The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 60

রুহী বসে বসে কান্না করছে।রোয়েন রুমে হেঁটে হেঁটে ফোনে কথা বলছে।রুহী খুব কান্না করছে।ও চাইছে আজই বাংলাদেশে ফিরতে।কথা এক পর্যায়ে শেষ হতেই রুহী উঠে দৌড়ে রোয়েনের কাছে এগিয়ে এলো।তারপর কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো,
.
.
-”টিকিট হয়নি এখনকার?”
-”নাহ রুহী।রাতের ফ্লাইট চলে গেছে।কালকের সকালের টা হয়েছে।”
-”ওহ।”
.
.
খাটে বসে পড়ে রুহী।কাঁদতে থাকে।সেরাত আর ঘুমাতেই পারেনি ওরা।রুহী সারারাত ভরে কেঁদেছে।কাল সকাল ভোরে ওরা বেরিয়ে পড়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে।সেদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে পৌছে যায় ওরা।এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি রোয়েনের হাসপাতালে চলে আসে।ওরা রিসিপশনে এসে দাঁড়ায়।সেখানে রেজোয়ান মাহবুবের রুমের নম্বর জানতে চাওয়ায় রিসিপশনিস্ট পেশেন্টদের লিস্ট খুঁজতে শুরু করে।রোয়েন আর রুহী অপেক্ষা করছে।রিসিপশনিস্ট বলল,
.
.
-এখানে মিসেস আনিলা মাহবুবের নাম দিয়ে সেভ করা আছে।রুম নং ৪০৫।
-”মিসেস আনিলা মাহবুব!!!!!”
.
.
রুহী খানিকটা চিন্তায় পড়ে যায়।রোয়েন বলল,
.
.
-”আনিলা তো আমার দলের একজন।রুহী চলো আমরা দেখে আসি।”
-”ঠিক আছে চলুন।”
.
.
ওরা লিফ্টে উঠে যায়।লিফ্ট এসে থামে চারতলায়।চারশত পাঁচ নম্বর রুমে এসে দেখলো রেজোয়ান মাহবুব শুয়ে আছে আর ওনার সামনে বসে আছে আনিলা শোহরাব।আর সোফায় বসে আছে রামীন আর শামীম।রুহীকে দেখে আনিলা শোহরাব উঠে অন্যপাশে চলে যায়।এবার রুহীর বুঝতে দেরি হয়না আনিলা মাহবুব নিজেকে বাবার স্ত্রী হিসেবে দাবি করেই সাইন করেছে।বেশ মন খারাপ হয় রুহীর।কিন্তু পরক্ষনে বাবাকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রুহী।দৌড়ে এসে রেজোয়ান মাহবুব কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।রেজোয়ান মাহবুব মেয়ে কে জড়িয়ে ধরে আছেন।রোয়েন এসে ওনার পাশে এসে দাঁড়ায়,
.
.
-”বাবা কেমন আছেন?”
-”এইতো ভাল।আপনারা কেমন আছেন?”
-”ভালোই।খেয়েছেন?”
-”স্যুপ খেলাম।আপনি বসেন।কখন এলেন?”
.
.
রোয়েন পাশের একটা টুলে বসতে বসতে বলল,
.
.
-”এয়ারপোর্ট থেকে এলাম।”
-”ওহ।রুহী কাঁদেনা।বাবা ভালো আছি।”
.
.
রুহী এক নাগাড়ে কেঁদেই চলছে।কাঁদতে কাঁদতে বলল,
.
.
-”এতো কিসের চিন্তা করো বাবা?”
-”মারে চিন্তার কি শেষ আছে বল?সামনে নানা হবো। নাতির সাথে খেলবো। কতো চিন্তা আমার বল।
.
.
হেসে হেসে বলেন রেজোয়ান মাহবুব।কথাটা বলেই রোয়েনের দিকে তাকান ওনি।রোয়েনের চেহারায় রিয়্যাকশন না পেয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। এদিকে বাবার মুখে এমন কথায় বেশ লজ্জা পায় রুহী।তারপর মাথা উঠিয়ে বলল,
.
.
-”বাবা ওসব কথা ছাড়ো।তুমি রিলিজ পাবে কবে?”
-”কালই তো দিবে বলল।তাইনা রামীন?”
-”জি!!!”
.
.
রুহী আবার বাবাকে জড়িয়ে বসে রইলো।রেজোয়ান মাহবুব রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলো চেহারায় ক্লান্তির ভাব।ওনি বললেন,
.
.
-”রুহী কাল আবার আসিস।তোরা হয়ত টায়ার্ড।”
-”না বাবা আমি ঠিক আছি।”
-”রোয়েনকে টায়ার্ড লাগছে।আর তুই ও অবশ্যই টায়ার্ড।যা মা ঘরে যা।”
.
.
রেজোয়ান মাহবুবের কথায় রোয়েন বলল,
.
.
-”না আমি ঠিক আছি।ও বসুক।”
-”না রোয়েন আপনারা অনেক জার্নি করেছেন।বাসায় চলে যান।”
.
.
রেজোয়ান মাহবুবের কথায় রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী যাবে তুমি?”
.
.
রোয়েনের কথায় রুহী বাবার দিকে তাকায়।তারপর মাথা নেড়ে বলল,
.
.
-”ওকে চলুন।”
.
.
রোয়েন বলল,
.
.
-”আচ্ছা আমরা কাল আবার আসবো।রামীন তুই থাকবি এখানে?”
-”হুম থাকবো আমি আর শামীম।তুই আর রুহী বাসায় চলে যা।”
.
.
রোয়েন আর রুহী বেরিয়ে যায়।আর বের হওয়ার আগে রেজোয়ান মাহবুবকে বারবার আশ্বত করেছে কাল ওদের সাথে বাসায় যেতে হবে।ওনি ও রাজি হয়ে যান।রুহীকে নিয়ে বাসায় চলে আসে রোয়েন।কাজের লোকরা নিজেদের কাজ শেষ করে বেরিয়ে গেছে।রান্না ও শেষ।রুহী ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসতেই রোয়েন ফ্রেশ হতে চলে যায়।রুহী রোয়েনের কাপড় বের করে খাটের ওপর রেখে খাবার গরম করতে চলে যায়।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে এসে কাপড় পাল্টে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।রুহী টেবিলে খাবার সাজিয়েছে।রোয়েন এসে রুহীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ওর কাঁধে নাক ঘষতে থাকে।রুহী বলল,
.
.
-”খেয়ে নিন। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
-”হুম।”
-”প্লিজ রোয়েন খেয়ে নিন।”
.
.
এবার সরে আসে রোয়েন।তারপর রেগে বলল,
.
.
-”সবসময় তোমার এসময়ে আমাকে বিরক্ত করতে হয়?”
-”আপনার সবসময়ই এসব করতে হয়।তাও বলে খাওয়ার সময়ে?”
-”তুমি বেশিই কথা বলো মনে হয়।আমার বৌ তুমি যখন ইচ্ছা আদর করবো আর সহ্য করবে তুমি।কজ তুমি শুধু আমার।আমি তোমাকে সবসময়ই চাইবো।”
.
.
রুহী অবাক চোখে চেয়ে থাকে।লোকটা সামান্য কথায় এত কিছু বলে ফেললো?রোয়েন রেগে রুহীর দিকে তাকাতে তাকাতে খেতে বসে পড়ে।রুহী রোয়েনের দিকে তাকিয়েই আছে।রোয়েন এবার ভ্রু কুঁচকে বলল,
.
.
-”বসছো না কেন?”
-”এই তো বসছি।”
.
.
রুহী বসে পড়ে খেতে শুরু করে।খাবার শেষে ওরা রুমে চলে আসে।রোয়েন ফোনে কথা বলছে রামীনের সাথে রেজোয়ান মাহবুবের ঔষধের বিষয়ে।রুহী খাটে শরীর এলিয়ে দিলো।ভীষন ক্লান্ত লাগছে।কিছুক্ষন বাদে রোয়েন কথা শেষ করে রুমে আসে।রুহী রোয়েনকে দেখে মুচকি হাসে।রোয়েন এসে রুহীর পাশে বসে ওর একহাত নিজের দুহাতের ভাজে নিয়ে আলতো চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে।রুহী এগিয়ে আসে রোয়েনের কাছে।তারপর রোয়েনের গালে ঠোঁট ছোঁয়ায়।রোয়েন রুহীর মাথা ধরে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে শুয়ে পড়ে রুহীর ওপর হালকা ভর দিয়ে।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে।পনের মিনিট পর রুহীর গলায় চুমু দিতে থাকে রোয়েন।রুহীর শরীরের ভিতর শীতল প্রবাহ বয়ে যেতে শুরু করে।কেঁপে কেঁপে উঠতে থাকে একেকটা ছোঁয়ায়।রুহীর পেটের কাছে চলে আসে রোয়েন।তারপর সেখানে মুখ ডুবিয়ে নাক ঘষে দিতে থাকে।আবার মাঝে মাঝে ভিজা চুমু ও খাচ্ছে।রুহী কথা বলতে পারছেনা।ওর গলা আটকে আসছে।রুহী রোয়েনের শার্ট খাঁমচে ধরে নিজের ওপরে নিয়ে আসে।রোয়েন রুহীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।আবার ও রুহীর ভালবাসার মায়াজালে আটকে পড়তে শুরু করে।পরদিন বিকেলে রেজোয়ান মাহবুবকে রিলিজ দেয়া হবে।রুহীকে হাসপাতালে দিয়ে রোয়েন কাজে চলে যায়।রুহী বাবার কাছে এসে দেখে আনিলা সেখানে বসে আছে।রুহীর বেশ রাগ হয়।তবে রাগকে দমিয়ে ভিতরে আসে।আনিলা শোহরাব বলে উঠেন,
.
.
-”ভাল আছো রুহী?”
-”জি।বাবা নাস্তা করেছো?”
-”হ্যারে মা।রোয়েন কই?”
-”অফিসে গেলো ওনি।”
-”ওহ।তা তোরা নাস্তা করেছিস?”
-”হুম।বাবা আমিই থাকবো এখানে।ওনি চলে যাক।”
.
.
রুহীর কথায় কোথায় যেন রাগের আভাস পান আনিলা শোহরাব।তাই হেসে বললেন,
.
.
-”আচ্ছা রেজেয়ান চললাম।নিজের খেয়াল রেখো।রুহী আসি।”
.
.
রুহীর এবার ভালো লাগছে।বিকেলে রোয়েন আর রামীন হাসপাতালে এসে ওদের ঘরে ঘরে নিয়ে গেলো।রোয়েন আবার ও রামীনকে নিয়ে কাজে চলে যায়।রুহী সেসময়টা বাবার সাথেই কাঁটিয়ে দেয়।এদিকে রোয়েন আর রামীন কাজ করছে।রোয়েন হঠাৎ বলল,
.
.
-”তোর কথা হয়না আশফিনার সাথে?কেমন আছে ও?”
-”তেমন একটা হয়না।ওর বাবা সবসময় আশেপাশে থাকে।”
-”ওর বাবাকে জানাচ্ছেনা কেন?”
-”রোয়েন আই থিংক ওর বাবা,,,,,,,,,”
.
.
সব কথা শেষ করতে পারেনা রামীন ওর ফোন বেজে উঠে।রামীন বেরিয়ে যায় কথা বলার জন্য।কিন্তু এক মিনিট যেতে না যেতেই রামীন রুমে চলে আসে।রোয়েন বেশ অবাক হয়।ও বলল,
.
.
-”কথা শেষ?”
-”ওর বাবা চলে এসেছিলো।”
-”ওহ।তখন কি যেন বলছিলি?”
-”আহ হ্যা।আমার মনে হয় ওর বাবাকে নিয়ে কোন প্রবলেম আছে।যেটা আসলে ও বলছেনা।”
-”ওহ।”
.
.
রোয়েন আবার ও কাজে মন দেয়।সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।রুহী বাবাকে খাইয়ে তার সাথে বসে গল্প করছিলো।রোয়েন কলিংবেল বাজাতেই রুহী ছুঁটে চলে এসে দরজা খুলে দেয়।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে চুমু খাওয়ার পর রোয়েন ভিতরে এসে জিজ্ঞেস করে,
.
.
-”বাবা কি করে?”
-”শুয়ে আছে।ঔষধ দিবো।”
-”ওহ যাও দিয়ে রুমে আসো।”
-”ওকে।”
.
.
রুহী রেজোয়ান মাহবুবকে ঔষধ দিয়ে রুমে এসে খেয়াল করে বাথরুমে ঝড়নার শব্দ হচ্ছে।রুহী রোয়েনের গোসলের কাপড় চোপড় বের করে খাবার গরম করতে যায়।রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসলে দুজনে খাবার খেয়ে রুমে চলে আসে।রোয়েন আর রুহী দুজনে বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে গল্প করছে।রোয়েন গল্পের একপর্যায়ে হাত বাড়িয়ে কাছে টেনে নেয় রুহীকে।রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ওর বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকে।দুজনেই একপর্যায়ে ঘুমে তলিয়ে যায়।এদিকে পরদিন সকালে রোয়েন রেডি হয়ে ডাইনিং টেবিলে চলে আসে নাস্তা করার জন্য।
রুহী রেয়েনকে নাস্তা বেড়ে দিচ্ছে।রেজোয়ান মাহবুব ও এসে টেবিলে বসলেন।রুহী ওনাকে নাস্তা দিয়ে বসতেই কলিংবেল বেজে উঠে।
রুহী উঠে দরজা খুলে দেখলো মাঝারি সাইজের একটা জোয়ান ছেলে একটা টিফিন বক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রুহী চিনতে পারছেনা ছেলেটাকে।ও বলল,
.
.
-”কে তুমি?এগুলো কে পাঠিয়েছে?”
-”আনিলা ম্যাম পাঠাইছে রেজোয়ান স্যারের জন্য।”
.
.
পিছন থেকে রোয়েন বলল,
.
.
-”রুহী ওকে আসতে দাও।”
চলবে