অভিশপ্ত বাসর

অভিশপ্ত বাসর রাত ! পর্ব- ১৪…শেষ.

পরের দিন বিকেলে সাবিহা হসপিটালের
জন্য তৈরি হচ্ছে এরমধ্যে বেল বাজল।
নিশ্চই পরিচিত কেউ নইলে তো আগে
দারোয়ান ফোন দিত। কে হতে পারে
ভাবতে ভাবতে দরজা খুলল, খুলে তো
পুরো হা হয়ে গেল।
মেহবুব!!একটা বিরাট গোলাপের বুকে
নিয়ে হাজির। ইউনিফর্ম পরা। বুঝল অফিস
শেষ করে সোজা এখানে এসেছে।
হাহ্ কাল খারাপ ব্যবহারের জন্য এখন মাফ
চাইতে আসছে।আবার ওর মনটা ওকে
দেখে যতটা না খুশি হলো তারথেকে
খারাপ হলো এই ভেবে যে আজতো
মেহবুব বিদায় নিতে আসছে।
-কি ব্যাপার? নতুন দেখছ?আসতে বলবা
না?
কথার ধাঁচ শুনে সাবিহার অসহ্য লাগল।
-আসুন।নতুন ভাব তো আপনিই
করছেন,কখনও তো দরজা খুলে আসার
জন্য বলতাম না।
-তখন তুমি অন্য কেউ ছিলা আর আজ
অন্য কেউ।
-তাই? ও হ্যা ভুলে গেছিলাম।
-বেরোচ্ছ না ফিরছ?
-বেরোব।নাইট আছে আজ।
-ক্যানসেল কর।
-সম্ভব না।
-তুমি বললেই হলো?আমি হসপিটালে
ফোন দিচ্ছি, তোমার ডিউটি অন্য
কাউকে দেয়ার।
-না খবরদার। আমার ইম্পরট্যান্ট পেশেন্ট
আছে।
-আমার থেকেও ইম্পরট্যান্ট?
এ উওরে সাবিহা কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল
না আসলে ও থাকতে চাচ্ছে না
মেহবুবের সামনে।কখন ভ্যা করে
কেঁদে দে,মনকে বুঝাল যথাসম্ভব
নিজেকে শক্ত রাখতে হবে ওর
সামনে।
-আজ তোমার মুখ থেকে কথা ফুটছে
না কেন খালামনি?এমনি তে তো আমার
মাথা খারাপ করে ফেল।
তখন সাবিহাও পাল্টা বলল,তখন আপনার বউ
ছিলাম আর এখন না।
উওর দিয়ে মেহবুবের দিকে তাকাল, ওর
চেহারা বোঝার চেস্টা করল।
-তা তো ঠিকই তা এরজন্য কি আজ দূরে
গিয়ে বসেছো?
বলেই ওর হাতটা ধরে টান দিয়ে ওর
পাশে এনে বসাল।সাবিহা কি করবে
বুঝতে পারছিল না তখন ওদিকে
মেহবুবের চোখ নাকে মুখে
খেলছিল দুষ্টুমি।তারাতারি বলল,
-আমি আপনার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।
-আসলে কি জানো তুমি সিচুয়েশন
চেঞ্জ করতে উস্তাদ। নাস্তা আমি করে
আসছি। তুমি হসপিটালে ফোন দাও, কাল
আমি চলে যাব অন্তত আমার জন্য আজ
ডিউটি ক্যানসেল কর।
-আচ্ছা।
সাবিহা উঠে গিয়ে হসপিটালে ফোন দিল।
কথা বলছিল তখন মেহবুব পিছন থেকে
এসে ওকে জরিয়ে ধরল।কি শুরু করছে
এইলোকটা!! আগে রোমান্টিকতা করত
মানা যেত কিন্তু এখন আলাদা হয়ে যাবার
পর সব রস উঠে আসলো বুড়োর
মনে।জানে যে এখন ছাড়ানোর চেস্টা
করলে মেহবুব আরও জালাতন করবে।
একয়েক মাসে ওকে দেখে এটা
বুঝছে যে ওকে যেটা মানা করা হয় ওটা
ও জেদ দিয়ে আরও বেশি করবে।
পিছন ফিরে বলল,
-আজ আপনি খুবই রোমান্টিক মুডে?
