হিংস্র ভালোবাসা !! Part- 24
ফারহা আনমনে ভাবতে থাকে মেঘের হাত থেকে কি করে পালানো যায় ….
— কি ভাবছো জানপাখি ,? কি করে আমার কাছ থেকে পালাবে ..?? ..(মেঘ)
ফারহা কি বলবে বুঝে উঠতে না পেরে হুট করে দৌড়ে রুমে থেকে বেরিয়ে যেতে নেয় ফারহা তখনি পায়ে কিছু টান পরে সাথে সাথে নিচে পরে যায় ফারহা আর এদিকে মেঘ ফারহার অবস্তা দেখে রুম কাপিয়ে হু হা হা করে হাসতে থাকে ….
ফারহা পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে লোহার শিকল পায়ে জড়িয়ে তালা মারা ৷ ফারহা অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকাতে মেঘ চোখ মেরে ফারহা কে কোলে তুলে নেয়৷
– ইউ স্টুপিট আমার পায়ে শিকল পরিয়েছে কে..??আর আমাকে কেনো কোলে নিয়েছো নামাও বলছি..??(ফারহা)
– বাহ জানপাখি তোমার এই তেজের জন্য তোমাকে এত্তো ভালো লাগে , ওহ কি বলছিলে যেনো কে তোমার পায়ে শিকল পড়িয়েছে..! ফর ইউর কাইন্ট ইনফরমেশন তোমাকে টার্চ করার মতো কলিজা পৃথিবীতে কারোর নেই তো সে হিসেবে তোমার পায়ে কে শিকল পরিয়েছে বুজতে পারছো.!! …(মেঘ)
মেঘের কথা গুলো ফারহার কাছে অন্যরকম লাগছে কারন এর আগে যখন মেঘ ওর সাথে কথা বলতো ওকে এতো টা ডেয়ারিং আর হিংস্র লাগেনি কিন্তু এখন মেঘ কে দেখে সত্যি ফারহার ভয় লাগছে এ যেনো এক অন্য মেঘ কে দেখছে ফারহা…..
– মেঘ আমাকে যেতে দেও…(ফারহা)
– ওয়াট কি বললে , তোমাকে ছেড়ে দিবো ..!! হা হা হা (ফারহা কে বেডে বসিয়ে দিয়ে) ইউ নো ওয়াট জানপাখি আজ থেকে এই চার দেয়াল আর আমি হচ্ছি তোমার পৃথিবী ভুলে যাও সব ভুলে যাও তোমার জীবনে অন্য কেউ বা কারা ছিলো.৷ আজ থেকে আমি সব তোমার ….(মেঘ)
এতোক্ষন ফারহা হা করে মেঘের কথা গুলো শুনতে লাগলো , ফারহা নিজ কানে বিশ্বাস করতে পারছে না মেঘের এমন বিহেবিয়ার কি করে একটা মানুষ রাতারাতি এতোটা বদলে যেতে পারে …….
— জানপাখি এ ভাবে হা করে আমার দিকে তাকিয়ে থেকো না প্লিজ নয় তো এখুনি আমি তোমার সাথে বাসর টা সেরে ফেলবো….(মেঘ)
মেঘের কথা শুনে ফারহা মুখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মেঘ কে বলতে লাগলো……
— I ‘m Sorry Magh ,
— Sorry For What…??(মেঘ)
– মেঘ আমার কথা এখনো শেষ হয়নি প্লিজ আমার কথাটা শেষ করতে দেও…(ফারহা)
– ওকে এই দেখো মুখে আঙ্গুল দিলাম বলো কি বলতে চাও…??(মেঘ)
— মেঘ তোমার ড্যাড আরহান চৌধুরী আমা,,,(বাকি টা বলতে না দিয়ে মেঘ বলে উঠলো )
— এখানে ড্যাডের কথা আসছে কেনো জানপাখি ..?? আমি তোমাকে আগেই বলেছি আমাদের মাঝখানে কেউ থাকবে না , কেউ না মানে কেউ না ….(মেঘ)
প্রচন্ড রেগে মেঘ বললো আর ফারহা ওখানে থেমে গেলো ফারহা খুব ভালো করে বুজতে পেরেছে যে মেঘ এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি ৷ তাই ফারহা আর কথা না বারিয়ে চুপ করে থাকে ৷ মেঘ ফারহার গাল দুটো ধরে চোখে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে,,,,,
— জানপাখি তোমাকে এতোদিন কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি সরি এই দেখো কান ধরছি কিন্তু প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা স্বপ্নে এনো না তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না আমি এখন একটু বাইরে যাচ্ছি তুমি রেস্ট করো কিছুক্ষণ পর আমি তোমার ডিনার নিয়ে চলে আসবো ….(মেঘ)
— …….(ফারহা)
মেঘ রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই ফারহার হাতে থাকা বেজলেটের কালো বোতাম টা দু বার চেপে ধরে ………..
