গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি

গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি —পর্ব-০৯

তোমার এত বড় সাহুস তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে
ঘুমিয়ে আছো? তুমি ইচ্ছে করে আমার কাছে
এসে ঘুমিয়েছ। বলে সৌরভ ওঠতে যাবে তখনি,,
আমি:- আরে আপনি কি করছেন? আমার শাড়ির আচল
ধরে টানছেন কেন? আপনি চাইলেত আমি,,
সৌরভ:- ওল্টা পাল্টা বলবেনা বলে দিলাম। আর তোমার
শাড়ির আচলের সাথে আমার গেন্জিতে বাদ
দিয়েছো কেন?
আমি:- আরে এইটা তো আমি জানিনা? আমার তো
মনে হচ্ছে আপনি নিজে বাদ দিয়েছেন? তখনি,,
তন্নি:- আম্মু কি হইছে এত ঝগড়া করছো কেন
আব্বুর সাথে?
সৌরভ:- মামুনি তুমি মাঝে শুয়ে ছিলে, কিন্তু তুমি
ঐখানে গেছ কেন?
তন্নি:- আম্মু আমাকে এখানে এনে তোমার কাছে
চলে গেছে।
আমি:- আরে তন্নি এইটা কি বলল? আমার মাথায় কোন
কাজ করছেনা। আমি এই মেয়েটাকে এত আদর
করলাম। আর এই মেয়েটা কিনা আমাকে ফাসিয়ে
দিলো।
সৌরভ:- তুমি ইচ্ছে করে আমার বুকের মাঝে এসে
শুয়ে ছিলে? আর তন্নিকে তোমার পেছনে
শুয়ে ছিলে? তোমার মত এত নিছু মনের মেয়ে
আমি আর কোন দিন দেখিনি। আর তুমি কি এখনো
বাচ্ছা নাকি, আমার কাপড়ের সাথে তোমার আচল
বেধে ঘুমাতে হবে?
তন্নি:- আব্বু তুমি আম্মুকে এমন ভাবে বকা দিতেছ
কেন? আম্মুর কি দুষ, আমি নিজে তো তোমার
কাপর আর আম্মুর শাড়ির সাথে বেধে দিয়েছি।
আমি:- কি তন্নি তুমি বেধে দিয়েছ কেন?
তন্নি:- এমনিতে দিয়েছি, যাতে করে রাতে
আমাকে ছেরে যেতে না পারো তোমরা। আর
দেখ আম্মুর কাপড়ের সাথে আমার জামাটা বাধা
আছে।
আমি:- কি দুষ্ট মেয়ে আমার আয় একটু বুকে আয়,
বলে তন্নিকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিলাম।
তারপর,,
তন্নি:- আম্মু একটু শোন, বলে আমার কানের
কাছে এসে বলছে। আব্বুকে টান মেরে
তোমার বুকে নিয়ে আসো।
আমি:- তোমার আব্বু আমাকে মেরে ফেলবে।
বলে এক টান শাড়ির আচল, আর ঠাসসস। আপনারা
ভাবছেন সৌরভ আমার বুকে এসে পড়ছে? আরেনা,
আমি গিয়ে সোজা খাঠ থেকে মাটিতে পড়ে
গেছি। মাটিতে পড়ে চিৎকার চেচামি করতে লাগলাম।
তখনি,,
সৌরভ:- এসে আমাকে কোলে তুলে খাঠের
উপড় শুয়ে দিল। কিছুক্ষন পড়ে রুমে সবাই এসে
হাজির।
শ্বাশুড়ি:- ঐশি তুমি এমন করে আওয়াজ করলে কেন?
তন্নি:- আম্মু আব্বুকে বুকের মাঝে আনতে
গিয়ে নিজে পড়ে গেছে খাঠের উপড় থেকে।
সবাই কিছু না বলে সোজা রুম থেকে বেড়িয়ে
গেল। আর সৌরভ ফ্রেসহতে চলে গেছে।
আমি:- তন্নি তুমি তোমার আব্বুর কাছে আমার নামে
মিথ্যাকথা বলছ কেন?
তন্নি:- ইচ্ছে করে বলছি। যাতে করে আব্বু
তোমার সাথে একটু বেশি করে কথা বলে।
তাহলে আব্বু তোমাকে একটু বেশি আদর করবে।
যদি রাগ করো থাকো তার জন্য সরি।
আমি:- সরি বলতে হবেনা আমার লক্ষী সোনা
উম্মা। তন্নিকে আদর করে দিয়ে, আমি
ফ্রেসহতে চলে গেলাম। তারপর তন্নিকে খাবার
টেবিলে নিয়ে গিয়ে খাবার খাওয়া দিতে লাগলাম।
একটু পর সৌরভ এসে নাস্তা করেছে।
সৌরভ:- আপু তন্নিকে একটু তারা তারি করে রেডি
করে রাখিস। আমি একটু পর এসে নিয়ে যাবো।
তারপর তন্নিকে একটু আদর করে সৌরভ অফিসে
চলে গেল।
তাহমি:- ঐশি তুমি তন্নির ব্যাগটা একটু গুচিয়ে দাও? ভাই
এসে তন্নিকে হোস্টলে নিয়ে যাবে।
আমি:- এত ছোট মেয়ে একা একা হোস্টেলে
থাকবে কি করে? তন্নি আমাদের সাথে থাকলে
এতে সমস্যা কোথায়?
