আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর !! Part- 31

তাই অনু শাড়ি ঠিকঠাক করে রুম থেকে বেড়িয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে আসে ঠিক সে সময় কেউ অনুকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে দেয়।

অনু আচমকা এমন ধাক্কা খেয়ে তাল সামলে উঠতে পারে না,
পাশে দেওয়ালে মাথায় বারি খায় কিন্তু ভাগ্য ভালো পেটে আঘাত লাগে না।
তার সাথে অনু শাড়ি তে পা বেধে সিঁড়ি তে পড়ে যেতে লাগে সে সময় রিমা এসে অনু বলে,” চিৎকার দিয়ে ধরে ফেলে।”

(কথায় আছে না রাখে আল্লাহ তো মারে কে)

রিমা অনুকে ধরে কান্না করতে থাকে।
রিমার চিৎকার শুনে সবাই সিঁড়িতে চলে আসে।

অনুর কপালে রক্ত দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়।
না জানি কোন অঘটন ঘটেছে কি না।
তারপর অনু ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

আরিয়ান কোনো কথা না বলে অনুকে দ্রুত কোলে করে নিয়ে গাড়িতে বসে।
অনুর এমন অবস্থা দেখে আরিয়ানের হাত পা কাঁপতে শুরু করে।

আয়াত বুঝতে পারে তার ভাই অনুকে নিয়ে খুব টেনশনে আছে।না জানি কোনো খারাপ খবর শুনতে হয়।

আয়াত এগিয়ে গিয়ে আরিয়ানের গাড়ী ড্রাইভ করে। আরিয়ান অনুকে নিয়ে পেছনের শিটে বসে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে থাকে।এই বুঝি অনুর কিছু হয়ে যাবে সে ভয়ে।

এদিকে বাড়ির সবাই সিঁড়িতে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।আজ কি হচ্ছে এসব অনুর সাথে বুঝতে পারছে না।

এমন সময় মৌ উপর থেকে নেমে এসে বলে,”সবাই এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?”

রিমা তখন বলে,”অনু সিঁড়ি দিয়ে পড়ে যাচ্ছিল।আমি এসে ধরে ফেলি। ”

মৌ বলে,”তা ভাবীর পেটে লাগে নাই তো! তাহলে বাচ্চা টা বাঁচবে না কিন্তু। ”

অনুর শাশুড়ি মা বলে,”মৌ এসব কোন ধরণের কথা।বাড়ির মেয়ে হয়ে বাড়ির বউ সম্পর্কে এমন কথা তোমার ভাবা উচিৎ না।”

আবির বলে,”আমাদের এখন এসব কথা বাদ দিয়ে হাসপাতালে যাওয়া উচিৎ।”

রিমা :হুম চলো,না জানি ভাইয়া অনুকে নিয়ে একা কি করছে।

তারপর সবাই হাসপাতালের উদ্দেশ্যো রওনা দেয়।


এদিকে আয়াত তার চেনা হাসপাতালে অনুকে নিয়ে আসে।
সেই হাসপাতালের বাহিরে গাড়ি পার্ক করতে অারিয়ান অনুকে কোলে করে নিয়ে আসে।

আয়াত ডাক্তার হবার জন্য তার পরিচিত মহিলা বিশেজ্ঞগ্য ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিয়েছিল গাড়ীতে আসার সময়।

আরিয়ান অনুকে আনার সাথে সাথে ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে সেখানে বেডের উপর শুয়ায় দেয়।

ডাক্তার প্রথমে মাথায় ব্যান্ডেজ করে দেয়।তারপর বেবি ঠিক আছে না কি তা দেখতে আল্ট্রা করে।

আল্ট্রা সোনো গ্রাফিতে দেখে বাচ্চা আল্লাহর রহমতে ভালো আছে।আর একটা বাচ্চা না দুইটা বেবি হবে অনুর।

ডাক্তার অনুকে দেখে আয়াত কে বলে,”আপনাদের অভিনন্দন,কারণ আপনাদের এক সাথে দুইটা বেবি হবে।
তাই ডাবোল মিষ্টি পাওনা হলো আমার। ”

