না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 09

মোহনা দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে সাগর দারিয়ে। আর সাংঘাতিক ভয়ংকর লাগছে সাগরের চোখ দেখতে। মোহনা থেমে গেলো।
রিতু: কিরে প্রকৃতি স্থির হয়ে গেলি যে?
মোহনা লম্বা লম্বা ঢোক গিলতে লাগলো।
রিতু : ক…
রিতু দরজার দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো।
.
সাগর এসে মোহনার সামনে এসে দারালো।
মোহনা মনে মনে : আজকে তোর গুলুমুলু গাল ২টা শেষ মোহো।
রিতু মনে মনে : আল্লাহ save মোহো।
সাগর ২জনকে অবাক করে কিছু না বলে মোহনার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো। গাড়িতে বসালো।
মোহনা মনে মনে : মনে হয় রিতুর সামনে কিছু বলল না। মনে হয় অনেক দূরে নিয়ে যাবে। খুন করে গুম করে দিবে। আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দিও। আমিন…
সাগর মনে মনে : cool সাগর cool… ওর দিকে তাকাস না। তাকালে রাগ control করতে পারবিনা।
.
একটুপর…
মোহনা অবাক হলো। কারন গাড়ি ওদের বাসার কাছে চলে আসছে। মোহনা খুশি হয়ে গেলো।
মোহনা মনে মনে : যাক বাবা বাসায় চলে এসেছি। জল্লাদ at least খুন করতে পারবেনা। thank you my awwe ki cute আল্লাহ…
গাড়ি থামতেই মোহনা দেরি না করে দৌড়ে ভেতরে গেলো। সাগর গাড়ি সাইড করতে লাগলো।
মোহনা হেলে দুলে বাসায় গেলো। ঢুকে দেখে বাবা , ভাইয়া, দুলাভাইয়া , আপু, ভাবি ,ছোটআম্মু, ছোটআব্বু ,শ্রাবনী , আপু , দুলাভাইয়া ,দীদা সবাই দারিয়ে আছে। একেক জনের expression একেকরকম। ভিন্ন ভিন্ন। সবথেকে অচেনা আর উদ্ভট লাগছে শুভ্রর expression … সবার সামনেই দারিয়ে আছে শুভ্র। মোহনা ঢুকতে দেখেই শুভ্র ১পা এগিয়ে গেলো।
অভ্র : বা…
শুভ্র হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো।
মোহনা মনে মনে : কাহিনি কি? সোজা শান্ত গরুর মতো বাবাটা আমার,,, অমন বাঘ কিভাবে হয়ে গেলো। দেখতে হচ্ছে।
সাগরও চলে এসেছে।
মোহনা এগিয়ে গেলো।
মোহনা : আরে বাবা তু….
আর বলতে পারলোনা। কারন শুভ্র মোহনাকে ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো। মোহনা সহ উপস্থিত সবাই মহা অবাক।
.
মোহনা ব্যাথা পেলেও তার থেকে অনেক বেশি অবাক হয়েছে। গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে শুভ্রর দিকে তাকালো।
শুভ্র : চোখ নামাও…
মোহনা তাকিয়েই আছে।
শুভ্র : চোখ নামাও।
মোহনা : …
শুভ্র মোহনাকে আরো ১টা থাপ্পর মারলো মোহনাকে।
শুভ্র : চোখ নামাও বলছি বেয়াদব…
শিখা : দুলাভাই…
দীদা : লাগা এই অপয়াটাকে আরো কয়টা…
রেদোয়ান : শুভ্র… থামো…
শুভ্র : আজকে কেউ কোনো কথা বলবেনা।
সবাই : …
মোহনা চোখ নামিয়ে রেখেছে। আর পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মেঝেতে আঘাত করছে। নিজের রাগ শান্ত রাখার এটা ১টা পদ্ধতি মোহনার। সেইসাথে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
শুভ্র : সমস্যাটা কি তোমার? হ্যা ? বলো… ছোটবেলা থেকে এমন কিছুই হয়না যেটা তোমার অপছন্দ। যখন যেটা চাও তখন সেটা পেয়ে যাও। তোমার জন্য শিখাকে নিজের ঘর সংসার ছেরে তোমাকে সামলাতে হয়েছে। অহনা হয়েছে পৃথিবীর সবথেকে কনিষ্ঠ মা। আর ওই যে অভ্র আর দিপ্তী দারিয়ে আছে… তারা তোমার কথা ভেবে এখনও সন্তান নিচ্ছেনা। আর ওই যে দারিয়ে আছে সাগর… তোমার মতো মেয়ের কোনো যোগ্যতা নেই সাগরের মতো ছেলের বউ হওয়ার। তোমার সকল অন্যায় আবদার সবসময় সবাইকে মানতে হয়। তুমি যেন ভালো থাকো খুশি থাকো সেই চেষ্টাই সবাই করে। আর তুমি কি করো? তুমি সেই কাজ করো যেটাতে কেবল তুমি খুশি থাকো। রোজ তোমার নামে বাসায় বিচার আসে। আমাদের খান পরিবার তুমিই একমাত্র সন্তান যার নামে রোজ বিচার আসে। যেখানে এই পরিবারে কখনো কোনো ছেলের নামেও বিচার আসেনি….
