My Mafia Boss- Season- 2 !! Part- 17
,,,রুহীর চোখজোড়া ভরে এলো।ঠোঁট চিপে ধরে দরজায় আরো দুতিনবার নক করলো দরজায় রুহী।প্লিজ খুলেন না কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো রুহী।রুহী প্লিজ গেট আউট!!!তুমি এখানে থাকতে পারবেনা।পাশের রুমে তোমাকে সিফট করা হয়েছে।চিৎকার করে বলতে লাগলো রোয়েন।রুহী দুহাতে চোখ মুছতে মুছতে পাশের রুমে চলে এলো।দরজা আটকে হুঁহুঁ করে কেঁদে উঠলো রুহী।পায়ে শক্তি পাচ্ছিলোনা রুহী। পা জোড়া ভেঙ্গে আসতে চাইছে।খাট পর্যন্ত যাওয়ার শক্তি পেলোনা রুহী।ফ্লোরে হাঁটু ভেঙ্গে বসে পড়লো।গয়না গুলো খুলে ছুঁড়ে মারতে লাগলো রুহী।পা ছড়িয়ে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগলো।খাটে বসে একটা সিগারেট ধরালো রোয়েন।এভাবে সারারাত কেঁটে গেলো দুজনের।সকাল বেলা মিষ্টি কফির গন্ধে ঘুম ভাঙ্গলো রোয়েনের।রুহী টিটেবিলে কফি মগটা রেখে রোয়েনের দিকে মুচকি হেসে পিছনে ফিরে দরজার দিকে পা বাঁড়াতেই খুব জোরে কিছু ভাঙ্গার শব্দ হলো।পিছনে ফিরে তাকায় রুহী।কফি পুরো ছড়িয়ে গেছে।শাড়ি একটু উঠালো রুহী।কাঁচের টুকরো গুলো গড়াগড়ি খাচ্ছে ফ্লোরে।রুহী ছলছল চোখে রোয়েনের দিকে তাকায়।রক্তচক্ষু দিয়ে চেয়ে আছে রোয়েন।আর কখনো কফি বা অন্য কিছু নিয়ে সামনে আসবিনা।চিৎকার করে বলে উঠলো রোয়েন।
আমি আবার ও বানিয়ে আনছি।বলে মাথা নিচু করে যেতে চাইলো রুহী।দরকার নেই।ফোন বের করে কাজের লোককে কফি পাঠাতে বলল রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।সকাল থেকেই মন মেজাজ ভালো যাচ্ছে না আনামের।ভালোবাসার মানুষটা এভাবে দূরে দূরে থাকছে ভাবতেই বিরক্ত লাগছে ওর।ফোন বের করে আবারো কল দিলো রুমুর ফোনে।মেয়েটা ফোন ধরছে ও না করছে ও না।কি চায় মেয়েটা? কেন এমন করছে?উফ ভালো লাগেনা।বন্ধু হাসিবের নম্বরে কল দিলো আনাম।হাসিব রুমুর চাচাতো ভাই।আজ হাসিবের বাসায় একটা পার্টি আছে।আনামকে ও দাওয়াত করেছিলো হাসিব।তবে রুমু না আসলে ও নিজে ও যাবেনা।ভাবতে ভাবতে ঐপাশ থেকে হাসিব কথা বলে উঠে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো হাসিব।কি খবর ব্যাটা?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হ ভালো।আজ পার্টিতে আসতেছিস তো?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,জানি নারে ব্যাটা।আনাম বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,জানি না কি?আইতেই হইবো আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,রুমু কি আসবো?আনাম প্রশ্ন করে উঠে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হ আইবো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,ওহ।আচ্ছা পরে কথা হবে।ফোন কেঁটে দিলো আনাম।তাহলে ওকে যেতেই হবে।ম্যাডামের খবর নিতে।কি চায় রুমু?
