ভাড়াটে বউ

ভাড়াটে বউ —পর্ব –০২

রাইসার মিথিলার সাথে রিয়ানের রুমে যেতেই, অবাক
হয়ে যায়। পুরো ঘর যেনো স্বর্গীয়র মতো,
ঘরের পশ্চিম পাশে
রাজাদের মতো পালং আর সেই পালংয়ের উপর
গোল্ডেন কালারের একটি বিছানা চাদর যেটি
রোদের কিংবা তীব্র আলোর স্পর্শে লালচে
কালার ধারন করে তার উপরে গোলাপের পাপড়ি
দিয়ে একটা লাভ আকা , বিছানাটার চারপাশে রঙ-
বেরঙের ফুল, যার গন্ধ আর সৌন্দর্য যে
কেউকে ঘরটার প্রতি আকৃষ্ট করে ফেলবে।
বিছানাটার দক্ষিন পাশে, একটা মস্ত বড় জানালা যা দিয়ে
চাঁদেরহাট দেখা যায়। পুরো ঘরে মোট চারটা জানালা,
আর চারটা জানালার মধ্যেই লাল পায়ের গোল্ডেন
কালারের পর্দা, ঘরের দেওয়ালটায় হালকা ব্লু কালার
করা, আর ঘরটার উওর দিকে মস্তবড় এক বারান্দা, যা
দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখা যায়।

— কি ভাবি পছন্দ হয়েছে ঘরটা।
— হু, কিন্তু।
— কিন্তু কী?
— না, আসলে আমি এই প্রথম এতো বিলাস বহল ঘর
দেখেছি।
— এই টুকু দেখেই তোমার এই অবস্হা। তাহলে
বাকি জিবন কী করবে?
— মানে?
— মানে তোমার যার সাথে বিয়ে হয়েছে সে
এর চেয়ে আর ও বেশি বিলাসিতা পছন্দ করে।
যাইহোক তুমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হও, ভাইয়া
কিছুক্ষণ পর চলে আসবে।
এই কথা বলে মিথিলা চলে যায়।
মিথিলা চলে যাওয়ার পর রাইসা ঘরে ঢুকেই দরজা ভিতর
দিয়ে আটকে দেয়।
তারপর মনের আনন্দ গান- গেতে,গেতে পুরো
ঘর ঘুরে দেখলো।
— বাহবা, রাক্ষসের দেখি চয়েজ আছে। না,
ক্ষেত টাইপের কোনো ছেলের অন্তত
ভাড়াটে বউ হয়নি।
এই কথা বলতে- বলতে রাইসা পালংটির প্রতি আকৃষ্ট
হয়ে সেটাকে কাছ থেকে দেখার জন্য তার
দিকে যেতেই হঠ্যাৎ তার চোখ পড়লো ঘরের
দেওয়াল গুলোর দিকে।
দেওয়ালের দিকে ভালো করে তাকাতেই রাইসার
মুখটায় বিষাদের কালো মেঘপুঞ্জ বাসা বাধে, রাইসা
দেখতে পেলো রিয়ানের পুরো ঘরের
দেওয়াল জুড়ে শুধু একটি মেয়ের ছবি, আর প্রতিটি
ছবির নিচ দিয়ে লেখা — এখনো তোমায়
ভালোবাসি রিয়া, চলে গেছো তাই বলে কী
ভুলে যাবো, এখন ও মাঝরাতে তোমার জন্য বুকটা
কেপে উঠে রিয়া ।
রাইসা রিয়ানের এসব কান্ড দেখে সহ্য করতে না
পেরে বলে উঠলো— ইশ পাগল ও আবার কাব্য ও
লিখে যতসব ডং, কিন্তু এই মেয়েটি কে।সারা ঘর
জুড়ে এই মেয়েটির ছবিই বা কেন।
রাইসা যখন এসব চিন্তাভাবনায় মগ্ন ছিলো, ঠিক তখনি
রাইসার মনে হলো দরজায় কেউ একজন নক
করছে।
দরজার নকের আওয়াজ রাইসার কানে আসতেই রাইসা
প্রচন্ড রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো–এই কে?
ওপাশ থেকে ধমক দিয়ে কেউ একজন বলে
উঠলো— আমি ?
— আমি কে?
— এই বাচাল মেয়ে দরজা খুল।
রাইসা কথাটি শুনেই বুঝতে পারলো রিয়ান ছাড়া এ আর
কেউ নয়।
— ও তাছাড়া এই ঘরটাতো বক রাক্ষসেরেই, সো
ওইতো এখন এই ঘরে আসবে।
রাইসা গিয়ে দরজাটা খুললো,খুলতেই দেখতে
পেলো রিয়ানের চোখে – মুখে রাগ, রাগ ভাব।
রিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে রাইসা ভয়ে- ভয়ে
বলে উঠলো– হাই সোয়ামি।
— সেটাআপ। এন্ড…
— জানি, এখন আপনে আর কী বলবেন, —
ডোন্ট ক্রস ইউর লিমিট।
— তো তাছাড়া আর কী বলবো,তুমি আমার ঘরে
ঢুকে আমার অনুমতি ছাড়া দরজা লাগিয়েছো সাহস
তো তোমার কম নয়।
— সাহসের কী দেখছেন আপনে? হুম আপনে
কী জানেন আমি কে?
রিয়ান তখন রাইসার মুখের একদম নিকটে গিয়ে বলে
উঠলো– কে আপনে।
— বাবা, এতো দেখছি শুধু হট হয়ে যাচ্ছে,না একে
কন্ট্রোল করতেই হবে এই বলে রাইসা খিলখিল
করে হাসতে- হাসতে রিয়ানকে বলে উঠলো —
হি,হি,, আমি? আমি কেউ না।
— ইউ
— আপনে এতো গরম হোন কেন হ্যা?
যাইহোক এই পুরো ঘরে দেওয়াল জুড়ে
এগুলো কার ছবি?
রাইসার এরুপ প্রশ্নে রিয়ানের আচরনের মাঝে
একটু পাগলামি ভাব দেখা গেলো,রিয়ান ছবিগুলোর
অতি নিকটে গিয়ে একটি ছবির মধ্যে হাত দিয়ে
কান্নামাখা কন্ঠে রাইসাকে বলে উঠলো– এ আমার
সব, এ আমার ভালোবাসা, ও আমার বউ, ও ছাড়া আমার
হৃদয়ে অন্য কারো স্হান নেই আর কখনো হবে
ও না,
আর এ কথাটি মাথায় ঢুকিয়ে নিবেন ওকে, আর ভুল
করে ও কখনো এই ছবিগুলোকে ট্যাঁস
করবেননা।
— যদি ও আপনার বউ হয় তাহলে আমাকে বিয়ে
করেছেন কেন? আর তাছাড়া ও ইবা কোথায়।
— সেই কৈফিয়ত আপনার কাছে দিতে আমি বাধ্য নয়।
আর তাছাড়া আপনাকে আমি আমার ভাড়াটে বউ হওয়ার
জন্য জোর করেনি, আপনার টাকা লাগবে বিধায়
আপনে আমার ভাড়াটে বউ হওয়ার জন্য রাজি
হয়েছেন। সো আমার সম্পর্কে কিছু জানার একদম
চেষ্টা করবেননা ওকে.।


এই বলে রিয়ান বিছানার দিকে যেতেই দেখে
চলবে,,,