উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১৩

প্রহর – ছুটে গেলাম রাত্রির কাছে।
কি করছ কি তুমি! ?হাত কেটে রক্ত পরছে
সেদিকে খেয়াল আছে??

রাত্রি- হাত ছাড়ো আমার।
ধরবে না আমাকে।

প্রহর – পাগল হয়েছ??? হাত টা দেও।

রাত্রি – চিতকার দিয়ে উঠলাম কাছে আসবেনা আমার।
এক হাত দিয়ে ঠেলে সরিয়ে দিলাম।

প্রহর – আমি কাছে গিয়ে ওর হাত চেপে ধরলাম।
হাত টা দেখি।

রাত্রি- কে হ্যা তুমি? ? কি হউ আমার? কিসের চিন্তা হ্যা
তোমার!??
আমি মরি বাচি তোমার কি/??আমার হাত কাটুক আর যা
কাটুক তোমার কি। তুমি বের হউ।

প্রহর – অনেক রক্ত পড়ছে ।
তুমি হাত টা দেখতে দেও একবার প্লিজ।

রাত্রি- কথা বলতে খুব কস্ট হচ্ছে। চোখ ঝাপ্সা
হয়ে আসছে।
মাথা ঘুড়াচ্ছে।

প্রহর – রক্তে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে।
অনেক রক্ত পরছে।
এরপর ওকে বাঁচানো কস্ট কর হয়ে যাবে।
বলতে না বলতেই রাত্রি পড়ে যাচ্ছিল।
আমি ওকে ধরলাম।

রোজ- অনেক রক্ত বেরিয়ে গেছে। এখন কি
করবে।

প্রহর – আগে ওর হাতের ক্ষত টা ঠিক করে নেই।

রোজ- ক্ষত ঠিক করে হবেনা।
সেটা ত ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু ওর শরীরে এখন রক্তের অভাব।
তুমি কি বুঝতে পারছ!??

প্রহর – ত কি বলতে চাচ্ছ তুমি? কি করব এখন আমি?

রোজ- ওর গায়ের রক্ত আমার আমাদের রক্ত
একি।

প্রহর – সেটা ত আমিও জানি।
তাতে কি? ??

রোজ- …….

প্রহর – আমি যেটা ভাবছি তুমি কি সেটাই ভাবছ??
।না না না আমি পারব না সেটা করতে।
পরে অন্য কিছু হয়ে গেলো?

রোজ- তুমি পাগল নাকি?? কি করে অন্য কিছু হবে?

প্রহর – ও তো মানুষ।

রোজ- তুমি সব টাই জানো তারপর ও এমন কথা
বলছ? ?
সময় খুব কম যা করার তাড়াতাড়ি করো।
আর যদি চাও ওকে মরতে দিতে…..

প্রহর – না না। কিং আমাকে ওর দায়িত্ব দিয়েছে আমি
ওর কিছু হতে দিব না।
নিচে ওকে বসিয়ে ওর মাথা আমার এক হাতের উপর
নিলাম।

রোজ- তুমি যা করছ ঠিক করছ।
কোনো গিল্টি ফিলিংস রেখোনা মনে।
আমি আসছি।

প্রহর – ওর মুখটা ফেকাশে হয়ে যাচ্ছে।
দেখে মনে হচ্ছে পুরাই রক্ত শুন্য।ওর
হাত টা নিয়ে ক্ষত স্থানে চুমু দিলাম।
ক্ষত টা আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে।
নিজের এক হাতে কামোড় দিয়ে বসলাম।
রক্ত চুষে নিলাম কিছুটা।
ঠোট নিবির ভাবে মিলিয়ে দিলাম রাত্রির ঠোটের
সাথে যাতে রক্ত গুলা ও গিলে নিতে পারে।
এইভাবে ৩ বার ওর মুখে রক্ত দিলাম।
শেষ বার যখন রক্ত দিচ্ছিলাম তখন দেখলাম ওর
চোখ মিটমিট করছে।