ফোন বার কাঁটছি তারপর ও কল দিচ্ছে এই লোকটা।বেহায়াগিরির লিমিট ক্রস করেছে এই আনাম।ভাবতেই বিরক্ত লাগছে রুমুর।খাট ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো রুমু।ফ্রেশ হতে চলে গেলো রুমু।রুহী আজ সারাদিন রোয়েনের সামনে ঘুরঘুর করেছে।তবে পাত্তাই পায়নি।বুক ফেঁটে আসতে চায় রুহীর।পার্টিতে চলে আসতে শুরু করেছে মেহমানেরা।সবাই যে যার মতো মজা করছে।আনাম ওয়াইনে একটু চুমুক দিয়ে রুমুকে দেখছে।মেয়েটা কিভাবে আরেক ছেলের সাথে নাচতে পারে।কষে দুটো চড় মারতে পারলে ভালো হতো।গ্লাসটা কাঁচের টেবিলের ওপর রেখে সামনে আগাতে লাগলো আনাম।নাচতে নাচতে একপর্যায়ে রুমুর হাত ধরে আনাম একটা খালি রুমে নিয়ে এলো।আরে কি করছেন আপনি?ছাড়েন হাত ছাড়েন আনামপর হাতে খামচি দিতে লাগলো রুমু।রুমুকে দেয়ালে জাপটে ধরলো আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,, এতো সাহস কি করে হয় তোর আরেকজনের সাথে ড্যানস করার?চিৎকার করে বলল আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,, কি বলছেন এসব? যার সাথে ইচ্ছা নাচবো আপনার কি?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমার কি না?রুমুর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো আনাম।রুমুর ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যাস্ত আনাম।রুমু যেন কোন এক অদ্ভুত ঘোরে চলে গেছে।কিছুক্ষণ পর সরে আসে আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,যা নেয়ার হয়ে গেছেনা?নাকি বিছানা পর্যন্ত নেয়ার ইচ্ছা আছে?রাগী গলায় বলে উঠলো রুমু।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,তুমি কি জানোনা কতোটা ভালোবাসি তোমায়?রাগী গলায় বলল আনাম।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আপনার মুখে ভালবাসা কথাটা হাস্যকর শুনায় আনাম।যে নিজের বোনকে আজ পর্যন্ত ভালোবাসতে পারলেননা সে আমায় কি ভালোবাসবে?চিৎকার করে বলতে থাকলো রুমু।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,সে আমার সৎ বোন রুমু।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হোক সৎ বোন।বোন তো আপনারই।কিভাবে পারলেন রাহিনের মতো লোকের কাছে বেঁচার চেষ্টা করতে?কি করে পারলেন বোনের নামে জঘন্য কথা ছড়াতে যে সে রোয়েনের সাথে লিভ টুগেদারে আছে।এমন লোকের সাথে আমি কখনো থাকতেই পারবোনা।কথা গুলো বলে আনামকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বেরিয়ে গেলো রুমু।
১০-১৫দিন পর
,,,,,,,,,,,,,,,,,,, এ কয়দিন রুহীর সাথে কোনপ্রকার কথা বলেনি রোয়েন।রোয়েনের সামনে ঘুরঘুর করেছে প্রতিনিয়ত তারপর ও রোয়েন কথাই বলেনি।আজ নিজের মতো করে রুম সাজিয়েছে রুহী।মেমবাতি দিয়ে ঘর সাজাচ্ছে রুহী।রেড ভেলভেট কেক এনেছে তার লুচু মাফিয়ার জন্য।রুম সাজিয়ে একটি লাল শাড়ী পরে নিলো রুহী।কানে ঝুমকো গলায় চেইন হাতে দুটো চুড়ি দিয়ে নিজেকে রোয়েনের মনের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছে রুহী।কলিংবেল বাজতেই রুমের দরজা চাপিয়ে দিলো রুহী। রোয়েন সিড়ি বেয়ে রুমে আসলো।পুরো রুম মোমবাতির সোনালী আলোয় জ্বলজ্বল করছে।কয়েকটি বেলুনের মাঝে ইংরেজিতে সরি লেখা আছে।মোমবাতি গুলোকে ইংরেজি সরি আকারে সাজানো হয়েছে।কেকের মধ্যে চকোলেট ক্রিম দিয়ে সরি আঁকা।হঠাৎ কোমল হাত জোড়া রোয়েনের বুককে পিছন থেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,, আ’ম সরি। প্লিজ মাফ করে দিন।রুহী বলে উঠলো।
রোয়েন সামনে ফিরে রুহীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো।চিন্তা ও করবানা। মনে করবানা এসব করে আমার মন গলাতে পারবা। চিৎকার করে বলল রোয়েন।রুহীর চোখ জোড়া ভিজে আসতে চাইলে ও রুহী সামলে নিলো নিজেকে।মোমআাতি গুলোকে নিভিয়ে বেলুন গুলো কে খুলে নিলো রুহী।কেক টাকে সাথে করে নিয়ে বেরিয়ে এলো রুম থেকে।
,,,,,,,,,,,,,,,,, রুহী করতোনা রোয়েনের সামনে আর ঘুরঘুর করতোনা।খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছে।কলেজ থেকে ফিরে পাশের রুমে শুয়ে পড়তো আর বেরই হতো না। কাজের লোকগুলোকে বলে দিয়েছিলো রোয়েনকে না জানাতে যে ও খাওয়া দাওয়া করেনা। দুইদিন চলে গেলো এভাবে।
রোয়েন কফি খাচ্ছে আর রুহীর রুমের দিকে চেয়ে আছে।কোথায় ও রাগ দেখাবে কিন্তু ম্যাডাম নিজেই রাগ দেখাচ্ছে।রোয়েন অসহ্য হয়ে গেছে।আগে যাও ঘুর ঘুর করতো এখন তাও করেনা।রোয়েনের আর সহ্য হলোনা।সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলো রোয়েন।রুহীর রুমের দরজা খুলতেই দেখলো রুহী ফ্লোরে পড়ে আছে।
রোয়েন দৌড়ে রুহীকে কোলে উঠিয়ে খাটে শুইয়ে দিলো।শরীর ঠান্ডা হয়ে আছে।পকেট থেকে ফোন বের করলো রোয়েন।
হ্যালো ডাক্তার জাকির!!!!!!
জি স্যার!!!
বাসায় আসুন রাইট নাউ।দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
স্যার ওনার প্রেসার ও লো।মনে হয় ২,৩দিন পর্যন্ত কিছু খায়নি।ডাক্তার বলে উঠলো।
হোয়াট?রোয়েন চিৎকার করে উঠলো।
কাজের লোকদের কাছে এলো রোয়েন।রুহী খায়না আমাকে বলোনি কেন?রাগী গলায় বলল রোয়েন।স্যার ম্যাম না করেছিলো।লোকগুলো মাথা নিচু করে বলল।
বেতন কি ম্যাম দেয় নাকি আমি দেই?দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
স্যার সরি আর হবেনা।কাজের লোকগুলো বলে উঠলো।
রোয়েন রুহীর পাশে এসে বসলো।রুহী অন্যদিকে ফিরে আছে।রোয়েন চামচে সুপ নিয়ে রুহীর দিকে ধরলো।খাও!!! বলে উঠলো রোয়েন।
ভাইয়ারা আমার জন্য সুপ নিয়ে আসেন। ওনার হাতে আমি খাবোনা।কাজের লোকগুলোর দিকে তাকিয়ে বলল রুহী।রোয়েন কাজের লোকদের দিকে চোখ রাঙ্গাতেই ওরা বেরিয়ে গেলো।রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।খেয়ে নাও।রাগী গলায় বলল রোয়েন।
না।জামাই ভাইয়া আমি আমার টা নিজেই করতে পারি।রুম থেকে এতো কষ্ট করে এসে খাইয়ে দিতে হবেনা আমাকে জামাই ভাইয়া।রুহী বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,হোয়াট!!! জামাই ভাইয়া এটা আবার কি জিনিস?দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আপনি আমাক বিয়ে করেছেন সেদিক থেকে আপনি আমার জামাই।আর রুম থেকে বের করে দিলেন।ভাই বোন তো আর একরুমে থাকেনা।তাই সেদিক থেকে তো আমরা এক ধরনের ভাই বোন না?বলে উঠে রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী আবার যদি এসব জামাই ভাইয়া বলো।তোমার কি অবস্থা করবো চিন্তা ও করতে পারবানা দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,বলবো অবশ্যই বলবো জামাই ভাইয়া, জামাই ভাইয়া, জামাই ভাইয়া,জামাই ভাইয়া,,,,,,,,,,,,,,,
বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো রুহী।সরি বলে রোয়েন ওর সামনে বসতেই আবার মাথা ঘুরিয়ে নেয় রুহী, রোয়েন আবার ও সরি বলে ওর সামনে এসে বসলো।রুহী মাথা ঘুরাতে নিবে তখনই রোয়েন ওর দুগালে হাত রাখলো
আম সরি রুহী।প্লিজ মাফ করে দাও।রোয়েন বলে উঠলো।
না না না না শেষ হতেইরুহীর ঠোটে ঠোঁট চেপে ধরলো রোয়েন।রুহী রোয়েনকে সরাতে চাইছিলো কিন্তু পারছিলোনা। বেশ কিছুক্ষন পর সরে আসে রোয়েন।রুহী চোখ বুজে আছে।রোয়েন রুহীর ঠোঁটে আলতো করে দুতিনটে চুমু দিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
চলবে