হিংস্র ভালোবাসা

হিংস্র ভালোবাসা !! Part- 31

🍁
আদিল ফারহা বাড়ির পিছুনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় এদিকে ফারহা বাড়িতে ঢুকে নীলা কোথাও না দেখতে পেয়ে গার্ডদের কাছে জ্বিগাসা করার জন্য বাইরে আসতে দেখে সব গার্ড মারাত্মক জখম হয়ে পরে আছে ফারহা দেরি না করে এ্যামুলেসে খবর দিয়ে মেঘের নাম্বারে অনেক বার ট্রাই করে কিন্তু মেঘের নম্বর বার বার সুইচ অফ বলায় ফারহা বেশ চিন্তিত হয়ে পরে ৷ এদিকে নীলা কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না অন্য দিকে মেঘের ফোন অফ ৷ ফারহা এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না ৷ ফারহার মাথায় হঠাৎ করে মিহুর কথা আসতে ফারহা মিহুকে ফোন করতে ফারহাকে পিছুন থেকে কেউ একজন মুখ চেপে ধরে ৷ মিনিটের মধ্যে ফারহা অজ্ঞান হয়ে যায়……….

— হ্যালো বস কাজ শেষ ম্যাম কে অজ্ঞান করে নিয়ে আসছি….(রিক)

— গুড জব রিক , আমি ওয়েট করছি তোমাদের জন্য ,মেঘ ফিরে আসার আগে ফারহা কে নিয়ে চলে এসো ….(আগুন)

— ওকে বস……….
.
.
.
.
.
.
চোখ মেলে তাকাতে মাথাটা কেমন যেনো ঝিম ঝিম করে উঠল ফারহার ৷ মাথাটা চেপে ধরে চারিদিক দেখে ফারহার কলিজা কেপে উঠলো কারন ফারহা কে যে রুমে রাখা হয়েছে সে রুমে ওর মতো আরো বিশ থেকে পচিশ টা মেয়ে আছে তার ভিতর নীলা কে ও দেখতে পেলো তবে প্রত্যেকের পায়ে লোহার শিকল দিয়ে কিন্তু ফারহার পায়ে কোন শিকল দিয়ে বাধা ছিলো না ৷ ফারহা ধির পায়ে একটু একটু করে মেয়ে গুলোর দিকে আগাতে নিলে পিছুন থেকে কেউ একজন ফারহার হাত টেনে ধরে ওখানে থমকে যায় ফারহা………

— বেবি তুমি এখানে কি করছো ..??(আগুন)

ফারহা পিছুনে ফিরে আগুন কে দেখে কোন রিয়েকশন দিলো না উলটো হাসি হাসি মুখ করে থাকলো…

— তোর মতো জঘন্য লোক যে আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড এটা ভাবতেই আমার সারা শরীল ঘৃনায় ঘিন ঘিন করছে ৷ এর শাস্তি আমি তোকে নিজের হাতে দিবো আগুন যাষ্ট ওয়েট ..(মনে মনে)

আমি কি করে জানবো আগুন ৷ আমার যতোদুর মনে পরে কেউ একজন আমার পিছন থেকে মুখ চেপে ধরে তারপর আর কিছু মনে নেই কিন্তু আমি এখানে কি করে এলাম..???(ফারহা)

ফারহার কথা শুনে আগুন রিক বলে এক হুংকার করতে রিক সামনে এসে হাজির ৷ রিক কে দেখে আগুন দাতেঁ দাতঁ চেপে বললো…..