রাত্রি- চোখ খুলে ঝাপ্সা ঝাপ্সা প্রহরের মুখটা
দেখলাম।
প্রহরের গালে হাত রাখলাম ।
ঠোট দিয়ে আকড়ে ধরলাম ওর ঠোট।
নিবির ভাবে আদর করছে।আর কিছু মনে নেই।
সকালে চোখে আলো পড়তেই ঘুম ভাংল।
আমি দেখলাম আমি বিছানাতে।
কিন্তু আমি ত কিছু মনে করতে পারছিনা।
আমার শুধু মনে আছে আমি প্রহরের ঘর থেকে
নিজের ঘরে এসেছিলাম।
কিন্তু কখন ঘুমালাম, আর রাতে কি হয়েছিল কিছুই ত
মনে পরছেনা।
আর কিভাবে কিভাবে সকাল হয়ে গেলো।
উফফ কিচ্ছু মনে পরছেনা।

রোজ- তোমার কথা মত ওইসময়ের মেমরি টুকু
আমি ওর মাথা থেকে মুছে দিয়েছি।
ও কাল কে রাতে কি হয়েছে ওর সাথে আর মনে
রাখতে পারবেনা।
কিন্ত তোমার মনে রাখা উচিত আমার এই শক্তি এক
জনের উপর এক বার ই কাজ করে।
এর পর রাত্রির উপর আর কাজ করবেনা।

প্রহর – আমি জানি।
কিন্তু এটা করা ছাড়া আর উপায় ও ছিল না।

রোজ- এইভাবে আর কত দিন? ??

প্রহর – যত দিন না নাইট কে মারতে পারছি।

রোজ- তোমার কি মনে হয় রাত্রি তোমাকে আর
ওর কাছে যেতে দিবে।
ও যদি অন্য কাউকে তোমার বদলে রাখে।?
প্রহর – পরের টা পরে দেখব।

রাত্রি- রোজ আর প্রহর নিচে কথা বলছে।
বলবেই ত ……. নাহ আমি কেনো নিজেকে কস্ট
দিব ওর জন্য। ও ত অন্য কে নিয়ে শুখেই আছে।
আমিও নিজেকে ঠিক রাখার চেস্টা করব।সিড়ি দিয়ে
নিচে নামলাম।

রোজ- প্রহর রাত্রি নামছে।
হাই। এখন কেমন আছো??

রাত্রি- ভালো।
অনেক ভালো।
আর এখন থেকে ভালই থাকব।
তোমাকে ভাবতে হবেনা আমার জন্য।
।রান্না ঘরে গেলাম কফি বানিয়ে বের হলাম।

তোমরা এখনও এইখানে দাড়িয়ে আছো কেন??

রোজ- না আসলে আমাদের কাজ ই ত তোমাকে
দেখা

রাত্রি- ও তাই নাকি? ? তোমাদের সে সময় আছে??

প্রহর – এইভাবে বলছ কেন? ?

রাত্রি- কেনো গায়ে লাগল কথাটা।
একটা কাজ করো। তোমরা দু জন চলে যাও।
তোমাদের আর কস্ট করে আমাকে দেখতে
হবেনা।
আমাকে দেখতে যেয়ে ত আর তোমরা এক
সাথে সময় পার করতে পারোনা।

প্রহর – রাত্রি বেপার টা বেশি বেশি হচ্ছেনা??

রাত্রি- না এক দম ই না।
আমি কাকু কে বলে দিচ্ছি।

প্রহর – কি প্রব্লেম কি তোমার??

রোজ- এইভাবে বলো না।

রাত্রি- আমার প্রব্লেম তুমি!

প্রহর – হাত টেনে নিয়ে গেলাম ওর রুমে।
রাত্রি – হাত ছাড়ো আমার।
প্রহর –
আমি তোমার প্রব্লেম?? এখন আমি প্রব্লেম
হয়ে গেলাম।

রাত্রি- এখন না অনেক আগের থেকেই।

প্রহর – ও তাই আমি রোজ কে ভালবাসি বলেছি
দেখে তুমি…..

রাত্রি- তুমি যাকে খুশি তাকে ভালবাসো আমার তাতে
কিছুই আসে যায় না।
তুমি জাস্ট আমার সামনে থেকে যাও।

প্রহর – আমি রেগে রুম থেকে বেড়িয়ে
গেলাম।

রাত্রি- ও যাওয়ার সাথে সাথে আমি নিচে বসে পরলাম।
খুব কস্ট লাগছিল।
চোখ বেয়ে পানি পরছিল।
বার বার মুছছিলাম।
খাটের সাথে হেলান দিয়ে হাটুর উপর মাথা দিয়ে
বসে বসে কাঁদছিলাম নি:শব্দে।

রোজ- কোথায় ছিলে সারাদিন।

প্রহর – কেনো কি হয়েছে রাত্রির কিছু হয়নি ত?

রোজ- ও ত সারাদিন ঘর থেকেই বের হয়নি।
সারাদিন শুধু কাঁদতে ই দেখলাম।
খেতেও নামেনি।

প্রহর – আমি উপরে গেলাম।
কাঁদতে কাঁদতে নিচে ফ্লোরেই ঘুমিয়ে
পরেছে।চোখ মুখ ফুলে সেকি অবস্থা।
কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।
ওর থেকে দুরে থাকা আমার জন্য ও যে কত
কস্টের ও যদি একবার বুঝত।
আমি যে কত কস্টে নিজেকে ধরে রেখেছি
এটা জানার পর যে ও আমাকে ভালোবাসে
ও যদি একবার বুঝত।

আমি বের হয়ে আসলাম।
রোজ- শুধু শুধু এটা করার কি খুব দরকার ছিল? এই
মিথ্যে টার কি খুব দরকার ছিল?
তোমাদের মাঝে আমাকে ৩য় ব্যক্তি করে আনার
কি ছিল?

প্রহর – ‘তুমি কি বুঝনি কেন করেছি?

রোজ- আমি এত কিছু বুঝি না।
আমি শুধু বুঝি তুমি ওকে আর ও তোমাকে
ভালবাসে।এর মাঝে আমার কোনো অস্তিত্ব
নেই।

প্রহর – এটা সম্ভব না।

রোজ- সব ই সম্ভব তুমি চাইলে।

প্রহর – আমি চাইলেও সম্ভব না।
আমি আর ও এক না।

রোজ- কে বলেছে ‘তুমি আর ও এক না??
আমরা যা ও ও তা।

প্রহর – ও সেটা নয়।

রোজ- হ্যা হয়ত পুরোপুরি নয় চাইলে ত হতে
পারে।

প্রহর – না।ওর পরিচয় ও মানুষ।

রোজ – ও মানুষ কিন্তু ওর ব্যাক গ্রাউন্ড। ও
ভ্যাম্পায়ার দের বংশেই বিলং করে।
ভুলে যেও না।
তাই ত নাইটসরা ওর পিছে লেগেছে।
প্রহর – তুমি চুপ করো। আমি আর এইসব শুনতে চাই
না।
ওকে বাঁচানো আমাদের কাজ। আর কিছুনা।

রোজ- তুমি বুঝতে পারছ না প্রহর …..

প্রহর – সসস! !!!

রোজ- কি হয়েছে?

প্রহর – কিছুর শব্দ শুনতে পেলাম। রাত্রির রুমে
ছুটে গেলাম।
রাত্রি রুমে নেই।

রোজ – প্রহর এইখানে দেখো। ওইটা মেবি
নাইটসস এর দলের। রাত্রি কে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রহর – আমি আর রোজ জানালা দিয়ে বের হয়ে
পিছু নিলাম।

রোজ- আমি বাকিদের এইখানে আসতে মেসেজ
করে দিলাম।

প্রহর – ছুটতে ছুটতে কিছুর সাথে বারি খেয়ে
পড়ে গেলাম।
উঠে আর ওদের দেখলাম না।

রোজ- ওরা কোথায় গেলো।

প্রহর – আমি জানিনা।
কিন্তু খুজে বের করতে হবে।
নাইট স এর কাছে যাওয়ার আগেই ওকে ধরতে
হবে।

রোজ – আমি সবাই কে মেসেজ দিয়েছি। হোপ
কেউ না কেউ ওকে দেখবেই।

প্রহর – আমি বসে থাকতে পারব না।
আমাকে ওদের খুজে বের করতেই হবে ।

রোজ – দাড়াও দাড়াও লাইট এর ফোন এসেছে।
ওকে গোট ইট।
রাত্রির খবর পেয়ে গেছি।
প্রহর চল।

রাত্রি- একটা অন্ধকার ঘরে ছেলেটা আমাকে
রেখেছে।
চাদের আলো পর্যন্ত ঢুকছেনা।
চারিদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার।
চলবে
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *