My Mafia Boss Season 2

My Mafia Boss- Season- 2 !! Part- 21

,,,,,আনিলা বেগম সম্পত্তির দলিল পত্রাদি নিয়ে বসে আছেন।উকিল সাহেবা এখনো আসেননি।আনিলা বেগমের পার্সোনাল উকিল এবং খালাতো বোন।উকিল শুনেছেন উকিল সাহেবা দরকারি মিটিংয়ে ব্যাস্ত আছেন তাই আসতে সময় লাগছে।আনিলা!!!!!হঠাৎ কারোর মিষ্টি কন্ঠে ডাক শুনে পিছনে তাকালেন আনিলা বেগম। এরপরই দুইবোন একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন।শানু কেমন আছিস?আনিলা বেগম বলে উঠলেন।
,,,,,,,,,,এই তো ভালো।শাহরিনা রহমান মিষ্টি হেসে বললেন।তোর কি খবর?চেয়ারে বসতে বসতে বললেন শাহরিনা রহমান।
,,,,,,,,,,,বড় একটা নিশ্বাস নিলেন আনিলা বেগম। এই তো ভালো।
,,,,,,,,,,,,,,,,ভালো বলার ধরন টা পছন্দ হয়নি আনিলা।
,,,,,,,,,,,,,,,সে অনেক কথা।বলে শেষ করা যাবেনা।
,,,,,,,,,,,,ওকে। জোর করছিনা। তবে অন্য কোন দিন বলতে হবে।সমাধান করার চেষ্টা করবো।কলমের মুখ খুলতে খুলতে বললেন শাহরিনা রহমান।
,,,,,,,,,,,,,,হুম।মুচকি হাসলেন আনিলা বেগম।
,,,,,,,,,,,,,তা তোর পোনা পুনিরা কেমন আছে?শাহরিনা রহমান বলে উঠলেন।
,,,,,,,,,,,ওরা ভালো আছে।মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
,,,,,,,,,,,রুহী মামনির বিয়ে হয়ে গেলো আর আমি জানলাম না।দ্যাটস নট ফেয়ার।
,,,,,,,,,,,,আসলে বিয়েটা হঠাৎ করেই,,,,,,থামিয়ে দিলেন শাহরিনা রহমান।ফান করছিলাম।তা এই বোনকে হঠাৎ মনে পড়লো।এতো দূরে একা আসলি কেন?দুলাভাইকে আনতে পারতি?এক নাগাড়ে বলে দিলেন শাহরিনা রহমান।
,,,,,,,,,,,,,,,,আসলে কাজটা খুব গোপনীয় ভাবে করতে চাচ্ছি আজমল কে না জানিয়েই।কিছুটা চিন্তিত মুখে বললেন আনিলা বেগম।
,,,,,,,,,,,,,এনি প্রবলেম আনিলা?আনিলা বেগমের হাতের ওপর হাত রাখলেন শাহরিনা রহমান।
,,,,,,,,,,,,,,বোনের কাছে একে একে সব খুলে বললেন আনিলা বেগম।স্বামীর কৃতকর্ম,আজমল খানের জন্য রুহীকে কষ্ট দেয়ার কথা সবই।কথা শেষ হতেই শাড়ীর আঁচলে চোখ জোড়া চেপে ধরলেন আনিলা বেগম।আনিলা প্লিজ নিজেকে সামলা।আনিলা বেগমের কাঁধে হাত রাখলেন শাহরিনা রহমান।চোখ মুছে সামনে তাকালেন আনিলা বেগম।আমি ঠিক আছি।ভাঙ্গা কন্ঠে বললেন আনিলা বেগম।আমার যা সম্পত্তি আছে সেখান থেকে হাফ রুহীর আর বাকি অর্ধেক আনামকে দিবো।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।
রুমুর পাশে শুয়ে পড়লো আনাম।হঠাৎ করে বুকে জড়িয়ে নিলো খুব জোরে।আনামের ছোয়া পেয়ে রুমু আঙ্গুল দিয়ে আনামের পিঠ খামচে ধরলো।আনামের রুমুর নেশায় পাগল হয়ে যাবার যোগাড়।রুমুর ঠোঁটে কপালে গালে ঠোঁট বুলাতে লাগলো আনাম।রুমু ও সমান তালে আনামকে ভালাবাসার পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে।আনামের হাত রুমুর গাউনের চেইনে চলে গেলো।রুমু কে একান্ত ভাবে পাওয়ার নেশা আনামকে জেঁকে ধরলো।
,,,,,,,,,,,,,,রুহীর আজ সকালটাকে ভীষন নতুন নতুন লাগছে।যেন কাল তারা নতুন করে সব শুরু করেছে।ঘুমন্ত রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।হঠাৎ রোয়েনের ঠোঁটের কোনে চোখ পড়তেই মন খারাপ হয়ে গেলো আর সাথে সাথে লজ্জা ও পেলো রুহী।রোয়েনের ঠোঁটের কোনে রক্ত জমাট বেঁধে আছে।নিঃসন্দেহে এটা রুহীর নিজেরই কাজ।বাথরুম থেকে রুমাল ভিজিয়ে এনে রোয়েনের ঠোঁটের কোনের ঘায়ে মুছে দিলো।রোয়েন খানিকটা কেঁপে উঠলো।রুহী সরে এলো।রোয়েনের দিকে আরো কিছুক্ষন তাকিয়ে চাদর টেনে ভালো মতো জড়িয়ে দিলো রোয়েনকে রুহী।রোয়েন থেকে সরে আসতেই বাঁধা অনুভব হলো রুহীর।লুচু মাফিয়াটা ওকে জড়িয়ে ধরে আছে।আপনি জেগে আছেন?চেঁচিয়ে উঠলো রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,রুহীর চিৎকারে বিরক্ত হয়ে আধোচোখ খুলল রোয়েন। কি হলো সকাল সকাল চিৎকার করছো কেন?ধমক দিয়ে উঠলো রোয়েন।আমাকে ছাড়েন!! ছাড়েন বলছি রুহী নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।রোয়েন রুহীর দিকে চোখ রাঙ্গাতেই রুহী চুপ হয়ে গেলো। রোয়েন রুহীকে টেনে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।কাজ সেরে আনিলা বেগম উঠে পড়লেন।আবার দেখা হবে আনিলা। শাহরিনা রহমান হেসে বললেন।
,,,,,,,,,,,,,,,হুম।আসি তাহলে।বোনের দিকে মলিন হাসি দিয়ে বেরিয়ে এলেন আনিলা বেগম।চুপচাপ গাড়িতে এসে বসলেন। গাড়ি চলতে শুরু করলো।
রোয়েন রুহী নাস্তা সেরে রুমে এলো।রোয়েন সবসময়কার কালো কোটটা পরে নিয়েছে বাহিরে যাবার উদ্দেশ্যে। ঠোঁটের দিকে চোখ পড়তেই ভ্রু কুঁচকে তাকালো রুহীর দিকে।রুহী ভয়ার্ত চোখে একনজর রোয়েনের দিকে তাকিয়ে নিচে তাকালো।কামড় দিবা ভালো কথা একটু আস্তে দিতা।রাগী গলায় বলে উঠলো রোয়েন।আস্তে কি করে দিবো?মাথা নিচু করে বলল রুহী।আর কিছু না বলে চোখে সানগ্লাস দিয়ে বেরিয়ে পড়লো রোয়েন।ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিতে যাবে ঠিক তখনই আনিলা বেগমের কল এলো রোয়েনের ফোনে।
,,,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো মা। রোয়েন কানে ফোন দিয়ে বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,রোয়েন তোমাকে আজ একটা দরকারি কথা বলতে চাই।আনিলা বেগম বলে উঠলেন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,কি কথা?ভ্রু কুঁচকালো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,আমার সম্পত্তির অর্ধেক রুহীর আর বাকি অর্ধেক আনামের।
,,,,,,,,,,,,,,,মা এসব কি বলছেন?আমার কোন দিক দিয়ে কম নেই।আপনার এসব ঝামেলা করতে হবে না।রোয়েন বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,না বাবা। আমার মেয়েটাকে একটু ও ভালবাসতে পারিনি ওর বদমাশ বাবার জন্য।এটাই আমার শেষ ইচ্ছা প্লিজ না করো না।বিনয়ের সুরে বললেন আনিলা বেগম।
,,,,,,,,,,,,,,,রোয়েন কিছু বলতে পারলোনা।
,,,,,,,,,,,,,,,,,এসব জানলে আজমল হয়ত আমাকে মেরে ফেলবে।কিন্তু তুমি এই সম্পত্তি আজমলের কাছে যেতে দিবেনা।
,,,,,,,,,জি মা।আপনি যা বলেন তাই হবে।বলে উঠলো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,ওকে। রাখছি।
,,,,,,,,,,,ফোন কান থেকে সরিয়ে নেয় রোয়েন।যাই হোক মাকে কিছু হতে দিবেনা রোয়েন।রুহী অনেক কষ্টের পর মাকে ফিরে পেয়েছে।কথা গুলি ভাবতে থাকে রোয়েন।
ঘুমভাঙ্গতেই চারপাশে তাকায় রুমু।কোথায় চলে এসেছে ও?অচেনা রুম।শরীরের কাপড় ও ঠিকঠাক নেই।ফ্লোরের ওপর ওর আর একটা পুরুষের কাপড় পড়ে আছে।কপালে হাত দিয়ে বসে রুমু।এ কি হয়ে গেলো ওর?কিছু মনেই করতে পারছেনা ও?কাল কি হয়েছিলো এখানে কি করে এলো ও?ভাবতে থাকে রুমু।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। কাপড় চোপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায় রুমু।
,,,,,,,,,,,কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুমু।
আনাম হাতে কফি নিয়ে মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে আছে।রুমু এগিয়ে আসতেই আনাম ওর দিকে কফি এগিয়ে দেয়।খেয়ে নাও।আমি এখানে কি করে এলাম?কি করেছেন কি আমার সাথে?চিৎকার করে বলতে থাকে রুমু।
,,,,,,,,,,,,,যা হওয়ার তাই হয়েছে।দেখো রুমু।আগেই বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি।কখনো হারাতে চাইনা।কাল আমাদের মাঝে সব হয়ে গেছে।তুমি সেন্সে ছিলানা তাই বুঝতে পারোনি।সরি।কফির মগ নিয়ে আনামের মুখে ছুড়ে মারে রুমু।আমি সেন্সে ছিলাম না।আপনি তো ছিলেন।কেন এমন করলেন?কেন আমাকে শেষ করলেন?জানতাম খারাপ আপনি, তবে এতো টা খারাপ বুঝতেই পারিনি।আসলে আপনি কেন সব ছেলেরাই খারাপ।মেয়েদের দেখলে লোভ সামলাতে পারেননা। বিছানায় নেয়ার চিন্তা করেন।আপনি তো ভালবাসতেন তাইনা?এই হচ্ছে আপনার ভালবাসা।ছিহ আনাম।সেম অন ইউ।আনামের মুখে এক দলা থুথু ছিটিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলো রুমু।
,,,,,,,,,,,,,রুমু প্লিজ শুনো। আমি তোমাকে কখনো ছেড়ে যাবোনা প্রমিজ করছি।রুমু!!!!রুমুর হাত ধরে টানতেই জোরে চড় বসিয়ে দিলো রুমু আনামের গালে।ডোন্ট টাচ মি।চিৎকার করে বলে উঠে রুমু।দরজা খুলে বেরিয়ে যায় বাহিরে।আনাম গালে হাত দিয়ে রুমুর যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে।চোখের কোনা বেয়ে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।
সিড়ি দিয়ে নামছে রুমু।পা জোড়া অবশ হয়ে আসছে।চলতেই চাইছে না।সিড়িতে বসে পড়লো রুমু।দুই হাঁটু ভাজ করে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো রুমু।
চলবে