বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -4 !! Part- 06

তিথি চোখ খুলে চোখ গুলো বড় বড় করে কিছু বলতে ও পারছে না আবির তার মুখ চেপে ধরে আছে,,,,আবির তিথির অনেক টা কাছে এসে যায়,,,আবিরের চুল বেয়ে পানি গুলো তিথির মুখে পড়ছে,,,আর তিথি তো সে কখন থেকে ছুটার চেস্টা করছে,,,
আবিরঃ চিংড়ি মাছের মত এতো তিড়িংবিড়িং কেন করো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো
তিথিঃ হুউউউউউ
আবিরঃ বোবা নাকি কথা বলতে পারো না,,,
তিথি চোখ গরম করে ইশারা দেয়,,,আবির খেয়াল করে সে তো তিথির মুখ চেপে ধরে আছে,,
আবিরঃউফফস সরি,,,
আবির তাড়াতাড়ি তিথির মুখ

থেকে হাত সরিয়ে নেয়,,তিথি এক্সেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো,, রাগী লুক নিয়ে আবিরের দিকে তাকিয়ে বলে
তিথিঃ আপনি আসলে মানুষ নাকি আস্তা একটা সাদা হাতি,,,উফফফ বাবা আমার ধম বন্ধ হিয়ে আসতো এখন
আবিরঃ চুপ ওকে ফালতু বকবক কম করবে
তিথির নজর যায় আবিরের বডির উপর,,গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি থেকে যায়,,,,তাওয়াল ছাড়া আর কিছু পড়ে নাই আবির,,,আবিরকে এমন অবস্থা দেখে তিথি আবার চিৎকার দিতে লাগে আবির আবার মুখ চেপে ধরে,,,তিথি তার চোখ বন্ধ করে রাখে,,,
আবিরঃ উফফ সমস্যা কি তোমার চিল্লাও কেন এতো,,,
তিথিঃ চুপ,,,,
আবিরঃ চোখ খুলো আর চোখ অফ করে কেন আছো হ্যাঁ
তিথি তার চোখ খুলে না,,,আবির তিথির চোখ বন্ধ থাকা দেখে কিছুটা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,বেশ লাগছে এমন চোখ অফ থাকাতে তাকে,,,
আবিরঃ চোখ খুলবে নাকি
তিথি তার চোখ খুলে,,,আবিরের দিকে তাকিয়ে আবার অন্য দিকে তাকায়,,
আবিরঃ আমি হাত সরাচ্ছি মুখ থেকে একদম চিল্লাবে না,,না হলে খবর আছে বলে দিলাম,,
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়,,আবির তিথির মুখ থেকে হাত সরিয়ে দেয়,,তিথি অন্য দিকে ফিরে বলে
তিথিঃ ছি আপনার লজ্জা করে না একটা মেয়ের সামনে এইভাবে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে,,,
আবিরের হুশ এতো ক্ষনে ফিরে যে সে কি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে,,,,তবুও সে বলে উঠে
আবিরঃ তোমার লজ্জা করে না একটা ছেলের রুমে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে আবার তো অই ছেলেকে বিনা কাপড়ে দেখতে ছি ছি কেমন মেয়ে তুমি
কথা গুলো শুনে তিথি প্রচুর রেগে যায়,,রাগে তো শেষ আর আবির ও মনে মনে হাসছে এই ভেবে যে মেয়েটাকে অল্পতেই রাগানো যায়,,
তিথিঃ ওহ হ্যালো মিস্টার আপনার মত জিরো বডি ওয়ালা লোক কে দেখার এই তিথির শখ নাই ওকে(আবিরের দিকে ফিরে)
আবিরঃ ওহ রেলি??
তিথিঃ দূর (আবার পিছনে ফিরে যায়)কেমন বেশরম লোক এখনও এইভাবে দাঁড়িয়ে আছে,,,
আবিরঃ আমার রুম আমার যেমন ইচ্ছে তেমন দাঁড়াবো এতে কার কি হ্যাঁ
তিথিঃ ভদ্রতা বলতে তো কিছু জানেন না সিউর,,,
আবির মুচকি হাসি দিয়ে পাশে থাকা একটা টাওজার আর গেঞ্চি পড়ে নেয়,,,,এই দিকে তিথি বকবক করতেই থাকে পিছনের দিকে তাকিয়ে,,,
আবিরঃ নেক্সট টাইম আমার রুমে আসার আগে নক করে আসবে ওকে,,,
তিথিঃ ওহ মিস্টার আপনার রুমে আসার আমার শখ নাই ওকে,,আপনার আম্মু বলছে আপনাকে ডাকতে তাই,,,
আবিরঃ হুম বুজছি এই দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারো
তিথিঃ ছি ছি আমি আপনার মত এতো বেশরম না যে এইভাবে ইহুউউউ
আবিরঃ মাথায় যে গোবর আছে সন্দেহ নাই,,,
তিথিঃ কিছু বললেন কি?

আবিরঃ নাথিং মিস বকবক
আবির রুম থেকে বের হয়ে যায় আর তিথি এই দিকে বকবক করে
তিথিঃ আপনার মত এমন খবিশ রাবিশ খচ্ছর লোক কে যদি আমাদের এলাকায় এইভাবে দেখতো না তাহলে নালায় দশ বার চুবিয়ে তুলতো হুম,,
তিথি তার মনের মত ইচ্ছে মত বলে যায়,,,
তিথিঃ আমি এই বজ্জাতকে এতো কিছু বলছি আর সে কিনা এতো চুপ,,পরিবেশ টা এতো চুপচাপ এইটা মানা যাচ্ছে না,,বেডা তিথি মনে হচ্ছে এই বজ্জাত উপরে উঠে গেছে ইন্না লিল্লাহি
তিথি পিছনে অনেক সাহস নিয়ে তাকিয়ে কেউ নাই,,,পুরো রুম খালি,,,উঁকি দিয়ে আবার বারান্দায় তাকায় দেখে সেখানে ও নাই,,,
তিথিঃ গেলো কই এই বজ্জাত,,,হুম বুজেছি তিথি দ্যা গ্রেট কে ভয় পেয়ে পালিয়েছে,,,যাই হোক বজ্জাত টা আস্তা একটা রাম ছাগল এইভাবে একটা মেয়ের সামনে খালি গায়ে আসে ছি ছি,,
তিথি বকবক করেই যাচ্ছে নিজে নিজে,,
এইদিকে আবির নিচে এসে সবার সাথে নাস্তার টেবিলে বসে,,
মাঃ কিরে আবির তোকে ডাকতে গিয়ে তিথি আবার কই গেলো?
আবিরঃ মনে হয় পাবনায় গেছে আসতে দেরি হবে,,,
আরিশা হেসে দেয়,,,মা কিছু টা রাগী সুরে বলে
মাঃ চুপ কি সব বলিস মেয়েটা শুনলে কষ্ট পাবে,,,
আবিরঃ পাবে না মা,,,পাগলরা আবার কষ্ট পায় না
এই দিকে তিথি সিড়ি দিয়ে নামছে আর কথা গুলো শুনে আবিরের দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকাচ্ছে,,,
আবিরঃ আজ নাস্তা কে বানাইছে,,,
মাঃ কেন?
আবিরঃ এইটা নাস্তা নাকি অন্য কিছু ছি কি বাজে টেস্ট
তিথি রাগে ফুলছে,,,
আবিরঃ এমন বাজে খাবার আজ পর্যন্ত খাই নাই কি সব বানাও মা সকাল সকাল নাস্তা টা পর্যন্ত ঠিক করে করা যায় না,,,
মাঃ আবির আস্তে বল,,আজ নাস্তা তিথি বানাইছে মেয়েটা শুনলে মনে কষ্ট নিবে,,
আবিরঃ ওহ আচ্ছা তাই তো বলি এতো ফালতু রান্না কার,,,এমন বাজে টাইপের নাস্তা তো অই মিস বকবক এই বানাতে পারে,,
আবির একটার পর একটা বলেই যাচ্ছে তিথির খুব রাগ লাগছে,,রাগে তো তিথি পারছে না আবিরকে পিঠানি দিতে,,
আবির নাস্তা না করেই উঠে যায়,,,নিজের রুমে গিয়ে রেডি হয়ে অফিসে চলে যায়,,আর তিথি তো রাগে শেষ এই ভেবে যে আবিরকে কি ভাবে মজা বুজাবে,,
তিথিঃ তিথিকে অপমান এইটা তিথি কখনো সহ্য করবে না আজ এই অপমান এর প্রতিশোধ তো আমি নিবোই,,,
আরিশা কলেজ চলে যায় বাবা চাচা ওরা ও অফিস চলে যায় আর দাদি তো পার্লারে,,,
তিথিঃ আজ পুরো বাসা খালি যে আম্মু
মাঃ হুম সবাই চলে যায় আমিও যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু তুমি একা তাই,,,
তিথিঃ ওহ আচ্ছা,,,আচ্ছা আমি রুমে যাচ্ছি
মাঃ তিথি শুনো
তিথিঃ জ্বি
মাঃ এখানে ভালো লাগছে তো?
তিথিঃ অনেক,,,
মাঃ আচ্ছা শুনো
তিথিঃ জ্বি আম্মু বলুন,,,
মাঃ তোমার জন্য রুম রেডি করেছি,,,আবিরের রুমের ডান পাশের রুমটা পরিষ্কার করে দিয়েছি,,আর আরিশা আসুক বিকালে শপিং করতে যাইও কিছু শপিং করে নিয়ে আসিও কেমন,,, আর কিছু লাগলে আমাকে বলবে একদম লজ্জা পাবে না
তিথিঃ লজ্জা তো আমার ডিকশনারিতে একটুও নাই,,আমার তো যা দরকার সরাসরি বলি,,,
মা হাসতে থাকে
তিথিঃ সরি না মানে আসলে আমি আর কি অই,,
মাঃ পাগলি একটা,,,আচ্ছা যাও নিজের রুমে যাও
তিথি নিজের মাথায় হাত দিয়ে হাসতে থাকে,,
তিথি তার রুমের সামনে এসে ভাবে
তিথিঃ এই বজ্জাত এর পাশের রুম আমার হে আল্লাহ আমার মত মাসুম বাচ্চা মেয়েটাকে এই বজ্জাত রাক্ষসের পাশের রুমে কেন দিলেন যদি আমাকে কাঁচা গিলে খায়,,না না তিথি কি ভাবছিস এমন কিছু না হু,,
তিথি এই সব ভাবতে থাকে কিছু ক্ষন ভেবে নিজের রুমে যায়,,
তিথি তার রুম টা ভালো করে ঘুরে দেখছে,রুম টা বেশ সুন্দর বেশি সুন্দর লাগে বারান্দা টা বাগানের ঠিক নিচে,,,রুমটা ও অনেক সুন্দর করে সাজানো কিন্তু তিথির কাছে কেমন যেন লাগছে তাই দে নিজের রুমটা নিজে খুছাতে থাকে,,
বেডের উপরে কিছু তারা মত লাইট,,,
তিথি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায় সামনের বিল্ডিং এর একটা ছেলে ছাদ থেকে তিথির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে
তিথিঃ জীবনে কি মেয়ে দেখিস নাই নাকি?সাদা কাকের মত ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছিস কেন হ্যাঁ (চিৎকার করে)
তিথির কথা গুলো শুনে ছেলেটি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে যায়,,,,
এই দিকে তিথি গভীর চিন্তায় আছে আবিরকে কিভাবে মজা বুজাবে,,,আবিরের রুমে গিয়ে দেখে আবিরের রুম বেশ গুছানো,,,রুমের উপর পাশে বড় একটা সুইমিং পুল,,,

তিথিঃ আরে বাপ রে রুমের সাথে সুইমিং পুল বাহা বাহা বড় লোকের বিরাট কারবার এতে আমার কি আমার তো ব্যস একটা মিশিন বজ্জাত কে মজা বুজানো,,
তিথি প্লেন করে রাখে কি করবে,,
এই দিকে,,,
আবির কয়েকটা মিটিং করে খুব খারাপ লাগছে আজ শরীর টা,,,ক্লান্ত বেশি লাগায় বিকাল করে এসে যায় বাসায়,,,ড্রইংরুমে এসেই বসে
মাঃ কিরে বাবা আজ তাড়াতাড়ি আসলি যে শরীর ঠিক আছে,,
আবিরঃ হুম পানি দাও মা
মা পানি আনায় আবির পানি খেয়ে উঠে দাঁড়ায়,,
আবিরঃ আমি একটু রেস্ট নেই কেউ যাতে বিরক্তি না করে আর আমার রুমে যাতে একদম না যায়,,,
মাঃ আচ্ছা কেউ যাবে না কিন্তু কিছু খেয়ে তো যা,,
আবিরঃ খেয়েছি অফিসে মা আমি আসি কেমন
আবির উপরে চলে যায়,,,রুমের দরজা খোলা পেয়ে সাভাবিক ভাবে,,,জুতা টা খুলে বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে চোখ টা শুধু অফ করে তখনই কানে আসে একটা বেসুরা কানের আওয়াজ
🎵🎙আমি কাক দেখেছি সাদা কাক যার মাথা টাক টাক,,,🎙🎵🎼
আবিরঃ এতো বাজে আওয়াজ টা কার যে এতো ফালতু গান গেয়ে মাথা খারাপ করছে,,,
আবির বিছানা থেকে উঠে চারপাশে তাকায় দেখে না তার রুম তো ঠিক আছে,,কিন্তু সুইমিং পুলের সাইট থেকে আওয়াজ আসছে আবির গ্লাস ওয়ালা দরজা টা খুলে যা দেখে তার জন্য সে মোটে ও প্রস্তুত ছিলো না,,
তিথি এক গাঁধা কাপড় জুতা সব নিয়ে ধুচ্ছে আর গান গাচ্ছে,,
🎵🎶আমি কাক দেখেছি সাদা কাক যার মাথা টাক টাক🎙🎼
আবিরঃ হোয়াট দ্যা হেল?

তিথিঃ ওহ আপনি জানেন এই পুকুর টার পানি না অনেক পরিষ্কার,,,আমার জুতা গুলো বেশ চকচক করছে দেখেন,,,
আবিরঃ পাগল নাকি উঠো
তিথিঃআরে আজিব,,,আপনি ও আসেন আচ্ছা আপনার কাপড় জুতা যা আছে আমাকে দেন আমি এই পুকুর থেকে ধুয়ে দিবো
আবিরঃ চুপ একদম,,,,সমস্যা কি তোমার হ্যাঁ
তিথিঃ আমার কি সমস্যা হবে,,আমি তো কাপড় আর জুতা ধুচ্ছি ময়লা হয়ে গেছে তাই,,
আবিরঃ ওয়াশিং মেশিন আছে,,,এইটা সুইমিং পুল তোমার এই জুতা কাপড় ধুয়ার জায়গা না,,
তিথিঃ আমার কাছে তো পুকুর মনে হয়েছে আর পুকুরে তো এইসব ধুই তাই,আচ্ছা পরিষ্কার করে দিবো
আবিরঃ পুরো পানি নষ্ট করে আবার বলে কিনা,,,অই মেয়ে তুমি কি আসলে পাগল সুইমিং পুল আর পুকুর এর মধ্যে পার্থক্য বুজো না?
তিথিঃ হু দেখুন আমি একবারে একটা ডুব দিয়ে তারপর আসবো আপনি যান,,
আবিরঃ হোয়াট???
তিথিঃ দেখুন ইংলিশে আমার এলার্জি আছে তো একটু দয়া করে কম বলিয়েন,,,
আবির তো রাগে শেষ তার এতো সুন্দর সুইমিং পুল এর সাইট তিথি সাবানের পানি দিয়ে শেষ করে দিচ্ছে,,,
আবির এই দিকে রাগে শেষ আর তিথি কাপড় গুলো জোরে আছার দিচ্ছে আর গান গাচ্ছে,,
তিথিঃ🎼🎙আমি কাক দেখেছি সাদা কাক যার মাথা টাক টাক🎶🎵
আবিরের এইবার প্রচুর রাগ উঠে গান শুনেই,,,
আবিরঃ তোমার এই বাঁশের মত মাইক টা বন্ধ করবে,,এতো ফালতু গান আর আওয়াজ যে কাক গুলো আত্নহত্যা করবে এইসব শুনে,,
তিথিঃ কি বললে আপনি????? (দাঁড়িয়ে যায়)
আবির তিথির সামনে আসে তিথি ও প্রচুর রেগে আছে দুইজনে দুইজনের চুল ছিড়ার অবস্থায় আছে,,
তিথি সুইমিং পুলে অলরেডি অনেক টা ভিজেছে যার কারনে সে অর্ধেক ভিজা,,,সাবানের পানিতে পা রাখতে না রাখতে পা পিছলে যায় আর আবিরের গায়ে পড়ে,,আবির ব্যালেন্স করতে একটু পিছনে যায় কিন্তু সাবানের পানির কারনে আবিরের ও পা পিছলে যায় আর আবির তিথি দুইজনে সুইমিং পুলে ধপাস করে পড়ে,,
চলবে,,,,,