My Mafia Boss Season 2

My Mafia Boss- Season- 2 !! Part- 43

কয়েকদিন থেকে রুমুর শরীরটা ভালো যাচ্ছেনা।কিপছু খেতে পারছেনা।খাবার সামনে আনলে গন্ধ বলে বমি করে শরীর ভাসিয়ে দিচ্ছে।আনাম তো মহা মুশকিলে পড়লো।কি হলো আচমকা এই মেয়ের?সেদিন বিকেলেই রুমুকে নিয়ে হাসপাতালে চলে এলো আনাম।রুমুকে স্বাভাবিক লাগছে কিন্তু আনামকে খুব বেশি বিচলিত লাগছে।মনে হচ্ছে আনাম নিজেই অসুস্থ।রুমুর সমস্যা গুলো যেন ওরই সমস্যা।হায়রে!!!! রুমু আনামের হাত ধরে রেখেছে।এমন করছো কেন আনাম?আ’ম এ্যাবসোলিউটলি ফাইন।বলে উঠলো রুমু।কি করবো বলো? ঠিক হতে পারছিনা রুমু।বুকটা ধড়াস ধড়াস করছে আমার।যেন বিস্ফোরিত হবে কিছুক্ষনের মাঝে।একনাগাড়ে বলতে থাকলো আনাম।আনামের কাঁধে মাথা রাখলো রুমু।রুমুর গালে হাত রাখলো আনাম।ওদের ডাক পড়ায় দুজনে উঠে গেলো।ডাক্তারের সামনে বসে আছে আনাম আর রুমু।রুমুর সব কথা মনযোগ দিয়ে শুনে উঠে দাঁড়ালেন ডাক্তার।রুমুকে বললেন খাটটায় শুয়ে পড়তে।রুমু শুয়ে পড়লো খাটে।রুমুর মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে আনাম।ডাক্তার চেকআপ করে ওনার চেয়ারে এসে বসলেন।রুমু আর আনাম ও ওনার সামনে বসলো।ডাক্তার আমার ওয়াইফ ঠিক আছে তো?উত্তেজিত কন্ঠে বলল আনাম।এমনিতেই ওনার প্রেসার লো তার ওপর এখন আরো কেয়ার করতে হবে ওনার।বুঝলেন মিঃখান।বলে উঠলেন ডাক্তার।অানামের ভয়ার্ত মুখ দেখে ওনি ও খানিকটা মজা করতে চাইলেন।ক ক কি হয়েছে আমার ওয়াইফের?কাঁপা গলায় প্রশ্ন করলো আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,ডোন্ট ওয়ারি।সি ইজ প্রেগন্যান্ট। তাই বললাম এখন থেকে ওনার বেশি করে খেয়াল রাখতে।বলেই হো হো করে হাসতে লাগলেন ডাক্তার।স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল আনাম।রুমু আনামের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।তো আজ আসি?উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল আনাম।অবশ্যই।আনামের সাথে হাগ মিলিয়ে বললেন ডাক্তার।রুমুকে নিয়ে বেরিয়ে এলো আনাম।মুক্ত বাতাসে বন্দী থাকা নিশ্বাস গুলো প্রান খুলে ছাড়লো আনাম।এক হাতে রুমুর কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে নিলো।রুমু কিছুনা বলে আনামের বাহুডোরে বন্দী হয়ে হাঁটছে।কারোর মুখে কোন কথা নেই তো কি হয়েছে পরিপূর্নতার হাসি লেগেই রয়েছে মিষ্টি মুখজোড়ায়।আনিলা বেগম আনাম আর রুমুকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন দাদী হবার খুশিতে।মিষ্টি কিনে সব আত্মীয়দের বাসায় দিলো আনাম।
এট লাস্ট তুমি ও ছক্কা মারলে আনাম?বলে উঠলো রোয়েন।আনাম লজ্জায় লাল হচ্ছিলো।
আনামের কাঁধে হাত রেখে রোয়েন বলতে লাগলো অনেক ভালো লাগছে খবরটা শুনে।কংগ্রাচুলেশনস। থ্যাংকস ভাইয়া।বলে উঠলো আনাম।
আরাবীর সাথে খেলছিলো রুহী।তখন ওর ফোন বেজে উঠলো।আরাবীকে কোলে বসিয়ে ফোন রিসিভ করলো রুহী।মুখ দিয়ে বিভিন্ন শব্দ করে রুহীর এটেনশন পাওয়ার ট্রাই করছে আরাবী।মা ফোনে কথা বলছে তাই মায়ের আঙ্গুল মুখে পুরে মাড়ি দিয়ে কামড়াতে লাগলো আরাবী।আহ আরাবী কি করছিস রে মা?কানে ফোন রেখেই বলে উঠলো রুহী।আরাবী রাগের সাউন্ড দিয়ে বুঝাতে চাইলো সে মায়ের এটেনশন চায়।রুহী মেয়ে কে বুকে শুইয়ে ওর গালে চুমু খেলো।আমার মা টা এটেনশন চায়?মমতা ভরা কন্ঠে বলল রুহী।আরাবী চুপচাপ মায়ের বুকের মাঝে শুয়ে রইলো।কিরে কি করছে আমার মেয়েটা?অপর পাশ থেকে রুমু বলে উঠলো।আরে বলিস না হাতটা খেয়ে ফেলছিলো। ওর দিকে তাকাইনি তাই।সন্তুষ্টির হাসি হেসে বলল রুহী।
রোয়েন ভাইকে কবে তোর পরিচয় দিবি?জিজ্ঞেস করলো রুমু।সে যদি সত্যিই ভালবাসে নিজে থেকেই আমায় খুঁজে নিবে।বলতেই চোখের কোনা ভরে উঠলো রুহীর।মেয়ের মাথায় চুমু খেলো রুহী।তুই কাঁদছিস রুহী?জিজ্ঞেস করে উঠলো রুমু।না গো ভাবি কাঁদছিনা।চোখ মুছে বলল রুহী।ওই বজ্জাতনি ভাবি কইস না।রাগী গলায় বলল রুমু।এহ এহ আমার ভাইকে বিয়ে করেছে আবার তাকে ভাবি বলবোনা।সাধের লাউ।কথা গুলো বলেই হাসিতে ফেঁটে পড়লো রুহী।আচ্ছা রুহী এখন এসব রাখ।দুটো গুড নিউজ আছে।বলল রুমু।রুহী নড়ে চড়ে বসলো।কি খবর?কৌতহুলী হয়ে প্রশ্ন করলো রুহী।রুবীনা আন্টি তোর মা তাই না?প্রশ্ন করলো রুহী।মায়ের নামে রুহীর বুক ধক করে উঠলো।জ জি।আস্তে করে বলল রুহী।রাহেলা বেগম কে চিনিস?রুমু বলে উঠলো।চিনবোনা কেন?আমার একমাত্র খালা ছিলো।বলতে।রুহীর গলা ভারি হয়ে এলো।রুহী কাঁদলে বলবোনা কিন্তু।অভিমানী কন্ঠে বলল রুমু।আচ্ছা বল চোখ মুছে বলল রুহী।রাহেলা খালার ছেলে কে জানিস?রুমু প্রশ্ন করলো।কে? রুহী প্রশ্ন করলো।রোয়েন ভাই।বলে উঠলো রুমু।হোয়াট???রুহীর চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,আরে হ্যা হ্যা।রুমু বলল।তারমানে জামাই ভাইয়া নাম টা appropriate হয়েছে।একগাল হেসে বলল রুহী।দুইজনেই হাসিতে ফেঁটে পড়লো।জামাই ভাইয়া ডাকটা সেই ছিলো রে রুহী।হাসতে হাসতে বলল রুমু।আচ্ছা নেক্সট গুড নিউজ টা কি?প্রশ্ন করলো রুহী।এবার রুমু চুপ হয়ে গেলো।মুচকি হাসছে ও।কিরে রুমু বলনা?প্লিজ বান্ধুবী না?বল। রুমুকে জোর করতে লাগলো রুহী।ওকে ওকে বলছি।বলে উঠলো রুমু।তুই ফুপি হচ্ছিস। বলেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলো রুমু।ওয়াও!!!!! চিৎকার করেই মুখে হাত চাপলো রুহী।কি বলবে বুঝতে পারছেনা রুহী।কি ভালো যে লাগছে বলার মতো নয়।কংগ্রাচুলেশনস রুমু।বলে উঠলো রুহী।চিৎকারে আরাবী কাঁদতে লাগলো।এটা কোন কথা রুহী?এভাবে চিৎকার দেয় কেউ?রুমু বলে উঠলো।আরাবীকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলো রুহী।তুই তোর পুনিরে সামলা।বলে হাসলো রুমু।ওকে রুমু।
বলে উঠলো রুহী।ফোন কেঁটে টেবিলের ওপর রাখলো রুহী।মেয়েকে অাদর করে ঘুম পাড়াতে লাগলো রুহী।রাতে রোয়েনের রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো রুহী।ঘুমোচ্ছে রোয়েন।আরাবীকে পাশে শুয়ে দিলো রুহী।
রোয়েনের সামনে এসে বসলো রুহী।রোয়েনের কপালের চুলগুলো উড়ছে।আলতো হাতে চুল গুলো সরিয়ে রোয়েনের কপালে চুমু খেলো রুহী।চোখ জোড়া বেয়ে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো রুহীর।চোখ মুছে রোয়েনের ঠোঁটের মাঝে নিজের ঠোঁট ডুবালো রুহী।রোয়েন নকল ঘুমে রুহীর রসালো ঠোঁট জোড়ার পরশে মেতে আছে।রোয়েন ভুলক্রমে রুহীর ঠোঁটের মাঝে নিজের ঠোঁটজোড়া কে একবার চালান দিতেই রুহী সরে এলো।রোয়েন এমন ভান ধরলো যেন ঘুমের মাঝে ঠোঁট নাড়ছে।চিন্তা মুক্ত হলো রুহী।রোয়েনের গায়ে কম্বল টেনে বেরিয়ে এলো রুহী।রোয়েন চোখ খুলে দিলো।আর দূরে থাকতে পারছেনা বৌটা থেকে।রুহীর থেকে দূরে থাকা কতোটা কষ্টকর সেটা বুঝতে পারছে কেবল রোয়েন।
৫দিন পর
,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী আরাবীকে নিয়ে বসে আছে।রোয়েন এখনো ফেরেনি।আরাবীকে রোয়েনের রুমু শুইয়ে ওর চুলে হাত বুলাচ্ছিলো রুহী।রোয়েন টলটলতে রুমে এলো।লাইট জ্বালাতেই রুহীকে দেখতে পেলো।পায়ের শব্দ পেয়ে মাথায় বড় ঘোমটা টেনে উঠে সামনে ফিরে তাকালো রুহী।রোয়েন মাতালের বেশ ধরে রুহীকে হ্যাচকা টানে বুকে জড়িয়ে নিলো।আই লাভ ইউ রুহী।মাতাল কন্ঠে বলল রোয়েন।রুহীর চোখ জোড়া বড় হয়ে এলো।স্যার ছাড়ুন কি করছেন?রোয়েন থেকে নিজেকে ছাড়াতে লাগলো রুহী।রুহীকে সামনে এনে ঘোমটার ওপর থেকেই ওকে কিস করতে চাইলো রোয়েন।স্যার প্লিজ ছাড়েন। আমি জবা আপনার বৌনা।বলে উঠলো।রুহী।রুহীকেআবার জড়িয়ে নিলো রোয়েন।আমি জানি তুমি আমার রুহী।তোমার স্পর্শ,তোমার চুলের মাতাল করা ঘ্রান,আমার আশেপাশে থাকলে তোমার সেই মনোমুগ্ধকর ঠান্ডা বাতাস তোমার পরিচয় দিয়েছে অনেক আগেই রুহী।প্লিজ আমার হয়ে যাও।তোমার থেকে দূরে থাকতে পারছিনা।রুহীর মুখের ঘোমটা তুলে ওর ঠোঁটের কাছে আসতেই রোয়েনকে ধাক্কা মেরে সরালো রুহী।কি করছেন আপনি রোয়েন?আমি আপনার রুহী না।সে তো মারা গেছে যেদিন আরাবীকে তার বুক খালি করে নিয়ে এসেছিলেন।আমি তো শুধু এসেছি আরাবীর ন্যানি হয়ে যে আর মাত্র ১০দিন পর চলে যাবে।আপনার লাইফে কখনো রুহীর ছায়া ও পড়বেনা।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রুহী।রোয়েন রক্ত চক্ষু দিয়ে রুহীকে দেখছে।সেই চোখ রাগ অভিমান কষ্ট সব আছে।রুহীর হাত টেনে নিজের কাছে আনলো রোয়েন।এসব কথা বলার সাহস পেলি কই?তুই শুধু আমার।তোকে ভালবাসি বলেই এখানে আনিয়েছি।তোর উপস্থিতি আমাকে শান্তি দেয়।আমি তোকে এখনি চাই রাইট নাও।বলেই রুহীর কাঁধে ঠোঁট ছোঁয়ালো রোয়েন।রোয়েনকে সজোরে ধাক্কা দিতেই রুহী নিজেই পড়ে গেলো।খাটের কোনায় লেগে কপাল কেঁটে গেলো রুহীর।রোয়েন রুহীর দিকে এগোতেই হাত দিয়ে বাঁধা দিলো রুহী।আসবেন না।আমি আপনার কেউ না।আমি শুধু আরাবীর মা।আপনার কেউ না।আস্তে করে উঠে দাঁড়ালো রুহী।কপালে হাত চেপে ধরে দরজার দিকে পা বাঁড়ালো রুহী।রুহী!!!!রুহীর হাত ধরে ডাকলো রোয়েন।ডোন্ট টাচ মি।রাগী গলায় বলে রুম থেকে বেরিয়ে এলো রুহী।রুহীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো রোয়েন।কোথা ও যেতে দিবোনা।শরীর থেকে যেমন আত্মা আলাদা হয়না তেমন রোয়েন থেকে রুহী কখনো আলাদা হবেনা।জনম জনম বুকের মাঝে রাখবো আমার মায়াবতীকে।বিড়বিড় করে বলছিলো রোয়েন।
চলবে