® মায়াবিনী—– পর্ব- ১১ ( অন্তিম পর্ব)
অয়নী: কি হচ্ছে এটা নীল। চোখটা ছাড়ো না
প্লিজ,, নয়তে পড়ে যাবো তো….!
নীল: উহু..আরএকটু ওয়েট করো…! তোমার জন্যা সারপ্রাইজ রয়েছে একটা..!
অয়নী: কিন্তু কেনো…আমার কিছু লাগবেনা নীল…..তুমি শুধু সারাজীবন পাশে থেকো তাহলে হবে…!
নীল: চুপ….! এইতো চলে এসেছি…!
অয়নী: খুব ভালো তো। এবার কি চোখ থেকে হাতটা সরাবে….!
নীল: হুম…এই নাও তোমার জন্য জন্মদিন আর তোমার বিয়ের এডভান্সড গিফট্….!
নীল অয়নীর চোখ থেকে হাত সরিয়ে নিলো। অয়নী চোখ খুলে এটা দেখবে জীবনেও আর কল্পনা করেনি….!!
একপ্রকার চিৎকার করে বলে উঠলো
: তুমি……..!!!
: কেনো আসতে পারিনা বুঝি…!
: তা কি আমি,একবারো বলেছি বলো…
: তাহলে চমকে উঠলে যে মা,,
: পাঁচ বছর.. .আজ ছয় বছর হতে চলল তোমার সাথে ভালোভাবে কথা বলা দূরের কথা দেখা করার অনুমতিটাও দাওনি বাবা…
: মা রে..তুই কেনো ওভাবে আমাদের না বলে পালিয়ে গিয়েছিলি সেদিন …!
: থাকনা বাবা ওসব কথা…অতীত তো অতীতই হয়…! বলো
: বাব্বাহ্ আমার সেই পিচ্চি অয়নী দেখি কতো কথা শিখে গিয়েছি..!
: পরিস্থিতি কথা শিখতে বাধ্য করে বাবা….!
: হয়েছে হয়েছে.. আর পাকা পাকা কথা বলতে হবেনা…পাকা বুড়ি আমার..দাদু ভাই কই আমার,,
: ওই দিকে বাচ্চাদের সাথে খেলছে..!
: ওও
: কিন্তু বাবা তুমি নীলকে চিনলে কি করে…!
: সে এক লম্বা কাহিনী….! পরে বলবো…!
: ও আচ্ছা….!
: বাবার ওপর এতো রাগ করেছিস যে…
: কি বাবা
: যে আমাকে বাড়িতে ঢুকতেই দিবিনা.. বাইরে থেকেই কথা বলে তাড়িয়ে দিবি…..!
: উফ কি যে বলোনা..যাও,
: চলে যাবো….!!
: চলে গেলে….বুড়ো বয়সে মেয়ের হাতে মাইর খাবে কিন্তু বলে দিলাম….!
: বুড়ো বয়সে ছোটো মায়ের হাতে মাইর খাওয়া যায়.. ..খুব একটা খারাপ হবেনা…সেই ছোট্টকালে মায়ের হাতে মার খেয়েছি..আর এখন বুড়ো বয়সে আমার এই মায়ের হাতেও মার খেতে ইচ্ছে করছে…!
: হয়েছে হয়েছে নেও..! এখন তোমার সাথে আমি ঝগড়া করে সময় পার করছিনা হুম…! যাও আমার ঘরে গিয়ে রেস্ট নেও…
নীল আর অয়নীর বাবা হেসে উঠলো…!
নীল: এটা কি ধরনের কথা অয়নী তুমি
অয়নী: কি…!
নীল: আংকেলকে ঘরে নিয়ে যাও…আমি এদিকে সামলে নিচ্ছি…!
অয়নী: ও আচ্ছা…
নীল সবাইকে খুশি মুখে রিসিভ করছে…!
অনেকে চলে এসেছে…অনেক বন্ধু বান্ধব সবাই এসেছে একটাই কারণে… যে নীল আর অয়নী শেষ পর্যন্ত এক হতে যাচ্ছে..নীলের মনে আর কি আনন্দ আজ তো সব থেকে বেশি আনন্দ করছে নীলের কলেজ লাইফ, ভার্সিটি লাইফ আর মেডিকেলের বন্ধুরা। আবার এই সুযোগে সবার সাথে আবার পুনরায় দেখা হয়ে যাচ্ছে তাই সবার মনে আর আনন্দের জোয়ার ধরছেনা…
সবাই নীলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে….এর মধ্যেই টিনাও উপস্থিৎ হয়েছে…
টিনা: স্যার congratulation
নীল: ধন্যবাদ। কখন এসেছো
টিনা: এইতে মাত্রই আসলাম…
নীল : তাই…..!
টিনা: জ্বী স্যার..ভাবি কোথায়…!
