My Mafia Boss- Season- 2 !! Part- 09
,,,,,রাত প্রায় বারোটা।রুহী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের চাঁদটাকে দেখছে।চোখজোড়া ভীষন জ্বালা করছে।বুকটা থেকে থেকে কেঁপে উঠছে।এখনো ঘুমাস নি কেন?আনিলা বেগম দরজার পাশ থেকে চেঁচিয়ে উঠেন।রুহী পিছনে ফিরে।ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছেননা আনিলা বেগম।ঘুমিয়ে পড়।দরজা আটাকায় রেখে ঘুমা।বলে আর দাঁড়ালেন না আনিলা বেগম।চলে গেলেন।রুহী শুয়ে পড়ে।যে বুকটাকে নিজের সবচেয়ে বেশি আপন মনে করেছিলো,যে বুকটাতে এতোটা শান্তির ঘুম হয়েছিলো সেই বুকটা আজ নেই ওর পাশে।এখন তো ঘুম হবেনা।সোজা হয়ে শুয়ে পড়ে রুহী।টেবিল ল্যাম্পের লাইট অফ করে দিলো রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,হাতের বোতল টাকে চেপে ভেঙ্গে ফেলেছে রোয়েন।হাতের ফিনকি গড়িয়ে রক্ত পড়ছে।কিছুক্ষন পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে রোয়েন।রাতে কারোর পায়ের আওয়াজে চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করে রুহী।কোন একটা পুরুষ ছায়া ওর রুমে এসেছে।ওর দিকে এগিয়ে এসে দাঁড়ালো ছায়াটা। ওর শরীরে হাত দিচ্ছে।রুহী লাইট অন করতে গেলে তার খুলে দিলো ছায়াটা।কে আপনি?রুহী চিৎকার করে বলে উঠে।ছায়াটি ওর মুখ চেপে ধরলো।রুহী ছায়াটার হাতে ইচ্ছে মতো খামচি দিচ্ছে।কিছুক্ষন পর ছায়াটি আপনাআপনি চলে গেলো।রুহী জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।রাহিন ছাড়া আর কেউ নয় ছায়াটা। উঠে বসলো রুহী।কি করবে?কাকে জানাবে এসব?নিজের বাবাই তো ওকে রাহিনের সাথে জড়িয়ে দিচ্ছে।
ভাবতে থাকে রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,,এভাবে দুই দিন চলে গেলো।রুহীকে জোর করে রাহিনের সাথে ঘুরতে পাঠাচ্ছে আজমল খান।রাতের আঁধারে রাহিন রুহীর রুমে এসে ওকে স্পর্শ করতো,রুহীর আর্তনাদ কারোর কানে পৌছাতো না।রোয়েন ও পাগল প্রায় তার মায়াবতীকে ছাড়া।ঘুম খাওয়া সব চলে গেছে।
বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে রোয়েন।সামনে রফিক বসে আছে।স্যার ম্যাডামের খোঁজ পাইলাম। রফিক বলে উঠলো।রোয়েন এবার রফিকের দিকে তাকালো।কোথায় ও?শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,স্যার ওনি জানেন কার মেয়ে?রফিক প্রশ্ন করে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,কার?রফিকের দিকে এক নজর তাকিয়ে প্রশ্ন করলো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,স্যার ওনি আজমল খানের মেয়ে।রফিক বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,কি বললা?আবার বলো কার মেয়ে?রোয়েন ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো।
,,,,,,,,,,,,,,, আজমল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী (রফিক)
,,,,,,,,,,,,,, রোয়েন কি বলবে বুঝতে পারছেনা।হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো রোয়েনের।ওয়েট রফিকের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো রোয়েন।কানে ফোন রাখলো।
হ্যালো শামীম বল(রোয়েন)
স্যার রুহী ম্যাম!!!!!!
,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহী!!!!কি হয়েছে ওর?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,রাহিন রুহী ম্যামরে ক্লাবে নিয়ে আসছে।ড্রিংক করাইতে চেষ্টা করতেছে।ম্যাম খাইতে চাইতেছেনা।ম্যামরে থাপড় মারতেছে, আর গালাগালি ও করতেছে।খুব কান্দতাছে ম্যাম।একনাগাড়ে বলে দম নিলো শামীম।রোয়েনের কপালের রগ ফুলে উঠলো।হাত মুঠ করলো রোয়েন।ওদের দিকে খেয়াল রাখ।আমি এক্ষুনি আসতেছি চিৎকার করে বলল রোয়েন।
কান থেকে ফোন সরিয়ে উঠে দাঁড়ালো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,স্যার কই যান?রফিক বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,,,রোয়েন চুপচাপ গায়ে কালো কোটটা জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লো গাড়ি নিয়ে।
,,,,,,,,,,,,,আমি খাবোনা।রুহী কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো।রুহীর গালে আরো কষিয়ে তিনটা চড় দিলো রাহিন।খেতে বলছি খাবি। আজ তোর সাথে বেড ডেট করবো।রুহী কে খাওয়ানোর চেষ্টা করছে রাহিন।ঠিক তখনই রাহিনকে কে যেন দেয়ালে জাপটে ধরে ওর গলা চিপে ধরলো।রোয়েন রাগে ফুঁসছে। চোখ গুলো রক্তবর্ন হয়ে আছে ওর।খুব মারতে লাগলো রাহিনকে।রাহিনের নাক মুখ বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।রাহিন কে লাথি দিয়ে ফেলে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো রোয়েন।ঠোঁটের কোনা ফেঁটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।গাল দুটো লাল হয়ে গেছে।রুহীর হাত ধরে রোয়েন সামনের দিকে এগোতেই রাহিন বলে উঠলো।ও আমার বেড পার্টনার। আজমল খানের সাথে এনিয়ে আমার ডিল হয়েছে।রুহীর হাত ছেড়ে দৌড়ে রাহিনের কলার চেপে ধরলো রোয়েন।রুহী ইজ অনলি মাইন।বলে দে আজমল খানকে।দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো রোয়েন।
রুহীর দিকে এগিয়ে আসতেই রাহিন চিৎকার করে বলে উঠলো আজমল খান তোর শত্রু।রাহিনের চুল টেনে ফ্লোরে মাথায় বাড়ি লাগাতে শুরু করলো রোয়েন।রোয়েন চিৎকার করে বলতে লাগলো আজমল খান আমার শত্রু বাট রুহী!!!She is my soulmate.রাহিনকে আরো দুতিনটে ঘুষি লাগলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।Soulmate!!!!আমি রোয়েনের,,,,,,,ভাবতেই বুকে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো রুহীর।রাহিনের কাছ থেকে সরে এসে রুহীর কাছে এলো রোয়েন।রুহী রোয়েনের বুকে ঢলে পড়লো। রোয়েন কোলে তুলে নিলো রুহীকে।রোয়েনের বুকে মাথা ঠেঁকিয়ে আছে রুহী।গাড়িতে বসিয়ে দিলো রুহীকে। রোয়েন ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।কিছুসময়ের মাঝে বাড়ি পৌছে যায় রোয়েন।রুহীকে খাটে শুইয়ে পাশে বসে রইলো রোয়েন।রুহীর বন্ধ করা চোখ জোড়া টিপটিপ করছে।রোয়েন!!!রোয়েন!!!প্লিজ নিয়ে যান আমাকে!!!!রোয়েন!!!!চিৎকার করে উঠে রুহী।চোখের কোনা গড়িয়ে পানি পড়ছে রুহীর।রোয়েন শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলো রুহীকে।রুহী আছি আমি।রোয়েন বলে উঠে।রুহী রোয়েনের পিঠ জোড়ে জড়িয়ে ধরলো।
রোয়েন ফোন বের করে কল দিয়ে কানে ধরলো ফোন।
,,,,,,,,,,,হ্যালো। অপরপাশ থেকে ডাক্তার সালমান বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,আমার বাসায় আসতে হবে।রোয়েন বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,,,জি স্যার।ডাক্তার সালমান বলে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,রোয়েন ফোন কেঁটে বুকে জড়িয়ে নিলো রুহীকে।
