উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১৪
আমি চিতকার করতে চেয়েও করছিনা। যদি কেউ
এসে আমার গলা চেপে ধরে।
আমি হাটুর উপর মাথা রেখে চুপ করে বসে আছি।
জানিনা আমাকে কেউ আর খুজে পাবে নাকি।
হঠাত একটা আওয়াজ হল আমি মুখ উঠালাম।
জানালার সামনে
” প্রহর ” দাড়িয়ে আছে।আমি কিছু আর ভাবলাম না।
ছুটে ওর কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরতে নিলাম কিন্ত
বাইরে রোজ দাড়িয়ে আছে।
আমি হাত নামিয়ে নিলাম।
প্রহর – হাত ধরে ওকে কাছে টেনে নিলাম।
রাত্রি – আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বের হলাম।
।
রোজ- প্রহর আমাকে ইশারা করল। আমি রাত্রি কে
নিয়ে গাড়ি র দিকে গেলাম।
।
প্রহর – লাইট কে বললাম ওকে ( নাইট স এর
লোক) কিং এর কাছে নিয়ে যেতে।
তারপর আমি গেলাম গাড়ি তে।
রাত্রি কিছু বলল না।
রোজ গাড়ি চালাচ্ছে।
।
রাত্রি- বাসায় এসে সোজা রুমে যাচ্ছিলাম।
।
প্রহর – তোমার কিছু হয়নি ত?
।
রাত্রি- না কিছু হয় নি।ছেলে টা কে পেয়েছ?
।
রোজ – না পাইনি।
।
রাত্রি- ও।
ওদের দেখালাম আমার কিছুই হয়নি। আমি স্বাভাবিক।
কিন্তু বুকের ভেতর অনেক ভয় জমে গেছে।
এই কয় দিনেযা হয়েছে আমি আর নিতে পারছিনা ।
মনে হচ্ছে এই দেশ ছেড়ে চলে যাই।
আমার জন্য এটাই ভাল হবে । আমি এই দেশ
ছেড়েই চলে যাবো।
আর তাছাড়া আমি যখন ই রোজ কে দেখব
প্রহরের সাথে আমি শান্তি পাব না।
কাকু কে বলেই সব ব্যবস্থা করে ফেলি। না না না
কাকু কে বললে প্রহর জেনে যাবে. আচ্ছা
জানলেও ওর কি কিছু আসবে যাবে??
যাই হক।
আমি নিমির বাবাকে দিয়েই কাজ টা করাই পরে কাকু
কে বলা যাবে। কিন্তু বলব না আমি কোথায় আছি।
তারপর কাকুর কাছে চলে যাবো।
কাল কেই নিমির বাসায় যেতে হবে একবার।
।
প্রহর – কিং আমি কাল কে এসে একবার দেখা করব
আপনার সাথে।
ও কি মুখ খুলেছে???
।
কিং- এখনও কিছু বলছেনা।
তুমি না আসলে হবেনা ।
রোজ- আমি কি যাবো?
।
প্রহর – না তুমি রাত্রির আশে পাশে থাকো।
এই ২ দিনে যা হচ্ছে মেয়েটার সাথে।
আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।
।
রাত্রি- ঘুম থেকে উঠে দেখি ৯ টা বাজে।
রেডি হয়ে নিলাম।
দরকারি সব কাগজ সাথে নিয়ে নিলাম।পাসপোর্ট ও।
।
প্রহর – কোথায় যাচ্ছো??
।
রাত্রি- যেখানেই যাই।
।
প্রহর – আমিও যাবো।
।
রাত্রি- কেনো?
।
প্রহর – এত দিন পর এমন বোকার মত প্রশ্ন
জিজ্ঞেস করছ? ?
কেনো তুমি জানো না??
।
রাত্রি- তোমাকে আমার দরকার নেই।
।
প্রহর – রাতে কি হয়েছে ভুলে গেছো?? সেটা
এখন ও যদি হিয় তখন কি হবে?
।
রাত্রি- সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা।
তুমি রোজ কে নিয়ে ভাবো।
।
প্রহর – বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।
।
রাত্রি- লিভ মি এলন।
।
প্রহর – ঠাস করে একটা থাপ্পড় মেড়ে দিলাম।
।
রাত্রি- গালে হাত দিয়ে বললাম, ‘তুমি আমাকে
মারলে’???
।
প্রহর – সরি আসলে…. দেখো আমার রাগ উঠে
গেলে আমার মাথা কাজ করেনা।
।
রাত্রি- ( আজকের দিন টাই তারপর তোমার এই টর্চার
আর না।সেই ব্যবস্থা ই করছি।)
।
প্রহর – না বলে কোথায় যাচ্ছ।
বললাম ত আমিও যাবো।
।
রাত্রি- নিমির বাসায়।
।
প্রহর – ওকে চল।
।
রাত্রি- নিমির বাসায় যেয়ে আংকেল কে বলে সব
ঠিক করে নিলাম।
সেই সব ব্যবস্থা করে দিবে।
এখন সব ভেজাল আর প্রহর দুটা থেকেই মুক্তি।
।
রোজ- কিং এর কাছে গিয়েছিলে।?