নীল: ওর বাবা এসেছেন ঘরে আছে কথা বলছে উনার সাথে.. গেলে যাও উপরের তলায় বামের রুমটা…
টিনা: না না না….স্যার সমস্যা নাই..ভাবির বাবা এসেছে কতদিন পর দেখা…কথা বলুক ওরা…
নীল: হু..টিনা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো
টিনা: অনুমতি চাইছেন কেনো স্যার…!
নীল: না এমনি..!
টিনা: বলুন স্যার কি বলবেন..
নীল: আচ্ছা তোমার ভাইয়া মানে রাজীব কোথায় জানো কিছু…!
টিনা: ভাইয়া….!
নীল: হুম রাজীব…কোথায় সে
টিনা: তা তো জানিনা স্যার….কেনো স্যার কিছু হয়েছে কি .!
নীল: না… না…এমনিতেই জিজ্ঞেস করছিলাম…!
টিনা: ও
নীল: এমনিতে বাড়িতে আছে না কোথাও গেছে জানো কিছু….!
টিনা: স্যার বাড়িতে তো নাই…! ও হ্যা মনে পড়েছে গতকাল রাত ২ টার দিকে ফোন এসেছিলো ভাইয়ার। তারপরেই দেখলাম ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বললো কোথায় নাকি ব্যাবসার কাজে দ্রুতো যেতে হবে…!
নীল: ব্যবাসা…!
টিনা: হু তাই তো বললো..!
নীল: ও আচ্ছা..ও চাকরি করেনা…!
টিনা: না তো স্যার…. ব্যাবসা করে….!
নীল: ও ওর অফিস কোথায় জানো,,
টিনা: কেনো স্যার হঠাই এতো কিছু জিজ্ঞেস করছেন যে…কিছু কি হয়েছে..
নীল: আরে না রে পাগলি কি হবে….! আচ্ছা ওর কোনে কার্ড আছে তোমার কাছে
টিনা: হুম
নীল: একটু দাওতো…!
টিনা: দিচ্ছি,, কিছু কি…
নীল: আরে না না এমনিতেই কখন কোনটা দরকার হয়
টিনা: জ্বী দিচ্ছি…!
টিনার কাছ থেকে রাজীবের কার্ড নিয়ে বললো,
নীল: ওইদিকটাতে যাও টিনা তোমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলেরও অনেকে এসেছে..নিজের ভাইয়ের বাড়ি মনে করে চলবে.. ঠিক আছে,
টিনা: জ্বী স্যার..
টিনা চলে যেতেই…
নীল দ্রুতে একটা ঘরে ঢুকে গেলো। দ্রুতে রাজীবের কার্ডের ওপর থাকা QR. code টি স্ক্যান করে নিলো। সেটার ছবি তুলে নিলো…!
নীল ফোন দিলো,
: হু কোথায়..
: বস্ আপনার বাড়িতেই আছি…!
: পুরে টিম কি রেডি..
: ইয়েস বস..!
: কোথায় অবস্থান করছো এখন সবাই..
: স্যার ঠিক করে দেওয়া জায়গাতেই সবাই দাড়িয়ে আছে…
: ওকে গুড। আমি আসছি..
: ওকে
কিছুক্ষণ পর নীল বাইরে এসে বলছে,
: এই ছবিটা কন্ট্রোল রুমে পাঠাও…এখোনি…!
: ওকে বস
: তারপর,,ওদের বলো যেনো এখানে যে ফোন নাম্বার টা দেওয়া আছে সেটা কোন ফোনে ব্যাবহার করা হচ্ছে আই মিন সিমটা যে স্লটে আছে সেটার IMEI নাম্বারটা বের করতে বলো।
: তারপর
: হু..তারপর ফোন কম্পানির থেকে জেনে নাও ওই মোবাইলের অপর IMEI নাম্বারটা মানে আরেকটা INEI … তারপর সেখান থেকে ওই সিম এর নাম্বার জেনে নিয়ে দুটে সিমই হ্যাক করতে বলো…আর যেনো ওর সিমেরই আউট গোয়িং কল বা ইনকামিং কল ডিসেবল করে দেয়…আর সাথে মেসেজ অপসনটাও..
: বস গুগল আইডি বা ফেসবুক আইডিও কি ডিসেবল করে দিতে বলবো..
: উহু…!
: কিন্তু স্যার এতে লাভ কি ও তো অনলাইনে কাজ চালাবে.
: হা হা হা..
: হাসছেন যে..
: ওইটাই তো চাচ্ছি..
: মানে.
: মন দিয়ে শোনো.
: জ্বী স্যার বলুন..
: ও অফলাইনে যোগাযোগ করতে না পেরে অনলাইনে আসবেই…!
: এতে লাভ,,
: ফাঁদটা ওখানেই পাতা আছে…
: মানে
: ও অনলাইনে আসলেই সাথে আমাদরে কন্ট্রোল রুমে ওর লোকেশন চলে আসবে..আর একবার লোকেশনটা ট্র্যাক করতে পারলেই খেলা হবে শুরু…!