আরিয়ান আয়াত কে জড়িয়ে ধরে খুশিতে বলে,”আয়াত রে আমার এক সাথে দুইটা বেবি হবে ভাবা যায় বলতো। ”

আয়াত বলে,”এটা পুরা স্বপ্নের মতো লাগছে, ভাবা যায় একসাথে দুইটা পিচ্চি চাচ্চু বলে ডাকবে।”

আরিয়ান ডাক্তার কে বলে,”অনুর এখনো জ্ঞান ফিরছে না কেনো ডাক্তার? ”

ডাক্তার :আসলে অনুর শরীর খুব দুর্বল, আর মাথায় আঘাত পেয়েছে তার জন্য জ্ঞান ফিরতে দেরি হবে।সাথে একটা ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে তো তাই।

আরিয়ান বলে,”আমরা কি অনুকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি? ”

ডাক্তার বলে,”জ্বি অবশ্যই পারেন।তেমন কোনো সমস্যা নেই।শুধু (গল্পের আসল লেখিকা Angel Frozen Nishi)এর পর থেকে তার খাওয়া পরার দিকে বেশি খেয়াল রাখবেন তাহলে হবে।
আর কোনো সমস্যা হলে আয়াত আমার সাথে যোগাযোগ করবে। ”

আরিয়ান কেবিনের বাহিরে এসে দেখে বাড়ির সবাই সেখানে উপস্থিত।

আরিয়ান সবার উদ্দেশ্য করে বলে,”আমি এখান থেকে সোজা অনুকে আমার সাথে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবো।”

আবিরের বাড়িরর কেউ কোনো কথা বলে না।

আরিয়ান অনুকে নিয়ে সোজা গাড়িতে গিয়ে বসে।
এদিকে ডাক্তারের সাথে কথা বলে বাহিরে এসে সবার মলিন মুখ দেখে বলে,”আরে তোমাদের এতো টেনশন করার কিছু নাই।
কারণ ভাবী ভালো আছে।
আর সব থেকে খুশির খবার হচ্ছে।আমাদের বাড়িতে একটা না দুইটা বেবি হবে।”

আবির বলে,”মানে কি? ”

আয়াত :মানে হচ্ছে ভাবীর যমজ বাচ্চা হবে।আমরা ডাবোল খুশি ইনজয় করবো।

আয়াতের মুখে এমন কথা শুনে তো সবাই সেই খুশি।তাদের বাড়িতে এক সাথে দুইটা বাচ্চা আসবে এমন কথা ভাবতেই খুশি দ্বিগুণ হয়ে যায়।

আবির আয়াত কে জড়িয়ে ধরে বলে,”ভাবা যায় এতোদিন বেবির জন্য খুশি ছিলাম কিন্তু আজ দুইটা বেবির জন্য বেশি খুশি। ”

আবির রিমাকে বলে,”দেখেছ রিমা আমাদের বিয়ের পর দুইটা বেবি মামা মামি বলে বাড়ি মাথায় করে রাখবে।”

সবাই দুইটা বেবির কথা শুনে এতো খুশি যে আসে পাশে মানুষের কথা মনেই নেয় তাদের।

তারপর সবাই সবার বাড়িতে চলে যায়।


এদিকে আরিয়ান অনুকে বিছানাতে শুয়ে দিয়ে চুপচাপ সোফাসেটে বসে থাকে।

আয়াত এসে আরিয়ানের পাশে বসে বলে,”কি এতো চিন্তা করছিস ভাইয়া? ”

আরিয়ান :রাজ আজ যা করেছে তারপর কি করা উচিৎ জানি না।

আয়াত :আরে ভাই শয়তান কে ভাবী যে শিক্ষা দিয়েছে তারপর শিউর ভাল হয়ে যাবে।

আরিয়ান :গিরগিটি কি কখনো তার রং বদলানো ছাড়বে বল?

আয়াত :তুই কি রাজ কে নিয়ে ভয় পাচ্ছিস ভাইয়া?

আরিয়ান :হুম,,ভয় তো হচ্ছে,যদি ও অনু আর বেবিদের কিছু করতে চায় তখন কি হবে?

আয়াত বলে,”বেবিদের যেমন স্ট্রং মা,আর এমন চাচা আর বাবা থাকতে চিন্তা কিসের বলতো।”

আরিয়ান আয়াত কে জড়িয়ে ধরে বলে,”শুধু তোর ভরসা তে আমি নিজেকে সাহস যোগাতে পারি।”

আয়াত :ভাই যদি ভাইয়ের সাহস না হতে পারি তাহলে জীবনে কোন কাজে আসবো বলতো।

আরিয়ান :আচ্ছা তুই রুমে যা অনেক রাত হয়ে গেছে। নিজের রুমে গিয়ে রেস্ট কর।

আয়াত বলে,”তুই কি করবি? ”

আরিয়ান :আজ রাতে আর ঘুম আসবে না।এভাবে বসে থাকবো আর অনুকে পাহারা দিবো।

আয়াত বলে,”আমিও তোর সাথে আজ এখানে বসে থাকবো। ”

আরিয়ান :আহ আয়াত বাচ্চাদের মতো করে না।যা রুমে গিয়ে ঘুম দে। এভাবে রাত জাগার কোনো মানে হয় না।

আয়াত :তুই যদি বেবিদের বাবা,,আমি বেবিদের চাচা হই কথাটা ভুলে যাবি না।

আরিয়ান :একদম দেখছি অনুর মতো কথা বলা শেখে গেছিস।

আয়াত বলে,”দেখতে হবে না, ভাবী টা কার।”

আরিয়ান বলে,”হুম অনুর সাথে যেমন পারি না,ঠিক তেমন তোর সাথে কথা বলে পারবো না।”

আয়াত কিছু না বলে আরিয়ান কে জড়িয়ে ধরে।

দুই ভাই সোফাসেটের উপর সারারাত গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে তা কেউ জানে না।

সকালে অনু ঘুম ভেঙ্গে দেখে,সোফাসেটের উপর আরিয়ান আয়াত নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে শুয়ে আছে।

অনুর ওদের এভাবে দেখতে বেশ ভালো লাগছিল তাই বালিশের পাশে থেকে ফোনটা নিয়ে তাড়াতাড়ি কয়েকটা ছবি মোবাইল ফোনে তুলে রাখে।

তারপর অনু ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানে বসে পড়ে।কারণ ওর মাথা ব্যাথা করছে আর ঘুরছিল।
হঠাৎ আরিয়ানের ঘুম ভেঙ্গে দেখে অনু মাথায় হাত দিয়ে ধরে বসে আছে।

আরিয়ান তারাতারি অনুর কাছে গিয়ে বলে,” তুমি ঠিক আছো তো? ”

অনু বলে,”একটু মাথা ব্যাথা করছে আর ঘুরছিল তাই বসে আছি।”

আয়াত উঠে এসে বলে,”ভাবী তেমন কিছু না, মাথা কেটে গেছে সেই জন্য এমন লাগছে তোমার।”

অনু :হুম তার জন্য হবে হয়তো।

আরিয়ান বলে,”আচ্ছা কাল তুমি সিঁড়ি থেকে কি করে পড়ে যাচ্ছিলে, যদি তোমাকে রিমা না ধরে নিতো তাহলে কি দূর্ঘটনা ঘটতে পারতো তুমি জানো? ”

অনু বলে,”আমি কি ইচ্ছে করে এমন করেছি না কি? কেউ আমাকে ধাক্কা দিয়েছিল। ”

আয়াত বলে,”সবাই তো কাল নিচে ছিলো, তাহলে ধাক্কা কে দিয়েছে আপনাকে? ”

(কাল বা পরশুদিন গল্প দিতে পারবো না তার জন্য সরি।শনিবার ইনশাআল্লাহ গল্পটা দিতে চেষ্টা করবো)



চলবে….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *