আলোছায়া

আলোছায়া !! Part- 06

“সবুজ স্যার মারা গেছেন তা আপনি আমায় জানান নি কেনো?”
উল্লাসীর প্রশ্নে কপাল কোঁচকালো মেসবাহ। পুষ্পদের বাড়ি থেকে ঘন্টাখানেক হলো এলেও ক্লান্তি কাটেনি এখনো। সেইসাথে গলার ভেতরটায় হালকা ব্যথাও অনূভব হচ্ছে। পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে ঢুলে পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে বিছানায়। তবে বাড়িতে আসা বাবা এবং ভাইদের সঙ্গ দিতেই সকলের মাঝে বসে থাকতে হচ্ছে চুপচাপ। এরইমাঝে হঠাৎ করে উল্লাসীর মুখ থেকে এমন কথা শুনে হতবিহ্বল হয়ে পড়লো সে। খানিকটা সময় নিয়ে চারপাশের পরিবেশ পর্যালোচনা করে ক্ষীণ স্বরে বললো,
“তোমায় কে বলেছে এসব?”
“যেই বলুক! আপনি আমায় কেনো জানাননি সেসব? আমাকে কি মানুষ বলে মনে হয়না আপনার?”
“বাজে কথা বলো না উল্লাসী। তুমি এখনও অনেক ছোট। চারিদিকের ঘটা এটাসেটা সবটা শুনে তা নিয়ে ভাবলে তোমার চলবে না।”
“তো চলবে কীসে? আমাকে আপনি কেনো এখনো বাচ্চা ভাবেন? কেনো আমার সসাথে সবটা শেয়ার করেন না?”
শান্ত গলায় মেসবাহ বললো,
“আসলে এটা নিয়ে কথা বাড়াতে চাইনি.. তোমার শুনলে খারাপ লাগবে। তুমি কষ্ট পাবে, পড়াশোনায় মন বসবে না ভেবেই..”
অস্থির সুরে উল্লাসী বললো,
“কিন্তু মুবিন ভাইকে জানানো উচিৎ!”
“আমারও মনে হচ্ছিল জানানো উচিৎ। তবে বাবা যা যুক্তি দিয়েছে তাও ফেলনা নয়।”
“কী যুক্তি দিয়েছেন উনি?”
“চৈতালি নিজের জীবনে এগিয়ে গেছে। তবে কেনো মুবিন পিছুটান নিয়ে তার জীবনটা নষ্ট করবে? পাঁচটা বছর নিয়ে আজ যখন মুবিন নিজের জীবনটা স্বাভাবিক করতে পেরেছে, তখন অতীত নিয়ে জল ঘোলা করার কোনো দরকার হয়না। তাছাড়া মুবিন জানলেই বা কী করবে? সহানুভূতির দুটো কথা ছাড়া আর কিছু করার আছে তার?”
“তাই বলে জানাবেন না কেনো? না.. আমি এটা কোনোভাবে মানতেই পারছি না!”
“এইতো! এজন্যই আমি তোমায় কিচ্ছুটি জানাইনি। তোমার পা থেকে মাথা অব্দি সবটা সম্পর্কেই অবগত আমি।”
“আপনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকবেন না.. আপনি আমায় শুধু এ-ব্যাপারে নয় আপনার জীবনে ঘটা কোনো ব্যাপারেই কিছু জানান না। কিছুদিন আগে যে আপনার হাসপাতালে প্রেশার বেড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সে ব্যাপারে কিছু জানিয়েছিলেন আমায়? অন্যের মুখ থেকে আমার কেনো সবটা শুনতে হয়? আমার স্বামী অসুস্থ, অথচ আমিই কিনা তা জানি না!”
কপালে চিন্তার রেখা ফুটতেই মেসবাহ বললো,
“কে জানিয়েছে তোমায়?”