:ওকে ডান স্যার
: দ্রুতো করতে বলো..
: ওকে
সাথী: নীল…এ ভাই..তুই বাবুর্চিরর সাথে তখন থেকে কি কথা বলছিস…
নীল: বা….বাবুর্চি….! ওও হ্যা ওই বলছিলাম. কাচ্চিবিরিয়ানি তে যেনো বেশি করে হলুদ দেই নয়তে স্বাধ লাগবেনা…!
সাথী: কি দিতে বললি আরেকবার বল,,
নীল: কেনো হলুদ….!
সাথী: ওই মাথামোটয় বাঁদর কাচ্চিবিরিয়ানি তে হলুদ দিতে হয়না….!
নীল: আঁ.. দিতে হয়না..!
সাথী: না তো
নীল:ওওও…তাহলে যেনো ঝাল বেশি করে দেয় সেটাই বলছিলাম
সাথী: ধুর পাগল এদিকে আয় কথা আছে….!
নীল: আচ্ছা.আসছি… আর বাবুর্চি বাবু মশলাগুলে যেভাবে দিতে বললাম সেভাবে দিও… কম বেশি যেনে না পড়.. মনে রেখো এখানে আজ অনেকপ্রকার মানুষ আসবে…ভূল হলেই গেলো কিন্তু সব…!
সাথী: তুই কি আসবি না আমাকে যাওয়া লাগবে ওখানে…!
অয়নী বাবকে ঘরে বসিয়ে সকালে নাস্তা আনলো…
অয়নী: বাবা..একটা কথা জিজ্ঞেস করবো
অয়নীর বাবা: হু করনা মা…একটা কেনে হাজারটা কর,,
অয়নী: বাবা…মা আমার ওপর রেগে আছে না… আমার মুখ দেখবেনা বলেছিলো সেজন্যই মনে হয় আসেনি তাই না বাবা..
অয়নীর বাবা: হা…. তোর মা চাইলেও আর আসতে পারবেনা হাজার চাইলেও তোর মুখ সে দেখতে পারবোনা…
অয়নী: মানে…!
অয়নীর বাবা: তোর মা আর নেই রে…!!!
অয়নী: কিহ্
অয়নীর বাবা: হুম….
অয়নী: মা আমার ওপর এতো রাগ করেছে বাবা যে আমার সাথে কথা বলবেনা বলে চলে গেলো দূর পরলোকে…!
অয়নীর বাবা: থাক মা কাঁদেনা এখন.. আজ না তোর বিয়ে….! তোর মা তেকে ওই ওপর থেকে দেখছে…!
নাস্তা শেষে অয়নীকে ওর বাবা ডেকে বলছে…
অয়নীর বাবা: মা বস এখানে। কিছু কথা বলি তোকে…তোর মা থাকলে সেই হয়তে বলতো..! কিন্তু আমি বলছি সেটা
অয়নী: হুম বলো বাবা
অয়নীর বাবা: মা নীল ছেলেটা অনেক ভালো মনের ছেলে এবং খুব ভালো ও…বিপদে আপদে নিজের কথা না ভেবেই ঝাপিয়ে পড়ে…
অয়নী: বাবা তুমি কি ওকে আগে চিনতে…!
অয়নীর বাবা: হুম.. তুই যখন পালিয়ে গেলি তখন রাগ কষ্ট আর অপমানে তোর দাদা স্ট্রোক করে মারা যান। আর সাথে ব্যাবাসাটাও তলিয়ে যায় আমাদের…! তখন ও আমাদের পাশে এসে দাড়ায়….বিভিন্নভাবে হেল্প করতো। কিন্তু কেনো করতো তা আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি..! পরে ও যখন চলে গেলো এলাকা ছেড়ে তারপর আস্তে আস্তে বুঝতে পারতাম ও তোকে ভীষণ ভালাবাসে…!
অয়নী: সত্যি…
অয়নীর বাবা: হু… ওকে দেখে রাখিস মা…এরকম ছেলে পাওয়া যায়না রে কিভাবে যে এখনো ও টিকে আছে বুঝতে পারিনা… যায়হোক চল মা নিচে যায় সবাই ওখানে আছে
অয়নী: হুম চলো…!
নিচে গিয়ে দেখলো সবাই চলে এসেছে নীলের। বন্ধু জয় শিশির সবাই…সব থেকে আজ বেশি আনন্দ করছে সুপ্ত।
অয়নী: নীল..
নীল: বলো
অয়নী: কাওকে খুঁজছো..
নীল: না তো..কেনো..
অয়নী: না দেখে মনে হচ্ছে তো তাই..
নীল : আরে না..
অয়নী: ওও..একি তুমি কানে ব্লুটুথ লাগিয়েছে কেনো….!