মোহনা : ….
.
শুভ্র : তোমার মনমতলবির জন্য এতো গুলো মানুষ সমস্যাতে আছে। কখনো তোমাকে শ্বাসন করিনি, বাধা দেইনি এটা ভেবে যে বেচারি মায়ের আদর পায়নি, মাথায়ও আঘাত আছে। কিছু বললে হয়তো কষ্ট পাবে। তুমি বেয়াদব হয়ে গেছো। তোমার সব মেনে নিয়েছি। কিন্তু এবার? এবার তুমি সব লিমিট ক্রস করে ফেলেছো। আমার মান সম্মান সব আজকে তুমি শেষ করতে নিয়েছিলে তুমি। আল্লাহর রহমতে শেষ রক্ষা হয়েছে। এখন আমার মনে হচ্ছে যে মা ই তোমাকে ঠিক চিনেছে। আর ঠিক নামে ডাকে। “অপয়া” “অলক্ষি” …
বলেই শুভ্র বেরিয়ে গেলো। শিখা মোহনার দিকে এগিয়ে গেলে মোহনা ওকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। দরজা লাগিয়ে দিলো।
সাগর মনে মনে : damn it আগে এসে বড়আব্বুর রাগটা ঠান্ডা করলে ভালো হতো।
.
রাত ১টা…
দিপ্তী : অহনা…
অহনা : হ্যা ভাবি…
দিপ্তী : এখন মনে হয় মোহনার রাগটা একটু শান্ত হয়েছে। সেই কাল থেকে না খেয়ে আছে।
অহনা : হামম। কিছু খাওয়ানোরও দরকার। চলো তাহলে খাবার নিয়ে যাই।
ওরা রান্না ঘরে যেতে নিলো তখন দেখে শিখা already খাবার নিয়ে বের হচ্ছে।
অহনা : ছোটআম্মু খাবার কার জন্য?
শিখা : মনে হয় এখন পাগলিটার রাগ ঠান্ডা হয়েছে। আর রাগ কমলে খাবার না পেলে আবার রেগে যাবে।
দিপ্তী : হামম।
.
শিখা : মামনি… ও মামনি… দরজা খোলো সোনামনিটা… দেখো ছোটআম্মু তোমার জন্য yummy yummy খাবার নিয়ে এসেছি। সব তোমার প্রিয়।
কোনো সারা নেই।
শিখা : মামনি… মোহোমনি…. এই যে মোহো মনি।।। মিষ্টি পাখি… মোহোপাখি…
কোনো সারা নেই।
শিখা কতোক্ষন ধরে ডেকেই যাচ্ছে। কিন্তু মোহনার কোনো সারা নেই। কেন যেন শিখার খটকা লাগলো।
অহনা এলো।
অহনা : দরজা খুলেনি?
শিখা : না…
অহনা : তোমার কন্ঠ এমন লাগছে কেন?
শিখা : জানিনা। কেমন যেন লাগছে। একটু সাগরকে ডেকে আনোনা।
অহনা : আচ্ছা ছোটআম্মু।
অহনা সাগরকে ডেকে আনলো।
.
সাগর : মামনি ডাকছিলে?
শিখা : হ্যা দদদেখনা মমমেয়েটা দদরজা খুলছেনা।
সাগর : মামনি … relax … let me see…
মোহো…. মোহো… দরজাটা খোলো তো।
তখন ওখানে অভ্র এলো।
অভ্র : এখনো দরজা খুলেনি?
