প্রেমের পাঁচফোড়ন

প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 14

আহানা বাসায় ফিরে দেখলো ৯টা ২০বাজে,এত দেরি?তাড়াতাড়ি করে ঘর গুছিয়ে আবার ভার্সিটিতে যেতে হবে
আহানা ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে হঠাৎ ফোন আসলো আকাশের মায়ের,উনি বললেন আজ আকাশকে ২ঘন্টা বেশি পড়াতে,কাল ওর পরীক্ষা
.
আহানা ভেবে বললো কিন্তু আন্টি তাহলে তো আমার বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যাবে
পিউকেও তো আজ ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পড়াবো বলেছি আমি,কারন পিউয়ের ও কাল পরীক্ষা,৫টা থেকে ৬টা লেগে যাবে আকাশদের বাসায় হেঁটে যেতে যেতে,তারপর আকাশকে ৬টা থেকে ২ঘন্টা পড়ালে তো ৮টা বেজে যাবে
আপনাদের বাসা তো দূরে
.
উনি বললেন রিকসা করে আসতে তো ৩০মিনিট লাগে
উনি তো আর জানেন না আহানা হেঁটে উনাদের বাসায় যায়,হেঁটে আসতে ৫০মিনিট লাগে প্রায়ই

আহানা হ্যাঁ বলে দিলো,কারন আকাশ সবসময় অংকতে ফেল করে,ম্যাথ বলতে কাঁচা সে,কাল ভালো করে বুঝিয়ে পড়িয়ে দিলে হয়ত পাস করতে পারবে
৮টার সময় তো সব অন্ধকার হয়ে যায়,হ্যাঁ তো বলে দিলাম কিন্তু বাসায় ফিরবো কি করে যদি পথে বিপদ হয়,
ভার্সিটিতে এসে ভেবে যাচ্ছে আহানা কি করে রাত করে বাসায় ফিরবে,যে গলি দিয়ে আসা লাগে সেটা অত্যান্ত নির্জন এলাকা,ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে
.
কিরে?কি এত ভাবিস?
.
নাহ কিছু না
.
আজ শান্ত ভার্সিটিতে আসে নাই মনে হয়,আমার কথায় এত কষ্ট পেলো?আমি কি এমন বললাম যে ভার্সিটিতেই আসলোনা,আজব!

বাবা আমি ব্যাংকের সব কাজ fulfill করে দিয়েছি,আর টেনসন নিও না ওকে?
.
ওকে☺
শুন!এবার ঈদে কিন্তু অবশ্যই আসবি আমার কাছে
.
আচ্ছা আসবো

২০,২১,২২,২৩!!
আহানা এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,ওমা শান্ত নেই,হুর আমিও না
প্রতিদিন একই ঘটনা ঘটবে তা তো নয়
আহানা ২৪তম কদম ফেলার আগেই সামনে শান্ত এসে দাঁড়ালো
পরনে কালো টি-শার্ট তার উপর হলুদ জ্যাকেট,ইয়া লম্বু
আহানা হা করে উপরে তাকিয়ে আছে শান্তর মুখের দিকে চেয়ে
.
শান্ত বাবাকে বাই বলে ফোনটা পকেটে ঢুকালো
.
আহানা কি বলবে বুঝতেসে না,পাশ দিয়ে চলে যেতে নিতেই শান্ত বললো দাঁড়াও!
.
কি?
.
থ্যাংকস!
.
কেন?
.
আমাকে ঐ পাতাবাটা রেঁধে খাওয়ানোর জন্য
.
ওহ,সরি
.
সরি কেন?
.
আমি আপনাকে তখন আপনার মা কচুপাতা রেঁধে খাওয়ায় না কেন সেটা বলে কষ্ট দিয়েছিলাম
.
ইটস ওকে,তুমি তো সবটা জানো না

