My Mafia Boss- Season- 1 !! Part- 46
রুহীকে নিচে চলে এলো রোয়েন।টেবিলে বসে পড়লো ওরা।রোয়েন রুহীর দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।কেমন জানি লাগছে ওর মায়াবতীকে।রুহীর হাতের ওপর হাত রাখলো রোয়েন।সব ঠিক আছে?রুহী রোয়েনের হাতের ছোঁয়া পেয়ে রোয়েনের দিকে তাকায় রুহী।ন নন না আমি ঠ ঠিক আছি। মাথা নিচু করে বলল রুহী।রুহী তুমি কি কালকের জন্য কষ্ট পাচ্ছো?গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।না না আ আম আমি তো পারমিশন দিয়েছিলাম আপনাকে।আ আমি ঠ ঠঠ ঠিক আছি।কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রুহী।নাস্তা করে নাও। আমার বাহিরে যেতে হবে।গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।
রুহী মাথা নিচু করে খেয়ে উঠে রুমে চলে এলো।রুহীর ফোন বেশ অনেকক্ষণ ধরেই বাজছে।ফোন হাতে নেয় রুহী।রুহান আসলাম কল করছে।কল রেকর্ডার অন করে ফোন রিসিভ করে কানে রাখলো রুহী।হ্যালো, কি হয়েছে বলুন।
তুই আমার সাথে আসবিনা তাইনা?যে ছেলে তোকে বিয়ে করার পর অন্য মেয়ে নিয়ে রুমে যায় তার সাথে থাকবি।কাল ও তো এসেছিলো ঐ মেয়ে।তাও সারাক্ষণ রোয়েনের নামে মালা জপতে থাকিস।
আপনি কি করে জানলেন রোয়েন ঘরে মেয়ে নিয়ে এসেছিলো।আর কাল ও যে এসেছিলো সেটা কি করে জানলেন?
থতমত খেল রুহান আসলাম।ন না আমি জানি আরকি।রোয়েন তো এমনই।কখনো এই মেয়ে আবার কখনো ঐ মেয়ে।
অনেক বলে ফেলেছেন।আর কিছু শুনতে চাইনা।আপনার মতো জঘন্য নোংরা মানুষ কোথা ও দেখিনি আমি। আর কখনো কল করবেন না আমায়।ফোন কেঁটে দিয়ে রেকর্ডিং সেভ করে নিলো রুহী।( এ লোক টা কিভাবে কারোর বাবা হতে পারে?আমার মাকে মেরেছে)।ভাবতেই রুহীর চোখ জোড়া ভরে এলো।
রুহী!!গম্ভীর গলায় ডাকলো রোয়েন।চোখ মুছে পিছনে তাকায় জ জজ জি!!!!!!রেডি হয়ে নাও।রুহীর দিকে একটি ব্যাগ ধরে বলল রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে ব্যাগ হাতে নেয়।৫মিনিটের মধ্যে তোমায় নিচে দেখতে চাই। গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।মাথা ঝাঁকালো রুহী।রোয়েন বের হতেই প্যাকেটের ভিতর থেকে একটি কালে শাড়ী বের করে আনে রুহী।সিড়ির কাছে এসে রোয়েনকে খুঁজার চেষ্টা করে রুহী।রোয়েন কালো শার্ট পরে দাঁড়িয়ে ফোনে কি যেন দেখছে।যা হ্যান্ডসাম লাগছে রোয়েন কে বলার মতো না।ডার্ক প্রিন্স রোয়েন।কারন যা পরেছে সবই কালো।অসম্ভব মানায় রোয়েনকে কালো রংয়ে।বাসার দেয়াল গুলো ও কালো রং করেছে রোয়েন।
রুমে ফিরে এলো রুহী।দরজা বন্ধ করে দিলো রুহী।কালো শাড়ীটিতে জড়িয়ে নিলো নিজেকে।ডার্ক প্রিন্সের প্রিন্সেস লাগছে রুহীকে।চোখে একটু কাজল লাগিয়েছে রুহী। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক।চুল গুলো পিঠের মাঝখানটায় ছেড়ে দিয়ে।রুম থেকে বেরিয়ে এলো রুহী।সিড়ি বেয়ে নেমে এলো রুহী।রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়াতেই ফোন থেকে চোখ সরিয়ে রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।উফ মায়াবতীর মায়া জালে আবার ফেঁসে গেছে রোয়েন নতুন ভাবে।রুহীর কাঁধের চুল সরিয়ে কানের পিছনে চুমো খেল রোয়েন।রুহীর হাত ধরে বেরিয়ে পড়লো ওরা।