সাগর : না…
অভ্র : পিকু…. ও পিকু… দেখোখ ভাইয়া এসেছি। বাবাকে অনেক বকে দিবো। দরজা খোলো। কিছু খেয়ে নাও।
কোনো সারা নেই।
শিখার বুকটা কাপছে।
শিখা : এই দদদরজা ভভভেঙে ফেলনা।
সাগর : মমামনি। মোহো দরজা খুলবে।
শিখা : খখখুলবে… তততবুও ভেঙে ফেল।
সাগর আর অভ্র দরজা ভাঙলো। ভেতরে ঢুকে যথেষ্টা ঠান্ডা অনুভব করলো। কারন মোহনা এসি full speed এ ছেরে রেখেছে। এমনকি ফ্যানও চলছে। আর মোহনা blanket মুরি দিয়ে শুয়ে আছে। as usual …
অন্ধকার ঘর। অভ্র তারাতারি লাইট জালালো।
.
মোহনাকে মুরি দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখে সবাই একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। specially শিখা। অভ্র আর সাগর বেরিয়ে গেলো। শিখা খাবারটা নিয়ে মোহনার পাশে রেখে বেডে বসলো। মোহনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। মোহনার মুখ এখনও ঢাকা।
শিখা : আমি জানি তুই ঘুমাসনি… খালি পেটে তোর ঘুম আসেনা। এখন উঠে পর তো….
মোহনা : …
শিখা : কি হলো ওঠ…
বলেই শিখা মোহনার মুখ থেকে blanket সরালো। আর সরিয়ে দেখলো মোহনার মুখ থেকে….
শিখা চিল্লিয়ে উঠলো : মিষ্টি…..
.
শিখার চিল্লানোতে সবাই হাজির হলো।
দিপ্তী : কি হয়েছে ছোটআম্মু…
শিখা: মমমিষ… 😣…
সাগর সামনে গেলো। ১টানে blanket টা সরালো। আর poison এর বোতলটা পরে গেলো।
সাগর : মোহো…
সাগরের কাছে সময়টা ওখানেই থেমে গেলো। infact সবার কাছেই।
শুভ্র ওখানে এলো।
শুভ্র : ককি হয়েছে?
অভ্র : দেখো বাবা দেখো … তোমার অপয়া অলক্ষি মেয়ে তোমাকে মুক্তি দিয়েছে… আর কখনো কোনো বিচার আসবেনা আমার পিকুর নামে….
শুভ্র : অভ্র…. দেখি সরো…
শুভ্র সবাইকে ঠেলে মেয়ের কাছে গেলো। শুভ্রর বুক কাপতে লাগলো। কাপা কাপা অবস্থায় মোহনার পাশে গিয়ে বসলো।
শুভ্র : মারে… ও মা… ওঠনা… দেখ আর কখনোই আমি তোকে বকবোনা। মারবোনা। ওঠ না মা… ও মা…
রেদোয়ান : আচ্ছা আর দেরি না করে মামনি কে হসপিটালে নিতে হবে তো… এই সাগর… সাগর…
রেদোয়ান সাগরের কাধে হাত রাখলো। তখন সাগরের বোধ হলো।
সাগর : হ্যা…
রেদোয়ান : সাগর মামনিকে হসপিটালে নিতে হবে…শুনতে পাচ্ছিস…
আর দেরি না করে মোহনাকে হসপিটালে নেয়া হলো।
.
হলি ফ্যামিলি হসপিটাল…
মোহনাকে OT তে নেয়া হয়েছে। একটুপর ডক্টর বেরিয়ে এলো।
অভ্র : ডক্টর আমার বোন..
ডক্টর:patient এর সকল medical history আমার লাগবে। এক্ষনি….
সৌরভ: জী একটু wait করুন…
ডক্টর : wait করার সময় নেই।
সৌরভ: একটু wait করুন। বাসা কাছেই। চলে আসবে।
.
একটুপর …
ডক্টর : আপনারা কি patient কে কোনো কারন mental pressure বা emotionally hurt করেছেন…
সবাই: …
ডক্টর: আরে কিছু লুকাবেন না… বলুন…
সাগর : জী…
ডক্টর: আপনারা কি মানুষ। যার brain এ সেই ছোটবেলা থেকে injury আছে তাকে আপনারা emotionally hurt কিভাবে করতে পারেন? mental pressure কিভাবে দিতে পারেন?
