The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ২০

ছোয়া পরে যাবার আগেই রুদ্র ধরে ফেলে ছোয়াকে,
– কি হয়েছে তোমার ঠিক আছো তুমি?
– হ্যা ঠিক আছি,জানিনা কয়েকদিন ধরে কি হয়েছে শরীরটা ভালো লাগছে না।
– আমাকে আগে বলোনি কেনো?
– আপনি এতো ব্যাস্ত থাকেন তাই আর বলা হয়নি।
– আম্মু আর রোদেলাকেও তো বলতে পারতে।
-আসলে এতোটুকু কারনে ওদের শুধু শুধু চিন্তায় ফেলতে চাইনি।
– এতোটুকু বিষয়?? তোমার আজ কয়েকদিন ধরে এ অবস্থা আর এটা এতোটুকু সময়?
– ঠিক আছিতো এখন।
রুদ্র আর কিছু বললো না, ছোয়াকে কোলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো।
– কি হলো আপনি মুখটা কালো করে রেখেছেন কেনো?
-তুমি বুঝবা না রেস্ট নাও।
বলেই ব্যালকনিতে চলে গেলো রুদে।
ছোয়ার কয়েকদিন ধরে এই অবস্থা অথচ সেই জানে না, কাজকে এতোটাই আকরে ধরেছিলো যে ভালোবাসার মানুষটার খেয়াল ও সে ঠিকমতো রাখতে পারেনি, এসব ভাবতে ভাবতেই আনমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে রুদ্র।
– ছোয়া আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে, ব্যালকনিতে গেলো,
পেছন থেকে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে,
– কি হলো আপনার?
– আমাকে মাফ করে দিও ছোয়া,
– কেনো?
– আমি তোমার ঠিকমতো খেয়াল রাখতে পারিনি, কাজের চাপে তোমার কেয়ার নিতে পারিনি। যদি নিতাম তবে তোমার এই অসুস্থতার কথা আগেই জানতে পারতাম।
– আপনি কিন্তু একটু বেশিই ভাবছেন,
– না আমি খুব কম ভাবছি,তুমি মুখ ফুটে না বললেও আমার তো বুঝে নেয়া উচিত ছিলো তাইনা।
কাল সকালে সব কিছু বাদ দিয়ে আগে তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে যাবো।
– আচ্ছা ঠিক আছে যাবো, এখন আর মন খারাপ করে থাকবেন না প্লিজ।
রুদ্র পেছন থেকে ছোয়াকে নিয়ে তার বুকে চেপে ধরলো,
আর ছোয়াকে আকরে ধরলো রুদ্রকে। হয়তো এমনি হয় ভালোবাসার মানুষটার একটু কষ্ট মেনে নেয়া কঠিন।
পরেরদিন সকালে,
নাস্তা করে রুদ্র আর ছোয়া ডাঃ এত কাছে যায়, ছোয়াকে চেকাপ করানোর পর কিছু টেস্ট দিয়েছে ডাঃ আর রুদ্র ছোয়া তারই অপেক্ষা করছে,
রুদ্র ছোয়ার হাত চেপে ধরে আছে, মনে হচ্ছে ছোয়া কোথাও চলে যাবে রুদ্র হাত ছেড়ে দিলেও হয়তো রুদ্র ছোয়াকে চিরতরে হারাবে।
– আপনি এতো চিন্তা কেনো করছেন? সব ঠিক হয়ে যাবে।
– রুদ্রের যেন সারা শরীর থোর,থোর করে কাঁপছে।
– রুদ্র আমার খুব খিদে পেয়েছে কিছু একটা আনুন বসে, বসে খাই।
ছোয়ার কথা বাস্তবে ফিরলো রুদ্র,যে মেয়েটার জন্য তার কাপুনি শুরু হয়েছে সে এই সময় খাওয়ার কথা বলবে ব্যাপারটা রুদ্রের ধারনার বাহিরে ছিলো।
রুদ্র বাহিরে যেয়ে নাগেট আর একটা কোক এনে দিলো ছোয়াকে।
ছোয়া বসে, বসে খাচ্ছে।
আর রুদ্রকে রিপোর্ট নিতে ডাকা হয়েছে তাই রুদ্র রিপোর্ট আনতে গিয়েছে,
কিছুক্ষন পর রুদ্র ফিরে এসে দাঁড়িয়ে আছে ছোয়ার দিকে তাকিতে, চোখের কোনে বিন্দু, বিন্দু অশ্রু।
ছোয়া রুদ্রকে দেখে বেশ ভয় পেয়েছে, তার মানে কি রিপোর্ট এ খারাপ কিছু এসেছ।
ছোয়া কাপা,কাপা গলায় রুদ্রকে জিজ্ঞেস করলো,
– কি হয়েছে রুদ্র।
রুদ্র আর কিছু না বলে ছোয়াকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই দিলো!
– কি হয়েছে বলুন আমাকে?
– রুদ্র কেদেই যাচ্ছে,
– আমার খুব চিন্তা হচ্ছে, বলুননা কিছু?
– ছোয়া, তুমি আমাকে অনেক বড় খুশি দিয়েছো। ( ছোয়ার গাল ধরে বললো রুদ্র)
– মানে???
– ছোয়া তুমি মা হতে চলেছো, আমাদের মাঝে এলোমেলো ভাবে ঘুমানোর জন্য আর আমাদের রাতের ঘুম নষ্ট করার জন্য একজন আসছে।
– আপনি সত্যি বলছেন( অনেক খুশি হয়ে)
– হ্যা পাগলি সত্যি বলছি।
– এখন চলো বাসায় যাবো, এই খবরটা সবাই শুনলে খুব খুশি হবে।
তারপর রুদ্র আর ছোয়া গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো।
রুদ্র ড্রাইভ করছে আর বার,বার ছোয়ার দিকে তাকাচ্ছে, এর মাঝেই জ্যাম এর জন্য দুজন আটজে গেছে।
ছোয়ার চোখ বাহিরে হাওয়াই মিঠাইর দিকে গেলো,
– এই দেখুন, দেখুন( এক্সছাইটেড হয়ে)
– কি হয়েছে?
– হাওয়াই মিঠাই, আমি প্লিজ নিয়ে আসুন।
– রুদ্র মুচকি হেসে গাড়ি থেকে নেমে হাওয়াই মিঠাই আনতে চলে গেলো, দুটো হাওয়াই মিঠাই এনে ছোয়ার হাতে দিতেই ছোয়া যেন খুশিতে টইটুম্বুর।
– ছোয়া মজায় বসে বসে খাচ্ছে আর রুদ্র তাকিয়ে আছে ছোয়ার দিকে,
ছোয়ার চোখ রুদ্রের দিকে পরতেই,
– খাবেন? ( একটা হাওয়াই মিঠাই বারিয়ে দিয়ে)
– নাহ,,,
– তাহলে তাকিয়ে আছেন কেন?
– তোমার খাওয়া দেখছি।
– আমার খাওয়া দেখার কি হলো,
– অনেক কিছু হলো আমার বউটা( ছোয়ার গাল টিপে)
– ছোয়া একটা ভেংচি কেটে আবার খাওয়া শুরু করলো।
বাসায় পৌছে খবরটা শুনে রুদ্রের মা আর রোদেলা তো মহা খুশি,
– মা আমি অনেক খুশি হয়েছি রে মা,
– আরে মা আমাকে একটু ভাবির সাথে কথা বলতে দাও, ভাবি নাম কিন্তু আমি রাখবো।
– ইস আমার বাবুর নাম আমি রাখবো,( রুদ্র)
– না ভাইয়া এটা হবেনা, আচ্ছা ভাবি যাকে রাখতে বলবে সেই রাখবে। ভাবি বলোবা তুমি কার দেয়া নাম। রাখতে চাও?
দু- ভাই বোনের কথা শুনে ছোয়া লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।
– তোরা থামতো, মেয়েটে লজ্জা পাচ্ছে দেখছিস না?
থাক মা তুই লজ্জা পাসনা যা রুমে যা ফ্রেস হয়ে রেস্ট নে আমি রোদেলাকে দিয়ে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি। রুদ্র যা তোহ মেয়েটাকে রুমে নিয়ে যা,
তারপর রুদ্র আর ছোয়া রুমে চলে গেলো,
রুমে যেতেই,
রুদ্র ছোয়াকে জড়িয়ে ধরলো,,,,
– কি করছেন ছাড়ুন!
-কি করছি আবার, বউটা আমাকে এতো বড় একটা গিফট দিলো আমারো তো কিছু দেয়া উচিত তাইনা তাই তা দিচ্ছি।
– রুদ্র দরজা খোলা আমাকে ছাড়ুন কেও এসে পরবে।
– আসুক তাতে আমার কি,আমার বউকে আমি আদর করছি।
– আমি কিন্তু চেঁচাবো,
– চেঁচাও আমার কোনো সমস্যা নেই, রুদ্র ছোয়ার ঘাড়ে নাক ঘোষা শুরু করে দিয়েছে, ছোয়া বার বার বাধা দিচ্ছিলো, কিন্তু একটা সময় রুদ্রের গরম নিশ্বাস ঘাড়ে পরতেই ছোয়া যেন নিজেকে মিশিয়ে ফেলছে রুদ্রের সাথে বাধা দিতে ইচ্ছে করছেনা ছোয়াকে,
– আমি কিন্তু কিছু দেখিনা,
দরজার সামনে থেকে কারো এমন কথা শুনে ছোয়া রুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো,
– রোদেলা এসো, আসলে,
– থাক ভাবি, আমি ভুল সময় এসে গিয়েছি, এই নাও মা খাবার পাঠিয়েছে তোমাকে সব টুকু খেতে বলেছে। ভাইয়া তুমিও খেয়ে নিও।
– আমার মুডের ১২ বাজিয়ে এখন খেতে বলছে( রুদ্র আস্তে করে বললো)
– ভাইয়া কিছু বললা?
– না রে আপু, বললাম তুই কতো ভালো আমার কতো খেয়াল রাখিস।
– হুম হয়েছে, এখন খেয়ে নাও।
রোদেলা চলে গেলো, আর ছোয়া অগ্নি চোখে রুদ্রের দিকে একবার তাকিয়েই বাথরুমে ফ্রেস হতে চলে গেলো। ফ্রেস হয়ে এসে দেখে রুদ্র শুয়ে আছে বিছানায়,
এইযে ফ্রেস হয়ে আসুন।
– এভাবে বলছো কেন? একটু রোমান্টিক ভাবে বলো??
– রোমান্টিক?? আপনাকে তখন বলেছিলাম দরজা খোলা শোনেনি আমার কথা রোদেলা কি ভাবলো ওর সামনে কতো লজ্জা পেলাম আমি( রেগে)
– আমার বউ আমি যা ইচ্ছা করে, বলেই ছোয়ার হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে রুদ্র ও বাথরুমে ঢুকে গেলো।
-আপুনি
দোহা দৌড়ে এসে ছোয়াকে জড়িয়ে ধরলো,
– আপুনি তুমি কোথায় গিয়েছিলে? আমাকে নাওনি কেন( অভিমান করে)
– আসলে লাল গোলাপ আমরা তোমার জন্য পুতুল আনতে গিয়েছিলাম, রুদ্র মুখ মুছতে, মুছতে বললো।
– তাই কই দাও??
– আসলে লালগোলাপ যে পুতুলটা আনবো সেটা তো কথা বলতে পারবে, হাটতে পারবে তাই সেটা বানাতে একটু সময় লাগবে।
– এখন কি হবে( ঠোট বাকিয়ে দোহা বললো)
– কি আর হবে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।
– তারপর এনে দিবে তো ভাইয়া?
– হুম দিবো লালগোলাপ। বলেই রুদ্র দোহার গালে চুমু দিলো।
আমি রোদেলা আপুকে বলে আসি নতুন পুতুলের কথা, বলেই দোহা চলে গেলো,
-আপনি এতো খুশি?
– কি যে বলো, তুমি আমার জীবন হলে আমার সন্তান হবে আমার বেচে থাকার কারন। খুশি হবোনা আবার!!
– হুম চলুন এখন খেয়ে নিবেন,
– চলো,,,,
তারপর রুদ্র আর ছোয়া খেতে বসলো, রুদ্র খাইয়ে দিচ্ছে ছোয়া,
– আপনি খান আমি একা খেতে পারবো তো!
– নাহ এখন থেকে তোমার সব খেয়াল আমি রাখবো। তুমি চাইলেও রাখবো আর না চাইলেও। এখন তুমি আর একা নও আমার ছোট প্রানটাও আছে।
– হুম,,
-রুদ্র ছোয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে রুদ্রের কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো।
চলবে,,,
( রমজান মাস,তাই ছোট করে লিখছি। গল্পটা কেমন লাগছে জানাবেন)

One thought on “The villain lover ।। পার্ট : ২০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *