বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড Season 2 !! Part- 28

তিথি কিছু ক্ষন বাগানে হাঁটে,,,বাগানের বাতাস যেন তাকে আরো বেশি মুগ্ধ করছে,,,,ফুল গুলোর সে মধুর সুভাস যেন সব সুভাস কে হার মানায়,,,এতো সুন্দর ঘ্রাণ তো শুধু ফুলের এই হয়,,,,
বাগানের এক পাশে একটা সিট রয়েছে তিথি সিটে বসে হাত দুটো নিজের বাহু হালকা ধরে চোখ দুটো বন্ধ করে ঠান্ডা শীতল বাতাস উপভোগ করছে,,,,চোখ দুটো বন্ধ করার সাথে সাথে আবিরের সে ঘুমান্ত চেহারাটি তিথির সামনে ভেসে উঠে,,,,আবির যে পুরো বাচ্চাদের মতো ঘুমায়,,,,তার সে ঘুমান্ত চেহারা যে আরো বেশি মায়াবী,,,,তিথির ভেবেই খুব আনন্দ লাগছে আবির আর এমন পরিবার পেয়ে,,, প্রত্যেক মেয়েরা তো এমনই একটা পরিবার আর জীবন সাথী চায় ভাগ্যে যে তিথির এমন হবে সে কল্পনা ও করতে পারছে না,,,,চোখ খুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে
তিথিঃ তোমায় যতো ধন্যবাদ বলবো তা কম হবে আল্লাহ,,,হাজার হাজার শুকরিয়া আল্লাহ এমন পরিবার আর এমন জীবন সাথী আমায় দেওয়ার জন্য,,,,,আমার বাবা-মা কে জানি না কিন্তু এদের পেয়ে আমি আমার পরিবার বাবা-মা সবাইকে ফিরে পেয়েছি,,,,আল্লাহ সত্যি তুমি যা করো ভালোর জন্য,,,,,হয়তো এই বার আমার সব কষ্ট মুছে যাবে আমার আবির আমাকে সব কষ্ট থেকে দূরে রাখবে জানি,,,,তুমি আমার আবিরকে আমার জীবনে ফেরেশতা হিসেবে পাঠিয়েছো,,,শুকরিয়া আল্লাহ হাজার শুকরিয়া,,,,

হঠাৎ গাড়ির হর্ন বেজে উঠে,,,তিথি গেটের দিকে তাকিয়ে দেখে বড় একটা গাড়ি গেটের মধ্যে দিয়ে বাড়ির ভিতরে আসছে,,,,,
তিথিঃ এতো সকালে কে আসলো আবার,,,,,,
গাড়ি থেকে নিয়ার বাবা মিস্টার আশরাফুল ইসলাম নেমে ড্রাইভারকে গাড়িতে থেকে জিনিস গুলো বের করে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যেতে বলে,,,,তিথি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এতো জিনিস বাড়ির মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে আর এই লোকটাকে,,,,,আশরাফুল ইসলাম বাড়ির মধ্যে যায়,,,,আবিরের মা সিড়ি দিয়ে নামে,,,আবিরের মা আশরাফুল ইসলাম এর সামনে এসে সালাম দিয়ে বলে
আবিরের মাঃ আসসালামু আলাইকুম,,,,কে আপনি??
আশরাফুল ইসলামঃ ওয়ালাকুম আসসালাম৷ ,, আমি আশরাফুল ইসলাম,,,,,রাশিদ সাহেব কি আছে???
আবিরের মাঃ জ্বি আছে,,,আমি ডেকে দিচ্ছি আপনি বসেন,,,,
আবিরের মা আবিরের বাবাকে ডেকে আনে,,,,,আবিরের বাবা এসে নিয়ার বাবার সাথে হেন্ড সেক করে,,,আবিরের মা নাস্তা রেডি করতে কিচেনে যায় আর শীমাকে নাস্তা রেডি করে টেবিলে দিতে বলে,,
আশরাফুলঃ আসলে এতো সকালে এসেছি কিছু মনে করবেন না,,,আমি আসলে,,,,,
আবিরের বাবাঃ আরে এতে সমস্যা নাই,,,,আপনি কেন এসেছেন??
