Psycho is Back

Psycho is Back !! Part- 05

চোখ মেলে দেখি,
একটি ছায়ামূর্তি।। যা আমার পাশে বসে!মুহূর্তেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম ভয়ে।গলা দিয়ে আওয়াজ আসছে না আমার।। ঘামতে শুরু করেছি রীতিমতো।। আবার মিটমিট করে চোখ খুলে দেখি।। আমার পাশে কেউ নেই।। সাথে সাথে পাশে থাকা টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে দেখি, আসলেই কেউ নেই।। ভয় করতে লাগলো জিন, টিন নয়তো।। আশেপাশে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলাম, না কেউ নেই? হয়তো মনের ভুল তাই চোখ বন্ধ করে চাদর নাকে মুখে দিয়ে শুয়ে পরলাম দোয়া ইউনুস পড়তে লাগলাম।।কিন্তু মনের মাঝে সংশয় রয়ে গেল! আমি স্পষ্ট কারো নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পেয়েছি।। তাহলে সে গেল কই? আর ওই ছায়ামূর্তি টাই কই গেল?? আচ্ছা এ বাসায় ভূত নাই তো??
ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ আমার।।এই সাইকো থাকতেও আবার ভূতের উপদ্রব,, বাচাও আল্লাহ।।এসব বিড়বিড় করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম একপর্যায়ে।।
আর এদিকে তখন ইউসুফ দরজার আড়াল থেকে এসব শুনে হাসতে লাগলো।।তখন ইউসুফ এসেছিল তার ঘরে।।এটি কুহু আসার পর থেকে রোজ এর কাজ।। কুহু ঘুমিয়ে যাওয়ার পর ওর রুমে এসে, ওর পাশে বসে থাকা।।আর তার মুখখানি বসে বসে দেখা।।এই মুখখানিতে যে কত মায়া কেউ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ না করলে বুঝতেই পারবে না।।কখন কখন ওর অজান্তেই অনেক বার চুমুও খেয়েছে ইউসুফ।। কিন্তু বেচারি এতই ঘুম কাতুরী যে কিচ্ছু বুঝতে পারে না।।
ইউসুফ এসব ভেবে হেসে দিল।।
—-পাগলী মেয়ে!! বলে মুচকি হাসলো।।তারপর নিজের রুমের দিক পা বাড়ালো।।
সকাল বেলা,
আজ খুব সকালে ঘুম ভাঙলো।। তাই নামাজ পড়ে নিলাম।। আজ আমার রেজাল্ট পাবলিস্ট হবে।। ভয় লাগছে খুব।।দোয়া করছি যেন 4.সামথিং পাই।।তাহলে পাবলিক ভার্সিটিতে এপ্লাই করতে পারবো।। তার সাথে আনন্দও যে এইখান থেকে আজ চলে যাবো।।
ইয়াহু!!!! 😁😁
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে ব্যাগ পত্র নিয়ে নিচে নেমে আসলাম।।
—–নানু মা কই চল? এখন না বের হলে ২ টার আগে পৌঁছাতে পারবো না!!
—-হে বুড়ি আসচ্ছি।।
আন্টি মার কাছে আর মামার কাছে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।।আসার সময় সাইকো কে দেখলাম না।।হয়ত ঘুমুচ্ছে।।আমার জন্য ভালই হইসে।।ভাল হয়েছে বেঁচে গেছি।।মনে মনে খুব খুশি হয়েছি।।এবার কাকে জালাবি সাইকো হি হি।।
এদিকে ইউসুফ মাত্রই বাসায় ঢুকে জানতে পারে তার দাদু চলে গেছে।।সাথে সাথে তার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।।তারপর কিছু একটা ভেবে তার মার ঘরে পা বাড়ালো।।
—-মম আসতে পারি?
—-আরে এসে ইউসুফ।। ইউসুফের বাবা বললেন।।
—আ..পাপা আমি কিছু বলতে চাই?
—-হুম বল?
—-আচ্ছা আমরা যেহেতু বিদেশে ছিলাম তাই হয়তো দাদু আমাদের সাথে থাকেন না,বা কুহুর জন্য যেতে চান নি।।তো এখন আমরা বিডিতে আছি।।উনি কেন আলাদা থাকছে??
—-আমিও কাল মাকে এ কথা অনেক বুঝিয়েছি।।তিনি কুহুর পড়াশুনার জন্য আসতে চাইছেন না।।
—-তো এখন কুহুর এক্সাম শেষ।। ওই এখানে ভার্সিটিতে ভর্তি করে দিবোনি আমরা তাহলেই তো হয়।।
—-হুম তাও ঠিক।।আচ্ছা আমি মার সাথে কথা বলছি।।
—-পাপা তোমার বলতে হবে না।।তুমি বললে হয়তো না করে দিবে।। যা করার আমি করছি।।
ময়মনসিংহে ঢুকে গেছ অনেকক্ষণ।। কিন্তু জ্যামের কারণে আটকে গেছি ব্রিজের মোড়ে।।এই জায়গায় সব সময় জ্যাম থেকাই।হুহ!!!
কলেজে এসে গেছি।।নানুমা আমাকে কলেজে নামিয়ে বাসায় চলে গেছে।।গেটের সামনে যেতেই আমার ফ্রেন্ডসরা দাড়িয়ে ছিল।। আমাকে দেখে দৌড়ে সবাই কাছে এলো আর আমরা গ্রপ হাগ করলাম।।রেজাল্ট যেনে বাসায় চলে আসলাম।।সাথে লিজাকে নিয়ে আসলাম পার্টি করব আজ তাই।।
—–ওমা এতো ডেঞ্জারাস সাইকো তোর ভাই!!আমার তো দেখতে ইচ্ছা করছে তোর ভাইকে!!
লিজাকে সাইকোর কথা সব বললাম শুনার পর এসব বলতে লাগলো।আমি বললাম,,
—-হে দেখলে অবশ্য ক্রাশ খেয়ে যাবি গ্যারান্টিসহ।।যাই হোক আজ আমি মুক্ত।। আর খুব ভালোও লাগছে।।
বলে গান ধরলাম,,
আজ মে উপার
আসমা নিচে
আজ মে আগে
জামানা হে পিছে।।
আমার গান শুনে খিল খিল করে হাসতে লাগলো।।সাথে আমিও।।তখনি কলিংবেল বেজে উঠলো।।
—-তুই বস হয়তো নানু মা আসচ্ছে।। বাজারে গিয়েছিল তখন কি জানি আনতে।।
—-আচ্ছা যা।
আমি লাফাতে লাফাতে গেট খুললাম আর বলতে লাগলাম,,
—-নানু মা তোমার ওত দেড়ি,,,,,বাকি কথা আর বলতে পারলাম না সামনের ব্যাক্তিটির দিকে তাকাবার পর গলায় কথা আটকে গেছে।। তবদা লেগে গেলাম।।
আমি ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছি তার দিক।।
আর উনি এক রহস্য ময় হাসি ঠোটে লাগিয়ে বলতে লাগে,,,
—-কিরে কুহু ভয় পেয়েছিস বুঝি??
আমি এক ঢোক গিলে বলতে লাগলাম,,,
— আপনি? কাপা কাপা কন্ঠে।।
তিনি এবার বিরক্তিভাব নিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললেন ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললেন,,
—-সর সামনে থেকে ঢুকতে দে।।
আমি এখন তার দিকে তাকিয়ে আছি।।আর ভাবছি উনি এখানে কিন্তু কেন??
মাথা ভন ভন ভন করে ঘুরছে।।
যার কাছ থেকে পালালাম সে এসে হাজির।। এখন কি হবে???
আমাকে এভাবে দেখে তিনি ধমক দিয়ে বললেন,,
—-দাঁড়িয়ে আছিস কেন?? যা পানি নিয়ে আয়।।
আমি মাথা নাড়িয়ে পানি আনতে চলে গেলাম।।
পানি এনে তার হাতে দিতেই তিনি উঠে দাড়ালেন।। আর বলতে লাগলেন,,
—-দাদু কই গেছে?
—-বাজারে।।
—-কি ব্যাপার! আমাকে দেখে তোর চেহারার বারোটা বেজে গেছে কেন।।
আমার কানের কাছে ফিসফিসে বলতে লাগলেন,,
—-আমাকে দেখে বুঝি খুশি হোসনি।।
উনি আমার এত কাছে আসাতে কেমন জানি ফিল হতে লাগলো।।কিন্তু ভাল লাগছিল সেই ফিলিংসটা।।টিভিতে দেখেছি,, যখন নায়ক তার নায়িকার কাছে আসে।। তখন নায়িকা কেমন ব্লেসিং করে।। আমারো তেমন হচ্ছে।। তার সাথে কান যেন গরম হয়ে যাচ্ছে।।তখনি তিনি ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে উঠে,,,
—-এই তুই এমন করছিস কেন?
উনার কথা শুনে আমার সব ভাললাগার ফিলিংস ফুস হয়ে গেল।।আসলেই সাইকো শালা এইটা।।আমি চেঁচিয়ে বললাম,,
—-আমার ইচ্ছা আপনার কি হে?? এত দিন আপনার বাসায় ছিলাম তাই আপনাকে কিছু বলি নি বুঝলেন??এটা আমার বাসা।।এ বাসার গুন্ডি বুঝলেন।।আর হে যে কদিন এখানে আছেন আমার ধারে কাছে আসবেন না।। নয়ত আপনার খবর আছে বুঝলেন।।হুহহহহ।।
ভাব নিয়ে চলে আসলাম আমার রুমে।।
এদিকে কুহুর কথা শুনে ইউসুফ ভ্যাবলা কান্তের মত তাকিয়ে আছে কুহুর যাওয়ার দিক।।কিছুক্ষণ পর যখন বুঝতে পারল,, কুহু তাকে দাপট দেখিয়ে চলে গেছে।। মেজাজ বিগ রে গেল তার।।
—-কি সাহস এই মেয়ে গুন গুনে ৭ বছর বড় তার আমি।।আর আমাকে এত ডায়লগ দিয়ে গেল।। তাউ আবার আমার দাদু বাড়ি দাড়িয়ে।।সে কি ভুলে গেছে তার থেকে আমার এই বাড়িতে অধিকার বেশী।।খুব ঝাঁজ না তোর।।দাড়া বের করবো তোর ঝাঁজ।।
রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সোফায় বসে পড়লো ইউসুফ।। তখনি তার দাদু আসে।।দাদুকে আগেই কল করেছিল সে।।তার দাদু তাকে রুমে দিয়ে মাগরিবের সালাত আদায় করতে যায়।।
আর ওই দিকে লিজা কুহু আর ইউসুফের কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ।।সন্ধ্যে হয়ে আসছে দেখে সেও বেরিয়ে যায়।।
মধ্য রাতে,,
ঘুমের মধ্যে মনে হলো আমি হাওয়ায় ভাসছি।। পিটপিট করে চোখ মেলে দেখি।। আমার মাথার উপর খোলা আকাশ।। আর আমি কারো কোলে।।ভাল করে তাকিয়ে দেখি আমি সাইকোর কোলে।।আর আমরা এই মধ্যরাতে ছাদে।।কিছু বলব তার আগেই ধড়াম করে ফেলে দিল আমাকে।।
—-আহ্্্! অসভ্য লোক এমন করলেন কেন? আর আমাকে এখানে কেন আনচ্ছেন এত রাতে??
উনি আমার কথা শুনে দাত কেলিয়ে বলতে লাগলেন।।তোর শরীরে অনেক ঝাঁজ তো তাই দূর করতে আনছি।।
আমি কিছুই বুঝলাম না তার কথা তিনি উঠে চলে যেতে লাগলেন।।তখন আমি উঠে তাকে বললাম,,
—-এসবের মানে কি? ফাজলামো করেন??
তিনি কিছু না বলে সোজা ছাদের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ান।। আর আমার দিকে ফিরে বাঁকা হেসে দরজা লাগিয়ে দিলেন।।আমি দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলাম।।আর চিল্লিয়ে বলতে লাগলাম,,
—-শালা সাইকো তোরে পাইলো তোর চুল ছিড়মু।। হারামি আমার জানডা কয়লা কইরা ফেলাইতেসোস।।খোল তুই।।নানু মা নানু মা।।
তখনি সাইকো বলে উঠে,,
—-তুই তো ভারী বেয়াদব।। ভেবেছিলাম তোকে একটু শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিব এখন দেখি চলবে না সকাল পর্যন্ত আটকে রাখব।। আর এখন তুই এখানে বসে বসে মশার কামড় খা।।তাহলে তোর শরীরে ঝাঁজ টা কমবে।।বলেই চলে গেল সাইকোটা।।
আর আমি এদিকে কেঁদে শেষ।।সত্যই মশা আমারে কামড়ে ফালা ফালা করে দিচ্ছে।।এইটা আসলেই সাইকো😭😭😭😭।।আর হাত,, পা কামড়ে দিচ্ছে মশা।।
—-আমি তোকে ছাড়াবো না সাইকো😭😭😭😭।।
চলবে,,