শুভ্র : আমার মেয়েকে বাচিয়ে তুলুন।
ডক্টর : কাউকে তখনই বাচানো সম্ভব যখন সে বাচতে চায়। poison তো বের করিয়ে নিয়েছি। কিন্তু এর জন্য যে মেডিসিন use করা হয়েছে সেটা ওর জন্য ঠিক না। কারন ওর brain issue আছে। যদি সময়ের মধ্যে জ্ঞান না ফিরে তাহলে হয়তো ও পাগল হয়ে যাবে না হয় ওর brain hemarage হয়ে যাবে। pray for her…
শুভ্র : এমন করে বলবেন না ডক্টর। আমার মেয়েকে বাচান।
ডক্টর: আমরা আমাদের 1000% চেষ্টা করবো। দোআ করুন যেন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ওর জ্ঞান ফিরে।
ডক্টর চলে গেলো।
শুভ্র : সসাগর… তুমিও তো ডক্টর… আমার মেয়েকে বাচাও…
অহনা : কেন বাবা… ওই অপয়া অলক্ষিকে বাচানোর কি দরকার?
দিপ্তী: অহনা… চুপ করো।
অহনা : কেন চুপ করবো কেন? আজকে শুধুমাত্র বাবার জন্যেই এই অবস্থা। বাবা তো ভালো করেই জানে যে মিষ্টি সব মেনে নিতে পারলেও বাবার একটুখানি চোখ রাঙানিও মেনে নিতে পারেনা। ওর কাছে বাবাই ওর মা-বাবা। কারো কথা ওকে effect না করলেও বাবার কথ ভীষনভাবে করে। কেবলমাত্র বাবার জন্যেই সব হয়েছে।
কালরাতের কাহিনি actually কালকের কাহিনির থেকেও প্রধান ভুল হলো দীদার প্রতি বাবার এই অন্ধ ভালোবাসা। দীদার প্রতিবাদ না করা….
দীদার জন্যেই আমার বোনটার এতো বড় খুদ হয়ে আছে। যদি আমার বোনের কিছু হয় তোমাকে আর তোমার মাকে আমি কোনেদিনও ক্ষমা করবোনা….
.
৪৮ঘন্টা শেষ হতে হতে অনেক কিছু জানিয়ে নিয়ে আসি আপনাদের।
[[[
শুভ্র আর সোহানার ছিলো love marriage … সোহানার বিয়ে অন্যকোথাও ঠিক হয়েছিলো। তাই সোহানার বাবা শুভ্রর সাথে সোহানার সম্পর্কটা মেনে নেয়নি। ২বার গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে বলে শুভ্রর বাবা আলীবর্দী খানও আর চেষ্টা করেনি। অপমান বোধ করেছে বলে। আলীবর্দী খানের থেকেও মমতা খানের অপমানবোধ ঢের বেশি ছিলো। তার দাম্ভিকতা অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়েই শুভ্র-সোহানা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। যে কারনে সোহানার বাবা আজও মেনে নেয়নি। এমনকি সোহানা মারা যাওয়ার পরও সোহানার বাবা দেখতে আসেনি। খানেরা ১টা সময় মেনে নিয়েছিলো। মমতার সাথে সোহানার সম্পর্ক বেশ ভালো হয়ে ওঠে। মমতার কোনো মেয়ে নেই। আর সোহানাও অনেক মিশুক। তাই ২জনের মধ্যে একেবারে মা-মেয়ের সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিলো। মমতা সোহানার ওপর খুব বেশি দুর্বল হয়ে পরে।
.
একে একে অভ্র-অহনা হলো। এরপর যখন মোহনা সোহানার গর্ভে এলো পরেই আলীবর্দী খান মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে শুভ্র কাছে থেকে ১টা কথা নেয় যে শুভ্র যেন আর কখনো মমতার কথার অবাধ্য না হয়। মমতার বিরুদ্ধে না যায়। এরপর মোহনা হলো।
.
শিখা আর সোহানা ছিলো ছোটবেলার বান্ধবী। যাকে বলে সই। বিয়ের পর সোহানার বোন বলতে আর বাপের বাড়ির লোক বলতে কেবল শিখাই ছিলো। শিখার মা-বাবাই যেন সোহামার মা-বাবা ছিলো। মোহনা হওয়ার পর সাগর ছোটবাচ্চা দেখে excited হয়ে যায়। মোহনাকে কোলে নিয়ে বসে থাকতো। তাই ১দিন শিখা-সোহানা ঠিক করে যে যদি বড় হলে সাগর-মোহনার মর্জি থাকে,রাজী থাকে, যদি ওরা অন্যকাউকে ভালোনাবাসে তবে ওদের বিয়ে দেবে।
.
মোহনার বয়স যখন ১বছর ২মাস তখন মোহনাকে সাপের হাত থেকে বাচাতে গিয়ে নিজেই সাপের কামড় খেয়ে নিজেই মারা যায়। সেই থেকে মমতা মোহনাকে অপয়া অলক্ষী বলে মনে করে। তিনি মনে করে যে মোহনা অশুভ। কারন মোহনা সোহানার গর্ভে আসার পরই আলীবর্দী খান মারা যায়। আবার সোহানাও মারা যায়। তাই মমতার ক্ষোভের শিকার হয় মোহনা। মমতার মনে সবার জন্য ভালোবাসা থাকলেও মোহনার জন্য ঘৃণাই ছিলো। এখনও আছে।
.
দেখতে দেখতে মোহনা ৫বছরের হয়ে যায়। ছোট মোহনা কিছুতেই বুঝতে পারতো না যে দীদা সবাইকে এতো ভালোবাসলেও ওর সাথে এমন ব্যাবহার কেন করে।
মোহনার ছোটকাকা উজ্জল খানের বিয়ের সময় ছিলো। নারায়নগঞ্জে। তাই সাগররাও invited ছিলো। মোহনা সবসময় দীদা মানে মমতার আগে পিছে ঘুরতো। যদি দীদা আদর করে। কোলে নেয়। কিন্তু নিতোনা। দীদা ছাদে আচার রোদে দিয়েছে। সেটাই আনতে গেলো। ১তলার ছাদ।
মমতার সাথে ছোটো মোহনাও সাথে গেছে।
মোহনা : ও দীদা দীদা।।
মমতা: ওই আমি যেদিকে যাই তুই ওখানে হাজির হোস কেনরে?
মোহনা: তুমি আমাল সাথে এমন কলো কেন?
মমতা: কারন তুই অপয়া অলক্ষী।
মোহনা : অপয়া অলককি কি?
মমতা: যারা নিজের মা বাবাকে খেয়ে ফেলে তোর মতো।
মোহনা : ওমা… আমি তো আম্মু বাবাকে কাইনি।
মমতা : মা কে খেয়েছিস। দেখিসনা তোর মা নেই। তাই তো তুই অলক্ষী। তোকে আমার সহ্য হয়না।
মোহনা : আমাল আম্মু আতলে তুমিও আমাকে আদল কলবে?
মমতা: জানিনা।
মোহনা: দাও তোমাল কলতে হবেনা। আমাল আম্মুই আদল কলবে। আমি আম্মুল কাছেই চলে য তুমি খালি বলো আম্মু কোথায়?
মমতা: মরে গেছে।
মোহনা : মলে কিভাবে?
মমতা: এই ছাদ থেকে লাফ দে চলে যাবি তোর মায়ের কাছে। huh….
বলেই মমতা চলে গেলো।
.
মোহনা : এখান থেকে লাফ দিলেই আম্মুল কাছে চলে যাবো? কি মজা কি মজা… কিন্তু আমি ব্যাথা পাবোনা ? তাতে কি? আম্মুল কাছে তো যেতে পালবো। আম্মুল কোলে উঠতে পালবো।
মোহনা ছাদের কিনারায় চলে গেলো। মোহনা যেই জায়গাটা গিয়ে দারালো ওখানের নিচে ইট রাখা। যেটা স্বাভাবিকভাবেই মাটি থেকে একটু উচু হয়ে আছে। তবে খুব বেশি না। কারন বেশি ইট নেই।
মোহনা : এখান থেকেই লাফ দেই। কিন্তু ভয়ও তো কলছে। তাহলে ঘুলে লাফ দেই।
মোহনা ঘুরে লাফ দিলো। যেহেত ৫ বছরের বাচ্চা তাই পরে গিয়ে মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা পেলো। রক্তে জরজরিত হয়ে গেলো।
সাগর অহনা আরো কয়েকজন মিলে চোর-পুলিশ খেলছিলো। সাগর এই দিকটাতেই দৌড়ে আসছিলো লুকানোর জন্য। তাকিয়ে দেখে রক্তাত্ব মোহনা। দেখে ভয়ও পেয়ে গেলো। কারন সাগরও খুব বেশি বড়না।
সাগর : মোহোপাখি….
বাবা…. মামনি….📢📢📢
.
চলবে….