The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 31
→রুহীর কথায় পুরো শরীর শিউরে উঠে রোয়েনের।মাথা এবার পুরোটাই যেন কাজ করা বন্ধ করে দিলো।কি হচ্ছে?
.
.
-হ্যা!!!কখন কিভাবে হলো এটা?কিছুটা দূরে ছিটকে যায় রোয়েন।
-সেদিন আপনি ড্রিংকস করে এসেছিলেন।আমি ও ভাবিনি এমন কিছু হবে।কিন্তু হয়ে গেছে।
-হয়ে গেছে!!!!
.
.
ও কিভাবে করলো এই কাজটা?রুহীকে কিভাবে এতো বড় ঝুঁকির মাঝে ফেলে দিলো?কিভাবে?ভাবতেই ভীষন খারাপ লাগতে শুরু করে রোয়েনের।এমন কিছু হবে নিজেই ভাবতে পারেনি রোয়েন।নিজের একটা ভুলের জন্য মায়াবতীর জীবন শেষ করে দিলো এভাবে?নিজেকে নগন্য মনে হচ্ছে রোয়েনের।অন্তত রুহীর দিকটা ভাবা উচিৎ ছিলো।কি করে এমন করে ফেলল। সেদিন এমন কিছু হয়েছিলো মনে আসছেনা।
রোয়েনের।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।কেমন মলিন হয়ে আছে মেয়েটাার চেহারা।কি করে পারলো ও?রোয়েন এবার কোনমতো বলল,
.
.
-রুহী আমাকে একটু একা ছাড়ো প্লিজ।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
.
.
রুহী বেরিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।সন্ধ্যায় রোয়েনের রুমের সামনে উঁকি দেয় রুহী।দেখতে পায় রুমের এপাশ থেকে ওপাশ হাঁটছে কি যেন বিড়বিড় করছে রোয়েন।রুহী মুচকি হেসে সরে আসে সেখান থেকে।সময় গুলো কেঁটে যেতে থাকে।রোয়েন রুহীর থেকে দূরে দূরে থাকে কিন্তু রুহী রোয়েনের আশেপাশে থাকে।রোয়েনকে নিজের কাছে টানে।জড়িয়ে চুমু খায়।রোয়েন কোনমতেই ইজি হতে পারছেনা।এদিকে রামীন আর আশফিনার নৈকট্য বেড়ে চলছে।আশফিনাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এটা ওটা গিফ্ট করা।আশফিনার হাতের এক কাপ চা না খেলে যেন ঐদিনটা ভালো কাঁটেনা রামিনের।আশফিনার ও বেশ ভালো লাগে লোকটাকে।
যথেষ্ঠ কেয়ারিং আর মজার মানুষ ওনি।রামীন সেদিন আশফিনা কে বলল,
.
.
-তোমার ফেসবুক আইডিটা দাও আশফিনা।
-ইশরাত জাহান আশফিনা।
-স্পেলিং বলো।
-ওহ আচ্ছা।লিখেন Israt jahan Aashfina.
.
.
রামীন ফোন বের করে ফেসবুকে আশফিনার বলা নামটা সার্চ করলো।তারপর দেখলো সবার উপরে বেশ স্টাইল করে হিজাব আর সানগ্লাস পরা এক মেয়ের ছবি।ছবিটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে রামীন তারপর জিজ্ঞেস করে,
.
.
-এটা?
-জি।
-তবে এই সুন্দরী কে?
-সুন্দরী কোথায়?এটা আমি।
-তুমি তো কুৎসিত নও।
-আপনার চোখেই হয়ত আমি সুন্দর।তবে এই কথাটা প্রথম শুনলাম।
-সৌন্দর্য দেখার জন্য ও চোখ থাকতে হয় যেটা সবার নেই।
-আচ্ছা আচ্ছা আর ফ্লার্ট করতে হবেনা।লজ্জা পেয়ে বলল আশফিনা।
-ফ্লার্ট কই করলাম?ইউ আর বিউটিফুল।
-থ্যাংক ইউ।
.
.
আশফিনা কিছু বলতে যাবে তখন রেজোয়ান মাহবুব ঘরে প্রবেশ করেন।তারপর রামীন কে দেখে বললেন,
.
.
-তুমি এখানে?
-জি আঙ্কেল এক্চুয়ালি আশফিনা আর আমি বাহির থেকে আসলাম সবে।
-ওহ। স্যার ও আজ এলো না।কি হয়েছে কে জানে?
-ইদানীং ওকে অনেক ডিস্টার্বড মনে হচ্ছে।
-তোমাকে কিছু বলেনি?
-শালা কি এতো সহজে কিছু বলে?দেখেননা সাড়ু মার্কা লুক নিয়ে থাকে।কখন রেগে থাকে বা খুশি থাকে বুঝা যায়না।
.
.
রামীনের কথায় রেজোয়ান মাহবুব কিছু বলেননি।অস্ফুটভাবে হেসে রুমে চলে গেলেন।তখন আশফিনা বলল,
.
.
-ভাইয়ার সাথে কথা বলা উচিৎ আপনার।
-বলেছি।সরে যেতে বলে বারবার।
-বললেই কি সরে যেতে হবে?জাপটে ধরবেন।না বলা পর্যন্ত ছাড়বেননা।
-ওকে কাল কথা বলবোনে।
-গুড বয়।
.
.
এদিকে রোয়েন পরদিন অফিসে যাওয়ার সময় রুহী ওর হাত টেনে নিজের সাথে লাগায়।তারপর নিচে তাকিয়ে মুচকি হেসে ওর ঠোঁটজোড়ায় আলতো চুমু খেয়ে দৌড়ে রুমে চলে যায়।রোয়েন থ মেরে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষন। স্বাভাবিক হতে সময় লাগে অনেক।কারন রুহী কখনোই এমনটা করেনা। তাহলে আজকে?রোয়েন এবার নিজেকে সামলে বেরিয়ে আসে।রামীন ভেবে নিয়েছে আজ জেনেই ছাড়বে কি হয়েছে রোয়েনের?
অফিসে নিজের কেবিনে ঢুকে একগ্লাস কুসুম গরম পানি দিতে বলে রোয়েন।কিছুসময় পর শরৎ পানি দিয়ে যায়।রামীন এতো সময় রোয়েন কে দেখছিলো।তবে এখন আর বসে থাকতে পারেনা।উঠে রোয়েনের সামনে এসে বসে।রোয়েন পানি খেয়ে টেবিলের ওপর গ্লাস রাখতেই রামীন বলল,
.
.
-প্রবলেম কি?
-কার?
-তোর আর কার?দেখ এসব মানতে পারছিনা। কথা বলিস না কেন?
-শোন এখন কিছু বলার মুডে নেই আমি।
-কেন?
-আমার সামনে থেকে সর রামীন।
-না আমাকে আজকে বলতেই হবে।
-জাস্ট লিভ!!!!চিৎকার করে উঠে রোয়েন।
-বলিসনা।আর কখনো কিছু জানতে চাইবোনা।
.
.
রামীন মন খারাপ করে সরে যায়।রোয়েন কিছু না বলে কাজে মন দেয়।দুপুরে খাবার খেয়ে রুহীকে আনতে কলেজে যায় রোয়েন।কেমন মন খারাপ করে গাড়িতে বসে রুহী।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে।রোয়েন চেয়ে ও জিজ্ঞাস করতে পারেনা।ঘরে ফিরতেই রুহী দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে বমি করে দেয়।রুহীর অবস্থা দেখে রোয়েন ভাবে যাই হোক ওকে আর অযত্ন করা ঠিক হবেনা।রুহী তো ভুল করেনি।ভুল হয়েছে রোয়েনের।এবার ওকে অনেক যত্ন করবে রোয়েন।রুহীর থেকে আর দূরে থাকবেনা ও।কথা গুলো ভেবে প্লেট ভাত বেড়ে রুহীর রুমে এলো রোয়েন।মেয়েটা কেমন গুঁটিসুঁটি মেরে শুয়ে আছে।রুহীর মাথায় হাত বুলায় রোয়েন।
.
.
-রুহী খেয়ে নাও একটু।
-নাহ।
-রুহী প্লিজ।এখন বেশি বেশি খেতে হবে।
-পেট ব্যাথা করছে।যান এখান থেকে।
.
.
রুহীকে জোরে করে উঠিয়ে খাইয়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় রোয়েন।সেদিন বিকেলে রামীন কে আসতে না দেখে খারাপ লাগে আশফিনার।চেষ্টা করে একবার কল দেয় রামীনকে।তখন কল রিসিভ না হলে ও রামীন কিছুক্ষন পর কল ব্যাক করে।
.
.
-আজ আপনার প্রিয় মালাই চা করেছি।আকাশ ডাকছে।একসাথে খেলে ভালো লাগত।
.
.
রামীন ফোন কেঁটে দেয়।তারপর জানালা দিয়ে তাকায় বাহিরে।আসলেই অসময়ে বৃষ্টির কারন কি?রামীনের চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে।চোখ জোড়ার সামনে ভেসে উঠে এমনই এক বৃষ্টি ভেজা সকালের কথা।অস্ট্রিয়ায় থাকাকালীন স্কুলে পড়ছিলো রোয়েন আর রামীন।স্কুলের ছুটির পর ওরা বেরিয়ে আসতেই ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো।রামীন বলল,
.
.
-রোয়েন চল ভিজি।
-না ভালো লাগছেনা।
-আরে চল না।
.
.
রোয়েন আর কিছু না বলে ছোট্ট পা জোড়া নরম ঘাসের ওপর রাখতেই কাঁদা দিয়ে মাখামাখি হয়ে গেলো কালো জুতো জোড়া।কিছুটা রাগ লাগলে ও বৃষ্টির পানি গুলো যেন ওর হৃদয়ের সব কষ্টকে ধুয়ে মুছে দিলো।দুজনে লাফাতে লাগলো কাদার ওপর।শেষমেষ ক্লাশ টিচার এসে দুজনকে টেনে স্কুল বাসে উঠিয়ে দেয়।পাশাপাশি দুটো সিটে উঠে বসে ওরা।রামীন আর রোয়েন পাশাপাশি। রামীন বলল,
.