— তোকে কি অর্ডার করেছিলাম রিক..?? ফারহা এখানে কেনো..?? ওকে যে রুমে রাখতে বলেছিলাম সে রুমে না রেখে এখানে কেনো রেখেছিস আন্সার মি ড্যাম ইট …(জোড়ে চিৎকার করে আগুন বলতে লাগলো আর আগুনের চিৎকার শুনে রুমের বাকি মেয়ে গুলো ভয়ে কাপতে লাগলো)

— স,,সরি বসস আসলো আমি আপনার লাস্ট বলা কথা গুলো শুনতে পাইনি …(মাথা নিচু করে বললো রিক)

— যাষ্ট স্যাটআপ রিক তুই ভালো করেই জানিস আমি তোকে কি কি করতে বলেছিলাম আর তুই কি করলি ৷ তোকে তো আমি (গান বের করে তাক করবে তার আগেই রিক আগুনের পা জরিয়ে ধরলো )

— বস এই লাস্ট বার ক্ষমা করে দিন ৷ আর কখনো এমন ভুল হবে না …

— আমি নিরব দর্শক হয়ে রিক আর আগুনের কান্ড দেখে যাচ্ছি তবে আমার ভাবনা আগুন বা রিক কে নিয়ে নয় আমার ভাবনা মেঘ কে নিয়ে ও যখন জানতে পারবে আমাকে কেউ কিডন্যাপ করেছে ৷ তখন কি হবে ? ভাবতেই ফারহার সারা শরীল ভয়ে কাপঁছে ৷ এদিকে আগুন হুট করে ফারহা কে কোলে নিয়ে অন্য একটা রুমে নিলে গেলো….

— আগুন কি করছিস ছাড় আমাকে আর আমাকে এভাবে তুলে নিয়ে এসেছিস কেনো ..?? জানিস না মেঘ আমাকে বাড়িতে না দেখতে পেয়ে আবার পাগলামি শুরু করবে…(ফারহা)

ফারহার কথা শেষ হতে না হতে আগুন ফারহার গাল চেপে ধরে ৷

— তোর সাহস কি করে হয় আমার সামনে মেঘের নাম উচ্চারন করিস ..(রেগে বললো আগুন)

— কি,,কি করছিস আগুন লাগছে আমার ,পাগল হয়ে গেছিস নাকি ? ছাড় আমাকে…(ফারহা)

— ছাড়বো তোকে ছাড়বো হা হা হা তোর মনে হয় আমি তোকে ছাড়বো আর তুই কি ভেবেছিস আমি কিচ্ছু জানি না .! অফিস্যার রায়হান শিকদার তোকে যে আমার বিষয় সব টা জানিয়েছে এটা আমি জানি না ৷!

— ওহ মাই গড তার মানে আগুন যেনে গেছে আমি ওর আসল রুপ টা জেনে গেছি …

— কি হলো চুপ করে আছিস কেনো ..?? ভাবতে পারিস নি আমি এভাবে সব টা জেনে যাবো রাইট..? (আগুন)

— বাহ ভালোই হলো তাহলে আচ্ছা আগুন একটা প্রশ্নের উওর দিবি আমাকে..??(ফারহা)

— বাহ সব টা জেনে ও এখনো মাকে তোর প্রশ্ন করার আছে..!! লাইক সিরিয়াসলি …(আগুন)

— তিন্নি কি অপরাধ করেছিলো যার জন্য ওকে ওর চোখ দুটো হারাতে হলো.??

— গুড ক্রশ্চেন , অফিস্যার হয়তো এই বিষয় তোকে কিছু জানায় নি মেবি তাহলে আমি বলছি..” যখন তোদের নিয়ে বিদেশে চলে গিয়েছিলাম তার কিছুদিন পর বিডি থেকে আমার এক পার্টনারের ফোন আসে একটা বড় ডিল করার জন্য কিছু লোক এসেছে আর সেখানে আমাকে যেতে হবে কারন আমার পার্মিশন ছাড়া একটা গাছের পাতা ও নরে না আর এতো ডিল ৷ তোর হয়তো মনে আছে আমি কিছুদিনের জন্য হুট করে ওখান থেকে চলে এসেছিলাম কিন্তু কোথায় যাচ্ছি তা বলে যাই নি …

আগুনের কথা শুনে ফারহা ভাবতে থাকে..”” হ্যা সে দিন তো আগুন হুট করে কিছু না চলে গিয়েছিলো আর ফেরত এসেছিলো এক সপ্তাহ পর….

— দেশে এসে দিত্বীয় দিন ডিল টা কর্নফাম করার জন্য একটা বড় রেস্টুরেন্ট ফুল বুক করে সেখানে ডিল টা নিয়ে আলোচনা করছিলাম ঠিক তখনি খেয়াল করি তিন্নি আমাদের থেকে কিছুটা দুরে দারিয়ে আছে আমার বুজতে আর বাকি ছিলো না যে তিন্নি সব টা জেনে গেছে তিন্নি কে কিছু বলার আগে তিন্নি রেস্টুরেন্ট থেকে ছুটে বের হয়ে যায় তখন আমি আমার লোকদের তিন্নি কে ধরে আনতে বলি কিন্তু আনফরচুন্টেলি আমার লোকেরা তিন্নি কে ঠিকি ধরতে পেরে ছিলো তবে ..এটুকু বলে থেমে যায় আগুন…

— তবে কি বল ..??

তবে আর কি আমার লোকের গাড়ির সামনে পরে এক্সিডেন্ট করে তিন্নি ৷ এক্সিডেন্ট হওয়ায় রাস্তায় জনগন বেরে যাওয়ায় আমার লোক গুলো ভয়ে ফিরে আসে ..পরে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম এক্সিডেন্টের ফলে ওর দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে গেছে ৷ সুযোগ পেলাম ওকে এই অবস্তায় ভয় দেখানোর আর তাই করলাম ওকে থ্রেট করলাম যদি কাউ কে কিছু বলে তাহলে ওর পুরো ফ্যামিলিকে ধংস করে দিবো৷ ব্যাস তাতেই কাজ হয়ে গেছে৷

— ছিঃ আগুন ছিঃ আমার সত্যি ঘৃনা হচ্ছে তোর উপর নয় আমার নিজের উপর কারন তোর মতো জঘন্য লোক কে আমার বেস্টফ্রেন্ড বলে জেনে এসেছি আরে তুই কারো বেস্টফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্য না তুই হলি নর্দমার কীট তোকে তো মেরে ফেলা উচিত….(ফারহা)

ফারহার কথা গুলো শুনে আগুন গা কাপিয়ে হু হা হা করে হাসতে লাগলো যেনো ফারহা ওকে কোন জোকস শুনালো এমন টাইপ ৷

— ওহ বেবি তুই না এখনো ছোট মানুষ রয়ে গেলি ৷ নো প্রব্লেম বাট একটা কথা বলে দিচ্ছি আমাকে রাগাবি না তাহলে এর ফল তোর জন্য মটেও ভালো হবে না আর শুনে রাখ কাল তুই আমার সাথে ইউকে বাক করছিস ওখানে আমি তোকে বিয়ে করবো ৷

— যাষ্ট স্যাটআপ আগুন তুই ভুলে যাচ্ছিস আমি বিবাহিত মেঘ আমার হাসবেন্ড ৷ ওকে ছেড়ে আমি তোকে বিয়ে করবো এটা তুই ভাবলি কি করে ৷ তোর মতো খুনি যে কিনা আমার নিশ্পাপ বোন টা কে খুন করেছে তাকে আমি বিয়ে করবো অন্তত এ জীবনে না….(ফারহা)

— তুই মেঘ কে কেনো হাজার টা ছেলে কে বিয়ে কর দশ বাচ্চার মা হো তারপর ও আমি তোকে বিয়ে করবো ৷ আর তুই যদি আমার প্রস্তাবে রাজি না হোস তাহলে ওই রুমে মেয়ে গুলো দেখেছিস তো .! ওদের কাল পাচার করে দেওয়া হবে কে কোন দেশে গিয়ে পরবে তা আমি নিজেও জানি না তুই আমাকে বাধ্য করিস না ওদের সাথে তোকে ও বিক্রি করে দিতে৷ ভেবে দেখ কি করবি কাল দুপুর বারটা পর্যন্ত সময় দিলাম ভাবার জন্য ….

আগুন কথাটা বলে রুম থেকে বেরিয়ে দরজায় তালা মেরে চলে গেলো এদিকে ফারহা ধুপ করে মাটিতে বসে পরে ….

