ”
রিদি বলে,”শুধু অভিনন্দন দিলে হবে আমার বিয়েতে তোমাকে আসতে হবে আপু।”
রিমি বলে,”তা তো অবশ্যই যাবো।
আমরা না গেলে তোমার বিয়েতে মজা কে করবে?”
রিদি বলে,”হুম তোমরা ছাড়া কে আর আছে।তা তোমাদের হঠাৎ ভালোবাসার কারণ কি জানতে পারি? ”
রিমি বলে,”আর বলো না,মার্কেটে গিয়ে একটা শাড়ি বুড়ির পছন্দ হয়েছে তা শুধু আমি কিনে তাকে সারপ্রাইজ গিফট করতে চেয়েছি।
তার আগে তাকে শুধু বলেছি শাড়িটা আমার।ব্যাস হয়েগেছে মেডাম নাক ফুলিয়ে বসে ছিলেন।এখন যখন জানতে পেরেছে শাড়িটা তার তখন দেখে মুখে মিষ্টির ঝোলের মতো খুশি উতলে পরছে।”
রিদি বলে,”অনু তুই ও পারিশ নাটক করতে।
বড় আপু কি কখনো এমন করেছে তোর সাথে?”
অনু বলে,”না তবে আপু সব সময় আমাকে আগে কাঁদাবে তারপর হাসাবে।”
রিদি বলে,”আরে পাগলি কান্নার পর না হাসির মর্ম বুঝতে পারবি। ”
এভাবে চার জন আড্ডা দেয় অনেক সময় ধরে।
পরেরদিন সকালে অনু রেড়ি হয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বাহির হবে এমন সময় অনুকে…
(গঠনমূলক মন্তব্য আশা করবো সবার কাছে থেকে)
‘
‘
‘
চলবে……