রাগী বস – পর্ব- ১১

সিনহা:কাজি আমার দিকে রেজিস্ট্রি পেপার এগিয়ে দিলো সিগনেচার করার জন্য,কিন্তু আমি অপলক ভাবে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছি সিগনেচার করছি না।
.
সিফাত:সিগনেচার করছে না আমার দিকে তাকিয়ে আছে,আমি ইশারার সিগনেচার করতে বললাম।
.
সিনহা:স্যার আমায় ইশারায় সিগনেচার করতে বললো কিন্তু আমার হাত কাঁপছে কলম ধরতে পারছি না,জানি না আমার সাথে কি হচ্ছে, স্যার এমন কেন করছেন,উনি কি একটুও বোঝে না আমি উনাকে ভালবাসি,অন্যকাউকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।
.
সিফাত:কলম হাতে চুপচাপ বসে আছে,আমার রাগ উঠে যাচ্ছে সিনহা সিগনেচার করো ওর কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে দাঁতে দাঁত চেপে বললাম।
.
সিনহা:উনি খুব রাগ করছে আমি সব আমার ভাগ্য মনে করে সিগনেচার করে দিলাম।আমার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে উনি আমার জিবনটা শেষ করে দিলো।আমার কাছে থেকে রেজিস্ট্রি পেপারটা নিয়ে নিজে সিগনেচার করলো,তারপর আবিদ আরো অনেকেই করলো। আমার বিয়ে আবিদের সাথে দিয়ে নিজে বিয়ের সাক্ষি রইলো খারুস একটা,আমার রাগ লাগছে খুব এখন।মা যে এর হাতে কেন দায়িত্ব দিয়েছিলো,আমার জিবনটা তেজপাতা করে দিলো।কাজি অফিস থেকে বের হয়ে আসলাম।
.
সিফাত:গাধী টা ঐখানে দাড়িয়ে আছে কেন গাড়িতে না উঠে,গাধিটা মনে হয় বুঝতে পারেনি বিয়েটা কার সাথে হলো ওর,কাছে গেলাম হাত ধরে টেনে নিয়ে এসে গাড়িতে বসালাম।
.
সিনহা:কি করছেন আপনি,হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসালেন কেন আপনি কোথায় নিয়ে যাবেন?
.
সিফাত:তোমারতো আজ বিয়ে হলো তাই বরের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।
.
সিনহা:বরের বাড়ি আপনি নিয়ে যাবেন কেন আবিদ নিয়ে যাবে?
.
সিফাত:আবিদ কেন নিয়ে যাবে,আমি কেন নই?
.
সিনহা:আমি আবিদের বিয়ে করা বউ সো আবিদ আমাকে ওর বাড়ি নিয়ে যাবে আপনি কেন?
.
সিফাত:হাসবো না রাগবো বুঝতে পারছি না,ওর কথার উত্তর না দিয়ে আমি গাড়ি স্টার্ট করলাম।
.
সিনহা:আরে আরে করছেন টা কি থামুন আমি আমার বরের সাথে বরের বাড়ি যাবো।ইচ্ছা করে বললাম কথাগুলো,আমার রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে।
.
সিফাত:হুশশশ,,ওর ঠোঁটে আঙুল চেঁপে ধরে।
.
সিনহা:আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ গাড়ির জানালা দিয়ে একটু মাথা বের করে উদাস মনে বাহিরে চেয়ে আছি,চোখের কোনে জল চিক চিক করছে। খাটাশটা কেন এমন করলো আমার সাথে,আমিতো বিয়ে কখনোই করতাম না অন্য ছেলের সাথে বিয়ে করে আবার আমার বরের সাথে যেতে না দিয়ে নিজে নিয়ে যচ্ছে,যদিও আমার কোনো ইচ্ছে ছিলোনা অন্যকারো সাথে যাওয়ার তারপরো।
.
সিনহা:অনেক বড় বাড়ির ভিতর গাড়ি ঢুকালেন বাড়ি তো নয় যেনো প্রাসাদ, এতো সুন্দর বাড়ি সামনে ফুলের বাগান,পিছনের দিকে পুল, একদম স্বচ্ছ পানি,দেশী বিদেশী বিভিন্ন ফুল ফুটেছে অনেক সুন্দর লাগছে,মনে হচ্ছে আমি স্বর্গপুরীতে আছি।গাড়ি থেকে নেমেই পুরোটা ঘুরে দেখছি সৌন্দর্যে যেনো আমি হারিয়ে যাচ্ছি।
.
সিফাত:গাড়ি থেকে নেমেই পুরো বাড়ির চারপাশ টা ভালো করে ঘুরে ঘুরে দেখছে,মনে হয় ভালো লেগেছে,একটু আগের মলিন মুখটা খুশিতে উজ্জল হয়ে উঠেছে,আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি ওর রুপে,যত দেখি ততই প্রেমে পড়ে যাই।
.
সিনহা ভিতরে চলো?
.
সিনহা:হুহ এলো এখন একটু শান্তিতে দেখতেও দিবে না,হুম চলুন আসছি মুখ বাকা করে বললাম।
.
সিফাত:মুখ বাকাচ্ছো কেন,দেখা ফুরিয়ে যাবে না আজ থেকে এই বাড়িতেই থাকবে সো সারাক্ষণ দেখতে পারবে,এখন চলো ভিতরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রান্না করবে খুব ক্ষুধা পেয়েছে।
.
সিনহা:হুহ মনে হয় আমাকে উনার দাসী পেয়েছে,অন্যের বউ কে নিজের বাড়ি নিয়ে এসে দাসী বানিয়ে রাখার চিন্তা কিন্তু আমিতো এটা হতে দিবো না,আমি থাকবো না।
.
সিফাত:কি হলো কথা কানে যায় না,ভিতরে আসো।
.
সিনহা:হুম যাচ্ছি বলে উনার পিছু পিছু গেলাম।
.
সিফাত:আমি রুমে যাচ্ছি ১০ মিনিটের মধ্যে খাবার রেডি করো আমি আসছি।
.
সিনহা:মানে কি আমি কেন করতে যাবো আমি পারবো না,আমি কি আপনার দাসী নাকি?
.
সিফাত:উহু দাসী কেন হবে আমার একমাত্র বউ ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললাম।
.
সিনহা:মানে 😱😱
.
সিফাত:মানে বোঝোনি,আজ আমি তোমায় বিয়ে করলাম তো?
.
সিনহা:তার মানে আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে আবিদের সাথে না?
.
সিফাত:হুম আমার সাথে,কেনো আবিদ কে আশা করেছিলে নাকি।আর তুমি রেজিস্ট্রি পেপারে আমার নাম দেখোনি?
.
সিনহা:আমি এতোকিছু খেয়াল করিনি, রাগে সিগনেচার করছি।
.
সিফাত:গুড এখন কথা না বলে কাজ করো,আমি তোমায় এমনি এমনি বিয়ে করিনি,তোমার লাইফ হেল করার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য,আমাকে চরিত্রহীন বলার শাস্তি তোমায় পেতে হবে।তুমি পার পাবে না সিনহা আহম্মেদ।বলে চলে আসলাম।
.
সিনহা:স্যারের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে অন্যকারো সাথে না এটা ভেবে খুব খুশি লাগছে কিন্তু উনি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমায় বিয়ে করেছে ভালোবেসে না এটা খুব যাতনা দিচ্ছে আমায়, রাগের মাথায় কি বলেচি সেগুলো ধরে এতোকিছু করলো।
.
to be continue…
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!