The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 86
→মেয়েটাকে প্রথম দেখাতে মনে ধরে যায়।ওর চাহনি,হাসি সব কিছু যেন নজর কাড়া।মেয়েটাকে তো ও চেয়েছিলো এটা জানার পর ও যে বয়সের ব্যাবধান অনেক।কিন্তু বয়স মানে না মনের জ্বালা।মন তো চেয়েছে এমন কাউকে যাকে আঁকড়ে ধরে বাকিটা জীবন কাঁটিয়ে দেবে।হয়ত পেয়ে গেছে।তবু ও ভয় হয়।যদি পুূরন না হয় স্বপ্ন গুলো।নিজেরই লজ্জা হয় তের বছর বয়সের ছোট মেয়েটাকে কি করে মনে ধরে ত্রিশ বছর বয়স্ক একজন সার্জনের?কিন্তু এ হৃদয় তো কূল পাচ্ছেনা।বাচ্চাটাকে পেতে ইচ্ছে করছে।অনেক ইচ্ছে করছে।ঠোঁটজোড়ায় হাসি ফুঁটে উঠে ফাহমিনের।ভেবেছিলো হারিয়ে ফেলবে মেয়েটাকে।কিন্তু এটা যে স্বপ্ন ওর হাতে ধরা দিলো।সামায়রা দূর থেকে হাত নাড়ে,
.
.
-”ভালো আছেন ভাইয়া?”
.
.
ফাহমিন হাসছে।পাগলের মতো হাসছে।ও আজ অনেক খুশি অনেকটাই খুশি।পাগলের মতো খুশি।ও নাচবে রাস্তায়।সবাইকে ধরে নাচবে পাগলের মতো নাচবে।নাচতে নাচতে হাঁপিয়ে উঠবে তবুও ক্লান্ত হবেনা মুখে কষ্টের ছাপ ফুঁটে উঠবেনা কারন বহুল প্রতিক্ষীত মানুষটা ওর সামনে।বুঝে উঠতে পারেনা সামায়রা।মানুষটা এভাবে পাগলের মতো হাসছে কিন্তু ওর কথার জবাব দিলোনা।হয়ত পছন্দ হয়নি তার।ওর দুলাভাইয়ের বন্ধু সে।ডাক্তার মানুষ সে।ওর মতো পিচ্চুর সাথে কি কথা বলবে সে?ঘোড়ার ডিম?সামায়রা গাড়িতে ঢুকে পড়ে।ওদের কিনতে হয়নি।কোম্পানী বাবাকে গিফট করেছে।ফাহমিন হাসতে হাসতে চারপাশে তাকাতে তাকাতে ভাবছিলো মেয়েটার সাথে কথা বলবে এবার।কি দিয়ে শুরু করবে বুঝতে পারছেনা।কি দিয়ে শুরু করা উচিৎ হবে?প্রপোজ করবে?নাহ এটা ঠিক হবেনা।মেয়েটা ও ভালো মতো চিনেনা।আর চিনলেই বা এই বুড়োকে পছন্দ করবে?হঠাৎ সামায়রা যে জায়গায় দাঁড়িয়েছিলো সেখানে তাকিয়ে বেকুব বনে যায় ফাহমিন।সামায়রা কি ওর গাড়িটা ও নেই।এতক্ষন হাসছিলো ও হয়ত মেয়েটা রাগ করে চলে গেছে।কিন্তু কেন গেলো?একটু কথা বলতে পারতো।অবশ্য ওরই দোষ গাঁধার মতো হাসছিলো আর ভাবনার জগতে ডুবেছিলো।সেই সুযোগে মেয়েটা গেছে।গায়ের এপ্রোনটাকে হাতে নিয়ে গাড়িতে বসে যায় ফাহমিন।দাওয়াত দেয়া হয়েছে সবাইকে।রুহীর বান্ধুবীদের ও বলা হয়েছে।রোয়েন ও নিজের ফ্রেন্ডদের বলে দিয়েছে।পুরো একদিন লেগে গেলো পার্টির জন্য ইন্ভাইট করতে করতে গেস্টদের।রোয়েন মনে করছিলো আর কেউ বাদ পড়লো কিনা ঠিক তখনই মনে হলো ওর ওপর হামলে পড়েছে কেউ।রোয়েন কিছু বুঝে উঠতে যাবে তখনই ওর গালে খুব শক্ত একটা চুমু পেলো।যেন গাল ছিড়ে খেয়ে ফেলবে।অবশ্য ঠোঁটজোড়া এখন ও ওর থেকে সরেনি।ওর গাল থেকে নেমে কাঁধ ঘাড়ে চুমু খাচ্ছে।রোয়েন সরাতে পারছেনা।সরাতে গেলে ব্যাথা পেতে পারে।তাই ও নরম সুরে বলল,
.
.
-”রুহী একটু সরবে?আমি কাজ করছি।”
.
.
কাজে ব্যাঘাত ঘটায় চটে যায় রুহী।রোয়েনের গলা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
.
.
-”তোমাকে কি বলেছি কাজ বাদ দিয়ে আমার সাথে রোম্যান্স করতে।আরে ভাই করনা নিজের কাজ আমাকে বিরক্ত করছিস কেন?”
.
.
রুহীর এমন জবাবে ভ্যাবাচেকা খেলো রোয়েন।রুহী কিভাবে কথা বলল?প্রথমত তুই তারপর ভাই!!!!!কোন জনমের ভাই লাগে ও রুহীর?চোখ কড়মড় করে রুহীর দিকে তাকায় ও।তারপর শক্ত করে বলল,
.
.
-”আর ইউ আউট অফ ইওর মাইন্ড রুহী?কিভাবে কথা বলছো তুমি?”
-”দেখ অতোসতো জানিনা।আমি আমার যা ইচ্ছা তোকে তাই করবো। কিস করবো আমি।তুই কাজ কর তোর।”
-”রুহী তুই তোকারি করছো কেন?”
-”কেন করবো না?আমার পার্সোনাল প্রপার্টি তুই।যা ইচ্ছা বলবো।এখন চুপ করে কাজ কর।নাহলে আমাকে আদর দে।কাজ পরে হবে।”
.
.
রোয়েন ভাবলো কিছু বলে লাভ হবেনা।মেয়েটার মন এখন এক একসময় একেক রকম হয়।কখন কি করে বলা যায়না।তবে ওর আদর দরকার।রোয়েন নিজেও মেয়েটাকে ভালবাসতে চাইছে এই মুহূর্তে।তাই আর অপেক্ষা করে না রোয়েন।রুহী কে আরো কিছু বলার সুযোগই না দিয়ে কোলে তুলে নেয়।তারপর রুমে গিয়ে ওকে খাটে শুইয়ে দেয়।রোয়েন রুহীর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে শুরু করে।সময় চলে যায় ভালবাসা শেষ হবার নয়।রুহীর গলায় ভরাট চুমু খেতে খেতে রোয়েন নিজে ও উন্মাদের মতো হয়ে গেছে।ঘন্টা খানেক পর মাথা তুলে ও।রুহী ওর দিকে চেয়ে হাসলো একটু।
রোয়েন উঠে এসে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”আরো লাগবে?”
-”সারাজীবন ভালবাসবে?”
-”এটা জিজ্ঞেস করার কিছু?ভালবাসা কখনো কমবেনা।সবসময় ভালবাসবো বৌ।শুধু বাবুটাকে একবার আসতে দাও।তারপর ভালবাসার সাগরে ডুবিয়ে নিয়ে যাবো অনেক দূর।”
-”এতো ভালবাসো কেন?হারাতে ভয় হয় খুব।”
-”কখনো হারিয়ে যাবোনা উপরওয়ালার ডাক পড়ার আগে।”
.
.
রুহী রোয়েনকে থামিয়ে দেয় ওর ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে।ওর চোখজোড়ায় অশ্রুর জোয়ার ভেসে উঠেছে।রোয়েন রুহীকে টেনে বুকে নিয়ে নেয়।রুহী ও দুহাত প্রসারিত করে জড়িয়ে ধরে প্রিয় মানুষটাকে।এদিকে আশফিনা আর রামীনের মাঝে কোন কথাই হয়না প্রয়োজন ছাড়া।ব্যাপারটা দুজনের জন্যই অনেকটাই বেদনাদায়ক।আশফিনা চায় ওকে রামীন ছেড়ে দিক।ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করে নিক।কিন্তু ও রামীনের মনটাকেই বুঝতে পারছেনা।বুঝতে পারছেনা লোকটা কেন ওকে ছেড়ে দিচ্ছেনা?এত বেহায়া কেন সে?
রামীন ঘুমের ঘোরেই আশফিনাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।আশফিনা ছাড়াতে গিয়ে ও পারেনা।রামীনের চেহারায় কিছু একটা থেমে যায়।রুহীকে ঘুম থেকে তুলে সকালে।রাতটা দশটায় ওরা শুয়ে গিয়েছিলো আর উঠেই নাই।ডিনার ও করা হয়নি।রুহীকে উঠিয়ে ফ্রেশ করিয়ে দেয় রোয়েন।তারপর দুজনে নাস্তা করতে চলে আসে।আজ সন্ধ্যায় ওদের পার্টি।রুহীকে নাস্তা করিয়ে রোয়েন কাজে চলে যায়।রুহী ঘরেই থেকে যায়।
বিকেলে ফিরে আসে রোয়েন।রুহী শাওয়ার নিচ্ছে অন্য এক বাথরুমে।কারন ও জানে রোয়েন ঘরে ফিরে শাওয়ার নিবে।তাই ওর কাপড় চোপড় বের করে নিজে গোসলে চলে গেছে।রোয়েন রুমে এসে দেখলো খাটে ওর গেঞ্জী আর প্যান্ট রাখা আর ছোট্ট একটা চিরকুট কমলা বর্নের কাগজে।রোয়েন সেটা হাতে নেয়।
রুহী বলছে,আমি ফ্রেশ হচ্ছি।আপনি ও ফ্রেশ হয়ে নিন।আপনার বাবু ঘুমোতে চেয়েছিলো তাই ঘুমিয়েছিলাম।আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন ভালো আছি আমরা।আর হ্যা কাগজে দেখুন আমার ঠোঁটের ছোঁয়া আছে।এখানে চুমু দিন।আপনার ওয়েল কাম কিস।”
রোয়েন মৃদু হেসে রুহীর ঠোঁটোর জায়গায় লিপস্টিকের দাগ দেখতে পেলো।সেখানে চুমু খেয়ে কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।রুহী বেরিয়ে এসে কফি বানিয়ে নেয় রোয়েনের।তারপর কাপড় পাল্টাতে শুরু করে।পেটটা একটু উঁচু হয়েছে খুব সামান্য সেটা।গায়ে নতুন কাপড়টা জড়িয়ে নিলো।সিল্কের কাপড়টি ধুসর সবুজ আর কালো বর্নের।খুব সুন্দর একটি শাড়ী।
হঠাৎ রোয়েন পিছন থেকে ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে।রুহী কেঁপে উঠলে ও মুখে হাসি ফুঁটে উঠে।রোয়েন বলতে লাগলো,
.
.
-”গর্জিয়াস।আমার ভাবনার চেয়ে ও সুন্দর লাগছে।”
-”আপনার চোখে আমি সবসময়ই সুন্দর।আপনিও খুব হ্যান্ডসাম মাই ডিয়ার।”
.
.
রুহীকে নিজের দিকে ফিরিয়ে ওর কপালে গালে মুখে এলোপাথাড়ি চুমু খেলো।দুজনে রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে।বাহিরের একটি কনভেনশন সেন্টারে ওদের পার্টি হবে।কনভেনশন সেন্টারটি রোয়েনের এক কাজিনের।কাজিনই কনভেনশন সেন্টার ভাড়া দিয়েছে।ওরা সেখানে গিয়ে রামীন ছাড়া কেউ আসেনি।কিছুক্ষনের মাঝে একজন কে আসতে দেখলো ওরা।রোয়েন দেখলো যে লোকটয় রুহীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলো সে এসেছে।রুহী ভাবছে এখানে কি করে জানোয়ারটা?জয় ওদের সামনে এসে দাঁড়ায়।রোয়েন বলল,
.
.
-”জয় শেখাওয়াত আপনি?”
-”ইয়েস আমি।আপনার কাছে একটু কাজ ছিলো।”
-”প্রাইভেটে কথা বলবেন?”
-”নো।এখানেই বলবো।এক্চুয়ালি বেশিক্ষন থাকছিনা।একটুপর আমার ফ্লাইট।”
-”ওহ।কি কাজ বলুন।”
.
.
জয় রুহীকে একবার দেখে নেয়।খুব সুন্দর লাগছে ওর মিষ্টি পাখিকে।কিন্তু এটা ওর জন্য ভাব পাপ মহা পাপ।যেটা ও করতে গিয়ে সব হারিয়েছে।জয় বলতে লাগলো,
.
.
-”আপনি ভালো আছেন তো?আপনার এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিলো শুনলাম।”
-”ইয়েস।কিন্তু কিভাবে জানলেন আপনি।”
-”আই ডোন্ট নো।কথাটা কেমন লাগবে আপনার?বাট এটা সত্যি এক্সিডেন্ট আমি করিয়েছিলাম নিজের ইচ্ছায়।একটা ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ জেগে উঠেছিলো আমার মাঝে।”
-”আপনি করিয়েছেন!!!!কিসের প্রতিশোধ?না আমি আপনাকে চিনি না আপনি আমাকে চিনেন।কেউ কাউকে চিনিনা।তাহলে এখানে প্রতিশোধ কি করে এলো?”
.
.
জয় কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলো।রুহীর দিকে তাকায়।সত্যিটা বললে রুহীর জন্য হয়ত খারাপ ও হতে পারে।হয়ত তার স্বামী তাকে খারাপ ভাবতে পারে।হয়ত ওদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।ও জেনে শুনে এমন কাজ করতে পারেনা।এমনিতেই ওর কারনে খুব কষ্ট পেতে হয়েছে মেয়েটাকে।আর কষ্ট পেতে দিবেনা।জয় বলল,
.
.
-”আমার বাবা একজন বিখ্যাত বিজনেস ম্যান ছিলো।আমার বাবা মারা গেছে আমি যখন ফিনল্যান্ডে ছিলাম।কে যেন বলেছিলো আমার বাবার মৃত্যুতে রোহান নামক কারোর হাত আছে।আপনার নাম সেদিন শুনে মনে করেছিলাম আপনি সেই যে আমার বাবাকে মেরেছিলো।তাই আপনাকে মারতে চাই।তিনবার এ্যাটাক করেছিলাম।বাট পরে জানলাম আপনি না আসলে আমার বাবা মরে গিয়েছে তার ভাইয়ের হাতে।বাবার বিজনেস হাতিয়ে নিতে চাচ্চু বাবাকে মেরে ফেলেছিলো।”
-”ওহ।ভেরি স্যাড।”
-”আ’ম সরি মিঃ চৌধুরী।মিসেস চৌধুরী প্রেগন্যান্ট জেনে ও এ ক্ষতি করতে এসেছিলাম।আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবোনা।আমার বাবা মা নেই কিন্তু আপনার সন্তানকে বাবা হারা করতে যাচ্ছিলাম আমার রাগের বশে।”
-”ইটস ওকে।নিজের ভুল বুঝেছেন এটাই অনেক।এটা হয়ই।মাফ করে দিয়েছি আপনাকে।”
-”থ্যাংকস আ লট মিঃ চৌধুরী।তাহলে আজ আসি।বায় মিসেস চৌধুরী।ক্ষমা করবেন আপনি ও।
.
.
জয় চলে গেলো রুহী কিছু বলতে পারেনা।ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকে।এরই মাঝে আশফিনা চলে আসে।রামীনের ভীষন রাগ হয় যখন দেখলো আশফিনা ওর গিফট করা কাপড় না পরে পুরোনো একটা ড্রেস পরে এসেছে।রামীন রেগে সরে যায় সেখান থেকে।
এরই মাঝে রোয়েন কাকে যেন দেখে হেসে জড়িয়ে ধরে।সেই মানুষটাও রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।
চলবে