.
-আজ বাসায় চল।
-কেন?
-মা খিচুড়ী রাঁধবে।
-নারে।
-কেন।
-ম্যাম রাগ করবেন।
-ওনাকে মা কল দিবে।
-না রামীন আমি পারবোনা।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
.
.
সেদিন বিকেলে রামীন বক্সে খিচুড়ী বেড়ে রোয়েনের কাছে আসে।রামীনকে দেখে বেশ অবাক হয় ও।তখন পিছন থেকে রামীনের মা বলে,
.
.
– নিজে ও খায়নি তুমি খাবানা দেখে।খেয়ে নাও।
-জি আন্টি।
.
.
কথাটা বলে রামীনের দিকে তাকিয়ে রোয়েন খেতে শুরু করে।ওদের বয়স যতো বাড়ছিলো ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে।এবং দুজনেই একসাথে বাংলাদেশে ব্যাক করে।অবশ্য রামীনের মা বাবা ওখানেই থেকে যায়।রামীন রোয়েন ছাড়া থাকতে চাইছিলো না তাই চলে আসে।রামীনের চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে।ও জানে রোয়েন অনেক ভালো যেমন ব্যাবহারই করুক।কিন্তু লুকাচ্ছে কেন।রামীন কালো লম্বা কোট গায়ে জড়িয়ে আশফিনার কাছে আসে।আশফিনা ওকে বলল,
.
.
-এমন দেখাচ্ছে কেন আপনাকে?
-রোয়েন এমন করছে কেন বুঝতে পারছিনা।
-আমি চা আনি।পরে শুনবো আপনার কথা।
.
.
রোয়েন ঠিক করে রুহীকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে।আর খুব দ্রুত বিয়ে করবে।তার আগে রেজোয়ান মাহবুবের সাথে কথা বলবে।ডাক্তারের সাথে কথা বলে পরদিনের এ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক করে রোয়েন।পরদিন দ্রুত রুহীর কলেজে চলে যায় ওকে আনতে।যেয়ে দেখে রুহী লাফালাফি করছে ফ্রেন্ড দের সাথে ফাজলামো করছে।রোয়েনের জানামতে এসময়ে লাফানো কিংবা দৌড়ানো যায়না।কিন্তু এই মেয়েতো খুশিতে দৌড়াচ্ছে লাফাচ্ছে।কিছু বলেনা রোয়েন।রুহী থেমে যায় রোয়েনকে দেখে তারপর ওর সাথে চলে আসে।বিকেলে রুহীকে রোয়োন জানায় দুজনের ব্লাড টেস্ট করাবে ওরা।কারন ব্লাড গ্রুপ জেনে রাখা উচিৎ।রুহী রাজী হয়ে যায়।দুজনে টেস্ট করিয়ে ঘরে ফিরে।দুূদিন পর রোয়েনের হাতে রিপোর্ট আসে।রিপোর্ট দেখে বাঁকা হাসে ও।সেদিন সন্ধ্যায় রুহীকে ওর রুম থেকে কোলে করে এনে খাটে শোয়ায় রোয়েন।রুহী কিছু বলতে যেতেই ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেঁপে চুমু খেতে শুরু করে।তারপর গলায় মুখ ডুবিয়ে শার্টের বোতামে হাত লাগাতেই রুহী বলল,
.
.
-আরে কি করছেন?সরে যেতে চায় রুহী।
-লজ্জা পাচ্ছো কেন?আমার কাছে কি এখন আর কোন লজ্জা থাকবে তোমার?তাছাড়া সেদিন মাতাল ছিলাম ফিল করতে পারিনি আনন্দটাকে।আজ ফিল করতে চাই পুরোনো আনন্দটাকে।
.
.
বলে রুহীর গলায় কাঁধে চুমু দিতে থাকে।
.
.
-রোয়েন দেখেন আমি প্রেগন্যান্ট।এ অবস্থায় এসব করা যাবেনা।
-ডাক্তার বলেছে কোন সমস্যা নেই।রুহীকে আবার টেনে ওর ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খায়।
-রোয়েন প্লিজ।নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে।
-I don’t like disturbence in loving you.রুহীর গলায় আবার মুখ ডুবায়।
-রোয়েন রোয়েন আমি প্রেগন্যান্ট না।
-আরে কি বলছো এসব?মিথ্যা বলছো কেন?তোমার পেটে আমার ছোট্ট সোনাটা আছে।রুহীর পেটে হাত ছোঁয়ায়।
.
.
রোয়েন আবার ওর গলায় ঠোঁট ডুবিয়ে পা দিয়ে রুহীর পায়ের ওপর থেকে ডিভাইডার প্যান্টটা উঠাতেই কাঁদতে শুরু করে রুহী।
.
.
-আমি প্রেগন্যান্ট না সত্যি আমি প্রেগন্যান্ট না।সেদিন কিছু করেননি আপনি।
.
.
রোয়েন সরে এসে অবাক চোখে তাকায়।
চলবে