নীল: ওও ওই গান শোনার জন্য..
অয়নী: বক্সে গান হচ্ছে ওটাতে হচ্ছেনা..
নীল: না মানে এগুলো সব আধুনিক গান
তো…আমি আবার পুরোণো গান শুনতে পছন্দ করি..!
অয়নী: তাই বুঝি..
নীল: হু…
অয়নী: জানতাম না তো..
নীল: কতো কিছুই তো জানোনা…আস্তে সব জানবে
অয়নী: জানতে তো চাই..না বললে কি
করবো…!
নীল: জেনে নিবে…তোমার সংসার এগুলো…সে দায়িত্ব টা তেমাকেই নিতে হবে..সবকুছু তোমাকেই দেখে রাখতে হবে বুঝছো,,,
অয়নী: হুম বুঝছি,,
নীল: কি বুঝলে শুনি..
অয়নী: এই তুমি এক নাম্বারে একটা ফাঁকিবাজ..
নীল: কি..
অয়নী: হু তাইতে…!
নীল: আহা কি হাসি….!
অয়নী: হাসতে বুঝি মানা..
নীল: কিছু সময় এর জন্য মানা..
অয়নী: মানতে পারবোনা,,
নীল : না মানলে,,কিন্তু
অয়নী: সাথী আপুকে কি বলবো বাগান বাড়িতে যেতে…!
নীল: তাই না…!
অয়নী: জ্বী
নীল: তবে রে..!
দূর থেকে জয় বলে উঠলো,
” নীল এখন সব কথা বলে ফেললে রাতে কি বলবি….তখন তো চুইংগাম খাওয়া লাগবে আর ভাবীর হাতে মাইর….তবে বেশ মজা হবে কিন্তু…!
নীল: তবে রে দাড়া…!
বলে নীল জয়কে ধরতে দৌড় দিলো,,
অয়নী মনে মনে ভাবছে,
” আল্লাহ্ এতো সুখ আমার সইবে তো……!!!”
মোটামুটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সাজানে গোছানো শেষ।
সবাই মিলে অয়নীকে নিয়ে বের হবে,, কণের আসনে বসানোর জন্য। এমন সময় অয়নীর মোবাইলে নীলের মেসেজ আসলো,
” সব রহস্যের সমাধান চাও তুমি, তাই না..! তাহলে প্যান্ডেলের পিছনে চলে আসো। ওখানেই আছি আমি….! ”
মেসেজ দেখে অয়নীর বুক কেপে উঠলো। আল্লাহ্ কোন সত্যির মুখোমুখি করতে চলেছে আজ ওকে। প্যন্ডেলে গিয়ে দেখোলো নীল আসেনি।
ওয়ারুমে যাওয়ার অযুহাতে ওখান থেকে চলে গেলো। প্যন্ডেলের পিছনে গিয়ে দেখলো নীল ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে আর বারবার বিভিন্ন ভয়েস কমান্ড করছিলো…!
অয়নী: নীল….!
নীল: ও এসেছো…থ্যাংকস,,
অয়নী: ধন্যবাদ নেওয়ার জন্য আসিনি আমি…!
নীল: জানি..
অয়নী: তাহলে বলতেছোনা কেনো তুমি কে….!
নীল: মেমরিকার্ডটা দাও…!
অয়নী: কিহ্..কি দিবো,,,
নীল: শুনতে পেয়েছো আর বুঝতেও পারছো আমি কিসের কথা বলছি,,
অয়নী: মানে…!
নীল: মেমোরিকার্ডটা দাওও অয়নী….তুমি নিশ্চয় চাওনা হাজার হাজার লোক মারা যাক,,,
অয়নী: তুমি কি করে এসব জানলে..
নীল: হা হা হা,,,
অয়নী: তার মানে তুমিও রাজীবের লোক…! মরে গেলেও আমি ওটা কাওকে দেবনা ওই ব্যাক্তি ছাড়া
নীল তোমাকে বিশ্বাস করে এখানে ছিলাম আর তুমি এই মর্যাদা দিলে আমাকে,,
নীল: উহু বিশ্বাসের কোনো অমর্যাদা করিনি…! আর আমি রাজীবের লোকও নয় আমি..
অয়নী: তাহলে,,,
নীল: মনে পরে আজ থেকে দুবছর আগের সেই রাতের কথা,,
অয়নী: কি বলতে চাইছে তুমি,,,
নীল: সেদিন রাতে তুমি আমাকেই ফোন দিয়েছিলে The N.R. কে আশা করি ভূলে যাওনি..
অয়নী: হু..(অবাক চোখে)
নীল : সেদিন তুমি কম্পিত স্বরে সব বলেছিলে রাজীবের ব্যাপারে মনে আছে…আমি তোমার কণ্ঠ শুনে বুঝেছিলাম ওটা তুমি ছিলে। আর এও জানতাম রাজীব ওই ফাইলটা না পেলে যে কাওকে মারতে পারে…! এমনকি তোমাকেও আর সুপ্তও…
অয়নী: সবাই জানতো যে যৌতুকের জন্য ও আমাকে মারতো বাট আমি জানতাম ও সন্দেহ করতো ওটা আমার কাছেই আছে….!
নীল: জানি…..! তাই দুবছর ধরে আমার লোকেরা তোমাকে নজরদারিতে রেখেছে…এমনকি তোমাদের বাসায় যে কাজের লোক ছিলো সেও আমাদের একটা অফিসার ছিলো…কিন্তু শেষের দিনগুলো নেটওয়ার্কের অবস্থা খারাপ থাকায় আমরা যোগাযোগ করতে পারিনি তার সাথে,,তাই রাজীবের শেষের দিকগুলোর অত্যাচার সমন্ধে জানত পারিনি।
অয়নী: কি….!
নীল: হুম,, আর তোমাকে যে বাজে লোকগুলো তাড়া করেছিলো ওগুলো ছিলো রাজীবের লাগানো লোক,,,
অয়নী: তাহলে সেদিন দোকানের ওই ঘটনাটা…!
নীল: ওটাও তেমাকে মারার প্ল্যান…! আমার কাছে রিপোর্ট ছিলো তাই তোমাকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। বাট তুমি তো…
অয়নী: সরি…..!
নীল: কিন্তু বোম্ব এর বিষয়টা বুঝলাম না… তুমি কি করে জানলে…!
অয়নী: আমিও ওখানে সেদিন ওই বোম্ব টাই দেখেছিলাম যেটা রাজীবের ঘরে ছিলো,,,
নীল: কিন্তু তুমি বাড়িতে এগুলো বলোনি কেনো,,
অয়নী: ও আমার সুপ্তকে মেরে ফেলতো…!
নীল : অয়নী সময় কম মেমোরিকার্ডটা দাও…!
অয়নী: দিচ্ছি..! কিন্তু তুমি আসলে কে সেটা কিন্তু এখেনো জানতে পারলাম না…!
নীল: শিশিরের কাছ থেকে শুনে নিও ও সব বলবে তোমাকে.. বলা আছে..
নীল দ্রুতো ওটা ল্যাপটপে ঢুকিয়ে কাজ করলো..তারপর পুরে মেমোরিকারর্ডের সব ফাইল ডিলিট করে ওটা তে এমন সিস্টেম করলো যে কেও ওটা কোনো ডিভাইসে প্রবেশ করালে তা সাথে সাথে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবে…
নীল : ওকে ডান….! ধন্যবাদ
অয়নী: লাগবেনা…!
নীল : ওকে বাবা… এখন চলো নয়তো কেও চলে আসবে..!
সবকাজ শেষ এখন সেই শুভক্ষণ যেটা অনেক আগে নীলর জীবনে আসতো…!
এখন বিয়ে পড়ানে হবে….!
নীল শুধু চারিদিকে বারবার তাকাচ্ছে… অনেকে এটা নিয়ে বিরক্ত হচ্ছে….!
শেষমেশ “”কবুল”” বলল দুজনেই.. নীল আর অয়নী এক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হলো…! কেও চাইলেও আর আলাদা করতে পারবেনা…কিন্তু অয়নীর কেনো যেনো ভয় হতে লাগলো…
নীল বারবার চোখের ইশারায় নিষেধ করছে ভয় পেতে…
বিয়ে সম্পুর্ণ হলো ভালোই ভালোই..এখন চলছে ফোটোগ্রাফি..সবাই হাসাহাসি করছে আর ছবি তুলছে….
শিশির: আরেকটু ক্লোজ হয়ে বসলে ভালো হতো…! ছবি আসছেনা ভালো…!
নীল: কয়েকদিন পর না তোর বিয়ে…সুদে আসলে তুলবো সবটা…!
জয়: ইয়ে মানে নীল আঠা এনে কি লাগিয়ে দেবো..! তাহলে চাইলেও আলাদা হতে পারবিনা..!
নীল: ভোলা……!!
জয়: ওকে লাগবেনা..! হ্যাপি হানিমুন…!
নীল: কিহ্…!
জয়: ইয়ে মানে…হ্যাপি ম্যারিড লাইফ….!
নীল: তোর খবর আছে…
সাথী: হয়েছে,,হয়েছে…তোরা থামবি এবার..!
আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো….!
নীল বারবার তাকাচ্ছে চারিদিকে…
হঠাৎ রিসিপশনের গেইটের দিকে তাকিয়ে নীল চমকে উঠলেও কাওকে বুঝতে না দিয়ে কোনো কথা না বলেই অয়নীকে এক ধাক্কায় কণের আসন থেকে নিচে ফেলে দিয়ে নীল কানে ব্লুটুথে হাত দিয়ে চেচিয়ে বলে উঠলো,
” (জোরে জোরে) ফোর্স পজিশন…বি এটেনশন…নাও দ্যা টাইম… এ্যাকশন অফিসারস্…..”
সবইকে কিছু বুঝে ওটার আগেই ধাক্কা দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিতে না দিতেই তুমুল গোলাবর্ষণ শুরু হয়ে গেলো…!
চারিদিকে শুদু বিকট আওয়াজ…! নীলও নেমে পড়েছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে। আত্মবিশ্বাস আছে নীলের সে জিতবেই এর আগেও অনেক অপারেশন করেছে ও,,, আল্লাহ্ র নাম নিয়ে নেমে পড়েছে রণক্ষেত্রে..!
অয়নী নীলের কাছে যাবে বলে দৌড় দিতে গেছিলো শিশির ওখানে ছিলো বলে দ্রুতো ওর হাত ধরে ফেলে..
শিশির: ভাবি যাবেননা। পাগল হয়ে গেছেন….!
অয়নী: ভাই নীলকে ওরা মেরে ফেলবে…
শিশির : কিচ্ছু হবেনা এর আগেও অনেক অপারেশন করেছে ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে,,,এটাও ওরকমই…!
অয়নী: নীল কে যে.. ওকেই অপারেশন করতে হবে…বলেন ভাই…বলেন…!
শিশির: ওকে তাহলে শুনুন. নীলকে সবাই জানে বিখ্যাতল সার্জারি স্পেশিয়ালিস্ট,, কিন্তু সেটা বাইরের পরিচয়…! ও আসলে
অয়নী: কি
শিশির: নীল হলো আ্যান্টি সোসাল ক্রাইম স্পেশাল এর ডিপার্টমেন্টাল হেড। নিজের পরিচয় গোপন করে দেশ ও সমাজেকে রক্ষা করাই যাদের মূল লক্ষ্য
অয়নী: এটা কি আমাকে আগে বলা যেতনা
শিশির: যেতো কিন্তু আজকে ওর লাইফ রিস্ক ৯০%। আর আজকের অপারেশন টা রাজীবদের দলের বিরুদ্ধে…ওরা চাইছে পুরো শহরটাকে উড়িয়ে দিতে আর সে ম্যাপ আর ফর্মূলা ছিলো আপনার কাছে….!
অয়নী: ওর লাইফ রিস্ক আছে আর আমি এখানে বসে থাকবো তা হতে পারেনা..!
শিশির: না আপনি যাবেননা,,, প্লিজ…
নীল খেয়াল করলো রাজীব ওর দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিলের হাসি হসলো আর রিভালবারটা সামন্য ঘুরালো.. নীল বুঝতে পারছেনা কি হলো হঠাৎ করে তাকাতেই দেখে সুপ্ত দৌড়ে নীলের দিকে আসছে….!
শিশির: ভাবী এবার বুঝেছেন নীল কেনো ১মাস ধরে এমন করছে
অয়নী: হুম…..!
অয়নী হঠাৎ একটা অস্ফুটকার শব্দ শুনতে পেলো…
“—সুপ্তোওওও…..—” তারপরেই একটা বুলেট রিভালবার থেকে বের হওয়ার আওয়াজ মুহূর্তেই…! একটি অতি পরিচিত কণ্ঠে কেমন যেনো ব্যাতিক্রমী চিৎকার আসলো অযনীর কানে….!
ব্যাস….! চারিদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে…নাহ্ আর কোনো আওয়াজ হচ্ছেনা..সবাই হঠাৎ কেমন যেনো থেমে গেলো……! ঠিক সমুদ্রে সুনামি আসার আগে যেমন থমথমে আবহাওয়া বিরাজ করে…! মনে হচ্ছিলো যেনো সব কিছু থেমে গেলো….! না গোলাগুলি,, না কোনো ব্যাক্তির আর্তনাদ…!
হ্যা মুহূর্তেই একটা আর্তনাদ ভেসে আসলো বাতাসে…..,
” নীঈঈঈল…..!!!!!!”
অয়নী বুঝতে পারলো এটা তো সাথীর গলার আওয়াজ…তবে আপু নীলকে ওভাবে ডাকলো কেনো….! আর চারিদিকে সব থেমে গেলো কেনো…! কেও কথা বলছেনা যে….
অয়নী আর দাড়ালোনা সকল বাধা ছিন্ন করে একটা দৌড় দিতে গিয়ে বাইরে এসেই হোচট খেলো,,,পড়ে গিয়ে মাথাটা তুলে দেখলো নীল এর সাদা পান্জাবিটা রক্তিমাকার ধারন করেছে….মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে ও….চারিকে নিস্তব্ধ….অপরাহ্ণে পাখিরা নীড়ে ফিরছিলো তারাও যেনো থেমে গেলো…!
প্রকৃতির সব কিছু থেমে গেছে…
অয়নী নিজেকে সামলে নেওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করেও নীলের কাছে গেলো
ধীরে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো নীল ঠিক অয়নীর কোলে মাথা রেখে..সাথী আর এগুতে পারলনা মাটিতে ধপ করে বসে পড়লো….সাথীর পুরো শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে…চোখের সামনে তার জীবনের সব থেকে প্রিয়ো নীল পড়ে আছে রক্তাক্ত অবস্থায়…!
নীল অয়নীর দিকে খুব কষ্ট করে তাকালো…!অয়নীর গালে থরথর করে কাপা হাত দিয়ে ছুয়ে কথা বলতে পারছেনা আটকে যাচ্ছে তারপরও বলছে,.
” অ..অরু…আমা..কে ভূ..ভূল বুঝোনা..প্লি..জ…অরু..আ..আমি.. খারাপ…নই…সবা..র.. মতো.. আমি.ও..বাঁচতে..চে..য়ে.. ছিলাম..প্রিয়ো..জনদের..নিরাপত্তা… নিশ্চিত.. করেছি…ভালো…থেকো…সাথী..আপুরে….!… আপু..আমি.. খারাপ..নই….!..ভা..লো..থাকিস..আমার…বাবাইটাকে….দেখে..রাখস…আমার.. বাবাইকে….. রোজ…একটু..ক..কষ্ট..করে…ভূতের… গ..গল্প শোনাস…পাগালটা…বড্ড ভালোবাসে… ভূতের গল্প….ওকে কেও…যেনো..বকা.. দিসনা….ওর…সব আবদার.. আমার..কাছে..আমি…হয়তো ওর আর বেশিক্ষণ নেই…ওকে…তোরা দেখে…রাখিস….বাবাই…কে…স্বাধীন… মতো চলতে..দিস. ও যায়…
শিশির..! বন্ধু…কই..তুই…বন্ধু… তোর.. হাতটা…দিবি..শেষ..বারের…মতো.. ধরতে… চাই….বন্ধু….আমার বোনটাকে..অরু..আর আমার বাবাই..কে..দেখে… রাখিস. .. কয়েকদিন পর.. তোর..বিয়ে…আল্লাহ্ আমার..জন্য…ওতো.. সময় রা..রাখেনি…!
…তোরা… ভালো..থাকিস…আমাকে…নিয়ে…আর.. দুশ্চিন্তা.. করতে… হবেনা..বন্ধু…এইতে…দেখ..আজ..আমি.. আমার..অরুকে…পেয়েছি.বাবাইকে..পেয়েছি…আমার..বোনটাকে..পেয়েছি…আমার…ধরণীকে.. বিদায়…দেওয়ার.. সময়..হয়ে গেছে….! আজ…তোরা..সবাই..আছিস…এখানে..এমন… ভাগ্য.. কজনের.. হয়.. রে..বল…! অরু…প্রথম.. আর… শেষবারের.. মতে.. বলছি.. আমি তোমাকে… অনেক ভালবা…..!
আর কিছু বলছেনা নীল। একটু বিশ্বজয়েরর নিশ্পাপ হাসি দিয়ে নয়নজোড়া বন্ধ করে দিলো…আর অয়নীকে যে হাতদিয়ে শক্ত করে ধরে ছিলো এতক্ষণ তা ধীরে ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে গেলো…!
আকাশে কালো মেঘমেলারা জমা হয়ে গেছে…! গুড়ুম শব্দ হচ্ছে…তারাও হয়তো আজ এসেছে এই শোকে শামিল হতে…
অয়নী: নীল……! নীল…..! কথা বলছোনা কেনো…উঠো বলছি…..নীল….! দেখো মেঘ করেছে..বৃষ্টি নামবে…আমি কিন্তু ভিজবো…আনার আবার জ্বর আসবে…নীল আমাকে নিষেধ করবেনা ভিজতে….! বকা দেবেনা আমাকে….! জোর করে নিয়ে যাবেনা….নীল..তোমার অরু কিছু বলছে তোমাকে….তোমার অরুকে তুমি কষ্ট দিতে পারবে নীল……! শিশির ভাই ও কথা বলছেনা না কেনো…!
শিশির কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে..ওই ফাকা গগনের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললো,
” No more…..!!!!! Nil….Is.. no..more….in…the…world….from… now…..!!! (প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে) নীল….আর…. নেই….নেই…নেই…
অয়নী….সদ্য বিবাহিত মেয়েটির হাত কিছুক্ষণ আগেও মেহেদীর রাঙা রং ছিলো। কিন্তু এখন সেগুলো নীলের গাড় লালা রক্তে রঞ্জিত হয়েছে..
সাথীর মাথায় হাত দিয়ে নির্বাক চিত্তে বসে ছিলো নীলে দিকে তাকিয়ে….হটাৎই মাথা থেকে হাতটা পড়ে গেলো….!! ডুকরে কেঁদে উঠলো ও….! চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে অঝোর ধারা জলরাশির ধারা…..!
জয় শিশিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলছে…,
” যা হেট..নীল নেই মানে কি বলছিস…সর এখান থেকে তুই…. যা সরে যা….!”
নীলের হাতদুটো মুঠো বন্দি করে বললো,,
” নীল ভাই আমার…ওঠ…ওঠ বলছি…দেখ তোর ভোলানাথ এসে গেছে…ভোলাকে তুই সবসময় বকা দিস…আজ বকা দিবিনা….কি রে নীল ওঠ বলছি….আমাকে বকা দিবিনা….আরে তুই ছাড়া আমাকে বকা আর মারার সাহস কারোর নেই রে ভাই….ওঠ না…. আরে আমি ভূল করলে কে বকবে আমাকে..মারবে কে…ভোলাকে বকার জন্যা অন্তত ওঠ…কিরে শুনতে পাচ্ছিস না কি বলছি….নীল উঠতে বলছি আমি…নীল………! ওওওঠঠ না…..এমন করিস না….ওঠ..বলছি….দেখ ভোলা তোর সামনে দাড়িয়ে বসে আছে….! আমার চুল ধরে টানবি না…..নীঈঈললললল……….!!
সুপ্ত এসে নীলের বুকের ওপর বসে..ওর গাল হাত দিয়ে বলছে,,,
:বাবাই…বাবাই…ওঠো…ওঠো..দেখো আমি কবিতা বলতে পারছি…..” তুইংকেল….তুইংকেল….লিটল..স্টাল…
হাও… আই..ওয়ান্ডাল….হোয়াত…ইউ আল..!”
দেখো বাবা আমি পারছি….মাম্মি..মাম্মি…বাবাই কথা বলছেনা কেনো…..! বাবাই…বাবাই… আচ্ছা ঠিক আছে….আমি আর লুকোচরি খেলবনা বাবাই…আমি আর ভূতের গল্প শুনবনা বাবাই..তুমি প্লিজ ওঠো…ও বাবাই বাবাই…তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছো….আমাল সাথে কথা বলবানা আর….!
টিনা সুপ্তকে জড়িয়ে ধরে..বললে,
: ” সুপ্ত সোনা…!বাবাই আর কথা বলবেনা….বাবা তো এখন আকাশের তারা হয়ে গেছে…! সোনা এখান থেকে চলো…
: না আমি বাবাইয়ের ঘাড়ে উঠবো…
সাথী কাঁদছে সে তার ভাই হারালো…অয়নী কাঁদছে সে তার জীবনের বাঁচার রসদ হারালে…শিশির কাঁদছে,,জয় কাঁদছে তারা তাদের জীবনের প্রাণপ্রিয়ো বন্ধু হারালো…সুপ্ত কাঁদছে সে তার বাবাইকে হারালো…প্রকৃতি কাঁদছে তাদের পরম প্রিয়ো সঙ্গী হারালো….!!!
এখন রাত। অনেকে চলে গেছে…! এখন বাড়িটা ফাকা..শুন্য…বাড়ির প্রাণটাই যে আর নেই…! বাড়িতে দারেয়ানদের কে ভালবাসবে…কাজের লোকগুলোকে সারাদিন মামা করে কে জ্বালাবে…নিজের হাতে তৈরি করা বাগান কে পরিচর্যা করবে…….! জোৎস্না রাতে কফি হাতে ছাদে সারারাত কে কাটিয়ে দেবে..!
টিনা বারান্দায় বসে নিজের কান্না চেপে ধরে রেখে সুপ্তকে বোঝাচ্ছে..ওই যে চাঁদ তার একটু দূরেই বড় তারাটি ওর বাবা….ওখান থেকেই সুপ্তকে দেখছে….সুপ্ত ওই তারার দিকে তাকিয়ে বলছে.. ” বাবাই চলে আসো…আমার ভয় লাগছে খুব….!!”
অয়নী হাটছে একলা….এখনো বিয়ের সাজে রয়েছে….! শাড়ির আচল মেঝেতে আছরে পড়েছে…! অয়নীর মা বলতো ওভাবে হাটতে নেই অমঙ্গল হয় অয়নী নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করছে,, আরো বাকি আছে বুঝি..
ছাদে যাচ্ছে যেখানে নীল আর ও একসাথে বসে গল্প করে কতো রাত কটিয়ে দিয়েছে…!
সেখানে দাড়িয়ে আছে…! চারিদিকে চুপচাপ হয়ে রয়েছে..এর মধ্যে কোথা থেকে যেনো মনে হলে একটা গান ভেসে আসছে….!
“কিযে শূন্য শূন্য লাগে তুমিহীনা,,,,,
হৃদয় হারায় চেনা ঠিকানা…….!
< <<<#সমাপ্ত >>>>