পেইন !! লেখাঃ এপিস ইন্ডিকা !! Part- 07
–কোথায় যাওয়া হচ্ছিল বিন্দু।।
হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলতে লাগে বিন্দু,,
—–প্লিজ আমাকে যেতে দিন!কি করেছি আমি আপনার।।
শিশির বাঁকা হেসে বলতে লাগে,,,
—-এতো সহজে না বেবী.।।
মুহুর্তেই মুখের ভাব পাল্টে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগে,,,
—-আর তোমার এতো সাহস হলো কেমনে আমার কাছ থেকে পালানোর।।তুমিকি ভুলে গেছ।। তুমি আমার বিয়ে করা স্ত্রী।।
“স্ত্রী” কথাটা শুনে মেজাজ বিগড়ে যায় বিন্দুর।।
বিন্দু চিল্লিয়ে বলে উঠে,,
—- কিসের স্ত্রী?? হুম।।।আমি এই বিয়ে মানি না।।আমি থাকবো না আপনার সাথে।।আজ নয়তো কাল।।আপনার মতো কাফিরের থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।।দরকার হলে আপনাকে খুন করে ফেলবো আমি।।
শিশিরের কাছে এটা জোকস মনে হলো।।বিন্দুর হাত ছেড়ে হো হো করে হাসতে লাগলো।।তার হাসি পুরো বাড়ি গুন্জন সৃষ্টি হলো।।
বিন্দুর যেন ভয় যেকে বসলো।।বসারই কথা কাল থেকে এখন পর্যন্ত কত কি না তার সাথে করছে।।আর এখনতো পালাতে চেয়েছিল এখন না জানি কোন পেইন দিয়ে বসে।।ভয়ে ২/১ বার শুকনো ডোক গিলে বিন্দু।।তারপর ধীরে ধীরে নরম সুরে বলে উঠে,,
—-কি চান আপনি আমার কাছে এমন কেন করছেন? আমিতো কিছু করিনি আপনার।।দেখুন আমার বাবা -ভাইয়ের মান সম্মানের বিষয় প্লিজ যেতে দিন।।তার উপর কদিন বাদ আমার বিয়ে আমি ফিরে না গেলে অনেক বাজে অবস্থায় পরবে প্লিজ।।
শিশির দু হাত বেধে খুব মনোযোগ হয়ে কথা গুলো শুনলো।।তাকে এমন শান্ত দেখে বিন্দু আবার বলতে লাগে,,
—-দেখুন আজ আমার জায়গায় আপনার বোন থাকলে আপনার কেমন লাগতো বলেন।।প্লিজ একটু বুঝতে ট্রাই করেন।।
বিন্দুর এই কথায় শিশির বাঁকা হাসলো।।সেই হাসির রেখা মুখে রেখেই বলতে লাগে,,
—-খুব ভালবাসো বিন্দু তোমার ভাইকে?আচ্ছা তোমার ভাই বাবা তারা কি তোমায় এতই ভালবাসে??
বিন্দু এবার চুপ করে গেল।।
বিন্দুকে চুপ করে থাকতে দেখে শিশির একটু শব্দ করে হেসে দিল।।তারপর পাশের সোফায় সটান করে বসে পড়লো পায়ের উপর পা তুলে।।কিন্তু নজর এখনো নিচের দিক তাকিয়ে দুহাত মুচরানো বিন্দুর দিক।।বিন্দু খুব টেনশেনে পরলে দু হাত এভাবে মুচরায়।।শিশির সেদিক নজর রেখে বলতে লাগে,,
—-আমার থেকে পালানো সে দুঃসাহস তুমি করেছো তার জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।। কিন্তু তার আগে তোমার মন থেকে কিছুটা ভ্রম দূর করতে হবে।।
বিন্দু মাথা তুলে তাকায় আর এক ভ্রু কুচকে বলতে লাগে,,
—-ভ্রম??
—-হুম ভ্রম।।যা তোমার মনে পুশে রেখেছো তোমার বাপ ভাইকে নিয়ে!
বিন্দু চট করে বলে উঠে,,
—-কি বলতে চাইছেন??
শিশির এবার উঠে এসে বিন্দুর সাথে গেসে দাড়ায়।।তারপর বিন্দুর ডান হাতের বাহু চেপে ধরে উপরে নিয়ে যেতে থাকে।।
আর বিন্দু এদিকে ব্যাথায় চিল্লিয়ে বলে উঠে,,
—-প্লিজ আমার বাহু ছাড়েন ব্যাথা করছে।।
ব্যাথায় দু চোখে পানি চলে আসে তার।।শিশির এবার তার রুমে এসে ঝাটকা মেরে ফেলে দেয় বিন্দুকে।।বিন্দু নিচে পড়ে যায়।।তখন শিশির বিন্দুর সামনে হাটু গেরে বসে বলতে লাগে,,
—-বিন্দু তুই খুব বোকে রে সেই ছোট থেকেই।। কেন এত অবহেলার পরও চিন্তে পারিস না তোর বাপ ভাইকে।।
বিন্দু শিশিরের কথায় চমকে যায়।।আর বলতে লাগে,,
—-ছোট থেকে মানে,,আপনি কি আমাকে চিন্তেন আগে থেকে??কে আপনি??
বিন্দুর প্রশ্নে শিশির হাসলো।।যেটা কোনো সুখের হাসি না।।চাপা কষ্টের হাসি।।যা বিন্দু খুব করে বুঝতে পারছে।।কেন জানি বিন্দুরও এই হাসিতে কষ্ট লাগলো।।কেনই বা এই ব্যক্তিটিকে দেখে তার পরিচিত মনে হচ্ছে।। আর কেনই বা এই লোকটি তাকে টানছে।।তার প্রতিটি বাক্য বিন্দুর বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করছে।।
—-জানিস বিন্দু! আমাদের সমাজে প্রতিটিনমানুষের দুটি রূপ আছে।।কারও ভালো, কারো খারাপ! কেউ কেউ তার ভাল দিকটি প্রকাশ করে,,কিন্তু সেই ভাল মানুষের আড়ালে খারাপ দিক গুলো লুকাইত রাখে।।আবার কেউ খারাপ দিকটি বহিঃপ্রকাশ করে যায় কিন্তু ভিতর থেকে একজন ভাল মানুষ টা লুকিয়ে রাখে।।তোর বাপ-ভাই সেই প্রথমটার মতো!!
বেচারা বিন্দুর শিশিরের কথায় কিছু বুঝতে পারলো না সে প্রশ্ন চোখে চেয়েই রইলো।।
শিশির আবার হাসলো আর বলল,,
—বিন্দু তই সত্যই বড্ড বোকা।।বাপ-্ভাইয়ের কথা রাখতে তোর নিজের লাইটাই শেষ করে দিতিরে।।
বিন্দু এবার বলে উঠলো,,
—-কি বলতে চাইছেন??আর এত পেচাচ্ছেন কেন??সোজা সোজি বলেন যা বলার।।
শিশির আবার বিন্দুর কাছে এগিয়ে গেল।।মাটি থেকে বিন্দুকে তুলে আরামসে বিছানায় বসালো।।তার পাশে সেও বসলো।।বিন্দু সব কিছু বিশময়ের চোখে দেখছে।।বিন্দুর দু গালে শিশিরের দু হাত রেখে বলতে লাগে,,
—–আমি শুধু জুলিয়েটকে বাঁচাতে চাইছি।।
বিন্দু চমকে শিশিরের দিক তাকায়।।জুলিয়েট নামটা শুনে বিন্দুর মনে ধক করে উঠে,এ যে তার মারিয়া আপুর ডাক ছিল।।তাহলে কি উনি,,,সে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে,,,
—-কে আপনি??
শিশির এবার বুঝতে পারে বিন্দু কিছু একটা বুঝতে পেরেছে সে বিন্দুকে ছেড়ে গট গট করে বের হয় যায় রুম থেকে তখনি বিন্দুও যেতে নেয় পিছু।। কিন্তু পারে না শিশির রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়েছে বাহিরের।।বিন্দু এবার কেঁদে দেয় সে চিৎকার করে বলতে লাগে,,
—-শিশির ভাইয়া।।প্লিজ দরজা খুলেন।।প্লিজ আমার কথা আপনার সাথে।।প্লিজ।।
শিশির চলে গেছে,,বিন্দু দরজার পাশে বসেই কান্না করছে আর ভাবচ্ছে,,
—-তুমি,, তোমার ফ্যামেলিরা সব তো পুড়ে গেছিলে তাহলে,,, ??
অনেক প্রশ্ন যেকে বসেছে তার মনে কিন্তু উত্তর যার কাছে সে চলে গেছে কি করবে বিন্দু কিছু বুঝতে পারছে না।। বসে বসে জল ফেলছে শুধু।।
.
এদিকে শিশির আজ আবার পাভে এসেছে,,ড্রিংস করতে।।পাশেই রাহুল বসে।।হাতে তার ফোন।।যা বার বার চেক করছে।।বুঝাই যাচ্ছে কারও ফোনে ওয়েট করছে সে।।তখনি ফোনের রিং টোর বেজে উঠলো।।সাথে সাথে রিসিভ করলো।।
ওপাশ থেকে কিছু শুনে মুখে একটা চওড়া হাসি দিয়ে বলতে লাগে,,
—-গুড যব।।তোমার সম্মাননা তুমি পেয়ে যাবে।।
রাহুলের কথায় শিশির রাহুলের দিক তাকায়,,
রাহুল বলে উঠে,,
—–ডান।।
শিশিরের মুখে রহস্যময় হাসি।।
রাহুল তখনি বলে উঠে,,
—-আমাদের এবার যাওয়া উচিত।।
শিশর মাথা নেড়ে সায় দেয়।।
চলবে,,