— এখন আমি কি করবো ..?? ভাইয়ের সাথে যে কন্ট্রাক করবো তার ও উপায় নেই ফোনটা নিয়ে গেছে জানোয়ার গুলো এখন একমাত্র মেঘ আমাকে বাচাতে পারে……(ফারহা)
.
.
.
.
.
.
.
— আসলাম কে আমার জান কে কিডন্যাপ করেছে ..??(রাগি গলায় বললো মেঘ)

— বস সি সি ক্যামেরা চেক করা হয়েছে ম্যাম কে আন্ডারওয়াল্ডের কিংয়ের ডান হাত রিক আর তার দলবল মিলে ম্যাম কে কিডন্যাপ করেছে….(আসলাম)

আন্ডারওয়াল্ডের কিং য়ের কথা শুনে রাগে মেঘ ভাঙ্গচুর শুরু করে দেয় আসলাম কোন ভাবে মেঘ কে ঠান্ডা করতে না পেরে মিহু কে কল করে …

— হ্যালো ম্যাম আপনি প্লিজ একটু তারা তারি আসবেন স্যার কেমন যেনো করছে..

— ওয়াট , আমি এখুনি আসছি….

মিহু মেঘের কাছে আসার জন্য গাড়িতে উঠলে দেখে ড্রাইবারের সিটে ড্রাইবার নয় অন্য কেউ বসে আছে ….

— তু,,তুমি …(অবাক হয়ে বললো মিহু )

মিহু অবাকের চরম পর্যায় পৌছে গেলো কারন ড্রাইবারের সিটে অন্য কেউ না আদিল বসে আছে….

— আ,, আদিল তুমি এখানে ..??

— আসতে হলো বনুর অর্ডার ৷ কোথায় যাবে নিশ্চয় মেঘের কাছে..??

আদিলের কথা মিহু মাথা নেরে হা বলে ..

— ওকে চলো , আমাকেও যেতে হবে মেঘের সাথে আমার জরুরি কথা আছে..

— বস প্লিজ সান্ত হোন ম্যাম কে খুজে বার করবো আমরা তার আগে আপনি এতো হাইপার হলে …..

আসলামের শেষ কথাটা শুনে থেমে যায় মেঘ হুট করে ল্যাপটপ খুলে ভালো করে সি সি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে লাগলো ….

— আসলাম যে লোক গুলো কে ফারহা সব সময় ফলো করার জন্য রাখা হয়েছিলো তাদের কে আনো …(মেঘ)

মেঘের অর্ডারে আসলাম তাদের কল করে আসতে বলে .দশ মিনিট পর লোক গুলো মেঘের সামনে দারিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বলতে লাগলো সাথে অফিস্যার রায়হান শিকদারের সাথে কিছু ছবি দেখায় মেঘ কে ততোখনে আদিল মিহু মেঘের বাড়িতে পৌছে যায়….

— ভাইয়া তুই ঠিক আছিস তো..??(মিহু)

আদিল ভিতরে আসতে মেঘের হাতে ফারহার ছবি গুলো দেখে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে..

— মিস্টার চৌধুরি আপনি হয়তো ছবি গুলো দেখে ভাবছেন ফারহার সাথে এই অফিস্যার কেনো তাই না ..???(আদিল)

— আপনি ..??

— আমি ফারহার কাজিন আদিল মাহামুদ …

— মিস্টার আদিল আপনি কি করে এতো কিছু জানলেন..??

— মিস্টার চৌধুরি আমি কি জানি বা না জানি এটা আপনার না জানলে ও চলবে কিন্তু আপনাকে তো আপনার বাবা আরহান চৌধুরীর সব সত্যি কথা গুলো জানতে হবে…(আদিল)

— ড্যাড আপনি..বাকিটা বলার আগে মিহু বলে উঠলো ….

— ভাই ও যা বলতে চাইছে তুই কথা না বলে মন শোন তোর এখনো অনেক কিছু জানার আছে ড্যাডের বিষয় যা তুই এখনো জানিস না….

মিহুর কথায় মেঘ চুপ করে আদিলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল সত্যি টা জানার জন্য ৷ আদিল মেঘের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো…………
.
.
.
.
.
#To_be_Continue……..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *