সাঁঝের প্রেম !! Part- 03
টিকেট চেকার টিকেট চেক করে নিশির টিকেট ছিঁড়ে ওর কাছে দিয়ে যায়। নিশির যাত্রা তখন অর্ধেক শেষ হয়েছে। সকালে অল্প কিছু খেয়ে বের হয়েছিলো নিশি। ক্ষুধা লেগেছে ভীষণ। নিশি ব্যাগ থেকে টিফিন বক্স বের করলো। বিস্কুট আর চানাচুর খেতে খেতে বাইরের দৃশ্য দেখছিলো। চারদিকে সবুজের সমারোহ তবে আমার মনে কেনো সব ছাই হয়ে আছে? কেনো পারছিনা অতীত ভুলে সামনে আগাতে? নতুন করে কেনো পারছিনা জীবনটাকে সাজাতে? নিশি এসব ভাবতে ভাবতেই ৯ ঘণ্টা পর চিটাগং এসে পৌঁছে। তখন সন্ধ্যা নামবে নামবে। সূর্য এখনো লাল আভা ছড়াচ্ছে। ট্রেন থেকে নামার পর নিশি একটু স্বস্তি পেলো। চিটাগং শহরের সব যে তার চেনা। নিশি অফিসের পাঠানো ঠিকানায় গেলো। নিশির বস নিশিকে দুই কামড়ার একটা ফ্ল্যাট দেয় চিটাগং এ থাকার জন্য। নিশি সেখানে গিয়ে দেখলো একটা মেইড সার্ভেন্ট ও আছে। নিশি ভাবলো,
-বসকে যতটা হার্ড মনে হয় উনি ঠিক ততটা হার্ড নন।
নিশি ফ্রেশ হয়ে রেস্ট করলো আর মেয়েটি এসে বলল,
-নিশি আপা আপনার জন্য সব রান্না করে গেলাম। খাইয়া নিয়েন। আপনের স্যার বলছে সকালে এসে আপনাকে যাতে সব গুছায় দিয়া যাই। আমি আবার সকালে আসুম নে।
-ঠিক আছে। তোমার নাম কি?
-নুড়ি।
-তুমি খেয়ে গেছো কিছু?
-না আপা। বাসায় গিয়া খামু নে। তিনি আবার আমার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকে। একসাথেই খাই আমরা।
-তোমার স্বামী?
-হ আপা।
-আচ্ছা যাও। (হালকা হেসে নিশি)
নুড়ি যাওয়ার পর নিশি দরজা লাগিয়ে দিয়ে আসে। ফ্ল্যাটটা সুন্দর। নিশি পর্দাগুলো দিয়ে জানালা ঢেকে দেয়। রান্নাঘরে গিয়ে নিশি কফি বানায়। কফির মগ হাতে নিয়ে জানালার খালি জায়গার উপর উঠে বসে নিশি। পায়ের উপর পা তুলে দুই পা ছড়িয়ে, চুলগুলো খুলে নিশি বাইরে দেখছে আর ধোয়া উঠা গরম কফি খাচ্ছে। তখনি নিশির ফোন বাজে। বস ফোন করেছে।
-গুড ইভিনিং স্যার। (নিশি)
-গুড ইভিনিং। ফ্ল্যাটটা পছন্দ হয়েছে আপনার?
-জ্বি স্যার।
-এইটা আপনার গিফট আমার পক্ষ থেকে। কাজের মেয়েটাকে যা বলবেন করে দিবে। বেতন আমি দিব।
-তার দরকার ছিলো না স্যার। আমি নিজেই নিজের কাজ করতে পারতাম।
-আই নো বাট আপনার প্রাপ্যটুকুই আমি দিয়েছি। যাইহোক পরশু থেকে আমাদের নতুন ব্রাঞ্চে জয়েনিং আপনার। অল দ্যা বেস্ট।
-থ্যাংক ইউ স্যার।
বসের সাথে কথা বলে নিশি বাসায় ফোন করে জানায় সে এসেছে। করার তো এখন কিছুই নেই তাই নিশি টিভি নিয়ে বসলো। টিভি দেখতে দেখতে হঠাৎ লোড শেডিং হয়ে গেলো। এখানে এই একটাই সমস্যা লোড শেডিং হয় বেশি। নিশি রান্নাঘরে গিয়ে মোম জ্বালালো তারপর সোফার উপর শুয়ে পা দোলাচ্ছিলো। মোমের আলোর দিকে তাঁকিয়ে নিশি ভাবছে,
-তুমি কি সত্যিই আমায় ভুলে গেছো? একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছো আমাকে তোমার থেকে? যতবার ভেবেছি তোমার কাছে যাব ততবারই যে নিজের কাছে ছোট হয়ে যাচ্ছি আমি মাহবুব! কেনো সেদিন তুমি আমার পিছু পিছু বলদা গার্ডেন গিয়েছিলে? না গেলে কি হত?
“নিশি বাসস্ট্যান্ড থেকে একটা রিক্সা নিয়ে বলদা গার্ডেন একাই যায়। সারারাস্তা অবরোধ চলছে তবে রিক্সা, আর এম্বুলেন্স চলছে। ১৪০ টাকা ভাড়া দিয়ে নিশির বলদা গার্ডেন যেতে হলো। গেইট দিয়ে ঢুকতেই নিশি দেখে মাহবুব ঘাসের উপর বসে ফোন টিপছে। নিশি হা করে তাঁকিয়ে আছে। নিশির তাঁকানো দেখে মাহবুব উঠে এসে বলে,
-মিস নিশু মুখ বন্ধ করুন নয়ত গুবড়ে পোকা ঢুকে যাবে মুখে।
-আপনাকে না আমি আসতে নিষেধ করেছিলাম? (হাঁটতে হাঁটতে নিশি)
-এইটা পাবলিক প্লেস। যে কেউ আসতে পারে। তুমি নিষেধ করলেই কি আমি শুনবো নাকি সুন্দরী? (নিশির লম্বা চুলে টান দিয়ে মাহবুব)
-ওই আপনার সমস্যা কি? আমার চুল ধরেছেন কেনো?
-লম্বা চুলে বিনুনি করতে হয়, ঝুটি না।
-আমি যা খুশি করব তাতে আপনার কি? (মাহবুব কে ধমক দিয়ে নিশি)
-কি কি গাছ লাগবে তোমার?
-আপনাকে বলে কি হবে? (দুজনেই হাঁটছে)
-ব্রায়োফ্রাইটা? পেপেরোমিয়া? টেরিস? এইসব?
-না।
-তাহলে?
-মটর লাগবে।
-এইগুলো তো ধানক্ষেতেই আগাছা হিসেবে পাওয়া যায়। এখানে আসা লাগে নাকি?
-আপনি কি আমার জন্য ধানক্ষেত করছেন নাকি?
-তুমি চাইলে করতে কতক্ষণ! ব্যাংকার আছি, কৃষক ও না হয় হলাম।
-যান তো এখান থেকে। বকবক করে আমার মাথা খাচ্ছে।
-এই যে শুনো! (পেছন থেকে ডাক দিয়ে মাহবুব)
-কি হলো আবার! (বিরক্তি নিয়ে নিশি পেছনে তাঁকালো)
-তোমার এই ভাইয়ার বউ হবা? সমস্যা নেই বিয়ের পর ভাইয়া ডাকতে হবেনা। আমিও আর তোমায় আপু বলব না। হবা কি এই ভাইয়ার বউ? (প্রায় ১২ হাত দূর থেকে মাহবুব চেঁচিয়ে বলছে। সবাই শুনে হাসছে আর কেউ কেউ হা হয়ে গেছে প্রপোজের স্টাইল দেখে)
-আপনার কি মাথায় আর্থ্রাইটিস আছে? কি বলছেন এসব? সবাই দেখছে। (মাহবুবের কাছে এসে নিশি)
-ব্রঙ্কাইটিস, আর্থ্রাইটিস সব এখন হয়েছে। কিছুক্ষণ পর ডায়াবেটিস হয়ে যাবে। তারাতারি উত্তর টা দিয়ে দাও। (নিশির চোখের দিকে তাঁকিয়ে মাহবুব)
-না আমি রাজি না। যান এখান থেকে।
নিশি ঘুরে হাঁটতে শুরু করলো।
-এই তোমার মটরগাছ নিবে না?
-না।
-সমস্যা নেই আমি এনে দিব।
নিশি একটা রিক্সায় উঠলো আর সেখানে ধুম করে গিয়ে মাহবুব উঠলো।
-এই আপনি এখানে কেন? (দাঁত কটমট করে নিশি)
-তো কাকে আশা করছো তুমি এখানে? (রিক্সার হুড তুলে মাহবুব)
-নামেন তারাতারি রিক্সা থেকে। একদম পা কেটে নয়ত এখানেই ঝুলায় রাখবো আমি।
-ছুরি কিনে আনতে হবে কি? সাথে চাপাটি? (হেসে মাহবুব) মামা কাজলা ছাড়া যেখানে ইচ্ছা যাও।
-আপনি কাজলাই যান মামা। (রেগে গিয়ে নিশি)
-না। আপনি বরং টিএসসি তে চলেন। কাজলা পরে।
-আচ্ছা যাইতাছি। আজকে কিন্তু ভাড়া ডাবল দেওয়া লাগব। (রিক্সাওয়ালা)
-তোমায় আমি ৫০০ দিব। চলবে? (মাহবুব)
-আমি নেমে গেলাম। বাই।
নিশি নামতে যাবে ঠিক তখনি মাহবুব নিশির হাত ধরে। নিশিকে জোর করে রিক্সাতে বসায় রাখে মাহবুব। রিক্সার হুডে বারবার মাহবুব বারি খাচ্ছে।
-হে আল্লাহ তুমি আমায় এত লম্বা বানাইছো কেন? ঠিকমতো কি প্রেম ও করতে দিবেনা? বারবার আমায় তুমি বারি খাওয়াচ্ছো! (রিক্সার হুড ফেলে মাহবুব)
-প্রেম করছেন মানে কি? আমাকে কি আপনার প্রেমিকা মনে হয়? (দাঁত কটমট করে নিশি)
-কেন যেন বউ বউ মনে হচ্ছে অনেস্টলি স্পিকিং। (আকাশের দিকে তাঁকিয়ে মাহবুব)
নিশি মাহবুবের পাশে বসে আছে। যত পারছে মাহবুবকে এড়িয়ে চলছে কিন্তু বুকের কাঁপুনি কমাবে কি করে? নিশির হাত কাঁপছিলো যখন মাহবুব ওকে দেখছিলো। টিএসসি তে আসার পর মাহবুব রিক্সাওয়ালাকে ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বিদায় দিলো। নিশি বলছে,
-এখানে কেন এনেছেন?
-প্রেম করার বেস্ট জায়গা তো এইটাই। পাশে রমনা আছে।
-আবার প্রেমের কথা বলছেন আপনি? (হাতের পানির বোতল থেকে নিশি মাহবুবের শরীরে পানি ছুড়ে মারলো)
-মানুষ এখন কি ভাববে? (টি শার্ট ঝারতে ঝারতে মাহবুব)
-আর যাই ভাবুক আপনাকে আমার বয়ফ্রেন্ড ভাববে না।
-এক মিনিট দেখো ভাবাচ্ছি!
মাহবুব চায়ের দোকানে গিয়ে লেবু চা নিতে নিতে চা ওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলো,
-আমি আর ওই মেয়েটা সম্পর্কে কি হতে পারি ভাই?
-এখানে তো যারা আসে সবাই বয়ফ্রেন্ড আর গার্লফ্রেন্ড। আপনারা নিশ্চই ভাইবোন আসেন নি! আপনারাও বয়ফ্রেন্ড আর গার্লফ্রেন্ড ই।
এই কথা শুনে নিশি চোখ ছোট করে তাঁকালো চা ওয়ালার দিকে। মাহবুব চা রেখে হাততালি দিচ্ছে আর হাসছে। এরপর মাহবুব চুলের পানি ঝারছে আর চা খাচ্ছে। আর নিশি আঁড়চোখে দেখছে মাহবুব কে। মাহবুব এরপর মাটির ভাড়ে করে নিশির জন্য চা আনলো। নিশি খেলো না। পরে ওইটা মাহবুব নিজেই খেলো।
-দেখলে চা ওয়ালা ও জানে we are boyfriend & girlfriend.
-আমি যদি আগে জানতাম আপনি এমন বদের হাড্ডি ট্রাস্ট মি আমি আপনার সাথে ফ্রেন্ডশিপ ই করতাম না।
-আমি যদি আগে জানতাম তোমাকে আমার বউ বানাবো তাহলে ট্রাস্ট মি আপু ডাকতাম না।
-শয়তান কেন আপনি এত? আমি কি বলেছি আমি আপনার বউ হব? (ঝারি দিয়ে নিশি)
-সব কথা বলেনা হৃদয়, কিছু কথা বুঝে নিতে হয়। আমিও বুঝে নিয়েছি। ওই দেখো তোমার পছন্দের হাওয়াই মিঠাই।
-খাব না।
-দাঁড়াও এখানে।
মাহবুব পাঁচটা হাওয়াই মিঠাই এনে নিশির হাতে দিলো। নিশি ফুচকা খায়না। ব্যাপার না মাহবুব শিখিয়ে দিবে খাওয়া।
-নিশি ফুচকা খাবে?
-আমি এইসব ফালতু খাবার খাই না।
-হাওয়াই মিঠাই তো খুব ভালো জিনিস তাইনা?
-ভালোই তো।
-আমি ফুচকা খাব আর তুমি দেখবে, আসো।
মাহবুব নিশির হাত ধরে গাছের নিচে বসায় আর ও ফুচকা অর্ডার করে। ফুচকার বাটি হাতে নিয়ে মাহবুব খাচ্ছে আর নিশি দেখছে।
-চাইলে খেতে পারো। অনেক টেস্টি কিন্তু। (মাহবুব)
-কখনই না।
-ঠিক আছে না খাইলা!
মাহবুবের ফুচকা খাওয়া দেখে নিশির খেতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু ও খাবেনা। কেন খাবে? মাহবুব কি ওর বয়ফ্রেন্ড লাগে নাকি যে ওর কথা শুনবে?
বের হওয়ার সময় একটা মেয়ে ফুল হাতে নিয়ে মাহবুবের সামনে আসে।
-ভাইয়া তুমি এখানে আসলা কিন্তু আমাকে দেখতে গেলা না কেন? (মেয়েটি)
-রাত্রি আসলে আমি এখনি তোমার কাছে যেতাম। ভালো আছো তুমি? স্কুলে যাও? (নিচু হয়ে বসে মাহবুব)
-হ্যা ভাইয়া প্রতিদিন যাই। এইটা কি আমার ভাবি?
-হয়নি তবে হবে। (মাহবুব)
-কি সুন্দর দেখতে! আপু এই নাও এই ফুলগুলো তোমার।
-থ্যাংক ইউ। (রাত্রির গাল টেনে নিশি)
-রাত্রি আমি এখন যাই? (মাহবুব)
-আম্মুর সাথে দেখা করবেনা?
-আন্টির সাথে আরেকদিন কথা হবে। এই নাও এইটা তুমি রাখো। (কিছু টাকা রাত্রির হাতে দিয়ে মাহবুব)
-না ভাইয়া লাগবেনা তো।
-রাখো। আসছি আমি। বাই।
-বাই মাহবুব ভাইয়া।
নিশি বেরিয়ে মাহবুবকে জিজ্ঞেস করে,
-মেয়েটি কে?
-স্ট্রিট চাইল্ড।
-আপনি কিভাবে চিনেন?
-ওর ফেমিলি আমাদের টিম ওয়ার্কে আছে তাই চিনি। আমরা বারটা ফ্রেন্ড মিলে অফিস শেষ করে সপ্তাহে তিনদিন টিএসসি তে এসে আড্ডা দেই আর ওদের খোঁজ খবর নেই। ওদের দায়িত্ব এখন আমাদের।
-নিশি আর কিছু বলল না।
-CNG চলছে। চলো CNG নিয়ে বাসায় চলে যাই।
-হুম।
মাহবুব আর নিশি দুজনের বাসাই কাজলা। মাহবুব রাস্তার মোড়ে নেমে যায় আর নিশি বাসায় চলে আসে। মাহবুব বাসায় এসে ভীষণ খুশি কারণ আজকে ও নিশিকে ওর মনের কথা বলে দিয়েছে আর দিনের অর্ধেকটা সময় নিশি আজ মাহবুবকে দিয়েছে। নিশি বাসায় এসে নখ কামড়াচ্ছে আর মাহবুবের কথা ভাবছে। মাহবুব শিউর যে নিশিও মাহবুবকে ভালবাসে কিন্তু বলছেনা। নিশি ভেবেছে মাহবুব হয়ত ফোন দিবে বাসায় আসার পর কিন্তু মাহবুব দেয়নি। পরেরদিন বাসস্ট্যান্ডে ও মাহবুব আসেনি। মাহবুবের ফোন ও বন্ধ। টানা সাতদিন মাহবুব নিশির সাথে দেখা করা বা কোনো যোগাযোগ করেনি। নিশি মাহবুবের বাড়ি চিনেনা তাই যাওয়ার সাহস করেনি। তাছাড়া মাহবুবের ফেমিলি আছে এখানে। তারা কি ভাববে! নিশি পাগল প্রায় হয়ে গেছে মাহবুবকে না দেখে। তখনি নিশি বুঝেছে ও মাহবুবকে ভালবাসে, সত্যি সত্যিই ভালবাসে।
সাতদিন পর,,
নিশি মন খারাপ করে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে। মাহবুব তখন ঘড়ি ঠিক করতে করতে বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ায়। মাহবুবকে দেখে নিশি দৌড়ে সবার সামনে ওকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। মাহবুব নিশিকে জড়িয়ে না ধরে ওর থেকে ছুটায় আর একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায় দুজন।
-কাঁদছো কেনো নিশি?
-আপনি কোথায় ছিলেন এই সাতদিন? (নিশি চোখ মুছে)
-বাসায় ছিলাম।
-অফিসে যান নি কেন? ফোন কেন অফ ছিলো?
-অফিসেও গিয়েছি আর ফোন ও অন ছিলো। (মাহবুব হাসছে)
-মানে কি? আমি পাই নাই কেন তাহলে?
-তোমার কাছে যেই নাম্বার সেইটা অফ ছিলো। আর এতদিন অফিসের বাসে যাইনি, বাইক নিয়ে গিয়েছিলাম অফিসে।
-কেন করলেন আপনি এমন?
-আজকের দিনটা প্রুফ করতে। লাভ ইজ ব্লাইন্ড নিশি। দেখলে তো থাকতে পারলেনা আমাকে ছাড়া। তুমিও আমায় ভালবাসো। প্রতিদিন আমি তোমাকে দেখেই অফিসে যেতাম বাট তুমি আমায় দেখতে না। গতকাল হলুদ রঙের থ্রি পিস পরে ছিলে না? সবুজ রঙের ওড়না আর প্লাজো?
-খাটাস লোক! (মাহবুবকে মেরে নিশি)
-তোমার বাস আজকে আগে চলে আসছে। যাও। রাতে কথা হবে। (নিশির কপালে কিস করে মাহবুব)
সেই চুমুর তোড়ে নিশি কল্পনা থেকে বেরিয়ে আসে। নিশির চোখ জলে ভিজে গেছে। মোমবাতিটাও জ্বলে শেষ। কারেন্ট যে কখন এসেছে খেয়াল করেনি নিশি। আরেকটু হলে টি টেবিলের উপরে থাকা পেপারে আগুন লেগে যেত। নিশি উঠে দাঁড়িয়ে মোমবাতি নেভায়। ইচ্ছে করছে একটাবার মাহবুবের ছোয়া পেতে! মাহবুবকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলতে। আর সইতে না পেরে নিশি কান্না করতে করতে মাহবুবের নাম্বারে ডায়াল করেই ফেলল। রিং হচ্ছে শুনে নিশির বুক কাঁপছে। নিশি নিজেকে আর সামলাতে পারছেনা।
চলবে