হিংস্র ভালোবাসা !! Part- 23
🍁
মেঘের জ্ঞান ফেরার পর মেঘ পাগলের মতো বিহেব করতে থাকে কোন ভাবে ডক্টর রা মেঘ কে সামলাতে পারছে না তাই ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে মেঘ কে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে ৷ ডক্টর বাইরে আসতে আরহান চৌধুরী ডক্টরের কাছে মেঘের কন্ডিশন জানতে চায় কিন্তু ডক্টরের কথা শোনা মাত্র আরহান চৌধুরী বুকে হাত দিয়ে বসে পরে আরহান চৌধুরী ভাবতে পারছে না তার ছেলের এতো বড় ক্ষতি কেউ এভাবে করতে পারে তাও তার চোখের সামনে দিয়ে হ্যা মেঘ পুরো পাগল হয়ে গেছে কাউ কে চিনতে পারছে না শুধু একটি নাম জপ করে যাচ্ছে জানপাখি ৷ডক্টর জানায় খুব কড়া ডোসের মেডেসিন কয়েক বার মেঘের শরীরে ইনজেক্ট করায় মেঘের আজ এই অবস্তা কোন শিওরিটি দিতে পারছে না ডক্টর আদো মেঘ সুস্থ হতে পারবে কিনা………………
আরহান চৌধুরীর বুকে ইতেমধ্যে ব্যাথা অনুভব করতে লাগলো কিন্তু এর মাঝে ম্যানেজার নেহাল কে কল করে জানায় আরমান চৌধুরী পুলিশ সাথে নিয়ে লিগালি ভাবে সব প্রোপার্টি নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছে শুধু মাত্র চৌধুরী ম্যানশন বাদ দিয়ে ….
আরহান চৌধুরী খবর টা শোনা মাত্র পুরো পৃথিবী চোখের সামনে ঘুরতে লাগলো সব কিছু যেনো অন্ধকার লাগছে তার কাছে ,,, হ্যা আরহান চৌধুরীর একটা বড় হার্ড এট্যাক হয় যার কারনে ICU তে ভর্তি আছে,৷ ডক্টর জানায় মারাত্মক শক্ট পেয়ে মিস্টার চৌধুরির হার্ড এট্যাক করে ….
এদিকে আদিল মিহু কে চৌধুরী ম্যানশনে পৌছে দিয়ে চলে যায় ৷ মিহু ম্যানশনে ঢুকে সারবেন্টের কাছে সব টা শুনে এক মিনিট ও অপেক্ষা না করে হসপিটালে যাওয়ার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পরে তখনি মিহুর ফোনে নেহাল ফোন করে জানায় ,,,
–‘ ম্যাম বড় স্যারের হার্ড এট্যাক করেছে ওনাকে ICU রুমে রাখা হয়েছে ডক্টর বাড়ির লোকদের সাথে কথা বলতে চায়ছে ‘ (নেহাল)
— ওয়াট ড্যা,,ড্যাড ICU তে , আমি এখুনি আসছি ….
মিহু পাগলের মতো গাড়ি ড্রাইব করে দ্রুত হসপিটালে চলে যায় ৷ হসপিটালে ডুকে থার্ড ফ্লোরে নেহাল কে দেখতে পেয়ে মিহু নেহালের কাছে ছুটে যায়…..
— নেহাল ড্যাড কোথায় ..??(মিহু)
– ম্যাম বড় স্যার এখন অপারেশন থিয়েটারে আপনার আসতে দেরি হচ্ছে দেখে বন্ডে আমি সাইন করে দি তারপর অপারেশন শুরু হয়…(নেহাল)
নেহালের কথা শুনে ধুপ করে ফ্লোরে বসে পরে মিহু …
— ম্যাম প্লিজ নিজেকে সামলান আপনি এভাবে ভেঙ্গে পরলে বড় স্যার আর ছোট স্যারকে কে সামলাবে…(নেহাল)
— ম,,মানে ভাইয়ের কি হয়েছে ..??(অবাক হয়ে জানতে চাইলো মিহু)
— ম্যাম ছোট স্যার মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে ওনি কাউকে চিনতে পারছে না শুধু…(এই টুকু বলে থেমে যায় নেহাল)
— শুধু কি নেহাল স্পিক আপ শুধু কি..??(মিহু)
— স্যার শুধু জানপাখি জানপাখি বলে যাচ্ছে ৷ এই একটাই নাম ওনার মনে আছে ..(নেহাল)
নেহালের কথা শোনা মাত্র মিহু রাগে ফ্লোর থেকে উঠে দারায় সাথে সাথে নেহাল ও উঠে দারায়,,,,
— এই সব কিছুর জন্য দ্বায়ী হচ্ছে ড্যাড, আজ ড্যাডের জন্য ভাই আজ মানষিক ভারসাম্য হীন হয়ে পরে আছে হসপিটালের বেডে আর আমি ..(বাকি টুকু না বলতে পেরে কান্নায় ভেঙ্গে পরে মিহু)
— ম্যাম প্লিজ কাদবেন না স্যার ও তো শাস্তি পাচ্ছে ,,,(নেহাল কথাটা বলে চুপ হয়ে যায়)
নেহালের কথা শুনে মিহু চোখের পানি মুছে নেহালের কাছে জানতে চায়..
–‘ নেহাল আমি দিল্লি যাওয়ার পর একজেকলি কি কি হয়েছিলো তা আমাকে সব টা বলো..?'(মিহু)
নেহাল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইভেন মিহুর বাজে ছবির কথা আর প্রোপার্টি সব আরমান চৌধুরীর হাতে চলে যাওয়া সব টা বলে নেহাল ৷ মিহু নেহালে কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে দারিয়ে রইল ৷ কি বলবে ও যা কিছু হচ্ছে ওদের সাথে তার সম্পূর্ন রেসপন্স সিবিলিটি ওর ড্যাডের ৷ ফারিহা কে যদি খুন না করতো তাহলে হয়তো আজ ওকে এই পরিস্তিতির মধ্যে পরতে হতো না……
ডক্টর থিয়েটার থেকে বেরিয়ে জানায় অপারেশন সাকসেস ফুল হয়েছে বার ঘন্টা পর আরহান চৌধুরীর জ্ঞান ফিরে আসবে ,,,মিহু আরহান চৌধুরী কে নিয়ে টেনশন না করলে ও মেঘের জন্য বেশি টেনশন হচ্ছে ডক্টর জানায় মেঘ কে কোন ম্যান্টাল হসপিটালে শিফট করতে কারন এখানে পাগলের কোন চিকিৎসা দেওয়া হয় না ৷ মিহু ডক্টরের কথা মতো মেঘ ম্যান্টাল হসপিটালে শিফট করিয়ে দেয় এদিকে আরহান চৌধুরী জ্ঞান ফিরতে পাশে মিহু দেখে খুশিতে চোখ গুলো চিকচিক করতে থাকে ৷ মিহু একটু দম নিয়ে আরহান চৌধুরী কে বলে…..
— ড্যাড তুমি কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবে কিন্তু ভাই আদো সুস্ত হবে কিনা জানি না…(মিহু)
আরহান চৌধুরী কথা বলতে পারছে না তবে চোখে কোন থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে এটা মিহু স্পষ্ট দেখতে পেলো…
— ড্যাড যা হওয়ার তা হয়ে গেছে আমি চাই তুমি এই নোংড়া খেলা থেকে বেরিয়ে আসো ৷ আর তুমি যদি না পারো তাহলে আমি এমন কোথাও চলে যাবো যে তুমি চায়লে ও আমাকে খুজে পাবে না ড্যাড ৷ (চোখে পানি নিয়ে বললো মিহু)
— আ,,আমি সরি মা ৷ আমি কথা দিচ্ছি আমি আর কখন কারো খারাপ চাইবো না ৷ নিজেকে সুদরে নিবো ৷ …(আরহান চৌধুরী)
মিহু আরহান চৌধুরী কে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে …
— ড্যাড সব শেষ হয়ে গেলো তোমার পাপের শাস্তি আমাদের পেতে হচ্ছে ৷ভাই কে ম্যান্টাল হসপিটালে ভর্তি করতে হয়েছে ড্যাড ৷
— কিহ মেঘ ম্যান্টাল হসপিটালে ..(অবাক হয় আরহান চৌধুরী)
– হ্যা ড্যাড ভাই কে কেউ শান্ত করতে পারছিলো না খুব চেচামেচি করছিলো ওয়ার্ড বয়দের কামড়ে দিছে…
আরহান চৌধুরী আর কিছু বললো না শুধু দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মিহু কে বললো…
— মিহু আমরা নতুন করে আবার সব টা শুরু করবো দেখবি তোর এই খারাপ বাবা টা আর এমন কিছু করবে না যাতে তার সন্তানদের কষ্ট পেতে হয় …(আরহান চৌধুরী)
কিছুদিন পর আরহান চৌধুরী সুস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এলেন ৷ তিনি মিহু কে নিয়ে নতুন করে বিজনেস শুরু করলেন ৷শুরু তে মিহু কে বাইরের লোকেরা দেখে বাজে কথা ছুড়ে মাড়তো কিন্তু মিহু নিজের কষ্ট টা চেপে রেখে হাসি মুখে আরহান চৌধুরীর সাথে কাজ করে গেছে ৷ আরহান চৌধুরী ফারহার অনেক খোজ করে ক্ষমা চাওয়ার জন্য কিন্তু কোন ভাবেই ফারহার কোন খোজ পায় না আরহান চৌধুরী তবে ফারহার জন্য তার মনে আলাদা একটা ক্ষোপের সৃষ্টি হয় মেঘ কে দেখে ৷ মেঘ শুরুতে কোন ট্রিটমেন্ট নিতে না চায়লে পরে ট্রিটমেন্ট করায় আর ধিরে ধিরে সুস্ত হতে থাকে তবে পুরো সুস্ত হয়নি মেঘ তার আগে হসপিটাল থেকে পালিয়ে আসে ৷ ফারহার অনেক খোজ করে মেঘ কিন্তু কোন ভাবে ফারহার খোজ না পেয়ে আগের থেকে আরো বেশি হিংস্র হতে থাকে মেঘ সাথে মেঘের ভালোবাসা ৷ মেঘ উপরে উপরে বেশ শান্ত দেখালেও আদো মেঘ এতো শান্ত না মেঘ কে দেখলে কেউ বলবে না মেঘ কোন সাইকো ঠান্ডা মাথার খুনি তবে এটা শুধু মাত্র মেঘের ডান হাত আসলাম জানে ৷ ফারহা ঠিক চার বছর পর ওর বাবা মা কে নিয়ে বিডি তে ফিরে আসে সাথে লন্ডনে আদিল থেকে যায় আর আগুন ইউ কে ৷ ফারহা দেশে ফিরতে মেঘের কানে খবর পৌছে যায় আর তারপর থেকে ফারহার পিছুনে জোকের মতো লেগে আছে মেঘ তবে সামনে আসেনি মেঘ একটা গোল্ডেন চান্সের অপেক্ষায় ছিলো যেটা আজ পেয়ে গেছে যার ফল সরূপ ফারহার মেঘের বাহু বন্দি……….
.
.
.
.
.
.
.
.
.
***বর্তমানে…………………..
ফারহার হাত নরে উঠতে মেঘ অতিতের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে…..
— জানপাখি আর কতো ঘুমাবে বলো তোমার মুখে আমার নাম টা শোনার জন্য এই মন টা ব্যাকুল হয়ে আছে বোঝ না কেনো বলোতো..??(ফারহার দু চোখে আলতো করে চুমু দিয়ে বললো মেঘ)
ধিরে ধিরে ফারহার জ্ঞান ফিরে আসে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মেঘ কে ,, ফারহা মেঘ কে দেখে জোড়ে চিৎকার করে ওঠে বসে ৷ আচমকা ফারহা এমন চিৎকার করা দেখে মেঘ কোন রিয়েক্ট করলো না ৷ মেঘ কে দেখে মনে হচ্ছে ফারহা গলা ফাটানো চিৎকার মেঘের কানে পৌছায় নি……..
— আ,,আপনি এ,,এ,,খানে …(ভয়ে তুতলিয়ে বললো ফারহা)
– তো তুমি কাকে আসা করেছিলে জানপাখি …(বাকা হেসে জ্বিগাসা করলো মেঘ)
– আল্লাহ রক্ষা করো এতো বছর যার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখলাম নিজেকে আর আজ তারই চোখের সামনে বসে আছি আমি ,কি করবো এখন আমি কি করে পালাবো এখান থেকে…..??.
ফারহা আনমনে ভাবতে থাকে মেঘের হাত থেকে কি করে পালানো যায় ….
— কি ভাবছো জানপাখি ,? কি করে আমার কাছ থেকে পালাবে ..?? ..(মেঘ)
ফারহা কি বলবে বুঝে উঠতে না পেরে হুট করে দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে যেতে নেয় ফারহা তখনি পায়ে কিছু টান পরে সাথে সাথে নিচে পরে যায় ফারহা আর এদিকে মেঘ ফারহার অবস্তা দেখে রুম কাপিয়ে হু হা হা করে হাসতে থাকে …………..
*
”
*
”
*
#চলবে….