হুম,যাই
আহানা চলে গেলো ওখান থেকে
শান্ত ভার্সিটির দিকে গেলো তমালের সাথে কিছু কাজ আছে তার
৮টা বাজতে ১০মিনিট বাকি,আহানা বারবার ঘড়ি দেখতেসে
চারিদিক অন্ধকার হয়ে গিয়েছে,জানালা দিয়ে আহানা বারবার একটুখানি আলো চোখে পড়ে কিনা তা দেখার চেষ্টা করতেসে,নাহ একটু আলো ও নেই,আরও মনে হচ্ছে রাতের গভীরতা বেড়ে আসতেসে
.
৮টা বাজে আহানা আকাশদের বাসা থেকে বের হলো অবশেষে,ভয়ে ভয়ে কিছুটা জোরেই হেঁটে চলেছে সে,দুপাশে বিল্ডিং,মাঝখানে চিকন গলি,সেটা দিয়ে হেঁটে চলেছে সে
এখন পর্যন্ত কোনো বখাটে বা ছেলেদের আড্ডামহল চোখে পড়েনি তার
ভয়ে ভয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সে,আজ নিজেকে সবচেয়ে বেশি অসহায় মনে হচ্ছে আহানার
.
যে গলি দিয়ে আহানা হেঁটে যাচ্ছে সেই গলিটা যেখানে শেষ হয়ে আরেকটা গলি শুরু হবে ঠিক সেই জায়গায় ৫টা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে,ল্যাম্পপোস্টের আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তাদের
আহানা তাদের দেখেছে এবং তারাও আহানাকে দেখেছে,নির্জন এলাকা বলে ছেলেগুলো বাদে আশেপাশে কোনো মানুষ চোখে পড়তেসে না
.
আহানা ছেলেগুলোকে পেরিয়ে চলে গেলো,কিন্তু তার মনে হচ্ছে কেউ তাকে ফলো করছে,পিছনে তাকাতেই আহানার মনে হলো ভয়ে জ্ঞান হারাবে এখন,সেই ৫টা ছেলেগুলো কিভাবে তাকিয়ে আছে তার দিকে,তার পিছু পিছু আসতেসে
আহানা এখন কি করবে,ওর যদি কোনো ক্ষতি করে ফেলে
আহানা হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলো,খুব জোরে হেঁটে যাচ্ছে সে
কিন্তু না!!ছেলে ৫টার মধ্যে ২জনই সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো

ককককি আআআআমমমমার পপপথ আটকিয়েছেন কককেন?
.
কেন জানো না?একা পথে সুন্দরি নারী দেখলে হাতছাড়া কি করে করি বলো
.
আহানা এদিক ওদিক তাকালো,সম্ভবত সে এখন ঐ রোডে যেখানে এক পাশে একটা ডোবা আর আরেকপাশে মাঠ
অন্ধকারে ঠিকমত বুঝা যায় না ভালো করে,কিন্তু একটা পিলার দেখে আহানা আন্দাজ করলো সে এখন কোথায়
.
ছেলেগুলো আরও কাছে আসতেসে,আহানা সরে দাঁড়ালো,পিছনে বাকি ৩জন,বাজে ভাষায় গান গাইতেসে তারা
.
আহানা সুযোগ খুঁজতেসে পালিয়ে যাওয়ার,কারন এখানে চিৎকার দিয়েও কাউকে পাবে না সে জানে,কারন বাসা বাড়ি পিছনে ফেলে এসেছে সে,এই জায়গাটা যে গলির জন্য তার কাছে নির্জন মনে হতো এটাই সেই গলি
.
আহানা তার সামনের ২টো ছেলের পাশে ফাঁক দেখে সময় নষ্ট না করে এক দৌড় দিলো,যার পাশ দিয়ে দৌড় দিলো সে আহানাকে ধরার জন্য ওর কাঁধ ধরতে গেলো
কিন্তু আহানা খুব জোর গতিতে দৌড় মেরেছিলো
যার কারণে ছেলেটার হাতটা আহানার হাতের উপর দিয়ে স্লিপ খেয়ে গেলো
তার নখের আঁচড়ে আহানার হাতের উপরিভাগ ছড়ে গেছে,এতই জোরে ধরতে গিয়েছিল যে আহানার জামাও ছিঁড়ে গেছে কিছুটা হাতার উপর দিয়ে
.
আহানা প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে,এখন তার ইজ্জত আগে পরে বাকি সব
দৌড়াতে দৌড়াতে একটা বিল্ডিং এর পিছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়লো সে
ছেলেগুলো অন্ধকারে ঠিক বুঝতে পারলো না আহানা কোনদিকে গেছে
আহানা হাঁপাতে হাঁপাতে উঁকি দিয়ে দেখলো ছেলেগুলো এখনও রোডে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর কিসব বলতেসে
৫মিনিট ধরে আহানা চুপচাপ বিল্ডিংটার পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো ছেলেগুলো চলে যাওয়া পর্যন্ত,ওরা চলে যেতেই আহানা রোডে এসে ভালো করে চারিদিক দেখে ক্ষিপ্রগতিতে বাসায় ফিরে আসলো
রাত ৯টা ৩০বাজে,আজ খুব বাঁচা বেঁচেছি আমি,হাত খুব ব্যাথা করতেসে
জামা খুলতেই আহানা চমকে উঠলো তার হাতে ৪ আঙ্গুলের আঁচড় দেখে
জামাও ছিঁড়ে গেছে,থাক আমার মানসম্মানের কাছে এগুলা কিছু না
জামাটা ধুয়ে মেলতে গিয়ে আকাশের দিকে তাকালো সে
হঠাৎ খুব কান্না পেয়ে গেলো,কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পড়লো সে
আমার এই দুনিয়াতে কেন কেউ নেই?কেন আমার পরিবার নেই?আমাকে এত এতিম কেন বানালে?এত অসহায় কেন বানালে?কি দোষ করেছিলাম আল্লাহ?এতদিন ধরে কত মানুষের পশুত্ব চেহারা সামনে এসেছে সবসময় নিজের ইজ্জত বাঁচিয়ে রেখেছি আমি আর এখন তো মনে হয় নিজের এই সম্মানটুকুও শেষ হয়ে যাবে,কেন আমি একাই কষ্ট পাই,কেন সবসময় আমার সাথেই এমন হয়,না মা আছে না বাবা আছে,না ভাইবোন আছে,আমাকে দেখে রাখার জন্য কাউকে পাঠালে না তুমি,আমার নিজের উপর নিজের দায়িত্ব দিয়েছো তুমি
পারলে পারবো না পারলে মরবো তাই না?
মরতেও দাও না,মরন দাও না আমার!!
আহানা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালো,চুপচাপ খাটের উপর এসে বসে আছে সে,কচুর তরকারি আছে,ভাত রেঁধে খেতে হবে
না খেলে নষ্ট হয়ে যাবে,ভাত বসিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো সে
পরেরদিন ভোরে রোবটের মত হেঁটে যাচ্ছে আহানা
গন্তব্য স্থান মিষ্টিদের বাসা,রাস্তা খালি তাও বারবার গা শিউরে উঠছে তার,এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে হাঁটতেসে সে,বুকের ভেতর ধরফর ধরফর করেই যাচ্ছে,থামাথামি নেই কোনো,কেন এমন হচ্ছে,আচ্ছা আমি আজ আবার আকাশদের বাসার ওদিকে যাব কি করে,যদি ছেলেগুলো আবারও এসে যায়,ভাবতে ভাবতে লিফটের দরজা খুলে গেলো,আহানা অন্যমনস্ক হয়ে লিফট থেকে বের হচ্ছে ধীর গতিতে
শান্ত লিফটের সামনেই ছিল,নিচে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল এতক্ষণ
হঠাৎ লিফটের দরজাটা আটকে যেতে লাগলো,আহানা এখনও বের হয়নি,দরজার মাঝ বরাবর সে
শান্ত চোখ বড় করে হাত এগিয়ে নিয়ে আহানাকে টান দিয়ে বের করে আনলো লিফট থেকে

আর ইউ আউট অফ ইউর মাইন্ড?
.
আহানা চমকে এদিকে ওদিক তাকিয়ে ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করলো
.
কি?কথার উত্তর দিচ্ছো না কেন?
.
আহানা এখনও বুঝতেসে না কি হচ্ছে,কি নিয়ে কথা বলতেসে শান্ত,কাল সারা রাত ঘুমাতে পারেনি আহানা ভয়ের চোটে,এখন একটা ঘোরের মধ্যে আছে সে
শান্ত আহানার কাঁধ ধরে ঝাঁকিয়ে বললো কি হয়েছে তোমার?
আহানা কেঁপে উঠলো ব্যাথায় কারন আঁচড় যেখানে লেগেছিল শান্ত সেটাই চেপে ধরে আছে
আহানা শান্তর হাত সরিয়ে একটু পিছিয়ে গেলো,চুল ঠিক করে বললো না কিছু না
তারপর মিষ্টিদের বাসায় চলে গেলো
.
এই মেয়েটার মাঝে মাঝে কি হয় আমি বুঝি না!!
.
আহানা ভার্সিটিতে এসে মনমরা হয়ে বসে আছে
রুপা বারবার জিজ্ঞেস করতেসে কি হয়েছে
.
আহানা আর কষ্ট চেপে রাখতে পারলো না,কেঁদেই দিলো
ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে
.
কিরে এমন করে কাঁদছিস কেন,দেখি আমার দিকে তাকা,আহানা?কি হয়েছে তোর?কেউ কিছু বলেছে?
.
আহানা চোখ মুছে পাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে
এখানে আর না থেকে বেরিয়ে চলে গেলো সে
রুপা ডাকতে ডাকতে আসতেসে পিছন পিছন
আহানা চলে যাচ্ছে ভার্সিটির থেকে
শান্ত বাইকে বসে যখন বাসায় ফেরার জন্য বাইক ঘুরালো তখনই দেখলো আহানা বের হয়ে যাচ্ছে জোরে হেঁটে হেঁটে
রুপা আর আহানার সাথে দৌড়ে না পেরে ক্যামপাসের মাঝপথেই থেমে গেলো

