না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 10
সাগর : মোহোপাখি…. বাবা , মামনি… 📢📢📢…
সাগরের চিল্লানো শুনে সবাই ছুটে এলো॥
শুভ্র : মামনি…. কি হলো আমার মেয়ের?
মমতা : ওই অপয়াটা আমার ছোট ছেলের বিয়ের মধ্যেও আগুন লাগায় দিলো? কারো সুখ সহ্য হয়না।
উজ্জল : মা… চুপ করবে তুমি? তুমি মানুষের কাতারেই পরোনা।
আরমান ( মোহনার বড় কাকা) : শুভ্র … কাদলে হবেনা। ওকে হসপিটালে নিতে হবে….
মোহনাকে হসপিটালে নেয়া হলো। নারায়নগঞ্জেপ হসপিটাল থেকে মোহনাকে বিদায় দিয়ে দিলো। তারা risk নিতে চায়না। তাই ঢাকায় আনা হলো।
.
হসিপটালে…
মোহনা ওপর থেকে যেভাবে পরেছিলো সেটা হলো সাইড হয়ে ।বাম দিকে। যে কারনে ও মাথার বা দিকটা, পেট আর কোমড়ে ব্যাথা পেয়েছে।
ডক্টর বেরিয়ে এলো।
শুভ্র : ডক্টর আমার মেয়ে…
ডক্টর : আপনার মেয়ে?
শুভ্র : জী…
ডক্টর : কেমন বাবা আপনি? হ্যা? বলুন? এতটুকু ১টা বাচ্চাকে কিভাবে একা একা ছাদে যেতে দেন? কিভাবে? দেখে ৫রাখতে পারেন না বাচ্চাকে ? কোথায় বাচ্চার মা ? কোথায় সে?
রেদোয়ান : নেই। মারা গেছে।
ডক্টর : ও.. মা নেই। মা নেই তখন বাবা থেকেও না থাকার বরাবর। whatever .. বাচ্চাটার রক্ত লাগবে। O+ … এখানে কি কারো blood group O+ আছে?
শিখা: আমার O+…
ডক্টর : ready থাকুন।
.
OT থেকে ডক্টর বের হলো।
আরমান : ডক্টর আমার ভাতিজি..
ডক্টর : সার্জারি এখনও শেষ হয়নি।
রেদোয়ান : ঠিক হয়ে যাবে তো মিষ্টি মা?
ডক্টর : don’t know .. ও অনেক ছোট। আপনারা আমার কেবিনে আসুন।
ওরা ২জন গেলো। আরমান : ডক্টর… মোহনা…
ডক্টর: ১তলা ছাদ থেকে পরে যাওয়া ১টা প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য তেমন কিছু না হলেও ৫বছরের ১টা বাচ্চার জন্য অনেক কিছু। ওর brain এ ভীষন আঘাত পেয়েছে। ওর সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার আর সেরিব্রাম বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। নিউরন গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে । যার জন্য ওর মধ্যে কিছু mentality disorder দেখা দিবে।
আরমান : কি বলছেন কি ডক্টর ?
ডক্টর : আরো আছে শুনুন । এখানেই শেষ না। brain এর সমস্যাটা হয়তো মেডিসিন দারা ঠিক হয়ে যাবে। 100% ঠিক না হলেও 90-95% অবশ্যই ঠিক হবে।
কিন্তু আপনাদের অবহেলা ১টা বাচ্চার জীবনে কতোবড় অভিশাপ বয়ে এনেছে শুনবেন না? উচু থেকে পড়ার জন্য মোহনা কোমড়ে আর পেটে যথেষ্ট ব্যাথা পেয়েছে। যার জন্য ওর জরায়ুর বাম দিকটারও অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। inner bleeding শুরু হয়েছে। মোহনার বাম দিকের টিউবটা কেটে ফেলতে হবে।
.
আরমান-রেদোয়ান: ….
ডক্টর :এটা আপনাদেরকে বলার কারন ২টা।
১ম হলো যে মোহনা খুব ছোট। তাই এতো বড় সার্জারি স্বাভাবিকভাবেই খুবই harmful .. ওর বেচে ফেরার সম্ভাবনা 70%। বড় মানুষ হলে 70% is nothing to worry.. কিন্তু she is a kid…
আর ২য় হলো এই যে টিউবটা কেটে ফেললে হয়তো ও কখনো মা হতে পারবেনা ।
রেদোয়ান : কি?
ডক্টর : একটু ঠান্ডা মাথায় আমার কথাটা শুনুন। ১দিকে টিউব কেটে ফেললে বেবি হয়। কিন্তু এখানে মোহনা তলপেট টা তে ব্যাথা পেয়েছে। জরায়ূতে আঘাত। সেই সাথে স্নায়তন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্থ। সব মিলিয়ে অনেক কিছু। তাই হয়তে ও মা হতে পারবেনা। তবে হ্যা ও বড় হলে like ২২-২৩ বছর বয়স হলে ওর physical fitness অনুযায়ী যদি treatment করা হয় , সার্জারি করা হয় তাহলে ও মা হতে পারবে ইনশাল্লাহ।
আরমান : আর যদি এই সার্জারী টা না করা হয় তাহলে?
ডক্টর : তাহলে হয়তো ও ৫-১০ বছর বেচে থাকবে। ওর বাম টিউবটাতে পচন ধরবে ধরবে। it may causes cancer … তখন ওকে বাচানো অসম্ভব হয়ে যাবে।
আরমান-রেদোয়ান : ওহ।
ডক্টর : আপনাদের অনুমতি নেয়ার জন্যেই wait করছি। time নেই বেশি। আগে যে মাথাটা কমপ্লিট করবো সেটা হবেনা। কারন ২বার বেহোশ করা ওর মস্তিষ্কের জন্য আরো ক্ষতিকর। ওর বাবার অবস্থা দেখে মনে হলো যে সে কোনো decision নেয়ার অবস্থায় নেই। you come forward … তাই আপনাদের বললাম। decision is yours…
আরমান আর রেদোয়ান চিন্তায় পরে গেলো। ২জনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলো সার্জারিটা করানোর।
.
৪ঘন্টাপর….
OTএর বাতি নিভলো।
সবাই দারিয়ে গেলো। ডক্টর বের হলো।
সবাই এগিয়ে গেলো।
ডক্টর : operation is successful …
সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলল।
ডক্টর : ওকে ৪৮ঘন্টা ventilation এ রাখতে হবে।
উজ্জল : ধন্যবাদ । ডক্টর ।
ডক্টর : she is out of danger … কিন্তু আপনাদের একটু খেয়াল রাখতে হবে যেন ওকে mental pressure না দেয়া হয় । atleast যতোদিন ওর brain এর injury টা ঠিক না হয়। ওকে শ্বাসন-বারন যা কিছুই করবেন ভালোবেসে করবেন। politely করবেন…। যার সাথে বেশি emotionally attached তাকে ওর সাথে ভীষন friendly হতে হবে। excuse me…..
.
৭দিনপর….
শিখা:আমার মিষ্টি পরীটার ঘুম হলো?
মোহনা : হামম।
শুভ্র : জানো মামনি আর ২দিন পরই তোমাকে বাসায় নেয়া হবে।
মোহনা : সত্যি?
আশা (বড়কাকী) : হামম মা।
মোহনা : আম্মু কোথায়?
আশা : দেখো তো সোনাটা বলে কি? ভুলে গেলে ? আম্মু তো তারা হয়ে গেছে। ঝিকিমিকি তারা মিটিমিটি জ্বলে।
মোহনা : তাহলে দীদা যে বলল আমি ছাদ থেকে লাফ দিলে আম্মুল কাছে যেতে পালবো।
শুভ্র : কি? দীদা বলেছে মানে?
মোহনা : হামম। দীদাই তো বলল। তাই তো লাফ দিলাম। তবুও আম্মু এলোনা। আম্মু এতো পচা? আম্মুল সাথে কাটটি। আটটি কাটটি… যার সাথে খিলিনা তাল নাম আম্মু গাম্মু।
আশা : ধ্যাত বোকা মেয়ে। কাকীমা আছিনা।
শিখা : ছোটআম্মুও তো আছি।
তখন মিতা মানে ছোটকাকী আর উজ্জল ভেতরে এলো।
মিতা : আর এখন তো ছোটকাকীমা ও আছে।
মোহনা : নুতুন কাকীমা…
মিতা : হামম। নুতুন কাকীমা…
শুভ্র : তোমরা থাকো ওর কাছে আমি আসছি।
শুভ্র ছুটলো নারায়নগঞ্জ।
মোহনা : আমি আল খাবোনা।
মিতা : কেন কেন খাবেনা কেন? বড় কাকীমা আর ছোটআম্মুর হাতে তো খেয়েছো । এখন নতুন i mean নুতুন কাকীমার হাতে খাবেনা? দেখি দেখি ভাবি এবার আমি খাওয়াই তো দেখি এই চাদের কনাটাকে।
মোহনা : শুধু ৫বাল…
মিতা : ok….