-হ্যা খুব।ব্যাচেলর লাইফ আবার ইনজয়
করছি তো তাই।
-ওহ হো তাই? তা ব্যাচেলর লাইফ ইনজয়
করতে মানুষ পুরাতন বউয়ের কাছে যায়
নতুন দেখলাম।
-আমার অনেক কিছু দেখা তোমার
এখনও বাকি।
-যা দেখেছি তাও বা কম কি?কাল আপনি
আমার সাথে যেমন বিহেব করলেন
কখনই ভুলবো না।
-সরি।আসলে….
কিভাবে বলবে মেহবুব বোনের
কাছে শুনে রাগ করেছিল।
-আসলে কি?থামলেন কেন?বলেন?
কিছুই বলার নেই আপনার।আপনি এই মুখ
থেকে অনেক মিথ্যা কথা শুনিয়েছেন
আমাকে।আমি আর শুনতে চাই না।
বলেই মেহবুবের বাহুডোর থেকে
নিজেকে ছাড়ার চেস্টা করল।
-আমি কখনই তোমাকে এই মুখ থেকে
মিথ্যা শুনাই নি। কোনটা মিথ্যা বলছি বল?
-কেন আপনি বলেছিলেন না যে
আমাকে আপনি ভালবাসেন? আমাকে
কখনই ছাড়বেন না আমি যা কিছুই করি না
কেন?
-তো এতে মিথ্যাটা কোথায় পেলে?
আমার মন থেকেই কথা গুলো বলেছি।
-তাহলে আমাকে ডির্ভোস দিলেন
কেন?এখন তো আবার দেশের
বাইরেও চলে যাচ্ছেন।
-তো আমি কি করব তুমিই বল?তুমিই তো
বলেছ আমার সাথে থাকতে চাও না।আমি
কি কম জোড়াজুড়ি করেছি?কি না করেছি
তোমাকে ফিরিয়ে আনার জন্য।তারপর
যখন দেখলাম আমার জন্য তোমার
কেরিয়ার শেষ হচ্ছে,তুমি কষ্ট পাচ্ছ।
এখানের লাইফ ছেড়ে চলে যাচ্ছ আমি
বাধ্য হয়ে তোমার থেকে দূরে
সরে এসেছি।কারন আমি চাই না আমার
ভালবাসার মানুষের আমার জন্য ক্ষতি
হোক।
-আপনি কেন আগে তা বলেন নি?কেন
সেপারেশন লেটার পাঠিয়েছেন?
-উহ্ সাবিহা সেটা আগেও বলেছি এখনও
বলছি যে আমি কিছু বলার আগে বা বুঝার
আগেই আমার ল’য়ার আমাকে না জিজ্ঞাস
করে লেটার টা পাঠিয়েছে।আমাকে
পরে ফোন দিয়ে বলেছে।
মেহবুবের কথা শুনবে কি ও যতই বুঝায়
সাবিহা তত চিৎকার করে কাঁদতে লাগল।
-প্লিজ অন্তত আজ কেদঁ না।আমার দিকে
তাকাও।তোমার এমন অবস্থা হলে আমি
ওখানে গিয়ে কিভাবে থাকব।
-আপনি পারবেন আমি জানি।
-আমি পারব না।
এভাবে মেহবুব ওকে অনেক
বুঝাল,পরে যখন ও শান্ত হয়ে এল
ফ্লোর থেকে উঠতে উঠতে বলল,
-আমি উঠি আজ আমাকে বাসায় যেতে
হবে সাবিহা।গোছগাছ পুরো হয়নি
এখনও।
সাবিহা উওরে শুধূ ওর দিকে ফ্যাল ফ্যাল
করে তাকিয়ে থাকল বসা থেকে উঠল
না।কাছের মানুষটার এভাবে বিদায় দেবার
সময় ঘনিয়ে আসল!!মেহবুবের হাত
ধরে জিজ্ঞাস করল,
-আর কবে ফিরবেন?
-জানি না হয়তো ছুটি ছাটায় হবে আসা।
-আসলে আমার সাথে দেখা করবেন না?
সাবিহার এই প্রশ্নে ও অবাক হলো।
-তুমি করতে রাজি হবা?
-কেন না?আমাকে ঘুরতে কে নিয়ে
যাবে, ফুচকা কে খাওয়াবে?আমার হাতের
পাকোড়া আর কে খাবে?
মেহবুব ওকে জরিয়ে ধরে বলল,
-সাবিহা তুমি কি আমাকে ভালবাসো?
মেহবুব এখনও অপেক্ষা করছে
মেহবুব এখনও অপেক্ষা করছে ওর হ্যা
এর।
-জানি না।
তারপর ওকে ছেড়ে দিয়ে অনেকটা
অভিমান নিয়েই বলল,-আচ্ছা আমি চলি
ভালো থেক।
এই বলে মেহবুব মনে অনেক
ক্ষোভ নিয়ে ওর বাসা থেকে
বেরিয়ে এল।পিছন ফিরে তাকাচ্ছিল বার
বার হয়ত সাবিহা আসবে, আসলো না।কার
পার্কিং ও গাড়িতে উঠতে যাবে ওমনি সাবিহা
ওকে পিছন দিক হতে এসে জোরে
জরিয়ে ধরল,হঠাৎ এভাবে টাল সামলাতে না
পেরে গাড়ির সাথে মেহবুব জোরে
ধাক্কা খেল।
-আরে করছ কি সাবিহা?
-প্লিজ আপনি যাবেন না, আমি আপনাকে
ছাড়া থাকতে পারব না।আমি আপনাকে
যেতে দিব না যদি যান আমাকেও নিয়ে
চলুন।
বলেই আবার জোরে জোরে কান্না
শুরু করে দিল ও মেহবুবকে জরিয়ে
ধরে।মেহবুব তো এটাই চাইছিল এতক্ষন
ধরে। তখন অনেকটা খুশি মনে বলে,
-আরে কি করছ?আমার ড্রাইভার, দারোয়ান
সবাই দেখছে।শান্ত হও।
সাথে সাথে সাবিহা ওকে ছেড়ে চারপাশ
তাকাতে লাগল,দেখল দারোয়ান আর
ড্রাইভার মজা নিয়ে দেখছে ওদের। ও
লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে
আসলে বেশি ইমোশনে পরে ওর
কিছুই খেয়াল ছিল না।মেহবুব বাসা হতে
বের হবার পর ও বের হয় দেখে ও
লিফটে উঠে গেছে,মেহবুব কে
একটু ঠিকমতো দেখতেও পারল না
শেষ মুহূর্তে!!!তখন আর কিছু না
ভেবে সিড়ি দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে
নামে।এখন নিজের চুল নিজের ছিড়তে
ইচ্ছা হচ্ছে।
দেখল মেহবুব অবাক হয়ে ওর দিকে
তাকিয়ে আছে,
-কি হলো?আমি কি যাব না তাহলে?বলছে
আর মুচকি মুচকি হাসছে।
মনে মনে বলল-ওহ্ আল্লাহ এই
লোকটা কি কিচ্ছু বুঝবে না জীবনে!!
সব মুখ দিয়ে বলতে হবে?সাথে সাথে
দৌড় দিয়ে চলে আসল ও।জানে যে
মেহববু ওর পিছন পিছন ঠিকই আসবে।
ওদিকে মেহবুব ও আসছে,-যাহ্ বাবা যাও
একটু ইগো ভেঙে বলা শুরু করলো
এখন আবার পালিয়ে বেড়ানোর পাগলামি
শুরু করছে।না জানি এর পালানো রোগ
কবে সারবে??
তাড়াতারি ওর পিছন পিছন গেল ও। গিয়ে
দেখে সাবিহার ফ্লাটেরর দরজা খোলা,
ঢুকে নিজেই দরজা লাগিয়ে দিল।ড্রইং
রুমে নেই ও।,খুজেঁ পেল
বেডরুমে,বিছানায় চুপচাপ বসে আছে।
ওকে দেখে আরেকদিকে ফিরে
রাইল,কাছে গিয়ে বলল,
-কি খালামনি নিচে কি যেন বলতে ছিলা?শুনি
নি ঠিকমতো, আবার বল তো।
-পারব না।
-বাবাহ্ বাইরের লোকের সামনে
বলতে পার আর নিজের ঘরের মধ্যে
বলতে পার না?আরে বল লজ্জা
পেয়েও না। তোমার স্বামীই তো।
-মেমরি সব লোপ পেয়েছে আপনার।
আপনি আমার স্বামী না।
-আমার মেমরি কিছুই লোপ পাই নাই। আচ্ছা
তুমি কি দিন দিন অশিক্ষিত হয়ে যাচ্ছ?
আহারে আমার তো তোমার স্টুডেন্টস
আর পেশেন্টদের চিন্তা হচ্ছে।
সাবিহা রাগে লাফিয়ে উঠল,
-কি বললেন?আমি অশিক্ষিত?
-তো আর কি?সামান্য একটা কাগজ পড়তে
পার না তুমি।
-কোন কাগজ পড়তে পারি নি? কি বলছেন
আপনি এসব?
-যাও তো ডির্ভোস পেপার নিয়ে আস,
এনে পড়।
-তা এনে আর কি হবে…. বলতে
বলতে সাবিহা মেহবুবের দিকে
তাকাল,ওর সন্দেহ হল।উঠে গিয়ে
আলমারি খুলে পেপার বের করে
পড়তে লাগল,পড়া শেষ হবার পর
মেহবুবের দিকে কড়া দৃস্টিতে তাকাল,
বিছানায় বসে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে
আর পা নাড়াচ্ছে।
-এগুলো কি? আপনার প্রপার্টি পেপার?
-ওয়াও পড়তে পারছ তা হলে,গুড ভেরি
গুড।এই তো আমার বউ আবার শিক্ষিত
হয়ে উঠেছে।এবার আর কোন ভয়
নেই আমার।
-বাজে কথা ছাড়ুন আর বলুন এর মানে কি?
এই পেপার কোথা থেকে আসলো?
-আসলে আমাদের ডির্ভোসই হয়নি।
আমি আমার উকিলের কাছে নতুন প্রপার্টি
পেপার সাইন করে পাঠিয়েছিলাম,আমি
সিওর ছিলাম যে তোমার যা মনের অবস্থা
তুমি আমার সাইন দেখেই শকের বসে
সাইন করবা।
-এই লুকোছাপার কি মানে?আপনি জানেন
আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি?
সাবিহাকে নিজের পাশে বসিয়ে বলল,
-এর কারন হলো ম্যাম আপনি তো
আপনার মনের খবর জেনেও
বলছিলেন না। আমি তো তোমাকে
বলছি ভালবাসি কিন্তু তুমি নিজে মুখ দিয়ে
বলছিলা না তাই আমিও জেদ করেছি
তোমাকে বলিয়ে ছাড়ব।অবশ্য আমি
সিওর ছিলাম যে আমার পিচ্চি ম্যাম এই
বুড়োর প্রেমে পরেছে।
মন খারাপ করে সাবিহা জিজ্ঞেস করল,
-কি বা হলো তাতে!!আমরা তো আবার
এক হয়েও হলাম না, আপনি তো কাল
চলে যাচ্ছেন।
-কে বললো যাচ্ছি, আমি সেটা
ক্যানসেল করেছি পরদিন অফিসে
গিয়েই,একটু প্রব্লেম হচ্ছিল ক্যানসেল
করায়। এই যে এ কদিন ব্যস্ত ছিলাম তা
বাহিরে যাবার ব্যস্ততা না, এটা ক্যানসেল
করার জন্য বেশ দৌড়াতে হয়েছে
আমার।
-কি তাই?আপনি এ নিয়ো ব্যস্ত থাকায় বাসায়
দেরিতে ফিরতেন?