তাহমি:- ঐশি তুমি কি বললে? তন্নি আমাদের সাথে
থাকলে সমস্যা হয় আমাদের? নাকি তুমি সব কিছু
জেনে আমাকে জিজ্ঞেসা করছো?
আমি:- না আপু আমি কথাটা এমন ভাবে বলতে চাইনি?
আমি বলছিকি,,
তাহমি:- তুমি কেমন ভাবে বলতে চাইছো তা আমার
বুঝার ধরকার নেই। তুমি ভাল করে জানো তন্নির মা
রিপা চাইনা তন্নি আমাদের বাসায় থাকুক। ভাই এই জন্য
অনেক চেষ্টা করছে তন্নিকে আমাদের বাসায়
রাখতে, কিন্তু আদালত থেকে তন্নিকে তন্নির মা
যেখানে রাখবে সেখানে থাকবে। এই রায় দিছে,
আর এই কথা গুলো তুমি ভাল করে জানার কথা।
আমি:- কিন্তু আমার কথাটা একটু শুনবে?
তাহমি:- শোন তোমাকে যেইটা বলছি তুমি সেইটা
করো? আর যদি না পারো তাহলে আমি করে
দিতেছি।
আমি:- হ্যা আমি ব্যাগটা গুচিয়ে দিতেছি। বলে আমি
রুমে এসে তন্নির ব্যাহটা গুচাচ্ছি, তখনি তন্নি এসে
আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কান্না
করে বলছে।
তন্নি:- আম্মু আমি হোস্টেলে যাবোনা। আমার
একধম ভাল লাগেনা, তুমি আব্বুকে বলনা আমাকে
এখানে রেখে দিতে?
আমি:- তন্নির চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে
বলছি। তোমার পরিক্ষা শেষ হলে আমি আর
তোমার আব্বু গিয়ে তোমাকে হোস্টেল
থেকে নিয়ে আসবো। তখনি সৌরভ রুমে
এসেছে,
সৌরভ:- তুমি তন্নিকে কেন মিথ্যা সপ্ন দেখাচ্ছ? আর
তুমি তোমার নিজের যায়গাটা কেন ভূলে যাও?
তোমার মেয়াধ এই বাড়ীতে আর চার (৪) মাস এই
কথাটা তোমার মনে থাকেনা নাকি?
আমি:- আপনি তো বেশি বলছেন, আর মাত্র তিন (৩)
মাস বিশ (২০) দিন বাকি।
সৌরভ:- তোমাকে না কতবার বলছি আমার মুখে মুখে
তর্ক না করতে?
আমি:- তর্ক আমি করছি নাকি আপনি করছে?
সৌরভ:- তন্নির এই অবস্তার জন্য তুমি সবচেয়ে
বেশি দায়। আর তুমি তন্নির জন্য এত মায়া করছো?
আজ যা কিছু হইছে সব তোমার জন্য হইছে আর
তুমি এই সব কিছু এত তারা তারি ভূলে গেলে? আর
কোন দিন যদি তন্নিকে এমন করে মিথ্যা সপ্ন
দেখাও তাহলে আমার চেয়ে খারাপ আর কেও
হবেনা।
আমি:- আমি কিছু বুঝতেছিনা আপনি কি বলতে
চাইছেন? তবে আপনি যেইটা যানেন সেইটা যে
সত্যি হবে এমনত নাও হতে পারে।
সৌরভ:- ঐশি তাবাসুম, তুমি নিজেকে অনেক বেশি
চালাক মনে করো তাইনা? তবে এই কইটা মাস যাক
তারপর আমি তোমাকে এমন শিক্ষা দিব। বলে
তন্নিকে সাথে করে নিয়ে রুম থেকে চলে
গেল।
আমি:- রাজুর সাথে যেইটা হইছে সেইটা নিয়ে ওনার
ভীতরে যে ভূল ধারনা তৈরি হইছে। সেইটা
আমাকে যে করে হোক ভাঙাতে হবে। ধুর কিছু
ভাল লাগছেনা, আরে আমিত এখুনি ডাইড়িটা পড়তে পারি,
এখনি একদম সঠিক সময়। তারপর গিয়ে ধরজাটা
আটকিয়ে নিলাম, ডাইড়িটা বেড় করে হাতে নিয়ে
প্রথম পৃষ্টা খোললাম।
লিখা আছে, আজ প্রথম রাজুর সাথে আমার দেখা
হলো। ছেলেটা একদম সরল সোজা, প্রথম দিনে
আমার সাথে বুন্ধত্ত হয়ে গেল। আরেকটা পৃষটা
ওল্টালাম, কোন কিছু পেলামনা। অনেক পৃষ্টা পর
লিখা আছে, রাজু আমার খোব ভাল বুন্ধ হয়ে গেল
আজ আমার জন্য একটা মেয়ে পসন্দ করছে।
মেয়েটা নাকি অনেক ভাল, তবে একটু গরিব
পরিবারের। মেয়েটার নাম নাকি ঐশি তাবসুম।
তারমানে রাজু আমাকে সৌরভের কথা বলছিল। কিন্তু
সৌরভ নাকি অনেক ভাল ছেলে, তাহলে এত গিরগিটি
কেন? এবার একের পর এক পৃষ্টা ওল্টালাম কিন্তু
কোন কিছু লিখা পাইনি। একদম শেষ পৃষ্টা এসে আমি
একদম থমকে গেলাম, কি দেখছি আমি? আমাদের
দুই বান্দবীর ছবি এখানে কেন? তাও আবার শুধু
আমার চেহেরাটা চিহ্ন করে রাখছে কেন?
চলবে,,,