।
প্রহর- হুম।
মুখ খুলেনি।মেরে ফেলেছে কিং ওকে।
নাইট কিং এর আস্তানার খবর আজো আমরা পেলাম না।
খবর না পেলে ওকে মারবই বা কি করে।
।
রোজ- নাইট এর ত এক টাই উদ্দেশ্য রাত্রি কেও
ভ্যাম্পায়ার বানানো।
তাই না??আচ্ছা ও ভ্যাম্পায়ার হলে ক্ষতি কি? ?
প্রহর – কি বলছ এইসব।
?? মাথা খারাপ তোমার?? যদি কিং ও তোমার মত ভাবত
তাহলে এত কিছু করত? ??
রোজ- তুমি ববুঝতে পারছ না
….. আরে লাইট।
লাইট – সরি ফোর ডিস্টার্ব।
।
রোজ- তুমি এইখানে কেনো? ? এখন? ?? কি
চাও???
।
প্রহর – কি চাও?
লাইট – কিছু জানতে চাই আরকি!
।
রোজ- কি? ?
।
লাইট – আমরা রোজ কে কেনো রক্ষা করছি? ও
ত মানুষ।
আর ওর পিছনে নাইট কিং লেগেছে কেনো?
এইসব না জানতে পারলে আসলে আমি শান্তি পাচ্ছিনা।
।
প্রহর – এখন তুমি এইসব জানতে এসেছ?
রোজ- তুমি রাগ করোনা। আমি ওকে সব বলছি।
ব্যচারা নতুন ত তাই কিছু জানেনা।
আচ্ছা শুনো বলছি।
।
লাইট- বল বল।
।
প্রহর – তুমি বল আমি রাত্রিকে দেখে আসি।
।
রোজ- রাত্রি মানুষ হলেও মানুষ না।
ও আমাদের অর্থাৎ ভ্যাম্পায়ার দের বংশে বিলং করে।
রাত্রির বাবা ছিল মানুষ। কিন্তু মা ছিল ভ্যাম্পায়ার। আর
রাত্রির মা কে ছিল জানো??
আমাদের কিং এর মেয়ে।
মানে রাত্রিরর নানা হচ্ছে আমাদের কিং।
রাত্রির বাবা মা মরে যাওয়ার পর কিং ই ওকে মানুষ
করে।
কিন্তু ওকে বাচাতেই ওর থেকে দুরে সরে যায়।
রাত্রি এসব কিছু জানেনা।
আর ও এটাও জানেনা ওর নানা বেচে আছে।
ও জানে ওর নানা মানে কিং মারা গেছে।
এখন কিছু বুঝলে?
।
লাইট – তাহলে নাইট কিং এর পিছনে লেগেছে
কেন?
।
রোজ- আরে বেক্কল কারন কিং রাত্রিকে…..
।
লাইট – মারতে চায়?
।
রোজ- না রে।
নাইট কিং চায় রাত্রিকে বিয়ে করে ওর নাইট কুইন
বানাতে।
ওকে পুরো পুরি ভ্যাম্পায়ার বানাতে।
।
এর জন্য ওকে আমরা বাঁচাচ্ছি।
নাইট কিং খুব শক্তি শালী।
আর খুব খারাপ ও ।
ওরা রক্তের জন্য প্রতি দিন মানুষ মারে।
ওরা আর আমাদের মধ্যে খুব পার্থক্য।
আমরা রক্তের নেশা কন্ট্রোল করতে পারলেও
অরা পারেনা।
তাই ত আমরা হান্টার।
ওদের মারাই আমাদের কাজ।
আর ও এর রিভেঞ্জ হিসেবে কিং এর নাতনি মানে
রাত্রির ক্ষতি চায়।
ওকে ওদের মত খারাপ ভ্যাম্পায়ার বানাতে চায়।
বুঝলা???
।
লাইট- এত কাহিনি??
।
রোজ- হুম।
.
লাইট – এখন কি হবে???
।
রোজ- কি জানি কি হবে।বুঝতে পারছিনা কিছু।
কিন্তু তুমি এখন যাও।
।
রাত্রি- নাহ আমি এই দেশ ছেড়েই চলে যাব।
কালকেই ব্যবস্থা করতে হবে।
এইসব থেকে আর প্রহর থেকে আমি দুরে থাকব
তাহলে।
শাওয়ার ওন করে শাওয়ার এর নিচে দাড়িয়ে ভাবছিলাম
এইসব।
।
প্রহর – রাত্রি রুমে নেই তাহলে কোথায়
গেলো?? আবার কিছু হল না ত ??
।
রাত্রি- ড্রেস পরে বের হলাম।
।
প্রহর – আওয়াজ পেয়ে পিছনে তাকালাম।
রাত্রি কে দেখে ওকে জরিয়ে ধরলাম।
‘তুমি ঠিক আছো? ? আমিত ভাবলাম ‘
।
রাত্রি- ঠেলে দুরে সরিয়ে দিলাম।
আমি ঠিক আছি। তুমি এবার যেতে পারো।
আমি ঘুমাব।
।
প্রহর – আচ্ছা।
রোজ- কি হয়েছে রাত্রি ঠিক আছে?
।
প্রহর – হুম ঠিক আছে।
।
রোজ- এখন কি করব?
।
প্রহর – কিছু ত করতেই হবে।নাইট কে খুজে
বের করতে হবে।
।
রাত্রি- (ফোনে) কাকু আমি আসছি!
কাকু- বাহ অনেক ভাল খবর। আর প্রহর?
রাত্রি- ওর ব্যপার ও বুঝে নিবে
।
কাকু- আমি আজি লন্ডন এর টিকেট করে দিচ্ছি।
।
রাত্রি- লন্ডন কেনো? তুমি ত জাপান ছিলে
।
কাকু- লাস্ট মান্থ এইখানে শিফট হয়েছি ।
।
রাত্রি- আচ্ছা ঠিক আছে।তোমার কিছু করতে
হবেনা।নিমির বাবাকরবে।
কাকু- ওকে
আমাকে ফোন করে খবর দিও।
।
জামা কাপড় ব্যাগ এ গুছিয়ে নিতে হবে এখনি।দরজা
খোলা ছিল তাই লাগাতে গেলাম।
দেখি রোজ আর প্রহর কথা বলছে।
খুব রাগ লাগছিল।
আমি ঠাস করে দরজা লাগালাম।
।
প্রহর – এত জোরে আওয়াজ কিসের হল?
।
রোজ- রাত্রি দরজা লাগালো।
আমাদের এক সাথে দেখে আবার হয়ত রেগে
গেছে।
তুমি ভুল করছ প্রহর। এটা করা তোমার ঠিক হচ্ছেনা।
এখন তুমি যা ভালো বুঝ কর।
।
রাত্রি- কাল কে সকাল টা হতে দেও জাস্ট প্রহর, না
আমি তোমার সামনে থাকব আর না তোমাদের
দেখব এক সাথে।
।
রোজ- প্রহর সারা রাত কোথায় ছিলে?
।
প্রহর – নাইট স দের খুঁজতে।
আমি একবার রাত্রিকে দেখে আসি।
।
রাত্রি- সকালে উঠে জামা কাপড় গুছিয়ে নিলাম।রেডি
হয়ে নিলাম।
।
প্রহর – ব্যাগ গুছাচ্ছ কেন? ?
।
রাত্রি- কারন আমি এইখান থেকে চলে যাচ্ছি
।
প্রহর – মানে??
।
রাত্রি- মানে আমি চলে যাচ্ছি।
।
প্রহর – কোথায় যাচ্ছ?
।
রাত্রি – তোমাকে বলার প্রয়োজন মনে করছিনা।
।
প্রহর -( দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলাম ) এত
রাগ! ?? এত?? আর অন্য দিকে যে তোমার পিছনে
নাইট …….
।
রাত্রি- হাত ছাড়াতে ছাড়াতে- কি বললে! ???
।
প্রহর – না কিছুনা আমি জানতে চাচ্ছি তুমি কোথায়
যাচ্ছ?
।
রাত্রি – সেটা দিয়ে তুমি কি করবে?
।
প্রহর – আমার দরকার আছে।
তুমি বল।
।
রাত্রি- তোমার কি দরকার! ?? আমি যেখানেই যাই।
তোমার তাতে কি? ?
।
প্রহর – তা তোমার বললে কি সমস্যা? ??
।
রাত্রি- ওকে আমি এই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
লন্ডন যাচ্ছি। কাকুর কাছে।
এখন আর তোমার প্রয়োজন নেই।
আর এখন থেকে তোমার ও দেখতে হবেনা
আমাকে।
তোমার আর রোজ এর রাস্তা ক্লিয়ার।
।
প্রহর – দেওয়ালে জোরে করে বারি দিলাম।তুমি
কোথাও যাবেনা।
তুমি এইখানেই থাকবে, আর আমার কাছেই থাকবে।
রাত্রি- তোমার কাছে? ? তোমার কাছে থাকব
কেন? ? তুমি কে আমার? ? হ্যা? ? তোমার কি সমস্যা
আমি চলে গেলে।?
।
প্রহর – সমস্যা আছে।
আছে সমস্যা।
বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!