শান্ত এবার চিন্তায় পড়লো কি হয়েছে তা জানার জন্য
.
আজ আর কদম গুনে নাই আহানা চোখ মুছতে মুছতে হাঁটতেসে সে
কৃষ্ণচূড়া গাছটার কাছে এসে হাঁটার গতি কমিয়ে দিলো
এই রোডটাতে মানুষের চলাচল একদম কম,বলতে গেলেই একদমই নেই
কারন এটা ভার্সিটির পেছনের রোড
আহানা নিচে রাস্তায় বসে কেঁদে যাচ্ছে,কেউ নেই সে জানে তাই চিৎকার করে কাঁদতেসে,সে চাইলেই টিউশনি ছেড়ে দিতে পারে কিন্তু ছেড়ে দিলে তাকে রাস্তায় বাসা বানাতে হবে এসব ভেবে কাঁদতেসে সে,আর টিউশনি না ছাড়লে সেই ছেলেগুলোর মুখোমুখি হতে হবে আবারও
শান্ত থ হয়ে আহানার কান্না দেখছে,কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না সে,পাবে কি করে,কি করে সান্ত্বনা দিবে সেটার কোনো কূল কিনারা সে খুঁজেই পাচ্ছে না
বাতাসে গাছের কৃষ্ণচূড়া ফুল ঝরে আহানার গায়ে, সামনে পড়তেসে একের পর এক
আজ আহানা হাত পাতে নি,তার খেয়ালই নেই তার প্রিয় ফুল ঝরে পড়ে যাচ্ছে
শান্ত কৃষ্ণচূড়া গাছটার পাশের একটা নাম না জানা গাছের শেকড়ে বসেছে
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে হাতপা গুটিয়ে কেঁদেই চলেছে,এই কান্নার থামাথামি নেই কোনো
শান্ত ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে এদিক ওদিক তাকিয়ে আবার আহানার দিকে তাকাচ্ছে,আবার ভাবতেসে কি কারন হতে পারে
সে আহানার খুব কাছে,আহানা টেরও পায়নি,কারন শান্ত একটুও নড়তেসে না,যেটা নড়তেসে সেটা হলো ওর চোখের পাতা,আহানাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পরক করছে সে
আহানা মুখ তুলে লেকটার দিকে তাকিয়ে আছে,আর চোখ দিয়ে নিঃশব্দে পানি গড়িয়ে পড়তেসে তার
লেকটার ওপাশে ঘন গাছগাছালি,আহানা সেটাই দেখতেসে
.
শান্ত এবার দেখলো আহানার চোখের পানি গড়িয়ে ওর থুতনির উপরের ঘাড়ো কালো রঙের তিলটার উপর দিয়ে বেয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছে,শান্ত সেটা দেখে নড়ে উঠলো,তারপর মুখ খুললো
.
আবার কানের দুল হারিয়েছে বুঝি?
.
আহানা চমকে পাশে তাকিয়ে দেখলো শান্ত ওর থেকে একটু দূরে গাছের শেকড়ে বসে চেয়ে আছে ওর দিকে
ব্যাপারটা বুঝতে পেরে জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট টা ভিজিয়ে হাত দিয়ে মুখটা ভালো করে মুছে দাঁড়িয়ে পড়লো সে
.
আপনি এখানে?
.
আমার প্রশ্নের জবাব পেলাম না,তাহলে তোমার প্রশ্নের জবাব কেন দিব?
.
আহানা মুখটা নিচু করে ব্যাগ কাঁধে নিতে নিতে বললো কানের দুল তো কানেই আছে
পালাতে যেতেই শান্ত সামনে হাত দিয়ে ওর পথ আটকালো
আহানা শান্তর চোখে চোখ রাখতেই ওর আরও জোরে কান্না পাচ্ছে,দাঁত মুখ খিঁচে ওড়নাটা মুঠো করে চেপে ধরে কান্না থামানোর চেষ্টা করতেসে সে
.
কাঁদো,আমি দেখি
.
না কিছু হয়নি,হাত সরান,আমার টিউশনিতে দেরি হচ্ছে
.
কিছু না হলে কেউ চিৎকার করে কাঁদে না
.
আমার পার্সোনাল লাইফে ইনটারফেয়ার করার অধিকার আমি আপনাকে দিই নাই
.
আমাকে কেউ অধিকার দেয় না,আমার অধিকার আমি নিজে তৈরি করি,তুমি আমাকে না বললে আমি তোমাকে এখান থেকে যেতে দিব না


আহানা ঘাপটি মেরে রাস্তার মাঝখানে বসে আছে সেই কখন থেকে
শান্ত তার পিছনে গাছটার শেকড়ে বসে একের পর এক ইটের কণা লেকটাতে টুকুর টুকুর করে ফেলতেসে

আহানা বিরক্ত হয়ে পিছন ফিরে শান্তর দিকে তাকালো
.
কি?আগে বলে দিলে আমি তো আর এভাবে বোরিং টাইম স্পেন্ড করতাম না তাই না?
.
আহানা ব্যাগ নিয়ে হাঁটা ধরলো
শান্ত উঠে জ্যাকেট টেনে ঠিক করে দৌড়ে আহানার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
কি সমস্যা আপনার?চিৎকার করে মানুষ ডাকবো?
.
ডাকো না,কে মানা করেছে?তোমার চিৎকারে আমি এসেছি আর কেউ আসবে না
.
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে আবারও কাঁদা শুরু করে দিলো
.
কাঁদলে কাঁদুক আমার কিছু না,কিন্তু থুতনির উপরের তিলটার উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে যায় কেন,আর ব্যাপারটা আমি কেন সহ্য করতে পারতেসি না!
শান্ত হাত উঠিয়ে আহানার হাত ধরে বললো কি হয়েছে সেটা খুলে বলতে
.
আহানার কালকের কথা মনে পড়তেই গা কেঁপে উঠলো শান্তর টাচে,হাত জোরে টান দিয়ে ছাড়িয়ে নিলো সে,
পিছিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো
চলবে♥