আশরাফুলঃ আমি আপনার সাথে আর ভাবির সাথে একটা কথা বলতে আসছি,৷
আবিরের মা সোফায় বসে বলে
আবিরের মাঃ জ্বি বলুন,৷

আশরাফুলঃ আমি আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছি আবিরের জন্য,,,আমার মেয়ে আবিরকে খুব ভালোবাসে,,,,,,তাকে বিয়ে করতে চায়,,,,,আমার মেয়েটা আবিরকে পাগলের মতো ভালোবাসে প্লিজ মানা করবেন না,,৷
আবিরের মাঃ আবিরের বিয়ে আগে থেকে ঠিক আছে,,,,আমার ছেলে যাকে ভালোবাসে তাকে বিয়ে করছে৷ এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিয়ে,,,বিয়ের সব আয়োজন ও শুরু হয়ে গেছে,, সরি ভাই আমরা কিছু করতে পারবো না,,,,
আশরাফুলঃ যতো টাকা লাগে আমি দিবো,,,যা লাগে আমি দিবো,,আমার সব সম্পদ আমি আবিরের নামে লেখে দিবো তারপর ও প্লিজ আমার মেয়েটাকে এই বাড়ির বউ করেন,,
আবিরের বাবা এই বার পুরো রেগে যায়,,,
আবিরের বাবাঃ টাকার লোভ দেখাছেন তাও রাশিদ রহমানকে😡😡আমার ছেলে কোনো পন্য নয় যে তাকে বিক্রি করবো😡😡আমার ছেলে যাকে ভালোবাসে তাকে বিয়ে করবে৷,, এই বাড়ির বউ শুধু একজন হবে আর তা হলো তিথি,,,, তিথি ছাড়া এই বাড়ির বপু কেউ হবে না বুজলেন
আশরাফুলঃ আমার কথা শুনেন
আবিরের বাবাঃ আপনার আর কোনো কথা আমি শুনতে চাই না,,এসেছেন নাস্তা করুন আর চলে যান,,,,
আশরাফুল ইসলাম রেগে উঠে চলে যায় আবার পিছনে তাকিয়ে বলে
আশরাফুলঃ আত্মীয়তা করতে এসেছি কিন্তু আপনি শত্রু বানিয়ে দিলেন,,,😡
আবিরের বাবাঃ দরজা ওই দিকে যেতে পারেন,,,আর আপনার এই সব কিছু নিয়ে যান,,,
আশরাফুল ইসলাম চলে যাওয়ার সময় দরজায় চোখ পড়ে তিথির উপর,,,তিথি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব শুনছে এতো ক্ষন,,,আশরাফুল ইসলাম তিথির দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে চলে যায়,,,তিথি দূরে এসে আবিরের মাকে জড়িয়ে ধরে,,,
আবির ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখে আবিরের মাকে তিথি জড়িয়ে ধরে আছে,,,
আবিরাঃ বাহা এখন আমাকে সবাই ভুলে গেছে,,,,(অভিমানের সুরে)
আবিরের মাঃ তুই কে?
আবিরঃ আমি কে😱😱😱এই দিনটা দেখতে হলো 😢😢আজকে বাচ্চা বলে এতো অত্যাচার 😢😢
আবিরের মা,বাবা আর তিথি এক সাথে হেসে উঠে,,সবার হাসি দেখে আবির ও খিলখিল করে হেসে দেয়,,,,,আনন্দ যেন পুরো রহমান বাড়িতে,,,,,সবাই নাস্তা করে আবির আর তিথির বিয়ের সব প্লেন করছে,,,,,আনন্দ যেন আজকে পুরো বাড়ি বরে যাচ্ছে,,,,,,
তিথির আনন্দ যেন হাজার গুণ বেরে যায়,,,,,
দেখতে দেখতে দুই দিন কেটে যায়,,আবির আর তিথির বিয়ের প্লেন নিয়ে সবাই ব্যস,,,,মেহেদী অনুষ্ঠান ,,হলুদ অনুষ্ঠান,,,,তার মধ্যে রং এর অনুষ্ঠান ও সবাই করতে চায়,,,,,,সব কিছু প্লেন করা হয়ে যায়,,,,
আবিরের মাঃ আবির তোরা কি জীবনে মানুষ হবি না,,,,,এতো দেরি কেন করিস,,,,,আজকে তোর নানি আসবে সে কখন বলছি নিয়ে আসতে কিন্তু কথা তো তোর কানেই যায়,,,এখন তো একটু ঠিক হও বাপ,,,
তিথিঃ নানি মা আসছে???

আবিরের মাঃ শুধু তোমার নানি মা নয় সবাই আসছে,,,তোমার আর আবিরের বিয়ে বলে কথা,,,
আবির শার্ট এর হাতা বটতে বটতে তার মায়ের কাছে এসে বলে
আবিরঃ আজকে আমার আসল জিএফ আসছে একটু ঠিক করে কি রেডি ও হতে দিবে না,,,,,
তিথি আবিরের মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,,,,,আবির তিথির দিকে মুচকি হেসে তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ আসছি মা,,,,,
আবিরের মা নিজের রুমে চলে যায় আবর তিথির পাশে এসে তিথির কানের কাছে মুখ এনে বলে
আবিরঃ আমার জিএফ এই দুনিয়ার সব চেয়ে সুন্দরী মেয়ে,,,যাকে আমি খুব বেশি ভালোবাসি,,,,,আমার তো ইচ্ছে করছে তাকে বিয়ে করি কিন্তু,,,,
তিথি রেগে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করছেন😡😡তাকে গিয়ে করুন যতসব
তিথি রেগে হনহন করে রুমে চলে যায়,,,,,
আবির হাসতে হাসতে শেষ তিথির রাগ দেখে,,,ফোনটা বের করে কাকে যেন কল দিয়ে বের হয়ে যায়,,,,
তিথি বারান্দায় দাঁড়িয়ে রেগে পুরো আগুন,,,আবিরকে গালি দিতে থাকে
তিথিঃ হারামি একটা,,আস্তা একটা গরু মহিষ,,হাতি গন্ডার,,,এনাকন্ডা,,কালো কুমির,,😡😡😡😡ইচ্ছে তো করছে কেটে কুচি কুচি করে ঘি দিয়ে রান্না করি আর মাছদের খাওয়াই😡😡😡হারামি একটা তার নাকি আসল জিএফ আছে😢তাকে নাকি বিয়ে করতে চাইছে আমার জন্য নাকি পারে নাই😢😢এই রকম মিথ্যাবাদী আর দেখি নাই,,এক তো বলে আমাকে লাভ করে আবার এখন তার জিএফ😢😢
তিথির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,,, চোখের পানি মুছে নিজে নিজে বলে
তিথিঃ এখনো তিথি কি তা চিনে নাই এই হারামি😡😡আমার জায়গায় অন্য কাউকে দিবে😡😡দেওয়াচ্ছি,,,এমন মজা বোজাব এই হারামি আর তার ওই সুন্দরী জিএফকে যে হারে হারে টের পাবে তিথি কি হুম,,,(নাক হাত দিয়ে একটা ঘষা দিয়ে বলে উঠে,,)
(সবাই রেডি তো আবির আর তিথির বিয়ের জন্য😍😍😍সবাইকে আমি দাওয়াত দিচ্ছি তিথি আর আবিরের বিয়ের,,প্রত্যেক অনুষ্ঠানে আসবেন কিন্তু 😜😜গিফট ছাড়া কেউ আসবেন না বলে দিচ্ছি না হলে তিতকরলার রস খাওয়ামু 😂😂😜😜😁)