Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 2
কালো ফোমের সোফার ওপর বসে আছে।দুজনের মুখে হতাশার চিহ্ন।সামনের সোফার দুপাশে দুজন কালো ইউনিফরম পরা বডিগার্ড দাঁড়িয়ে আছে।রাসেল টেবিলের ওপর থাকা গ্লাস টা নিয়ে এক ঢোকে পানি গিলে নিলো।হালকা কেশে কপালের ঘাম রুমাল দিয়ে মুছে বডিগার্ডদের দিকে তাকালো।আপনাদের স্যার কই?কিছুটা ভয়ে প্রশ্ন করলো রাসেল।স্যার ফ্রেশ হয়ে নিচে আসবেন।সে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। একজন বডিগার্ড বলে উঠলো।
ওহ ওকে ওকে।ঘাম মুছতে মুছতে বলে উঠলো রাসেল।আজিজ সাহেবের ভীষন রাগ হচ্ছে। এভাবে বসিয়ে।রাখার মানে কি?শালা নিজেকে প্রেসিডেন্ট মনে করে নাকি?ভাবছিলো আজিজ সাহেব।
সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে গায়ে কালো শার্টটা জড়িয়ে নিলো কোব্রা লিডার রোয়েন চৌধুরী।হাতের পাঁচ আঙ্গুল দিয়ে চুল গুলো কে পিছনে ফিরিয়ে দিয়ে নিচে নেমে এলো।সোফার উপর বসে থাকা আজিজ সাহেবের দিকে তাকাতেই মুখে হিংস্রতা ফুঁটে উঠলো রোয়েনের।তারপর ও রাগ দমন করে ওদের সামনে বসে পড়লো রোয়েন।Well known reporter Ajij RaYhan কি মনে করে আমার বাসায় আসলেন? জানতে পারি?প্রশ্ন করে উঠলো রোয়েন।এতদিন আমার পিছে বাঁশ দিতে একটু ও বাঁধেনি আপনার। আর আজ আমার এখানে, হাউ?পায়ের ওপর পা তুলে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
আপনার সাহায্য চাই।মাথা নিচু করে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন আজিজ সাহেব।
How strange!!!! আমার সাহায্য চান আপনি?কেন?প্রশ্ন করলো রোয়েন।দেখেন বাবা আপনি আমার ছেলের বয়সী।মনে করেন এক মা তার ছেলের কাছে সাহায্য চাইতে এসেছে।প্লিজ বাবা সাহায্য করো।হাত জোড় করে কেঁদে উঠলেন আনিলা বেগম।
প্রবলেম টা কি?প্রশ্ন করে উঠলো রোয়েন।
আনিলা বেগম মেয়ের গুম হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছু খুলে বললেন রোয়েনের কাছে।
I’m sorry.এটা আমি পারবোনা।বলে উঠলো রোয়েন।
প্লিজ স্যার এতোদিন যা করেছি সেটার জন্য মাফ চাইছি।প্লিজ এভাবে ফিরিয়ে দেবেননা।কিছুটা বিনীত স্বরে বললেন আজিজ সাহেব।
ওরা সেলের কাজ করবে বিদেশে।এখানে কিছুই করার নেই আমার।গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো রোয়েন।
বাবা প্লিজ সাহায্যটা করলে একটা মা অনেক উপকৃত হবে।বলে আর অপেক্ষা করলেননা ওনারা।তিনজন বেরিয়ে পড়লেন।ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ফোন কানে রাখলো রোয়েন।
হ্যালো স্যার।অপরপাশ থেকে বলে উঠলো রফিক।রোয়েনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোক সে।
স্করপিয়নরা কোথায় মেয়ে পাচারের কাজ করছে তার পুরো ইনফরমেশন আমার চাই।রাইট নাও।বলে উঠলো রোয়েন।
ওকে স্যার।একটু পর পাঠাচ্ছি আপনাকে।বলে উঠলো রফিক।
অল রাইট।ফোন কেঁটে টিটেবিলের ওপর রাখলো ফোনটাকে রোয়েন।
ঘরে ফিরে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলো আজিজ সাহেব।শরীরটা আর চলতে চাইছে না।চোখের কোনা বেয়ে অঝোর গতিতে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে ওনার।আনিলা বেগম সেই কতক্ষন থেকে কথা শুনিয়ে যাচ্ছেন স্বামী আজিজ সাহেবকে।
“তোর কুকীর্তির শাস্তি পাচ্ছে আমার মেয়েটা।কু** বাচ্চা অন্যের মেয়েরে পাচার করার সময় হাত কাঁপে নাই তোর?নিজের মেয়েদের কথা একটু ও মনে হয় নাই তোর?আমার মেয়ের কিছু হইলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।কথা গুলো বলতে বলতে কেঁদে দিলেন আনিলা বেগম।”স্ত্রীর কথার কোন জবাব দিতে পারলেননা আজিজ সাহেব।কোন মুখে জবাব দেবেন?আনিলার বলা কথা গুলো সঠিক।তার কুকীর্তির শাস্তি পাচ্ছে মেয়েটা।
পড়ার টেবিলের চেয়ারে বসে আছে রুপন্তী।ছোট বলে ও অতোটা ছোট ও না।আপুকে কে বা কারা ধরে নিয়ে গেছে বুঝতে পারছে।কে বা কারা বোন কে কিনে নিবে। বোনের সাথে তাদের আচরন কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা আছে রুপন্তীর।বোনের চেহারা চোখে ভেসে উঠতেই ডুকরে কেঁদে উঠলো রুপন্তী।
মেয়ের কথা ভাবছিলো আজিজ রায়হান।স্ত্রীর বকা গুলো কানে যাচ্ছেনা তার।মেয়ের কথা মনে পড়তেই ওনার বুকখানা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় চোখজোড়া মুছে ফোন হাতে নেন আজিজ রায়হান।
ফোনে মেসেজ এসেছে একটা অচেনা নম্বর থেকে।
“Meet me at sunrise club”
নম্বরটি অচেনা হলে ও এক মিনিট ও বিলম্ব করলেননা আজিজ রায়হান।উঠে গায়ের শার্টেই বেরিয়ে পড়লেন ক্লাবের উদ্দেশ্যে।
আলোর ঝলকানি দেখেই বুঝা যাচ্ছে বড় কোন উৎসব চলছে ক্লাবে।ক্লাবে ঢুকতেই আজিজ রায়হানের সামনে রোয়েন এসে দাঁড়ালো।
মুখে সেই বাঁকা হাসি রোয়েনের।পার্ফেক্ট টাইমিং মিঃ আজিজ রায়হান।বলে উঠলো রোয়েন।
কেন ডেকেছেন?প্রশ্ন করে উঠলো আজিজ রায়হান।
পাল্টা প্রশ্ন পছন্দ করিনা।ফলো মি।বলেই সামনে হাঁটতে শুরু করলো রোয়েন।
একটা গোল টেবিলের সামনে এসে থামলো রোয়েন।একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো।আজিজ রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলল সিট ডাউন।
আজিজ রায়হান মাথা ঝাঁকিয়ে রোয়েনের পাশের সিটে বসে পড়লো।
কিছু বিদেশী দেশী লোক এক জায়গায় গিয়ে বসলো।কিছু লোক বিভিন্ন মেয়েদের এনে দেখাচ্ছে।
একজন দামা দামী করছে মেয়ে গুলোর।
পঞ্চাশ হাজার, ষাট হাজার,এক লাখ দেড় লাখ।আজিজ সাহেবের বুঝতে দেরি হলোনাএখানে মেয়ে বেঁচা কেনা চলছে।কিন্তু রুহীকে দেখা যাচ্ছেনা।রোয়েন ভ্রু কুঁচকে রুহীর নাম শুনতে চাইছে।মেয়েটাকি বেঁচা হয়ে গেলো নাকি?ভাবছিলো রোয়েন।কেমন বাবা আপনি?এতো গুলো মেয়ের জীবন ধ্বংস করার আগে নিজের মেয়েদের কথা একবার ও ভাবতে পারলেননা?রাগী গলায় আজিজ রায়হানকে কথা গুলো বলছিলো রোয়েন। একদম লাস্টে রুহীকে ওদের সামনে এনে দাঁড় করালো একজন লোক।রুহীর নাম নেয়ায় রোয়েনের বুঝতে দেরি হলোনা ওর সামনে দাঁড়ানো ফর্সা গোলগাল চেহারার মেয়েটাই না মায়াবতীই রুহী।মেয়েটা মায়াবতী।রোয়েনের মায়াবতী।
রুহীর ওপর পঞ্চাশ লাখ টাকা ধার্য করা হয়েছে।কারন বাকি মেয়ে গুলো থেকে ও সবচেয়ে ইয়াং সবচেয়ে সুন্দর।আজিজ রায়হানের বুক ফেঁটে যাচ্ছে।নিজের মেয়ের দামাদামি চলছে ওনার সামনে।
তবে রোয়েন ভাবছে অন্য কথা।মায়াবতীকে ওর চাই।হাজার রাতের জন্য চাই।
রোয়েনকে ঝাঁকাতে লাগলেন আজিজ রায়হান।স্যার আমার মেয়ে কে নিয়ে যাবে ওরা।প্লিজ কিছু করুন।
আজিজ রায়হানের কথায় ঘোর কাঁটলো রোয়েনের।কিন্তু ততক্ষনে এক কানাডিয়ান মাফিয়া রুহীকে কিনে নিলো।
রোয়েন উঠে সেদিে এগিয়ে গেলো।কানাডিয়ান মাফিয়া চার্লস রুহীর হাত ধরে ওকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।রুহী যেতে চাইছেনা।কান্না কাটি করছে।লোকটি ওকে চড় থাপড় মারছে।রোয়েন দাঁতে দাঁত চেপে লোকটির দিকে এগিয়ে গেলো।ওর কপালের রগ ফুলে উঠেছে।হাত শক্ত করে মুঠ করে আছে রোয়েন।
I need her রোয়েন চিৎকার করে উঠলো।
Hey young man.She is mine.I have baught her.So leave my way.বলে উঠলো চার্লস।
রোয়েন রুহীকে একটানে বুকে নিয়ে নিলো।চার্লসের দিকে বন্দুক ছুড়লো রোয়েন।লোকটার বুক ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছে ও।চার্লস কে বাঁচাতে যারা এসেছিলো সবাইকে এক এক করে মেরে দিলো রোয়েন।
রুহী এতক্ষন রোয়েনের বুকে মুখ লুকিয়ে রেখেছিলো।ভীষন ভয় করছিলো ওর।গুলির শব্দ থামতেই মাথা তুলে রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।
লোকটার মুখে হিংস্রতা নেই তবে কাউকে একান্ত নিজের করে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠেছে।লোকগুলোকে মেরে রাগী চোখে বুকের মাঝে পড়ে থাকা রুহীর দিকে তাকালো রোয়েন।রোয়েনের তাকানোয় ভয়ে নিজেকে সামলাতে পারেনি রুহী।জ্ঞান হারিয়ে রোয়েনের বুকে এলিয়ে পড়লো রুহী।
চলবে