,,,,,,,ডাক্তার রুহীর চেকআপ শেষ করে রোয়েনের দিকে তাকালো।স্যার ওনার ওপর ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে মেন্টালি।একটু ঘুমালে সব ঠিক হয়ে যাবে।
,,,,,,,,,,,,রোয়েন রুহীর দিকে এক নজর তাকিয়ে মাথা ঝাঁকালো।
ডাক্তার বেরিয়ে যাওয়ার পর রোয়েন রুহীকে বুকে টেনে নেয়।রুহী!!!!রুহী একটু খেয়ে নাও।রুহী একটু চোখ খুলে রোয়েনের গলায় মুখ গুঁজে দিলো।রোয়েন আরো জোরে জড়িয়ে নিলো ওর মায়াবতীকে।
Yo,,,,,,,u a,,,,re m,,,y addic,,,tion বিড়বিড় করে বলতে থাকে রুহী।
রোয়েন রুহীর মুখের দিকে তাকায়। মনের অজান্তেই বলে উঠে you are my soulmate,my life, My desire,my everything. রুহীর কপালে চুমু খেয়ে বসিয়ে দেয় রোয়েন।রুহীর মুখের সামনে চামচে একটু সুপ ধরে রোয়েন।রুহীর মাথা রোয়েনের কাঁধে পড়ে আছে।রুহীকে বেশ কষ্ট করে সুপ খাইয়ে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো রোয়েন।
,,,,,,,,,,,,,,,পরদিন সকাল
রাহিন আজমল খানের বাসায় এসে উপস্থিত।আজমল খান সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে রাহিনের দিকে চোখ পড়ে।তুমি এখানে?রুহী কই?রাগী গলায় বলে উঠে আজমল খান।
,,,,,,,,,,,,,,,,,আগে বলেননি কেন ওর আশিক আছে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো রাহিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,কি আবোলতাবোল বকছো?কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন আজমল খান।
,,,,,,,,,,,,,,আমাকে দেখেন।আমার কাঁটা দাগ গুলো দেখেন।রোয়েন আহমেদের কাজ এসব।সে তো আপনার মেয়ের প্রেমিক।আপনি আমাকে বলেন নাই।চিৎকার করে বলল রাহিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,আসলে আমি জানতামনা নিজেই।বলে উঠলেন আজমল খান।
,,,,,,,,,,,,,,,,,রুহীকে চাই নাহলে আপনার সব ধ্বংস করে দিবো।চিৎকার করে বলতে লাগলো রাহিন।
,,,,,,,,,,,,,,ঘুমভেঙ্গে আধোচোখ খুলে রুহী।বেশ পরিচিত রুমটা।চোখজোড়া ডলে ভালো করে দেখার চেষ্টা করলো রুহী।পাশে তাকাতেই রোয়েনকে দেখতে পায় ও।রাগী চোখে তাকিয়ে আছে রোয়েন রুহীর দিকে।
,,,,,,,,,,,,,আ আপ নি এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?বসতে বসতে বলল রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,ফোন ধরো নাই কেন এই তিনদিন।রোয়েন প্রশ্ন করে উঠলো।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,ফোন বাবার কাছে ছিলো।অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলল রুহী।
,,,,,,,,,,,,,,,,,রাহিনের সাথে যাওয়ার সাহস কি করে হয় তোমার?রাগী গলায় প্রশ্ন করলো রোয়েন।
আপনাকে এতো প্রশ্নের উত্তর কেন দিবো? কে আপনি?ভ্রু কুঁচকে বলতে থাকে রুহী।রোয়েন রুহীর কাঁধ চেপে ধরলো কে আমি?কে আমি তাইনা?চিুকার করে বলতে থাকে রোয়েন।
,,,,,,,,,,,হুম কে আপনি?রুহী অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।রোয়েন রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে ওকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।আকস্মিকতায় কিছুটা ঘাবড়ে গেছে রুহী।রোয়েনের ঠোঁট জোড়ার চলন ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে।তবে বিষয়টা খুব অন্যরকম সুখে তলিয়ে দিচ্ছে রুহীকে। রুহী রোয়েনের গলার দুপাশে জড়িয়ে ধরলো।
চলবে