গাড়ি দিয়ে আজ বেশ কিছুক্ষন ঘুরলো ওরা। রাতে ডিনার সেড়ে বাসার দিকে রওনা দিয়েছে ওরা। রাস্তায় ভীষন জ্যাম লেগেছে।গাড়ি নড়ছে ও না।রুহী জানালার দিকে তাকিয়ে আছে।আজকের দিনটা ভালো কেঁটেছে ওর।হঠাৎ ল্যাম্প পোস্টের হালকা আলোয় রাস্তার কিনারে পড়ে থাকা আনিলা বেগমের দিকে চোখ পড়লো রুহীর।রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।মামী পড়ে আছে।আস্তে করে বলল রুহী।রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।সো হোয়ট?রাগী গলায় বলল রোয়েন।রুহীর থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালো রোয়েন।প্লিজ দেখুন না কিছু হয়েছে মনে হয়।চিন্তিত হয়ে বলল রুহী।রুহীর দিকে তাকিয়ে কিছুটা বিরক্ত হয় রোয়েন।তোমাকে নিয়ে আর পারা যায়না। দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।রুহীকে নিয়ে বেরিয়ে আনিলা বেগমের কাছে এসে দাঁড়ালো।আনিলা বেগমের কপাল থেকে রক্ত বের হচ্ছে।রুহী আর রোয়েন ধরে উঠালো আনিলা বেগমকে।
রোয়েন আনিলা বেগমকে এনে গাড়ির পিছনের সিটে বসিয়ে রুহীকে নিয়ে সামনে বসে পড়লো।বাসার দিকে আবার রওনা হলো ওরা।আনিলা বেগম কে ধরে বাসার ভিতরে আনলো রোয়েন আর রুহী।কাজের লোকদের সাহায্যে রোয়েনের পাশের রুমের খাটে শুইয়ে দিলো আনিলা বেগমকে।রুহী আনিলা বেগমের পাশে বসে আছে।রোয়েন ফোন বের করে ডাক্তার কে কল দিলো।
হ্যালো জাকির!!
জি স্যার।
বাসায় আসো। গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।
জি স্যার।
ফোন কেঁটে পকেটে ঢুকিয়ে রাখলো রোয়েন।
কিছুক্ষন পর ডাক্তার জাকির এসে আনিলা বেগমের ব্যন্ডেজ করে দিয়ে চলে গেল।রুহী আনিলা বেগমের পাশে বসে ওনার হাত ধরে বসে আছে।রোয়েন হাঁটা হাঁটি করছে রুমে।রুহী কিছুক্ষন পর পর আনিলা বেগমের গালে কপালে হাত দিয়ে দেখছে।গভীর রাতের দিকে চোখ খুলে আনিলা বেগম।রুহীকে পাশে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।আমি এখানে!!কি করে এলাম?রোয়েন আনিলা বেগমের কাছে এসে দাঁড়ায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলল রাস্তার কোনায় পড়ে ছিলেন।আনিলা বেগম কাঁদোকাঁদো করে রুহীর দিকে তাকায়।রুহী আনিলা বেগমের হাত ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। কাজের লোকদের বলুন ওনার খাবার পাঠাতে।রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলল রুহী।
হুম।রোয়েন ফোন বের করে কাজের লোককে কল দিলো।সুপ পাঠিয়ে দাও।ফোন কেঁটে রুমে চলে যায় রোয়েন।সুপ নিয়ে কাজের লোকটি রুমে ঢুকলো। রুহী সুপের বাটি নিয়ে আনিলা বেগমের সামনে বসলো।চামচে একটু সুপ নিয়ে আনিলা বেগমের সামনে ধরলো রুহী।আনিলা বেগমকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রোয়েনের রুমে এলো রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে তাকিয়ে ফোনে কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।।
রুহী জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো।রোয়েন কথা বলা শেষ করে খাটে বসে পড়লো।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রুহী।রোয়েনের দিকে একনজর তাকিয়ে বলল ঘুমোবেন না?
রোয়েন রুহীর হাত টেনে নিজের কোলে বসিয়ে গলায় মুখ ঘষতে লাগলো।রোয়েনের নিশ্বাস রুহীর বুকে লাগছে।ওনার প্রত্যেকটা নিশ্বাস রুহীকে পাগল করে দিতে যথেষ্ট। রুহীকে শুইয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট গুজে চুৃমো খেতে শুরু করলো রোয়েন।রুহী আজ রোয়েনকে সমান তালে চুমো দিচ্ছে।বরটা তো ওরই।বেশ কিছুক্ষন ভালবাসার রঙ্গিন খেলা শেষে রোয়েন মুখ উঠিয়ে রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।
পরদিন বিকেলে আফজাল সাহেব অবন্তী আর নুহাশ রোয়েনের বাসায় এলো।অবন্তী আনিলা বেগমের সাথে কথা বলতে নারাজ।আনিলা বেগম কেঁদে কেঁদে রুহীর দুহাত জড়িয়ে বলল মাফ করে দে মা।আর কখনো করবোনা এমন। রুহীর চোখ ও ভরে এলো।মামী মাফ চাইতে হবেনা। সব ভুলে গেছি আমি।আফজাল সাহেব আর অবন্তী ও অানিলা বেগম কে মাফ করে দিলো।আফজাল সাহেব আনিলা বেগম কে নিয়ে চলে গেলেন।এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেল।নুহাশ আর অবন্তী ঠিক করলো সবাই মিলে বনভোজন যাবে।
রুহীর ফোন বাজছে।ফোন উঠায় রুহী।অবন্তী আপুর কল আসছে।রুহী রিসিভ করে কানে রাখে ফোন।হ্যালো আপু।
ভালো আছিস?
এইতো ভালো।তুমি কেমন আছো?
ভালো।রোয়েন ভাই কেমন আছে?
ভালো।মুচকি হাসে রুহী।
শোন কাল আমরা সিলেট যাচ্ছি।নুহাশ আমি আমার ভাসুর আর ভাবি।আব্বা আম্মাকে ও বললাম ওনারা ও যাবে।তোরা ও চল।
আপু আমরা কেমন করে?ওনি রাজি হবেনা।নুহাশ রোয়েন ভাইকে বলে দিয়েছে।ওনি রাজি।
ওহ আচ্ছা ঠিক আছে।
কলিং বেল বেজে উঠতেই দরজা খুলে দিলো রুহী।রোয়েন বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে। রুহীর পিঠে হাত রেখে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলো রোয়েন।ভিতরে ঢুকলো রোয়েন।রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল প্যাকিং করে নাও।কাল সিলেট যাবো আমরা।গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।
রুহী রুমে চলে এলো রোয়েনের পিছুপিছু। আলমারি খুলে কালো একটা গেঞ্জী আর থ্রিকোয়াটার প্যান্ট বের করে খাটের ওপর রাখলো রুহী।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে এসে রুহীর সামনে দাঁড়ালো।রুহী রোয়েনের হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে নিলো।রোয়েন খাটে বসে রুহীর হাত টেনে কোলে বসিয়ে দিলো।রুহী সযত্নে রোয়েনের চুল মুছে দিলো।রোয়েন রুহীকে সরিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো।যাও কফি নিয়ে আসো। রুহীর দিকে এক নজর তাকিয়ে বলল রোয়েন।জি আচ্ছা। মাথা নিচু করে বলল রুহী।
রুম থেকে বেরিয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো রুহী।পাকঘরে এসে কফি বানিয়ে রুমে চলে এলো রুহী।রুহীর হাত থেকে মগ নিয়ে রুহীকে সামনে বসিয়ে কফি খাওয়ায় মন দিলো রোয়েন।শেষ চুমুক দিয়ে রুহীর হাত ধরে কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহীর ঠোঁটের ওপর ঠোঁট রেখে কফি টুকু ঢেলে দিলো রোয়েন।
এভাবে কফি খাইয়ে কি মজা পায় ওনি কে জানে?ভাবতে থাকে রুহী।রাতে প্যাকিং সেরে নেয় রোয়েন রুহী।পরদিন সকাল সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লো সিলেটের উদ্দেশ্যে।নুহাশের মাইক্রোতে করে বেরিয়েছে ওরা।রোয়েনের অপর গাড়িতে ওর বডিগার্ড রা আসছে।সবাই খুব হাসাহাসি করছে।রোয়েন চুপচাপ বসে আছে।মাঝে মাঝে কিছু কথা বলে আবার চুপ হয়ে যাচ্ছে ও।রুহী ও সবার সাথে গল্পে মেতে উঠেছে।ইমন ভাই বেশ রসিক মানুষ।হাসাতে পটু সে।এভাবে বেশ আনন্দের মাঝে কেঁটে গেল লম্বা জার্নি টুকু।সিলেটে পৌছে গেলো ওরা।রুহী কমলা একটি শাড়ি পরেছে।রোয়েন পলকহীন ভাবে ওর মায়াবতীকে দেখছে।এভাবে যদি সারাটি জীবন কাঁটিয়ে দিতে পারলে মন্দ হতোনা।
সন্ধ্যায় খাবার সেড়ে নিলো সবাই।আজ ওরা তাবু তে ঘুমাবে।বিষয়টা আরো রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে।কতগুলো কাঠকে একসাথে করে বসে আছে সবাই।রাত যতো বাড়ছে শীত ও বাড়ছে।রুহী দুহাত কে সাথে করে ঘষছে।নুহাশ আচমকা বলে উঠলো রোয়েন একটা গান গাও।
হোয়াট আমি কিভাবে গান করবো?
প্লিজ রোয়েন।গিটার এনেছি আমি।নুহাশ বলে উঠলো।
গিটার বাজাতে পারি কিন্তু গান!!!! অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে রোয়েন।
প্লিজ রোয়েন একটা গাও।অন্তত রুহীর জন্য একটা গান হয়েই যাক।রোয়েন রুহীর দিকে তাকালো।মায়াবতী চাঁদের হালকা আলোয় আরো বেশি মায়াময় হয়ে উঠেছে।রুহীর থেকে চোখ সরিয়ে গিটার হাতে নিলো রোয়েন।রুহীর দিকে তাকালো গিটার বাজাতে শুরু করলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে তাকালো।কি করতে যাচ্ছে ওনি? কিছু বুঝতে পারছেনা রুহী।রুহী কে অবাক করে দিয়ে রুহীর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি কন্ঠে সুর তুলল
Pal ek pal mein hi tham sa gaya
Tu haath mein haath jo de gaya
Chalun main jahaan jaaye tu
Daayein main tere, baayein tu
Hoon rut main, hawayein tu
Saathiya…
Hansu main jab gaaye tu
Roun main murjhaaye tu
Bheegun main barsaaye tu
Saathiya…
Saaya mera hai teri shakal
Haal hai aisa kuch aajkal
Subah main hoon tu dhoop hai
Main aaina hoon tu roop hai
Yeh tera saath khoob hai
Humsafar…
গান শেষ হতেই সবাই হাত তুলে উঠলো।রুহী ভীষন অবাক হলো।ওর ডার্ক প্রিন্স গান গেয়েছে ভাবতেই ভীষন রকমের ভালো লাগা কাজ করছে।রোয়েন রাত তো অনেক হয়ে গেছে তোমরা ও যেয়ে শুয়ে পড়ো বলে উঠলো ইমান। সবাই একে একে তাঁবুর ভিতরে চলে গেল।রুহী মাথা নিচু করে বসে আছে।রোয়েন উঠে দাঁড়িয়ে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো। রুহীর হাত টেনে দাঁড় করালো রোয়েন।আসো আমার সাথে।গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।রুহীকে নিয়ে পাহাড়ের কিনারে এসে দাঁড়ালো ওরা।খুব বাতাস হচ্ছে।রুহীর চুল উড়ে রোয়েনের মুখে এসে লাগছে।রুহী হাত দিয়ে চুল সরানোয় ব্যাস্ত।তারপর……….
চলবে