ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 08

সকাল -৬.০০

তরীর ঘুম ভেঙে যায়।কারন রাতে অনেক আগেই তরী ঘুমিয়ে পড়েছিলো।বাট বাড়ির কেউই ঘুম থেকে উঠেনি।।ফ্রেশ হয়ে বাড়ির বাইরে বাগানে চলে গেল হাটার জন্য।।সকালে গার্ডেন এ আসা তরীর একটা রুটিন।

মেঘ তার রুম থেকে নিচে তরীকে দেখতে পেল।

মেঘঃ সারারাত এর টেনশনে ঠিক মতো ঘুমাতে পারলাম নাহ আর উনি কিনা সকাল সকাল উঠে আবহাওয়া দেখতে বেড়িয়ে গেছে।কালকের ঘটনার জন্য না আছে একটু ভয় নাহ আছে অন্যকিছু।। ইডিয়েট😠।।(বিরবির করে কথাগুলো বলে রাগি চোখে তরীর দিকে তাকিয়ে রইলো।।নিচে গেল নাহ।।কারন সে চাইছে নাহ তরীর উপর রাগ দেখাতে।।)

সকাল ৯ টায়।।

সবাই ডায়নিং টেবিলে খেতে বসেছে।

নেশাঃ তরী আজ কলেজে নাহ গেলে হতো নাহ

তরীঃ আম্মু আমি এইভাবে কতোদিন ঘরে বন্দী থাকবো

নেশাঃ প্রতিদিন তো বলছি নাহ।।শুধু আজকের দিনটা

তরীঃ বা…

নীড়ঃ আচ্ছা সমস্যা কি যাক নাহ নেশা।।আমি তো বডিগার্ড এর ব্যাবস্থা করেই রেখেছি।

তরীঃ বডিগার্ড 😬।।এখন কি আমাকে এই এলিয়েন দের সাথে নিয়ে যেতে হবে😩

নীড়ঃ এটা কেমন কথা তরী।ওরা এলিয়েন কেন হবে ওরা তো তোমার প্রটেকশন এর জন্য

তরীঃ বাট আব্বু🤕

মেঘঃ মামা আমি বলছিলাম কি আমি প্রতিদিন কলেজ যাওয়ার সময় বৃষ্টি কে নয়ে যাবো।।আমার আসার সময় নামিয়ে দিয়ে যাবো।।শুধু বডিগার্ড এর দরকার কি।।বৃষ্টি যখন পছন্দ করে নাহ।

নীড়ঃ বাট মেঘ তুই কেন এত কষ্ট করতে যাবি।।তোর ও তো ক্লাস থাকবে।।তরীর দিকে খেয়াল রাখবি কখন

মেঘঃ ইউ ডোন্ট ওয়ারি।। আমি ম্যানেজ করতে পারবো

ইশানঃ আই থিংক নীড় এটাই ভালো হবে।।অচেনা লোকের থেকে নিজের লোকদের উপর বিশ্বাস করা টা ভালো

নীড়ঃ কথাটা বিশ্বাস অবিশ্বাস এর নয়।।তরীর প্রটেকশন এর জন্য যাদের ঠিক করা হয়েছে তারাও আমার পরিচিত।। নাট কথা হচ্ছে এতে মেঘের কোন ডিস্টার্ব হবে নাহ তো

মেঘঃ যদি আমার ডিস্টার্ব হতো তাহলে তোমায় বলতাম নাহ মামা

নেশাঃ মেঘ যখন এতো করে বলছে রাজি হয়ে যাও নাহ।।আর এমনিতেও বডিগার্ড দরকার কি মেঘ দেখে শুনে রাখে।

নীড়ঃ ওকে যা ভালো বুঝো তোমরা করো।

তরী টুগুরটুগুর চোখে সবার দিকে তাকালো।

তরীঃ আজব পাবলিক।। আমি কি চাই ওইটাই জিজ্ঞাসা করলো নাহ।।বাট ওই এলিয়েন গুলোর থেকে মেঘ ভাইয়ার সাথে যাওয়া আই থিংক ভালো😶(মনে মনে)


খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই যে যার যার কাজে চলে গেল।।

তরী গিয়ে মেঘের গাড়িতে বসলো।
বাট মেঘের কোন সাড়া নেই।

তরীঃ আজব তো আমি রেডি হয়ে গেছি আর এর আসার নাম নেই।।এতো কিসের সাজ।।হু সাজবেই তো।।কলেজের পেত্নিদের ইম্প্রেস করতে হবে নাহ😤

তখনই দরজা খুলার সাউন্ড পেয়ে তরী চুপ করে সোজা হয়ে বসলো।।আড়চোখে মেঘের দিকে তাকালো।

মেঘ চুপচাপ ড্রাইভ করছে সোজা তাকিয়ে।তরী বারবার আড়চোখে মেঘের দিকে তাকাছে।।বাট কিছু বলছে নাহ।।নিরবতা ভেঙে মেঘই আগে কথা বললো-

মেঘঃ এইভাবে বারবার তাকাচ্ছিস কেন

তরীঃ তোমাকে কিউট লাগছে(বলেই জিহবায় কামড় দিলো।।কারন কথাটা মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে)

মেঘ ড্রাইভিং এর ফাঁকে ভ্রু কুচকে তরীর দিকে তাকিয়ে আবার ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো।

তরী মেঘের কোন জবাব নাহ পেয়ে মুখ ভেঙিয়ে অন্যপাশে ঘুরে গেল।

মেঘঃ তা আগে বুঝি কিউট লাগেনি

তরীঃ হ্যাঁ না মানে সবসময় লাগে🙄(অবাকের চোটে থতমত খেয়ে )

মেঘঃ 🤨🤨

তরীঃ নাহ মানে সানগ্লাস টা শার্টে ঝুলিয়ে নাহ রেখে চোখে পড়ে নাও।।আরো সুন্দর লাগবে😶

মেঘঃ তোর কি হয়েছে বলতো আমার সুন্দরের উপর পরলি কেন

তরীঃ বিয়েই তো হলো নাহ কিছু হবে কোথা থেকে(বিরবির করে)

মেঘঃ কি বিরবির করছিস

তরীঃ কিছু নাহ তুমি মনযোগ দিয়ে গাড়ি চালাও

মেঘঃ তা তো চালাবোই।।আচ্ছা শুন

তরী ঘুরে মেঘের দিকে তাকালো

মেঘঃ এখন গিয়ে সোজা ক্লাসে ঢুকবি।।ক্লাস শেষ হলে আমি নিতে আসবো।।আর কলেজের বাওরে কোথাও যাবি নাহ।।কিছু দরকার হলে আমায় বলবি ওকে।

তরীঃ উফফ আবার তুমি।।আসার সময় আম্মু আর ফুপি একগাদা বলেছে।।আবার তুমি শুরু করলে।।আমি কি বাচ্চা।।আর আমি এমনিতেও কলেজের বাইরে যাই নাহ।

মেঘঃ তাহলে কাল কলেজের বাইরে গার্ডেনে গেলি কিভাবে

তরীঃ ওটা তো তোমার উপর রাগ…….(বলতে গিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে থেমে গেল)

(মেঘ তরীর দিকে তাকিয়ে গাড়ি সাইডে ব্রেক মারলো।।য়ারপর তরীর দিকে ঘুরলো)

তরীঃ আরে গাড়ি থামালে কেন।।আমরা কলেজে যাবো নাহ?

মেঘ তরীর কথার উত্তর নাহ দিয়ে তার দুইহাত ধরলো।।হাতের কালচে দাগ গুলোতে হাত বুলিয়ে

মেঘঃ সরি বৃষ্টি।। তুই তো জানিস আমি আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনাহ।। তাই রাগ টা তোর উপর দেখিয়ে ফেলেছি।।পরের বার থেকে এমন রাগ দেখালে তুই উল্টে আমাকে বকে দিস।।বাট কালকের মতো বোকামি করিস নাহ প্লিজ।।আর আমি ও ট্রাই করবো রাগ টা কন্ট্রোল করার।।প্রমিজ।।এন্ড আবারও সরি।
(বলেই তরীর দুইহাত মুখের সামনে নিয়ে দুইটা কিস করলো)

তরী তো শক।।মেঘ হাতে কিস করে চোখ উঠিয়ে তরীর দিকে তাকালো।।তরীর অবস্থা দেখে মেঘের হাসি পেয়ে গেল।।চোখ গুলো রসগোল্লার মতো বড় বড় করে তাকিয়ে আছে তরী।।মেঘ প্রসঙ্গ পাল্টাতে তরীর হাত ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো আবার।
তরী এখনো হা করে তাকিয়ে আছে।।

তরীঃ এএটা ককি ছিলো😳😕

মেঘঃ কোনটা কি ছিলো(ভ্রু কুচকে)

তরীঃ এই যে একটু আগে

মেঘঃ কি একটু আগে

তরীঃ তুমি আমার হাতে কিস….

তরী শেষ করার আগেই মেঘ ধমক দিলো

মেঘঃ কি পাগলের মতো কথা বলছিস😡

তরীঃ আপনিই তো একটু আগে…

মেঘঃ আর ইউ মেড।।আমি তোকে কেন কিস করবো😠

তরী চুপ হয়ে গেল।

তরীঃ সত্যি তো উনি আমাকে কেন কিস করবে।।বাট আমার তো যতোদূর মনে আছে উনি আমার হাতে কিস করেছেন।তাহলে।।আমি কি এখন দিনের বেলাও স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম নাকি।।তবুও আবার এমন😣(মনে মনে ভাবতে লাগলো তরী)

এইদিকে মেঘ পারছে নাহ হেসে গড়াগড়ি খায়।।তরী যে কি কি ভাবছে তা ভেবেই মেঘের হাসি আসছে।।

কলেজের সামনে এসে মেঘ জোরে জোরে গাড়ির হন বাজাতে লাগলো
তরীর ঘোর কাটলো।

তরীঃ কি করছো তুমি।।চুপচাপ কলেজে যাও নাহ।।এতো হন বাজাচ্ছো কেন

মেঘঃ ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন আমরা কলেজ পৌছে গেছি

তরী গাড়ির ফ্রট গ্লাস দিয়ে দেখলো তারা কলেজের পার্কিং সাইটে।

তরীঃ আমি তো খেয়ালই করিনি😅😅

মেঘঃ নামো

তরীঃ জি????????

মেঘঃ বলছি গাড়ি থেকে নামো।।ক্লাস কি গাড়িতে বসেই করবে নাকি

তরীঃ হুহ।।আমি কি বলেছি গাড়িতে ক্লাস করবো(হনহন করে বেরিয়ে ধপ করে গাড়ির দরজা লাগিয়ে দিলো)

মেঘঃ আরে,এতো জোরে গাড়ি লাগায় কেউ।।ভেঙে যাবে তো

তরীঃ যাক।।সাথে তুমি ও ভেঙে যাও😒

মেঘঃ মানে🙄

তরী কথার জবাব নাহ দিয়ে বিরবির করতে করতে ক্লাসের দিকে চলে গেল

মেঘ ও তরীর কান্ড দেখে মুচকি হাসি দিলো।

গাড়ি থেকে বেরিয়েই রোহান কে দেখতে পেল।

রোহানঃ বাহ বাহ আগ্নেয়গিরি আজ ঝর্ণার স্রোত হলো কিভাবে

মেঘঃ মানে🤨

রোহানঃ না মানে খুশি খুশি লাগছে তাই বললাম

মেঘঃ আমার হাসির কারন তো একটাই 😉

রোহানঃ ওহো তাই বলি মেঘ বাবু এতো খুশি কেন।।তা কি এমন হলো যে এতো খুশি হুম(দুষ্টু হেসে)

মেঘঃ তোর নাহ জানলেও চলবে।এখন ক্লাসে চল

রোহান আর মেঘ এগোতে নিলো আদ্র এসে পথ আটকালো

আদ্রঃ হাই রোহান।।হোয়াটস আপ

রোহানঃ এই ছেলেটার কি প্রাণ এর ভয় নেই(বিরবির করে)

আদ্রঃ কি বিরবির করছিস

রোহানঃ কিছু নাহ😒

আদ্রঃ ওকে তো মেঘ বাবু আমার বেবিডল কেমন আছে🥰

মেঘ মুচকি হেসে আদ্রর সামনে গিয়ে দাড়ালো।।
আদ্রর শার্টের কলার ঠিক করে

মেঘঃ মুড টা খারাপ করতে চাইছি নাহ রে আদ্র।আজ নাহ আমার মুডটা খুউউব ভালো।।কেন জানিস আজ সকালে নাহ আমি বৃষ্টিকে কি….(লজ্জা পাওয়ার এক্টিং করে)থাক বললাম নাহ তুই তো বুঝিসই তাই নাহ😉।

বলেই আদ্রর শার্ট ঝাড়া দিয়ে আদ্রকে পাস করে শার্ট থেকে সানগ্লাস টা ছুটিয়ে চোখে লাগিয়ে শিস বাজাতে বাজাতে চলে গেল।

আদ্র মেঘের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো

আদ্রঃ বাহ মেঘ খেকা তাহলে তুই ও শুরু করে দিয়েছিস।।গুড বেরি গুড।।এখন তাহলে যা করার খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে।

এইদিকে
কালকের সিব ঘটনা মেঘ রোহানকে খুলে বললো।

রোহানঃ আই থিংক আদ্র কিছু একটা প্লেন করেছে মেঘ।।তাই ও এতোটা ঠান্ডা মাথায় সব কিছু করছে

মেঘঃ আই নো রোহান।।বাট আমি ও এখন ওর কোন ক্ষতি করতে পারবো নাহ।।কারন তুই জানিস আমি এমন কিছু করতে চাই নাহ যার ফলে আমার ক্যারিয়ার এ কোন দাগ লাগুক।।আর আদ্র সব জায়গায় লোক লাগিয়ে রেখেছে।।ওকে কিছু করলে সে যদি ওই ভিডিও ভাইরাল করে দেয় তাহলে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এর ১২ টা বেজে যাবে।

রোহানঃ দরকার কি রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এর।।ডাক্তারি পড়ছিস ওইটা ই কন্টিনিউ কর নাহ।

আদ্রঃ ব্যাপার টা নিয়ে আমি এখনো সিউর হতে পারছি নাহ।।আমি চাইছি রাজনীতি বাট মম আর ডেড এইসব পছন্দ করে নাহ।।তাই তো ডাক্তারি পড়াচ্ছেন।।নিজের ইচ্ছাটাও বাদ দিতে পারি নাহ আর মম ডেড এর কথাটা ও ফেলতে পারি নাহ।।সেইসব বাদ দে।।এইসব পড়ে দেখা যাবে।

(আসলে মেঘের ইচ্ছা হলো নেতা হওয়া।।বাট রাজনীতি তে অনেক রিক্স থাকে তাই ইশান ঈশা কেউই চায় নাহ মেঘ রাজনীতি করুক।।বাট আদ্রকে টপকে মেঘ কলেজের বিপি হয়েছে।।তাই যদি সে মারামারি করে তাহলে তাকে এই বিপি থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হবে।।পাশাপাশি এই খবরটা লিক হলে মেঘ কখনোই লিডার হতে পারবে নাহ।।তাই আদ্রকে চেয়েও কিছু করতে পারছে নাহ।)

এখন আপনারা বলতে পারেন মেঘ নিজে কিছু নাহ করে অন্যদের দিয়ে করাক।।বাট এইখানেও প্রবলেম আছে।।কারন আদ্রর কোন ক্ষতি হলে তার প্রতিপক্ষ তথা মেঘের উপরই আঙুল আগে উঠবে।।আর নায়ক মানুষ তো😐।।নিজের কাজ অন্যরে দিয়ে করাইবো নাহ।।

আমার রাজনীতি সম্পর্কে আইডিয়া ০%।।জানি নাহ কতোটুকু কারেক্ট লিখছি।।ভুল হলে বিরিয়ানির এলাচির মতো দেখেও নাহ দেখার ভান করে থাকবেন😶


চলবে