অন্ধপ্রেম

অন্ধপ্রেম !! Part- 11

তোমাকে বিয়ে করেছি বলে বউয়ের মর্যাদা দেয়নি যে তুমি অধিকার খাটাবে আমার উপর ।
নিজের সীমায় থাকো …
রাজ চলে গেলো নিজের মতো হন হন করে .
শীতল কিছুটা মন খারাপ করলো কথাগুলো শুনে ..
রাজ তাকে এক সময় ভালোবাসতো বাট এখন বাসেনা .
শুধু ঘৃনা করে শীতলকে ।
শীতল তো কোনো দোষ করেনি তবে তাকে কেনো কষ্ট দিচ্ছে রাজ ।

পুরো বাড়ি খালি ..
সবাই ময়মনসিংহে গিয়েছে বেড়াতে ..
কবে আসবে কে জানে …
টিভিতে একটা চ্যানেলে খুব সুন্দর একটা সিনেমা হচ্ছে …
নায়ক ভিষন ভালোবাসে নায়িকাকে …
হিরোটা দেখতে অনেকটা রাজের মতো মনে হলো …
আর হিরোইনকে শীতল সে ভেবে ফেললো …
কলেজ চুরি করে হিরোর সাথে দেখা করা ..
হাত ধরে খালি রাস্তা দিয়ে হাটা ..
চটপটি ,ফুসকা আর বাদাম খাওয়া …
হিরোটা অনেক রোমান্টিক আর দেখতেও রাজের মতো ডেসিং স্মার্ট ..

সিনেমার শেষে হিরো আর হিরোইন এর বিয়ে হয় …
তারা সুখের সংসারে ভাসতে থাকে …
শীতল সিনেমাতে রাজ আর নিজেকে কল্পনা করছিলো ..
যদি রাজও হিরোর মতো তাকে ভালোবাসতো তাহলে তার জিবনটাও হিরোইনের মতো সুখের হতো …
.
.
শীতল কখনো কাউকে ভালোবাসে নি ..
সে তার স্বামির জন্য সব ভালোবাসা রেখে দিয়েছিলো …
প্রতিটা মেয়েই মনে মনে একটা সুখের সংসার কল্পনা করে …
যার স্বামি অনেক ভালোবাসবে তাকে .
শীতলও দেখেছিলো এমন সপ্ন বাট সে সব শুধুই সপ্ন .
রাজ তাকে কখনোই স্ত্রির মর্যাদা দেবেনা ..
তাকে শুধু ব্যাবহার করবে আর সারাজিবন তিলে তিলে কষ্ট দেবে তাকে …
এদিকে শীতলের মা বলেছেন রাজকে নিয়ে সারাজিবন সংসার করতে ..
শীতল কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা ..
মায়ের দেওয়া কথা রাখবে কিভাবে …
রাজ তো সব সময় শীতলকে দেখলে রোজার কথা মনে করে …
আর শীতল কে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে প্রতিশোধ নিয়ে মনের জ্বালা মেটায় …রাজ ওকে কখনো মেনে নেবে না ..
যা করার শীতলকেই করতে হবে …
রাজের মতো লোককে যেভাবেই হোক আগের রুপে আনতে হবে ….
.
.
.
সবকিছুই সম্ভব হবে শীতলের ভালোবাসা দিয়ে রাজের যত রাগ ,অভিমান ,দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারলে ..
.
.
.
বিকালে রাজ বাড়িতে এসে দুপুরের খাবার খাচ্ছে ..
রেস্তোরার নয় শীতলের হাতের খাবার …
রাজ প্রথমে অবাক হয়েছিলো কিছুটা …
শীতল ডাইরি থেকে রাজের পছন্দের খাবারের কথা জেনে রান্না করেছে ..
শীতলের হাতের রান্না বেশ ভালো ..
সবাই তার রান্না খেয়ে সারাজিবন মনে রাখবে এমন রান্না করে ও .
.
.
শীতল জানে মানুষকে ইমপ্রেস করতে হলে রান্না হলো সবচেয়ে বড় হাতিয়ার ..
.
রাজ চুপচাপ খাবার গুলো খেলো ..
শীতল খেয়েছে কিনা তা একবারও জিজ্ঞাস করেনি ..
রাজ যখন খাবার খাচ্ছিলো তখন রাজকে একদম ইনোসেন্ট এর মতো লাগছিলো ..
শীতলের অনেক মায়া হচ্ছে রাজের জন্য ..
যে বোনকে সে এতো ভালোবাসতে সে বোন অকালে চলে গেলো ..
শীতলের বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে রাজকে একটু শান্তনা দিতে বাট তার সাহস নেই শান্তনা দেওয়ার …
.
.
.
রাজ খেয়ে একবার শীতলের দিকে তাকালো .শীতল ভাবলো তার প্রসংশা করবে বাট কিছুই করলোনা ..
চুপচাপ উঠে রুমে চলে গেলো …
শীতল কিছুটা কষ্ট পেলো ..
সারা দুপুর এতো কষ্ট করে রান্না করলো আর রাজ একটা ধন্যবাদও দিলোনা ..
.
.
.
শীতল রুমে গিয়ে দেখলো রাজ উপর হয়ে শুয়ে আছে ..
_আমার রান্না কেমন হয়েছে ??
রাজ শীতলের দিকে ভ্র কুচকে তাকালো ..
_রান্না কি ভালো লেগেছে আপনার ??
_ভালো লেগেছে ,,,
শীতল খুশি হয়ে বললো ,,
শুধু ভালো লেগেছে ,,,
_বলেছি ভালো হয়েছে তার মানে ভালোই হয়েছে ..
_তাহলে আমার গিফ্ট ..
_কিসের গিফ্ট ..??
_বাররে,,, আমি নতুন বউ হয়ে প্রথম রান্না করলাম ..
নতুন বউ রান্না করলে তাকে গিফ্ট দিতে হয় ..
শীতল কথাগুলো নিচে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে বললো,,,
.
.
.
রাজ বিরক্ত হয়ে কত গুলো টাকা ছূরে মারলো শীতলের গায়ে ,,,
_রেস্তোরায় বাবুর্চির রান্না ভালো হলে তাকে টিপস দেওয়া হয় ,,,
যেটা আমি সব সময় দিয়ে থাকি …
.
.
.
শীতল টাকা গুলো তুলে নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো ..
বুকটা তার ফেটে যাচ্ছে ..
তাকে বাবুর্চির সাথে তুলনা করলো রাজ ..
একটু ধন্যবাদ দিলে কি এমন হতো রাজের ..
নিজের বোনের প্রতিশোধ নিচ্ছে রাজ ..
ওর জায়গায় ও তো ঠিক কাজ করছে ..
.
.
.
শীতল রাজের পাশে ঘুমিয়ে পড়লো ….
.
মাঝরাতে শীতলকে ঢেকে তুলে বললো,,,
পা ব্যাথা করছে একটু টিপে দিতে ..
শীতলের সেইরকম রাগ হলো .
মাঝরাতে কেউ এরকম করে ..
শীতল বাধ্য হয়ে রাজের পা টিপছে ..
_হাতে কি জোর নেই আরো জোরে টিপতে থাকো .
.
শীতল পা টিপতে টিপতে রাজের পায়ের কাছেই ঘুমিয়ে পড়লো .
.
.
.
সকালে উঠেই রাজ শীতলের কপালে কিস করলো ,,
তখনই মাম্মা মাম্মা বলে শীতলকে জড়িয়ে ধরলো দুটো মেয়ে ..
রাজকে পাপা বলে তার কোলেও একটা মেয়ে বসে পড়লো ,,,,
সম্ভবত মেয়ে দুটো রাজ আর শীতলের মেয়ে ..

তাদের দেখে মনে হচ্ছে সবচেয়ে সুখি পরিবার ..
শীতল রান্না ঘরে রান্না করছে আর রাজ পেছন থেকে তার কোমর জড়িয়ে ধরে চুলের আর গায়ের সুভাস নিচ্ছে ,,
মাঝে মাঝে শীতলের গালে নিজের গাল ঘষছে আর কানে কানে বলছে ,,,
I love you bow shitol ..❤❤❤❤❤❤❤
শীতল মন ভরে রাজের ভালোবাসা অনুভব করছে আর রান্না করছে ….
.
.
.
শীতলের বাবা মা ভাইয়া ড্রয়িং রুমে বসে তাদের মেয়েদের সাথে গল্প করছে .
সুখ যেনো উপছে পড়ছে শীতলের সংসারে ।
.
.
.
চলবে,,, , ,