আরেকটা কথা আপনি যদি এতই ব্যস্ত
তাহলে ড্রিংক্স কিভাবে করতেন?
-আরে বলো না, হয়েছে কি আমি
ছোটুনের হাতে তোমার খবর নেয়ার
জন্য পাঠিয়ে ছিলাম বুঝিয়ে সুঝিয়ে,কারন
তোমার তো ফোন অফ।আমারও
যাওয়ার খবর শুনিয়ে তোমাকে পাগল
করতে চাইছিলাম কিন্তু ওই বলদ বেশি
বলতে গিয়ে এত বলছে যে তুমি রাগ
হয়ে গেছ।আসলে ফোনের রাগটা
তোমার উপর ছিল না, ওর উপর ছিল।
-সোজাসুজি বললেই পারতেন?আমিও
এতটা কস্ট পেতাম না আপনার যাওয়ার খবর
শুনে।আমার মাথাই পুরো খারাপ হয়ে
গিয়েছিল এ কদিনে। অস্থির হয়ে
গেছিলাম আমি,জানেন আমি বারবার
হসপিটালের বাহিরে খুজছি এই ভেবে
যে আপনি আসবেন কিন্তু আসেননি।
– আমি ছিলাম তো।
-কোথায়? আমি তো দেখি নি।
-অন্য গাড়ি ছিল,তাই তুমি চিন নি।
-কোন মানুষ এমন করে? আপনি যে কি?
জানেন আপনার এই পাগলামিতে মা বাবা কত
কষ্ট পেয়েছে।
-আচ্ছা আমি যেকি তা তো আমার সাথে
থাকা শুরু করলেই বুঝবা।আর তাদের এখন
সব খুলে বললেই খুব খুশি হবে।এবার
তুমি একটু বলো তোমার কেমন ফিল
হচ্ছে?
-খুব খারাপ!! ফাইনালি একটা বুড়োর
প্রেমে পরলাম সারাজীবনের জন্য।
-আমি বলছি না আমি ছাড়া তোমার গতি নেই।
বলে দুজনেই দুজনকে জড়িয়ে
হাসতে লাগল।
-আচ্ছা শোন আমি বাসায় যাব ওদিকে নাজানি
কি অবস্থা মায়ের,কাল আমি তোমাকে
নিতে আসব।রেডি থেক।আর হ্যা আমার
দেয়া শাড়িটা পরো।
-আচ্ছা আর একটু সময় থাকলে হত না?
বলেই সাবিহা লজ্জায় অন্যদিকে ফিরে
রইল।আজ কি হলো ওর?একের পর এক
লজ্জাজনক কাজ করছে!!
মেহবুব হেসে বলল,আজকের রাতটা
থাকো কাল থেকে একা থাকতে
চাইলেও দেব না।ওদিকে বাসার সবাই
আমার যাওয়ার খবরে অস্থির তাদেরও
তো বুঝাতে হবে না কি?আমি ফোন
দিব।এবার অন্তত ফোনটা অন রেখ।
রাতে ও চলে যাবার পর সাবিহার তো ঘুম
পুরো উরে গেছে,সময় মোটে
কাটছেই না ওর। ইচ্ছা করছে দৌড়ে ও
বাড়িতে চলে যায়।ইস্ মেহবুবটা পারত না
ওকে নিয়ে যেতে!!যাইহোক পরদিন
দুপুরবেলা মেহবুব এসে নিয়ে গেল।
মেহবুব ওর দেওয়া পাঞ্জাবিটা পরছে।
দেখে খুব ভাল লাগল ওর।
-এটা তো ছুড়ে ফেলেছিলেন।
আপনার পছন্দ হয়েছিল না।
-হুম আবার কুড়িয়ে নিলাম যেমনটা
তোমাকে খুঁজে নিলাম।তোমাকে
পছন্দ করতে পারি তাহলে তোমার
পছন্দকে কেন না?
সাবিহা ওর দিকে ফিরে হাসল শুধু।মেহবুব
গাড়ি চালানোয় মন দিল।
পৌছে দেখে ওর মা বাবা তিতুনরা সবাই
এসেছে।সারাদিন কাটল বেশ ভালয় ভালয়।
মেহবুব বাসায় যাবার পর যে ব্যস্ত হলো
আর ওর দিকে খেয়াল নেই,অবশ্য ও ও
ব্যস্ত।শাশুড়ি মা যেন ওকে বুকের
মধ্যে নিয়ে রাখে এমন অবস্থা। রাতের
বেলা খাবার পর মেহবুবের দেখা পেল
তাও পাশে বসল না, অন্য সোফায় গিয়ে
বসল।সাবিহা তো ওর সাথে কথা বলার জন্য
মুখিয়ে আছে কিন্তু মেহবুবের কোন
ভ্রুক্ষেপ নেই,সে তিতুনদের নিয়ে
আছে।হঠাৎ ওর ফোনে মেহবুবের
এসএমএস,-“কি ব্যাপার মুখ গোমড়া কেন?
ক্লান্ত নাকি?তাহলে কিন্তু চলবে না
আজ।”
“আপনি সবাইকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন
আমার দরকার নেই।আমি গেলাম আমার
বাসায়।”-ও রিপ্লাই দিল।
“তুমি রুমে না গেলে আমি কিভাবে যাই?
তাহলে সসবাই কি ভাববে বল?আর রাগ কর
কেন?যাও আলমারিতে একটা শাড়ি আছে
ওটা পর।আমি আসছি।”
রুমে এসে সাবিহা শাড়ি নেবার জন্য
আলমারি খুলল,শাড়ি দেখেই ওর মেজাজ
গরম হয়ে গেল।তারপরও ফ্রেশ হয়ে
পরল যাইহোক লোকটার শখ করে ওর
জন্য আনছে।
মেহবুব কিছুক্ষন পর রুমে ঢুকল বেশ
খোশ মেজাজে,ঢুকেই সাবিহার রাগী
মুখ দেখে চুপসে গেল।দরজা
আটকাতে আটকাতে বলল,
-কি হলো মারবা নাকি?দেখ আজ কিন্তু
আমাদের বাসর রাত।খুন টুন করো না
আবার। অনেক ধকল গেছে আমার আর
বিরহের জালা সইতে পারব না।
সাবিহা রাগ ধরে রাখবে কি ওর কথা শুনে
হেসে দিল।
-এখন আবার হাসে।পালানোর প্লান
করছো নাকি?
-মোটেই না। আপনার চয়েস দেখে
রাগ করছি।আপনি এটা কি কালারের শাড়ি
এনেছেন?নতুন বউকে কেউ কালো
রংয়ের শাড়ি দে?
-আসলে দোকানদার বলল….
-চুপ একদম চুপ।আপনার মাথায় যে
এমনিতেই গণ্ডগোল আছে আমি
আগেই বুঝছি।যে লোক দিনরাত
ডিসকভারি চ্যানেল দেখে তাকে দিয়ে
আর কিবা আশা করা যায়!!?
-বাড়ে আজ আর শাড়ির কালার দেখে কি
হবে আজতো দেখব তুমি আমার মনে
কতটুকু কালার ছড়াতে পার।
সাবিহা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল পারল না
মেহবুব ওর ঠোট ইতিমধ্যে পুরোটা
দখল করে নিয়েছে।দীর্ঘ দশমাস পর
মিলন আর কি কথা বলা যায়???
সমাপ্ত।
গল্পটা কেমন লাগল তা কমেন্টে জানাবেন।
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

One thought on “অভিশপ্ত বাসর রাত ! পর্ব- ১৪…শেষ.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *