Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 06

ইউসুফ ভাইয়া ঠুস করে ঘরে ঢুকলেন।।ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলেন।।তার এই ঠাস করে দরজা লাগানোতে আমার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো।।
ইউসুফ ভাইয়া ধীরে ধীরে আমার কাছে আসতে লাগলেন।।
তার দিক আমি তাকিয়ে বুঝতে ট্রাই করলাম তিনি কি করতে চাইছেন।।বাট আমার ছোট মস্তিষ্কে কিছুই ডুকছে না।।তিনি কি রেগে আছেন?? আমাকে কি বকা দিতে এসে ছেন?? আমাকি কষে চারপাশটা থাপ্পড় দিতে এসেছি??? আই ডোন্ট নো??
তার চেহারা দেখে আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা!! খুব স্বাভাবিক না আবার অস্বাভাবিক না?? তাহলে কি চলছে?? আমি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম!! তিনি আমার মুখোমুখি দাঁড়ালেন আর বললেন,,
—–কিরে টাকলী আমি টাকলু হয়েছি বলে এতে খুশি তুই! আগে জানলে তো আরো আগেই টাক করে ফেলতাম।।
ইউসুফ ভাইয়ার কথা আমি অবাকের শেষ চুড়ায়!!
কি বলে বেটা আমার খুশির জন্য সে টাকলা হতেও রাজি…??
তাহলে আমার চুল গুলো ফেলে টাকলী কেন বানালো…!!! বলি এতই যদি আমার খুশির চিন্তা তার হতো, তাহলে কি আর আমার চুল ফেলে দিত??
চুলের কথা মনে হতেই আমার অবাক করা ফেইস মুহূর্তের বিষন্নতায় ছেয়ে গেল।।
আমিও বলে ফেললাম,,
—-চাপা মারছেন কেন?? চাপা মারার জায়গা এটা না বুঝলেন?? ভাগেন এখন..!!
এবার যেন অবাকের পালা ইউসুফের সে বলল,,
—-তোর সাথে কি আমার মজার সম্পর্ক যে আমি মজা করবো?? আর ইউ ক্রেজি??
আমি বিরক্তিকর ভঙ্গিতে বললাম,,
—-তো কিসের সম্পর্ক??
তিনি কিছু একটা বলতে গিয়ে চুপ মেরে গেলেন।।তারপর বললেন,,
—-সময় হলে বলব আমার বাবুইপাখি।।
তারপর তিনি এমন এক কাজ করলেন যাতে আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।। আমি তার থেকে দুকদম দূরে ছিলাম।। তিনি আচানক ভাবে তার ডান হাত দিয়ে কোমরে রেখে টান দিয়ে তার কাছে নিয়ে আসলেন এবং বাম হাত দিয়ে আমার গালে ধরে কপালে শব্দ করে শব্দ করে চুমু খেলেন।।
তারপর ছেড়ে দিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে চলে গেলাম।। আমি তার এহেন কাজে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম।। মনে হচ্ছে কারেন্টের শক খাইছি।। তার সাথে মনের মধ্যে আলাদা নতুন লজ্জা মাখা অনুভূতিটা জাগরন দিচ্ছিল।। সেই অনুভূতির নামটা আমি কি দিব বুঝতে পারতেছি না।।সেই অনুভুতির কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমের বাড়ি চলে গেলাম।।
পরেরদিন বিকেলে মাঠে খেলতে গেলাম।।আমি, ইনা,মিনা,টিনা, আর ছেলেদের মাঝেও অনেকে আছে যারা আমাদের সাথে খেলতে আসে তাদের নাম, আশিক, রিজন, শুভ, নিলয়,আনন্দ।।শুভ ভাইয়া ৮ম শ্রেণীতে পড়েন।।আর সবাই আমার ক্লাসমেট।।
কিছুক্ষণ পর মুনতানিশা আপিও যোগ দিলেন তিনি নিউ টেনে পরেন।।তাই কোচিংয়ে গিয়েছিলেন কোচিং করতে।। আমার আজ টিউশন ক্লাস বন্ধ তাই খেলার সুযোগ পাচ্ছি।।সপ্তাহে তিন দিন সুযোগ পাই আমরা খেলার।।
সবাই এসে হাজির যখন তখন কি খেলো তা নিয়ে কথা হচ্ছিল সবার।।লাস্ট ঠিক হলো আমরা কানামাছি খেলব।। তাই আমি বাটাবাটি শুরু করলাম।।আর আমার সবাই গোল হয়ে ধারিয়ে গেলাম।।
” অবু,, আকাশ থেকে নেমে এলো ছোট একটি প্লেন!
সে প্লেনে বসে ছিল লাল টুকটুকে মেম।।মেমকে আমি জিগেস করলাম,, হোয়াট ইজ ইওর নেম?? মেম আমাকে উত্তর দিল,,মাই নেম ইজ সুচিত্রা সেন….!! সুচিত্রা সেন, সুচিত্রা সেন, উত্তম কুমার কই…?? উত্তম কুমার খাইতে গেছে শ্বশুরবাড়ি দই।।
((ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল।।খেলার সময় বাটাবাটি আমাকে করতে বললে আমি এটা দিয়েই করতাম।।তাছাড়া আরো আছে😁😁😁 স্পেশাল, স্পেশাল ক…বি…তা…😜😜))
সেই ঘুড়ে ফিরে চোর হলাম আমি।।
তাই আমি বললাম,,,
—–আমি খেলমু না আবার বাটাবাটি হবে…??
টিনা বলল,,
—–কুহু তুই সব সময় এমন করিস….!! যেহেতু তোর দিক লাষ্ট আঙ্গুল গেছে তুই চোর হবি।।
আমি কাঁদ কাঁদ ভাবে মুনতানিশা আপুর দিকে তাকালাম,,তখন মুনতানিশা আপু বলল,,
——আচ্ছা আরেক বার করি বাটাবাটি…!! এবার চোর হলে তোকে মানতেই হবে।।
আমি খুশিতে লাফাতে লাফাতে বললাম,,,
—-ওকে।।
আপু আবার বলল,,
—-এবার আমি বাটবো।।
সবাই সায় দিল।।
আপু বলতে লাগেন,,,
“”দশ,কুড়ি, নাড়িভুঁড়ি, চিংড়ি মাছের চচ্চড়ি,
কে নেবে কথা না বলে দাও না ভাই শুনি??
বলে আপি আশিকের চোখ ধরলেন,,
আশিক বলল,,
—-৮ আনা।।আর সে উঠে গেল।।
এভাবে সবাই উঠে গেল আমি আবার চোর হলাম।।
—-এবার আর কিন্তু শুনবো না।। বলে চোখ বেঁধে দিলেন শক্ত করে।। তার পরে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ছেড়ে দিলেন।।চারপাশ থেকে সবাই আমার কান, নাক হাত চুল টেনে যাচ্ছে।।আমি ধরতে পারছি না।।তার সাথে সাথে সবাই বলছে,,
“”কানামাছি ভোঁ ভোঁ যাকে পাবি তাকে ছোঁ “”
অনেকক্ষণ যাওয়ার পরও আমি কাউকে ধরতে পারলাম না। তখন ক্লান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষন।। তখন মনে হলে কেউ দাড়িয়ে আছে আমার সামনে।।আমি দেড়ি না করে তাকে জাপটে ধরি।।আর জোড়ে জোড়ে বলতে লাগি,,
——ধরে ফেলেছি ধরে ফেলেছি।।
কিন্তু ততখনে সবাই চুপ।।আর কারো কথা শুনতে পাচ্ছি না।।তাই ভাল কনে ঝাপটে ধরা ব্যাক্তিটির মুখে হাত দিলাম।।কিন্তু একি এত লম্বা এটা কে।। সাথে সাথে এক চোখে থেকে রুমালটা সরিয়ে দেখি,,
ইউসুফ ভাইয়া…!! আমার দিকে কেমন লাল লাল চোখ করে দাড়িয়ে আছেন।।আমার পাশেই মুনতানিশা আপি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে দাড়িয়ে আছেন।।
আমি শুকনো ডুক গিলে বললাম,,
—-ভাইয়া আপননি???
ইউসুফ ভাইয়া কথা শেষ করার আগেই আমাদের দু বোনের দু কানে টেনে বলতে লাগলেন,,
—–দিন দিন ছোট হচ্ছিস?? দামড়ি মাইয়াগুলা?? এখন বিয়ে দিয়ে দিলে তোদের কোলে বাচ্চা থাকবে আর এখন আসচ্ছিস এখানে খেলতে আর এসব কি পড়ে থাকিস??? বড় হয়েছিস না…!! দাড়া আজ তোদের পা কেঁটে হাত ধরিয়ে দিব বলে আরো জোরে টান দিল।।
তখন আপি বলল,,
—–ছোট ভাইয়া প্লিজ ছাড়োনা আর হবেনা।।
কিন্তু কে শুনে কার কথা তিনি রাস্তার সবার সামনে দিতে আমাদের দু বোনকে কানে ধরে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে আসলো।।
এদিকে তার এভাবে নিয়ে আসাতে রাস্তার মানুষ গুলো হাসচ্ছে।।লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে।।আপু তো কেঁদেই দিচ্ছে।।তিনি এভাবে করেই বাসায় নিয়ে আসে।।
নানুমা এসব দেখে বলে,,
—–কিরে দাদু ভাই…!! ওদের এভাবে কানে ধরছিস কেন ছাড়…!!
ইউসুফ বলল,,
—–তোমরা এদের কিছু বলো না দেখেই বাঁদর হচ্ছে দিন দিন..!! সাড়া এলাকা টই টই করে ঘুরে এটা কেমন কথা…!! তার উপর এসব এখনও কি পরে বাচ্চা নাকি এখনো?? তার উপর একটারো ওড়না নাই গায়ে।।এদের কি এখনও খেলার বয়স আছে নাকি?? আর তুই…!! আপুর কান জোড়ে টেনে,,
—-তুইতো বড় তুই তো বুঝিস ও না হয় ছোট কই মানা করবি?? না নিজেও তাদের সাথে ধেই ধেই করে নাচবে।।।নাচনীবুড়ি হয়েছে তারা।।
আপু বলল,,
—-ছাড় ভাইয়া আর খেলবো না।।তুমি আমার মান সম্মান পামচার করে দিছো।।
—– এহে আসচ্ছে মান সম্মান উলি।।
এদিকে আমি ভয়ে একদম চুপ মেরে গেছি।।না জানি আমারে কি করে ভাগ্যবশত ছোট বলে বেঁচে গেছি…!!
নানু মা বলল,,
—–কি যে বলিস..!! ওরা এখনো বাচ্চা ছাড় ামার নাতনীদের।। ছাড় বলছি।।
ভাই তখন বলল,,
—নেক্সট টাইম যেন মাঠে খেলতে যেতে না দেখি!!
আর আমার দিকে আঙ্গুল তুলে বলতে লাগে পড়ে দেখতেছি তোরে।।বলে রুমে চলে গেল।।
আর আমি কাঁপতে লাগলাম না জানি কি হাল আমার করেন…!!
দেখতে দেখতে আমার বার্ষিক পরীক্ষা এসে গেল।। এখন পড়ার চাপ ও বেশী।।তাই প্রাইভেট নিতে হলো।।ব দুইটা।। দুপুরে বের হয়ে গেলাম পড়তে…!! প্রাইভেট শেষ হয়ে গেল সন্ধ্যার আগে।।তখন আমি আর ইনা কথা বলতে বলতে আসছিলাম।।মধু বাবুর গলি আসার আগেই ইনার বাসা সে চলে গেল।।আমি যখন মধু বাবুর গলি ক্রস করছিলাম,, তখনি হুট করে আমার পথ আটকে ধরলো আহাদ ভাই আর তার বন্ধুরা।।
তাদের দেখে আমার গলা শুকিয়ে গেছে।।কারণ তারা মোটেও ভাল না দিন দুপুরে মানুষ মেরে ফেলে কেউ কিছু বলতে পারে না।।কয়েকদিন আগেও একটি মেয়েকে এনে রেপ করে আগুন জালিয়ে মেরে ফেলছে।।সে জন্য জেলও খাটসেন তিনি।।তার বাবা নেতার সাথে থাকে বলে পাওয়ার খাটায়।।
আমাকে অনেক আগে থেকেই জালায়,,কিন্তু দূর থেকে আমাকে দেখে বলত,, সুন্দরী,, ফুলটুসি,, মাঝে মাঝে আমাকে পিচ্চিদের দিয়ে চিঠি পাঠাতো,, চকলেট দিতো।।তার দিতে তাকালে বিশ্রী করে হাসতো আর ঠোঁট দিয়ে কিস দেয়ার ইশারা করতো।।তার এসব দেখে গা গুলিয়ে যেত ঘৃণায়।।আমি সব সময় তাদের ইগনোর করতাম।। আমি তাদের দেখে না দেখার ভাল করে চলে যেতে নেই।।তখনি আহাদ ভাই আমার হাত ধরে ফেলে।।আমি পিছনে না ফিরে হাত ছাড়ার ট্রাই করতে থাকি।।তখনি আহাদ আমাকে তার কাছে টেনে আনে।।আর বলতে লাগে,,
—–ভয় পাও কেন পিচ্চি তোমাকে আমি ভালবাসি।। আই লাভ ইু..!! বলে হাসতে থাকে।।
আর এদিকে আমি কান্না করে বলতে লাগি,,
—–প্লিজ আমায় ছেড়ে দেন।।
—–তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছা করতেসে না ফুলটুসি,, কত সুন্দর মাখনের মতো শরীর হচ্ছে তোর একদম নরম নরম।।খালি ধরতে ইচ্ছা করে বলে আপত্তিকর ভাবে টাচ করতে লাগে।। আমি ভয়ে কান্না করে যাচ্ছি সাথে চিৎকার করে যাচ্ছি।।কিন্তু এই সন্ধ্যায় কেউ নেই।।তখন মনে পড়ে বড় মামীর কথা তিনি একবার বলছিলেন,,
—-কেউ যদি তোমাদের গায় আপত্তির ভাবে টাচ করতে নেয় তখন সাথে সাথে তার নাকে দু আগুল ঢুকে টান দিবা,,নয় তো দু পায়ের মাঝ বরাবর লাথি মারবা,, আর না হয় চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিবা।।
আমি সাথে সাথে তাই করলাম।।যেহেতু আমার হাত তার হাতে আবদ্ধ তাই তার দুই পায়ের মাঝ বরাবর লাথি মারলাম।।সাথে সাথে তিনি ছিকে নিচে পড়ে চিৎকার করতে রাগলেন।।আর তার চেলা পেলারা কি হইছে ভাই বলে চিৎকার করতে লাগলো।।সেই সুযোগে আমি দৌড়ে পালা লাম তখনি আহাদ বলতে লাগে,,,
—–শালীরে ধর…?? ওর শরীরে কত বিগার ছুটামু আজ।।
তখস কিছু চেলা পেলা আমার পিছু আসতে লাগে।।কিন্তু আমি আর ডানে বামে না তাকিয়ে দৌড়ে বাসায় ডুকে গেলাম।।আর তখনি….!!
চলবে,,

Comments