.
.
.
.
.
.
— চুপ একদম চুপ ফারহার কোন খবর পাচ্ছিস না মানে ..?? তোদের সাথে ওর দেখা করার কথা ছিলো আর ওখানে দারিয়ে ছিলো তখন আর তোরা বলছি ফারহা ওখানে নেই..
আগুন রেগে ওর লোকদের বকা দিতে লাগলো কারন এতো মধ্যে আগুনের কাছে ফারহার নিখোজ হওয়ার নিউজ চলে গেছে ৷ আগুন ওর লোক দের কড়া ভাবে জানিয়ে দেয় দু ঘন্টার মধ্যে ফারহার খবর যদি না দিতে পারে তাহলে সব গুলো কে কেটে ফেলবে আগুন৷ আগুন কল ডিসকানেক্ট করতে হাতে খেয়াল করে বেজলেট টা জ্বলে উঠলো , আগুনের আর বুজতে বাকি নেই যে ফারহা মারাত্বক কোন বিপদে মধ্যে আছে ৷ আগুন ওর পিএ কে বলে ফ্লাইটের টিকিট বুক করতে বলে মরনিং ফ্লাইটে যাবে আগুন…..
— ইসস আমি কি করে ভুলে গেলাম ফারহা কে বলতে যে মেঘ হসপিটাল থেকে পালিয়ে এসেছে তাহলে হয়তো ফারহা একটু সতর্ক থাকতো ৷ একমিনিট ফারহা আমার হেল্প চেয়েছিলো তার মানে ফারহা আগে থেকেই আন্দাজ করতে পেরেছিলো যে মেঘ ফিরে এসেছে ৷ ওহ শির্ট তারমানে এখন ফারহা বিপদে আছে আমাকে বিডি তে যেতে হবে যতো তারাতারি সম্ভব ………
.
.
.
.
.
— ম্যাম একজন কে পেয়েছি আপনি যেমন টা চেয়েছিলেন তেমন টাই কিন্তু তিনি রাজি হচ্ছে না…..(আসলাম)
— রাজি হচ্ছে না হু মৃদু হেসে বললো মিহু…
– জ্বি , কিন্তু এবার কি করবেন..??(আসলাম)
– মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে আসো আর তুমি এখুনি ভাইয়ের সাথে দেখা করো , (মিহু)
— মেয়েটাকে না হয় নিয়ে এলাম কিন্তু বসের সামনে যাবো তিনি যদি আমাকে মে.. বাকি টা বলতে না দিয়ে মিহু বলে উঠলো ,,,,
— মেরে ফেলবে না , কিন্তু ভয় দেখিয়ে কথা বের করার চেষ্টা করবে বাট ইউ স্ট্রং হয়ে থাকবে নার্ভাস হওয়া যাবে না …(মিহু)
— ওকে ম্যাম , আমি মেয়েটিকে কেবিনে নিয়ে আসছি তারপর বসের কাছে যাচ্ছি…..(আসলাম)
আসলাম মিহুর কথা মতো মেয়েটিকে নিয়ে এসে মিহুর সামনে দার করিয়ে বিদেয় নেয় আসলাম………
.
.
.
— হ্যালো ড্যাড ..(মিহু)
— হা মিহু বলো কোন নিউজ আছে ..??( আরহান চৌধুরী )
– ইয়েস ড্যাড , মেয়েটি কাজ টা করার জন্য রাজি হয়েছে বাট অনেক টাকা চাইছে…(মিহু)
— যতো টাকা লাগে লাগুক কিন্তু কাজ টা হওয়া চাই আমার…( আরহান চৌধুরী)
— ওকে ড্যাড আমি দেখছি…(মিহু)
কল ডিসকানেক্ট করে আরহান চৌধুরী মেঘের ডক্টর কে কল করে ….
— হ্যালো …(ডক্টর)
— হ্যালো ডক্টর আমি মেঘের বাবা …
— ওহ মিস্টার চৌধুরি আপনাকে পরিচয় দিতে হবে না আমি আপনাকে খুব ভালো করেই চিনি , এখন বলুন সব ঠিক আছে তো মানে মেঘ ভালো আছে..(ডক্টর)
— নো ডক্টর মেঘ দিন দিন আরো হিংস্র হয়ে যাচ্ছে কোন ভাবেই ওকে কন্ট্রল করা যাচ্ছে না ৷(আরহান চৌধুরী )
— মিস্টার চৌধুরী আমি আপনাকে আগেই বলেছি মেঘের মেডেসিন হলো ওর ওয়াইফ যার নাম ও জপ করে , ওকে পেলে সব টা ঠিক হয়ে যাবে ইভেন মেঘ ও সুস্ত হয়ে যাবে ….(ডক্টর)
— ওকে ডক্টর আপনার কথা মতোই সব হবে , এন্ড থ্যাংকস ..
— থ্যাংকস দেওয়ার কিছু নেই মিস্টার চৌধুরি ৷ এটা আমার কাজ ৷
— ওকে ডক্টর রাখছি তাহলে…
আরহান চৌধুরী ডক্টরের কথা শুনে নিশ্চিন্তে দাবার চাল দিতে লাগলো ……
.
.
.
.
— ওহ গড এ্যাট লিস্ট পায়ের শিকল টা তো খুলতে পারলাম কিন্তু এখান থেকে বের হবো কি করে বাইরে নিশ্চয় কড়া সিকিউরিটির ব্যাবস্তা করেছে মেঘ ৷
ফারহা চুলের কালো ক্লিপ দিয়ে লোহার শিকলের তালা টা খুলতে পারলেও কি করে বের হবে সে রাস্তা খুজে পাচ্ছে না ফারহা , জানালা দিয়ে চারপাশ দেখতে লাগলো কিন্তু ফারহা জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতে দেখে ফারহার যেনো মাথা ঘুড়ে গেলো কারন বাড়ির চার পাশে অন্তত ৫০ জন গার্ড আছে যারা বাড়ির চারপাশে ঘুড়ে ঘুড়ে পাহারা দিচ্ছে ৷ মনে হচ্ছে ভারত পাকিস্তানের বর্ডারে আছি ……..
— বাহ এর মধ্যে পায়ের শিকল খুলে ফেললে জানপাখি , আম ইমপ্রেস্ড ..(মেঘ)
ফারহা মেঘের গলা পেয়ে চমকে যায় , পিছুনে ফিরে দেখে মেঘ হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে দারিয়ে হাসছে …..
— মেঘ প্লিজ আমাকে যেতে দেও , মা বাবা আমার জন্য টেনশন করছে ….(কাদো কাদো মুখ করে বললো ফারহা)
— ওহ জানপাখি এভাবে কাদো কাদো মুখ করে রেখো না প্লিজ কারন আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না ইচ্ছে করছে তোমার গাল গুলো কামড়ে খেয়ে ফেলি ,,,,
কথাটা বলে মেঘ প্লেট টা টেবিলের উপর রেখে ধিরে ধিরে ফারহার দিকে এগোতে থাকে , ফারহা ভয়ে চোখ মুখ খিচে দারিয়ে থাকে , কিছুক্ষন পর ফারহা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মেঘ মিটি মিটি হাসছে ৷ মেঘ আচমকা ফারহার কমর জরিয়ে ধরে ঠোট জোড়া দখল করে নেয় , ফারহা শত চেষ্টা করে ও মেঘ কে নিজের থেকে একচুল ও ছাড়াতে পারলো না তবে ফারহা ফিল করছে মেঘের কিস আসতে আসতে কামড়ে পরিনত হচ্ছে ফারহার ঠোট জোড়া মেঘ কামড়াতে থাকে ফারহা আর সহ্য করতে না পেরে কেদে দেয় তখনি মেঘে হুস ফেরে ফারহার ঠোট ছেড়ে দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ……
–আ’ম সরি জানপাখি তোমাকে মনে হয় খুব বেশি কষ্ট দিয়ে ফেললাম তাই না ..?? ..(কথাটা বলে মেঘ কেমন পৌশাচিক হাসি দিলো)
— উফফ ঠোট এত্তো পরিমানে জলছে মনে হচ্ছে কেউ ঠোটে মরিচের গুড়ো লাগিয়ে দিয়েছে , এই সাইকোর কাছে থাকলে এরকম টর্চার করে হয়তো আমাকে মেরে ফেলবে , নাহ তা হওয়ার আগে আমাকে পালাতে হবে ………..(মনে মনে)
— হা করো ..(মেঘ)
— মেঘের হা করো কথাটা শুনে সামনে তাকিয়ে দেখি মেঘ এক লোকমা ভাত নিয়ে আমার মুখের সামনে বসে আছে, হঠাৎ হঠাৎ মেঘের এমন রুপ পরিবর্তন হতে দেখে আমি সত্যি অবাক সাথে ভিষন খারাপ ও লাগছে এটা ভেবে যে আমার জন্য আজ ওর এই অবস্তা কিন্তু আমি বা কি করতাম একমাত্র ছোট বোনের এমন অবস্তা দেখে কোন বোন সহ্য করতে পারবে কি না জানি না তবে আমি পারি নি আর তাই হয়তো আজ মেঘের এমন বিহেবিয়ার …..
— জানপাখি হা করো খাবার টা খেয়ে নেও অনেক রাত হলো ….(মেঘ রেগে ফারহা কে বললো)
ফারহা মেঘের ঝাড়ি শুনে তারাতারি খাবার টা মুখে নিয়ে নেয় , এটা দেখে মেঘ হেসে ফেলে ……….
.
.
.
.
.
.
#To_be_Continued……..