.
ওদিকে…
শুভ্র : মা… মা…
মমতা : কিরে চিল্লাস ক্যালা?
শুভ্র : কারন আছে বলেই চিল্লাচ্ছি।
মমতা : মানে?
শুভ্র : তুমি মিষ্টিকে ছাদ থেকে লাফাতে বলেছিলে?
মমতা : বলছি বলেই কি লাফ মারবো?
শুভ্র : ওর ছোট মানুষ মা… তুমি…
মমতা : কিছু বলার আগে তোর বাবার শেষ কথা মনে রাখিস।
শুভ্র : সেটাই আমাকে আটকে রেখেছে। তবে মা আমার মেয়েকে আমি আর এই বাড়িতে আনবো না।
বলেই শুভ্র চলে গেলো।
এরপর থেকে মোহনা আর কখনো দাদুবাড়ি যায়নি। চাচাতো ভাই-বোনদের বিয়ে হয়েছে তাও ওকে নেয়নি শুভ্র।
.
মোহনা বড় হতে লাগলো। আর ওর damn care ভাব বারতে লাগলো। কে কি বলে কে কি করলো তাতে মোহনার কিছু যায়ও না আর আসেও না। যা মন চায় তাই করে।
মোহনার বয়স বারার সাথে সাথে দীদা আর মায়ের প্রতি ওর ঘৃণাও বারতে থাকে। মোহনার mentality disorder এর কথা মেরিন জানতো । but মা হওয়া নিয়ে যে ক্যাচাল আছে তা মোহনা জানতো না। যাই হোক…
ওর মনমতলবির জন্য রিতু ছারা ওর কোনো বন্ধু নেই। হ্যা সাগরও ছিলো বন্ধু । ভাবা যায় সাগর মোহনা বন্ধু!!! কিন্তু এটাই সত্যি। মোহনার খেলার সাথী ছিলো রিতু আর সাগর। মোহনার সাথে খেলা ধুলা মাঝেমধ্যে ওকে খাওয়ানো চুল পর্যন্ত বেধে দেওয়াও সাগর করতো। মোহনার সকল দাবী বাবা ভাইয়ার পরই সাগরের কাছে থাকতো। খেলাধুলা সব সাগরের কাছেই শেখা। মোহনা জানতোনা সাগরের সাথে ওর বিয়ে হবে। সাগর ঠিকই জানতো। সাগর ভীষন রাগী হলেও মোহনার সাথে কখনো রাগ করেনি।
.
মোহনা ক্লাস 9 এ উঠলো। অহনার বিয়ের উৎসব শুরু হলো। এরমধ্যে মোহনা জানতে পারলো যে সাগরের সাথে ওর বিয়ে ঠিক। কথাটা ঠিক মোহনার হজম হলোনা।
সাগর : কি ব্যাপার মোহো পাগলি… এমন fire bigrade হয়ে আছো যে?
মোহনা : তোমার সাথে নাকি আমার বিয়ে ঠিক?
সাগর ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।
সাগর : কিসের মধ্যে কি?
মোহনা : প্যাচাল না পেরে বলো সত্যি কি না ?
সাগর : জেনে কি হবে?
মোহনা : বলবা কি বলবা না?
সাগর : হ্যা।
মোহনা : what? কিন্তু কেন?
সাগর : কেনর কি আছে? বড়রা decide করেছে। তো করেছে।
মোহনা : বড়রা করেছে তো করেছে… 😒. আরে বললেই হবে নাকি? বড়রা চাইলে কি হবে? আমরা না চাইলে?
সাগর : আমরাও চাই। i mean আমিও চাই।
মোহনা : what? তুমি তো দেখি মিরজাফর। তুমি না আমার বন্ধু লাগো?
সাগর : হামম লাগি।
মোহনা : তাহলে বিয়ে করবে কেন?
সাগর : কারন আমি তোমাকে…
মোহনা : তুমি আমাকে?
সাগর : বিয়ে করতে চাই।
মোহনা : হায় হায় বলে কি? আমি তো পাগল। পাগলকে কেউ বিয়ে করে নাকি?
সাগর : কান টেনে ছিরে ফেলবো। কে বলেছে তুমি পাগল? তুমি মোটেও পাগলনা। তুমি ঠিক হয়ে যাবে। আমি তোমাকে ঠিক করবো।
মোহনা : তুমি বললেই তো আর হবেনা। তাইনা? আমি পাগল আর এটাই সত্যি। আমি নিজেও জানি যে আমি পাগল।
সাগর : এই তো তুমি প্রমান করলে যে তুমি পাগল নও। কারন পাগল কখনো স্বীকার করেনা যে সে পাগল।
মোহনা : তুমি বললেই তো আর আমার জীবনের সত্যিটা বদলে যাবেনা। তাইনা? সত্যি is সত্যি। আমি জানি তুমি লক্ষিমন্তর ছেলে হয়ে পরিবারের মতে বিয়ে করতে চাইছো।
সাগর : মোটেও না। আমি সাগর। আর সাগরের ওপর কারো জোর চলেনা। মামনি আর বড়আম্মু ঠিক করেছিলো যদি বড় হলে য…
মোহনা : থামো থামো… কি বললা? বাবার বউ ঠিক করেছে। তাহলে তো আমি মরে গেলেও তোমাকে বিয়ে করবোনা।
.
সাগর : আহা মোহোপাখি… panic হচ্ছো কেন? এখন তো আর বিয়ে হচ্ছে না। তুমি graduation কমপ্লিট করবে মানে ডক্টর হবে তারপরই বিয়ে ।
মোহনা : এখন তখন কোটি বছর পর আমি তোমাকে বিয়ে করবোনা। infact বিয়েই করবোনা। তবে হ্যা আমার প্রেম করার এত্তোগুলা শখ । তাই প্রেম করবো।
সাগর মুচকি হেসে
বলল : আচ্ছা প্রেম করো। but বিয়ে আমার সাথেই হবে।
মোহনা: এ্যাহ বললেই হলো। বাবার বউ তোমাকে ঠিক করেছে & i hate her…. তাই না মানে না।
সাগর : তুমি কি মনে করেছো যে তোমার না তে কিছু আসবে যাবে?
মোহনা : কারো আসা যাওয়ার তো দরকার নেই।
সাগর : মোহো… u know me… my anger … don’t make me angry … আমি তোমার ওপর রাগ করতে চাইনা। কথাটা এখানেই শেষ করি।
মোহনা : আগে বলো তুমি আমাকে বিয়ে করবেনা।
সাগর : করবো…
মোহনা : আমি কিন্তু তোমাকে আপনি বলবো।
সাগর ১গাল হেসে
বলল : ok…
মোহনা : বন্ধু থেকে বাতিল করবো।
সাগর : no problem … বউ বানাবো।
মোহনা : ঘৃণা করবো।
সাগর : as your wish…
এরপর থেকেই শুরু হলো সাগর-মোহনার যুদ্ধ। সাগর মোহনার বন্ধু থেকে হয়ে উঠলো জল্লাদ+চির শত্রু।
]]]
.
বর্তমান….
৪৮ ঘন্টা পর…
ডক্টর : মোহনার জ্ঞান ফিরেছে। ওকে কেবিনে shift করা হবে।
শুভ্র : আমার মেয়েকে দেখতে পারি?
ডক্টর : হ্যা তবে দূর থেকে। এখন ওর ঘুমের প্রয়োজন।
শুভ্র : আচ্ছা।
শুভ্র সহ বাকী সবাই বাইরে থেকেই মোহনাকে দেখলো। মোহনাকে আবার ঘুমের injection দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। রাতে সাগরই থাকলো জোর করে। সবাই বাসায় চলে গেলো।
.
রাতে….
সাগর : i am really very sorry… আমার খেয়াল রাখার উচিত ছিলো। আমি ব্যার্থ…. তুমি আমার দায়িত্ব… আমার ভালোবাসা… কিন্তু তোমাকে আমি save করতে পারিনি। আমার ছোট্ট ১টা মজার জন্যেই আজকে এতো কিছু হয়ে গেলো। আমি ভাবতেও পারিনি এমন কিছু ঘটে যাবে। i am really very sorry….
.
চলবে…