“আপনার লাইফের বেটার হাফ.. আরও ভেঙে বলবো? আপনার ইভানা।”
ক্ষিপ্রগতিতে রান্নাঘরে এসে খানিকক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো উল্লাসী। মাথার ভেতরটা তার দপদপ করে উঠছে। বুকের ভেতরটা ভারী হয়ে আসছে। মিথ্যা কিছু বলেনি তো জাভেদ ভাই। না মেসবাহ তাকে পাশে বসিয়ে নিজের ভেতরের খারাপলাগা বা ভালোলাগার অনুভূতিগুলো কখনো শেয়ার করেছে আর না তার কোনো গোপন বিষয় সম্পর্কে তাকে অবগত করেছে। তবে কীসের জীবনসঙ্গিনী সে মেসবাহর? আর কেমনই বা ভালোবাসা তাদের মাঝে? পুরো রান্নাঘরজুড়ে খানিকক্ষণ পায়চারী করার পর লম্বা একটি নিঃশ্বাস ফেলে চুলোয় হাড়ি বসিয়ে তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ, মরিচের টুকরো ছেড়ে দিল উল্লাসী। তা কিছুটা গরম হয়ে বাদামী বর্ণ ধারণ করতেই কুঁড়িয়ে রাখা নারিকেল ঢেলে দিয়ে ভাজতে শুরু করলো। গ্রাম থেকে হাসের মাংস নিয়ে এসেছেন তার শ্বশুর। বায়না ধরেছে তার মেজো বৌমার হাতে খাবেন। অথচ সেই মেজো বৌমার কাছ থেকেই যে তার মেজো ছেলে সবকিছু গোপন করে সে খবর কি রাখে সে? মনের ভেতরে চলা খচখচানি নিয়ে বাটা মসলাসহ সব উপাদান ঢেলে নারিকেলটা সামান্য কষিয়ে নিয়ে তাতে হাসের মাংস ছেড়ে দিল উল্লাসী। তারপর আলতো আঁচে তা ঢেকে অপেক্ষা করতে লাগলো মিনিট পাঁচেক।
এ কেমন অসহ্যকর পরিস্থিতিতে পড়লো সে? মৌমির মতো তারও কেনো জীবন দেখার ধরন ফ্যাকাশে লাগছে.. মলিন লাগছে আশেপাশের সবকিছু? চৈতালি আপা কি ভালো আছেন? তার পাশে এখন কি মুবিন ভাইয়ের থাকাটা জরুরী ছিল? তাছাড়া মৈত্রীর বাবা কেনো বললেন এখন শুধু মুবিন ভাই দুটো সহানুভূতির কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই? চাইলে কি মুবিন ভাই চৈতালি আপাকে নিয়ে ভাবতে পারেননা? দুজনের মাঝে অবশিষ্ট কি এক বিন্দু ভালোবাসাও বেঁচে নেই?
“রান্না কতদূর?”
পাশ থেকে হঠাৎ মেসবাহর কন্ঠ কানে আসতেই চিন্তারাজ্যের বেড়াজাল ছিঁড়ে বাস্তবে পা দিল উল্লাসী। বুকচিরে বেরিয়ে আসা গভীর একটি শ্বাস ফেলে দূর্বল গলায় বললো,
“হচ্ছে..”
“কিছু করতে হবে?”
“না..”
“কতটুকু ভাতের চাল নিতে হবে বলো.. চালটা ধুয়ে দিয়ে যাই।”
“এখন এত ভাল ভালাই দেখা আসবেন না.. আপনার মনে আমার জন্য কতটুকু ভালোবাসা আছে তা আমার জানা হয়ে গেছে।”
“সারাদিন কি তুমি এই দাঁড়িপাল্লা নিয়ে আমার ভালোবাসা মাপতে থাকো?”
“এখন তো এসবই মনে হবে আপনার। আমি তো অকর্মার ঢেঁকি! আমি বলদ.. আমি গাঁধি। কী হয় আপনার গোপন কথাগুলো আমাকে বললে?”
ক্ষেপে গলার স্বর উঁচু করে জবাব দিল উল্লাসী।
দরজা ছেড়ে উল্লাসীর দিকে কয়েক কদম এগিয়ে এল মেসবাহ। ধীর স্বরে বললো,
“চেঁচাচ্ছো কেনো? একটা কথা তো আস্তেধীরে বসেও বলা যায়.. তাইনা? তাছাড়া বাড়িতে যে আব্বা, বড় ভাই এসেছে সেদিকে খেয়াল আছে তোমার? এমন অবুঝের মতো আচরণ করলে তো সমস্যা!”
“হ্যাঁ, এখন তো আমিই অবুঝ! ছোটো বাচ্চা..”
“চেঁচিয়ো না..”
“চেঁচাচ্ছি কোথায়? আমি আস্তে কথা বললেও আপনার তা চিৎকার কেনো মনে হয়? কখনো ভালোবেসে দুটো কথা বলেছেন আমায়? আপনার মনের ভেতর চলা দুঃখ বা আনন্দ নিয়ে আমাকে পাশে বসিয়ে কিছু বলেছেন? কিংবা কখনো কি বলেছেন উল্লাসী তোমায় সবুজ রঙে অদ্ভুত সুন্দর লাগে? বলেন.. বলেছেন কখনো?”
উল্লাসীর গলার স্বর ক্রমেই উঁচু হওয়ায় রান্নাঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল মেসবাহ। বাড়িভর্তি মানুষ। আব্বা এবং বড় ভাই রাতটা থাকবেন বলে মুবিনও এসে রয়েছে বাড়িতে। অথচ সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই উল্লাসীর। দিনকে দিন যেনো তার বাচ্চামি আরও বেড়েই চলছে! আগে তো এমন ছিল না উল্লাসী। বয়স কম হলেও কথাবার্তা এবং চালচলনে ছিল বিমোহিত করার মতো স্থিরতা।
রাতের খাবার শেষে সিগারেট টানতে ব্যালকনিতে এসে খানিকক্ষণ পুষ্পকে নিয়ে ভাবলো মুবিন। মেয়েটি তাকে আসার সময় বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে রাতে তাকে কল দেবার কথা। এমনকি তার ফোনে নিজের নাম্বার ওয়াইফ লিখে সেইভ করেও দিয়েছে। মেয়েটির কাজ এবং কথায় অদ্ভুত এক চাঞ্চল্য থাকলেও মনটা বেশ কোমল। শেষবারের মতো সিগারেটের ধোঁয়া নাকমুখ দিয়ে ছেড়ে তা এশট্রেতে ফেললো মুবিন। তারপর ফোনের কন্টাক্টস লিস্টে গিয়ে ওয়াইফের নামে স্পর্শ করতেই কল চলে গেলো পুষ্পর নাম্বারে। পুষ্পকে তার বলতে হবে সব.. পরিষ্কার করে বলতে হবে বিকেলের ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে। দুই মিনিটের ব্যবধানে মোহে পড়ে সে যে কাজটি করে বসেছে তা মোটেও কাম্য ছিল না তার।
“অপেক্ষা.. সে তো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন!”
ফোন ধরেই অপরপাশ থেকে পুষ্পর বলা চরণটি শুনে ভ্রু কোঁচকালো মুবিন। এর আগেও কি কোথাও চরণটি শুনেছিল সে? মনে করায় ব্যর্থ হওয়ায় মুবিন বললো,
“আসলে বিকেলের ব্যাপারটি নিয়ে আমি বেশ লজ্জিত।”
“মাঝেমাঝে লজ্জিত হবার মতো এক-দুটি কাজ দ্বারা যদি মনে শান্তি আসে তবে আমাদের বারবার লজ্জিত হওয়া উচিৎ।”
“সেরকম কিছু নয়..”
“তবে? আংটিবদলের পর হঠাৎ অন্যকারো আত্মা আপনার ভেতর ঢুকে পড়েছিল? আর সেই কাজগুলো করতে বাধ্য করেছিল আপনাকে?”
“না.. তবে বলতে পারেন আংটিবদলের পর থেকে আপনাকে আপন লাগতে শুরু করেছিল। বেশ আপন…”
“এখন লাগছে না?”
“লাগছে.. আবার লাগছেও না। মিশ্র অনুভূতি!”
“আপনি জানেন আপনি অনেক বোকা? আর বোকা মানুষদেরই এই পৃথিবীতে এক আকাশ কষ্ট নিয়ে ঘুরতে হয়? বোকা থাকবেন না প্লিজ।”
ম্লান হাসলো মুবিন।
“রাতের খাবার হয়েছে?”
“হয়েছে। আপনাদের সবার হলো?”
“হ্যাঁ..”
নীরব হয়ে পড়লো মুবিন। আকাশপাতাল ভেবেও তার মাথায় এলো না কথোপকথন বাড়িয়ে নেয়ার মতো কোনো প্রশ্ন।
পুষ্প বললো,
“আপনার নাম্বার আমার ফোনে আমি কী লিখে সেইভ করেছি বলতে পারবেন?”
“হাসবেন্ড টাইপ কিছু? মানে এর বাংলা বা এটাই?”
“উহু..”
“তবে?”
“পারলেন না তো?”
“না.. পারছি না।”
“চলে যদি যাবারই ছিল, তবে দুঃখ বাড়াতে এলেন কেন?”
হতভম্ব হয়ে পড়লো মুবিন। কান দিয়ে গরম বাতাসের মতো কিছু একটা বেড়িয়ে যেতেই ফোনের ওপাশ থেকে ভারী গলায় পুষ্প বললো,
“আমার সিক্সসেন্স বলছে শেষমেশ আমাদের বিয়েটা হবে না.. আপনি আমায় বিয়ে করবেন না।”
মুবিনের সাথে কথা বলার জন্য বেলকনিতে এলেও তাকে ফোনে কথা বলতে দেখে দরজায় দাঁড়িয়ে পড়লো উল্লাসী। একদন্ড সময় নিয়ে কান খাঁড়া করতেই শুনতে পেল মুবিনের গলার স্বর। বিকেলের ঘটা ঘটনা নিয়ে বেশ লজ্জিত সে.. তবে কি পুষ্প নামের মেয়েটির সাথে কথা বলছে মুবিন? বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিজের ঘরে ফিরে এল উল্লাসী। মৈত্রীকে বিছানার মাঝবরাবর এনে দেয়ালের দিকটায় শরীর মেলে দিতেই ঘরের আলো নিভিয়ে দিল মেসবাহ। তারপর শব্দহীন পায়ে বেরিয়ে গেল ঘর ছেড়ে। লোকটির সঙ্গে ঘন্টা দুয়েক হলো কথা হয়নি তার। আর না সেও আগবাড়িয়ে বলতে এসেছে কিছু৷ তবে কি জাভেদ ভাইয়ের কথাই ঠিক? সে কেবলই কি মেসবাহর প্রয়োজন? ভালোবাসা নয়? হঠাৎ বুকের ভেতরটায় যন্ত্রণা শুরু হতেই চোখজোড়া ছলছলে হয়ে উঠলো উল্লাসীর। মেয়ের কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো সে।
‘বিশ্বাস একটি সম্পর্কের খুটি.. হয়তো বলতে এটিকে এক সেকেন্ড লাগে, তবে করতে শতশত বছর লেগে যায়। একটি সম্পর্কে শুধু বছরের পর বছর একে অপরের সাথে পুতুল হয়ে জীবন কাটিয়ে নয়, একে অপরকে গুরুত্ব দেয়াটা জরুরী। তুমি স্বাধীন চেতনার একটি মেয়ে হয়েও ভুল মানুষের সাথে কেনো দিনের পর দিন কেনো বাস করবে? যে তোমার গুরুত্ব দিচ্ছে না তাকে নয় বরং যে তোমার গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম তাকে বাছাই করে নাও। তবে একটি কথা মাথায় রেখে.. সময় কিন্তু সবাইকে বারবার সুযোগ দেয় না।’
হাতে চিরকুটটি নিয়ে থম মেরে খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো উল্লাসী৷ গেইট দিয়ে ঢুকতে না ঢুকতেই জাভেদ ভাই এমন এক কাজ করে বসবে জানলে কখনোই আসতো না সে কোচিংয়ে৷ তবে বাসায় থেকেই বা করবে কী! সকাল সকাল তার শশুর এবং ভাসুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। মুবিন ভাইও গেছে নিজের কাজে। ওদিকে মেসবাহ এবং মৈত্রীও প্রতিদিনের মতোই বেরিয়েছিল। তবে দুপুরে মৈত্রীকে বাসায় রাখতে এলেও তার সঙ্গে কোনো কথা বলেনি মেসবাহ। এর আগেও যে তাদের মাঝে এমনটা হয়নি তেমনটা নয়। এর আগেও একই কাজ দুইবার করেছিল মেসবাহ। সর্বোচ্চ ১৭ ঘন্টা তার সঙ্গে রাগ দেখিয়ে কথা না বলার রেকর্ডও আছে তার। তবে কি এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে দেবে?
“মন খারাপ করে দিলাম?”
হঠাৎ পাশ থেকে জাভেদ ডেকে উঠতেই উল্লাসী মুখ তুলে তাকালো তার দিকে।
“আপনি এটা আমায় কেনো দিলেন?”
“যার জীবনে যেটার অভাব একজন শিক্ষক হিসেবে তো তাকে সেসব নিয়েই জ্ঞান দিব। তাই না?”
“আমি যদি চিরকুটটি কোচিং কর্তৃপক্ষকে দেখাই? মনে ভয় নেই আপনার?”
“দেখাতে পারো.. তার আগে এটি ধরো।”
উল্লাসীর হাতে ছোটো একটি বাক্স ধরিয়ে দিয়ে জাভেদ দ্রুত পায়ে কেটে পড়তেই নিজের মাথা চাপড়ালো উল্লাসী। খুলবেনা খুলবেনা করে আশেপাশে নজর বুলিয়ে বাক্সটি খুলতেই বেরিয়ে এল কাঁচের রেশমি চুড়ি সহ রঙবেরঙের টিপের পাতা। আচ্ছা.. মেসবাহ কি কখনো তার শখ বা ইচ্ছের দিকে এভাবে নজর দিয়েছে যেভাবে নজর দিয়ে বেড়াচ্ছে বাইরের এই মানুষটি?
(চলবে)